সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
এক বছর সাত মাস পূর্বে অদুদ খন্দকার নামে একজনের মৃত্যুর ঘটনায় ২৮ আগস্ট বুধবার বন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মারা যাওয়া অদুদ খন্দকারের ভাই ধামড়র ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহিদ খন্দকার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। উক্ত মামলায় আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টির নেতাকর্মী ও তাদের দোসরদের অভিযুক্ত করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন জেলা পরিষদ সদস্য মাসুম আহম্মেদ, বন্দর থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার হাতেম, স্থানীয় নুরুজ্জামান, ধামগড় ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড মেম্বার শফিউদ্দিন মুক্তার হোসেন, মো. রাসেল, আজিজ দেওয়ান ভেন্ডার, মো. সোহেল, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সানাউল্লাহ সানু, মিজানুর রহমানসহ ১০/১২ জন অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ্য করা হয়, মামলার বাদী জাহিদুল খন্দকার ও তার ভাই মাসুদ রানা বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। বিগত ২০২২ সালে ৩ ডিসেম্বর রাত একটায় অদুদ খন্দকার তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বাড়িতে এসে খাওয়া ধাওয়া শেষে ঘুমিয়ে পড়ে। সে সময় মাসুম আহম্মেদ এর নেতৃত্বে উল্লেখিত আসামীরা আগ্নোয়ান্ত্র ও দেশি অস্ত্রে-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বাড়ীতে অনাধিকার প্রবেশ করিয়া মামলার বাদী জাহিদুল খন্দকার এবং তার বড় ভাই মাসুদ খন্দকার কে খোঁজাখুজি করতে থাকে। তাদের না পেয়ে অদুদ খন্দকারকে তার ঘর থেকে টেনে হিচড়ে বাইরে এনে চোখ বেধে টোটাল ফ্যাসন লি. এর বালুর মাঠে নিয়ে যায়।
এ সময় তাদের কাছে জাহিদুল ও মাসুদ রানার অবস্থান জানতে চাওয়া হয়। অবস্থান জানাতে না চাইলে মাসুম আহম্মেদ এর নির্দেশে শফিউদ্দিন মেম্বার অদুদ খন্দকারের ২ হাত পিছনের দিকে ধরে রাখে এ সময়ে নুরুজ্জামান তার হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে তার বাম পায়ের গোড়ালীর উপরের দিকে কোপ দিয়ে গুরুতর কাটা মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে আর মো. হাতেম তার হাতে থাকা চাকু দিয়ে গোড়ালীর চামড়াসহ মাংস কেটে নেয়। এ ঘটনা তারা ২ ভাই জাহিদুল এবং মাসুদ রানা দূরে দাড়িয়ে দেখতে পায়। এরপর তার ভাইয়ের ২-৩ দিন খোঁজ পায়নি।
পরবর্তীতে তারা জানতে পারে তাই ভাইকে বন্দর থানার (১১)২০২২ মামলায় অজ্ঞাত আসামি হিসেবে কারাগারে প্রেরন করা হয়। জেল হাজাতে সে চিকিৎসাধীন ছিল। পরবর্তীতে সে ২০২৩ সালের ৩ জানুয়ারী জামিনে বেরিয়ে আসেন। এ সময় তিনি গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে প্রথমে মদনপুর বারাকা হাসপাতাল পরবর্তীতে সোরওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২০২৩ সালের ১০ জানুয়ারী সে মারা যান।
নিহতের স্ত্রী তানজিলা বেগম জানান, ২০২২ সালের ৩ ডিসেম্বর রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়িতে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ২টার দিকে বন্দর থানার এসআই সাইফুল ইসলাম পাটোয়ারী সঙ্গীয় ফোর্সসহ আমার স্বামীকে ঘুম থেকে তুলে কথা আছে বলে থানায় নিয়ে যায়। থানায় আমার স্বামীর উপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়। পরদিন নারায়ণগঞ্জ কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। কারাগারে থাকাবস্থায় আঘাতপ্রাপ্ত পায়ে পচনসহ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এক সপ্তায় নারায়ণগঞ্জ কারাগারে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। অসুস্থ বলে নিম্ন আদালতে বহুবার জামিন চাওয়া হয়েছে। অবশেষে ২ জানুয়ারি জামিনে কারাগার থেকে বের হয়ে প্রথমে স্থানীয় বারাকা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে চিকিৎকের পরামর্শে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। আইসিইউতে এক সপ্তাহ রাখার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির সেখানে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে ১ সেপ্টেম্বর এই মামলার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনকরে আপত্তি তুলেছেন বিএনপি নেতা আমজাদ হোসেন, নুরুজ্জামান সহ বেশকজন। তারা দাবি করেন- আসামীদের ানেকেই রাজনৈতিক কারনে এই মামলায় জড়ানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেছেন।