মামলা হামলায় নির্যাতিত যুবদল নেতা সুজনকে দমাতে মাস্টারপ্লান!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

অন্যায় অত্যাচার চাঁদাবাজ দখলবাজ ধান্দাবাজ দুর্নীতিবাজ, হটাত বিএনপি সাজা সুযোগসন্ধানী সুবিধাভোগীদের জন্য আতংক হয়ে ওঠেছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সাবেক সদস্য, বন্দর উপজেলা যুবদলের অন্যতম যুগ্ম আহ্বায়ক ও বন্দর উপজেলা যুবদলের সভাপতি প্রার্থী সম্রাট হাসান সুজন। তিনি রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে একাধিকবার হামলা মামলা জেলজুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন, থানায় নিয়ে তাকে বেদম মারধর করা হয়েছে, মারধর করে তার পিঠের হাড় ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। সেই সুজন আজ অপরাজনীতির শিকার হতে যাচ্ছেন। তাকে দমাতে মাস্টারপ্লান করে সুবিধাভোগী সুযোগসন্ধানীদের বিএনপিতে অনুপ্রবেশ ঘটাতে চলছে অপচেষ্টা।

বিগত সাড়ে ১৫ বছর যারা জাতীয় পার্টি ও আওয়ামীলীগের হয়ে কাজ করেছেন তারা যখন গত ৫ আগস্টের পর বিএনপি সাজার চেষ্টা করছেন তখন তাদেরকে মেনে নিতে পারছেন না সুজন। যারা আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীদদর সঙ্গে মিশে বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতন করেছেন তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন সুজন। আর এতেই বাধছে বিপত্তি। উল্টো সুযোগসন্ধানী সুবিধাভোগীদের পক্ষ নিয়ে সুজনকেই দমাতে মাস্টারপ্লান কষছে বিএনপিরই একটি অংশ, যারা নিজেরাও অতীতে আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির হয়ে কাজ করেছিলেন। কিন্তু দমে যাওয়ার ব্যক্তি সুজন নন। তিনিও সুযোগসন্ধানী সুবিধাভোগীদের বিএনপিতে ঠাঁই দিতে নারাজ। যত বাধা বিপত্তিই আসুক, সেইসব সুবিধাভোগী সুযোগসন্ধানীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন সুজন।

এদিকে স্থানীয় যুবদলের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করছেন, দলের সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করেছেন মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি আবুল কাউসার আশা। নির্বাচনে তিনি জয়ী হয়ে প্রথমেই আওয়ামীলীগের জেলা কমিটির সহ-সভাপতি ও নাসিকের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীর হাতে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান এবং আইভীর পা ছুয়েও সালাম করেন আশা। একইভাবে বন্দরে জাতীয় পার্টির এমপি সেলিম ওসমানের বিভিন্ন সভা সমাবেশে মঞ্চে ওঠেন কাউন্সিলর আশা। তিনি বিএনপির সাবেক একাধিকবারের এমপি ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালামের পুত্র।

এবার নতুন করে অভিযোগ ওঠেছে যুবদল নেতা সম্রাট হাসান সুজনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে নেমেছেন কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা। এমন অভিযোগ করেছেন বন্দর উপজেলা বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, বন্দর উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুবলীগ নেতা সন্ত্রাসী খান মাসুদের সহযোগী এবং মাদকসহ গ্রেপ্তারকৃত সাইফুদ্দীন মাহামুদ দুলাল প্রধানের সহযোগী নূর হোসেন এখন আবুল কাউসার আশার কাধে বন্দুক রেখে যুবদল নেতা সম্রাট হাসান সুজনকে বিতর্কিত করার চেষ্টায় নেমেছেন। একইভাবে গণমাধ্যমে সাজানো কল্পকাহিনী নূর হোসেনের মাধ্যমে সুজনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করানো হচ্ছে। রাজপথের পরীক্ষিত নেতা সম্রাট হাসান সুজনকে দমানোর লক্ষ্যে এই ষড়যন্ত্রে কাউন্সিলর আশা জড়িত। একই সঙ্গে নূর হোসেনকে দিয়ে মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নাম গণমাধ্যমে বলিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টায় কুচক্রীমহল।

ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, খান মাসুদের সহযোগী নূর হোসেন বন্দর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বেদখলীয় জমির ওয়ারিশ কিনে অসহায় মানুষের জমিজমা জোরপুর্বক দখল করেছে। জোরপূর্বক ড্রেজার বসিয়ে মানুষের জমিজমা বালু ভরাট করেছে। এলাকায় খান মাসুদের দাপট দেখিয়ে মানুষকে জিম্মি করে রেখেছিল। কিশোর গ্যাং থেকে শুরু করে মাদক ব্যবসায়ীদের আশ্রয় প্রশয় দিতো নূর হোসেন। বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামগুলোতে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য থানায় নেতাকর্মীদের নামের তালিকা দিতো নূর হোসেন। আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির সঙ্গে মিশে এসব অপকর্ম করেছে নূর হোসেন। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি বিএনপির সমর্থক হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়ে তার অপরাধের সাম্রাজ্য আবারো নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেছে। তার এসব অবৈধ কার্যকলাপে যুবদল নেতা সম্রাট হাসান সুজন পথের কাটা হতে পারে এমনটা আচ করতে পেরে আগেই সুজনকে ঠেকাতে মিডিয়াতে মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে নূর হোসেন। এতে মুল পরিকল্পনায় আছেন কাউন্সিলর আশা।

স্থানীয় বিএনপি নেতা রাজু আহমেদ বলেন, নূর হোসেন হচ্ছে আওয়ামীলীগ সন্ত্রাসী বাহিনীর ক্যাডার এবং খান মাসুদের ঘনিষ্ঠ কাছের লোক। নূর হোসেনকে দিয়ে আওয়ামীলীগের লোকজন ভূমিদস্যুতার কাজ, মানুষের জায়গা দখল ড্রেজার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও মানুষকে বিদেশ পাঠানোর কথা বলে অনেক টাকা পয়সা আত্মসাৎ করাই হচ্ছে নূর হোসেনের কাজ। যদি বিশ্বাস না হয় এলাকায় তদন্ত করে খবর নিবেন। আর সুজন হচ্ছে সম্মানিত একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং মিথ্যা। এগুলি ওসমান পরিবারের যারা দোসর আছেন, তাদের প্রেসক্রিপশনেই করা হচ্ছে। সুজনকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য, সুজন যদি এগুলো করতো তাহলে তার নিজ গ্রামে আর বসবাস করতে পারতো না। আওয়ামী লীগের দুঃশাসন মানুষকে হয়রানি এবং ষড়যন্ত্র করে সম্মান নষ্ট করার পাঁয়তারা করে যাচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই, নূর হোসেনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই।

এছাড়াও বন্দরের আনিস সিকদার নামে একজন ফেসবুকে নুর হোসেন সম্পর্কে লিখেছেন, আসলে এখানে একটা গেইম খেলা চলছে। সুজন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির পক্ষ হয়ে কাজ করছে। সংবাদ প্রচার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি থেকে ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে করা। এই লোক চিহ্নিত একজন বাটপার মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগী ভূমিদস্যুতার অভিযোগ আছে। তাকে নিয়ে শালিশ বিচার হয়েছে, এক কথায় খারাপ লোক। সুজন একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং বিএনপির রাজনীতি করে ১৭ বছর সৈরাচার সরকারের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে। মামলা খেয়েছে নির্যাতিত হয়েছে এবং ভালো ছেলে, তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছে মিথ্যা বানোয়াট অপপ্রচার এবং বিএনপিকে ক্ষতি করার জন্য।

এ বিষয়ে সম্রাট হাসান সুজন তার ফেসবুকে লিখেছেন, সম্প্রতি ২৩নং ওয়ার্ড কমিশনার আবুল কাউছার আশা নামে এক ব্যক্তি আমাদের এলাকার এক ভূমিদস্যু বালু ব্যবসায়ী নুরুকে দিয়ে একটি ভিডিও তৈরী করে সামাজিক মাধ্যমে ছেড়েছেন। তিনি আমাকে চাঁদাবাজ উপাধি দিয়ে সামাজিকভাবে আমার রাজনৈতিক এবং ব্যক্তিগত মান সম্মান এবং রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য তিনি আমাকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানির করছেন।

ভিন্ন দিকে উপরোক্ত এই ঘটনার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনে শিক্ষার্থী নিহতের ঘ্টনায় দায়েরকৃত হত্যা মামলার আসামী সৌরভকে সঙ্গে নিয়ে সম্রাট হাসান সুজনকে হত্যার উদ্দেশ্যে সুজনের বাড়িতে গিয়ে এবং এলাকায় অস্ত্রের মহড়া দিয়েছেন কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা। এ সংক্রান্ত ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে কাউন্সিলর আশাকে তার লোকজন নিয়ে মহড়া দিতে দেখা যায়।

গত ৩০ আগস্ট শুক্রবার বিকেলে কাউন্সিলর আশার নেতৃত্বে হত্যা মামলার আসামী সৌরভ, নূর হোসেন, নুর হোসেনের ভাই আনসার আলী সহ কয়েকশ বাহিনীর সদস্য দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সম্রাট হাসান সুজনের বন্দর ইউনিয়নের ভদ্রাসন এলাকার বাড়িতে যান। কয়েক দফা মহড়া দেয় বাহিনীটি। সুজনের বাড়ির সামনে দীর্ঘক্ষণ অবস্থানও করেছিল তারা। কিন্তু সুজন ওই সময় বাড়িতে ছিলেন না। শুক্রবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত সুজনকে হত্যার উদ্দেশ্যে কয়েক দফা হত্যাচেষ্টায় মহড়া দিয়েছে তারা।

এখানে উল্লেখ্যযে, কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা বন্দরের বিভিন্ন সেক্টর নিয়ন্ত্রণ নিতে উঠেপড়ে লেগেছেন। যে কারনে যাকে তিনি বাধা কিংবা পথের কাটা মনে করছেন তাদেরকে দমাতে তিনি কাজ করছেন, হুমকি ধমকি ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। সম্রাট হাসান সুজন মুলত রাজনীতি করছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নেতৃত্বে। সাখাওয়াত ও টিপুর সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধ রয়েছে সাবেক এমপি কালাম ও তার পুত্র আশার সঙ্গে। সে কারনেই মুলত সাখাওয়াত ও টিপুর অনুগামীদের বিরুদ্ধে নেমেছেন আশা।