সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকে আওয়ামীলীগ ও জাতীয়পার্টিঘেষা ব্যক্তিরা বিএনপির পরিচয় দিয়ে মুলধারার নেতাকর্মীদের কোণঠাসা করার চেষ্টায় নেমেছেন। নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুর সঙ্গে যারা রাজপথে সক্রিয়ভাবে কঠোর ভুমিকা রেখেছেন সেইসব নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ওঠেপড়ে লেগেছে আওযামীলীগ ও জাতীয়পার্টিঘেষা বিএনপিওয়ালারা। যারা বিগত সাড়ে ১৫ বছর আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির মঞ্চে ওঠে রাজনীতি করেছেন সেই তারাই এখন বিএনপির ত্যাগী পরীক্ষিত নির্যাতিত নেতার্কীদের দমানোর মিশনে নেমেছেন। মুলত বন্দরে সাখাওয়াত ও টিপুর হাতকে দূর্বল করার লক্ষ্যেই এমন মিশনে নেমেছেন সুবিধাভোগীরা।
স্থানীয়রা জানান, ৫ আগস্টের পর বন্দরের বিভিন্ন সেক্টুর নিয়ন্ত্রণে নেমেছেন মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক বহিষ্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুল, মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা। তারাও যেমন ভর করেছে আওয়ামীঘেষা লোকজদের উপর, আবার তাদের উপরও ভর করেছে আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির হয়ে কাজ করে আসা ব্যক্তিরা। তবে মাঠ ছাড়ছেনা মুলধারার নেতাকর্মীরা।
বন্দরের স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনে শিক্ষার্থী নিহতের ঘ্টনায় দায়েরকৃত হত্যা মামলার আসামী সৌরভকে সঙ্গে নিয়ে বন্দর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও সভাপতি প্রার্থী সম্রাট হাসান সুজনকে হত্যাচেষ্টায় মহড়া দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা। এমন অভিযোগ করেছেন উপজেলা যুবদল ও বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ সংক্রান্ত ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে কাউন্সিলর আশাকে তার লোকজন নিয়ে মহড়া দিতে দেখা যায়। সৌরভ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সেক্রেটারি দুলাল প্রধানের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন এবং বিএনপির লোকজনদের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, বন্দর থানা যুবলীগের নেতা ও থানা চাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খান মাসুদের সহযোগী নূর হোসেন বন্দর উপজেলায় জমিজমা কেনাবেচা ও বালু দিয়ে জোরপূর্বক অসহায় মানুষের জমি ভরাট করে আসছিল। একই সঙ্গে নূর হোসেন ড্রেজার নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল। নূর হোসেন বিগত সময়ে আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির হয়ে কাজ করেছিল এবং বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলায় নামের তালিকা দিতো।
কিন্তু গত ৫ আগস্টের পর থেকে নূর হোসেন নিজেকে বিএনপির কর্মী দাবি প্রচারণা চালাতে থাকে। এ বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা মেনে নিতে পারেনি। মুলত পুণরায় বিএনপির লেবাস লাগিয়ে ড্রেজার ও জমিদখলবাজি চালিয়ে যেতে সে এই কৌশল নেয়। এতে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিরোধীতা করেন সম্রাট হাসান সুজনও। এর জের ধরে সুজনকে ঠেকাতে নূর হোসেন ভর করে আবুল কাউসার আশার উপর। সঙ্গ দিচ্ছেন হত্যা মামলার আসামী সৌরভও।
এই বিরোধের জের ধরে ৩০ আগস্ট শুক্রবার বিকেলে কাউন্সিলর আশার নেতৃত্বে হত্যা মামলার আসামী সৌরভ, নূর হোসেন, নুর হোসেনের ভাই আনসার আলী সহ কয়েকশ বাহিনীর সদস্য দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সম্রাট হাসান সুজনের বন্দর ইউনিয়নের ভদ্রাসনে এলাকার বাড়িতে যান। কয়েক দফা মহড়া দেয় বাহিনীটি। সুজনের বাড়ির সামনে দীর্ঘক্ষণ অবস্থানও করেছিল তারা। কিন্তু সুজন ওই সময় বাড়িতে ছিলেন না। শুক্রবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত সুজনকে হত্যাচেষ্টায় কয়েক দফা হত্যাচেষ্টায় মহড়া দিয়েছে তারা। পরে তারা সুজনের বাড়িতে গিয়ে খোঁজাখুজিও করেছেন।
অন্যদিকে নূর হোসেনকে দিয়ে সম্রাট হাসান সুজনের বিরুদ্ধে স্থানীয় গণমাধ্যমে বক্তব্য দেয়ার বিষয়ে কাউন্সিলর আশাকেই দায়ী করেছেন সুজন। এসবের পরিকল্পনাকারী হিসেবেও আশার বিরুদ্ধে তার অভিযোগ। নূর হোসেন মিডিয়াতে মহানগর বিএনপির একজন শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার বিষয়টিও আশার শিখিয়ে দেয়া বলেও সজুনের দাবি। আশার উপর ভর করে খান মাসুদের সহযোগী নূর হোসেন নতুন করে তার সাম্রাজ্য ঠিক রাখতে এসব বিতর্কিত কর্মকান্ড করে যাচ্ছে।