সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
গত সাড়ে ১৫টি বছর স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও জাতীয়পার্টির মঞ্চে ওঠে রাজনীতি করেছেন আতাউ রহমান মুকুল। প্রকাশ্যে ধানের শীষের বিরোধীতা করে লাঙ্গলের পক্ষে কাজ করেছেন। শেষতক তাকে দল থেকে বহিস্কারও করেছিল। তারই ভাতিজা আবুল কাউসার আশা নাসিকের ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে আওয়ামীলীগের নেত্রী সেলিনা হায়াত আইভীর পা ছুয়ে সালাম করে ফুল দিয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানান।
এ ছাড়াও তৎকালীন এমপি সেলিম ওসমানের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে একাধিকবার মঞ্চে ওঠেছেন আশা। সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই সেই আশার কাছে আওয়ামীলীগ ও জাতীয়পার্টিঘেষা কথিত বিএনপির নামধারীই হয়ে ওঠবেন বিশ্বস্ত কর্মী। সন্ত্রাসী খান মাসুদ ও দুলাল প্রধানের এক সময়কার দুর্ধর্ষ হাতিয়ার শাহিন আহমেদ সৌরভই এখন আবুল কাউসার আশার কাছে বিএনপির সাচ্চা বিশ্বস্ত কর্মী।
৭ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ নগরীতে শোডাউন করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সৌরভের পক্ষে আশার সাফাই গাওয়ার বিষয়ে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা উপরোক্ত কথাগুলো বলেন এবং আশার ভুমিকা নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছেন। কারন একদিন আগে যারা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আুব আল ইউসুফ খান টিপুর উপর হামলা করেছিল সেইসব হামলাকারীদের দেখা গেলো আশার শোডাউনে।
বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক, নাসিকের সাবেক কাউন্সিলর সাইফুদ্দীন মাহামুদ দুলাল প্রধান ও বন্দর উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খান মাসুদের বাহিনীর অন্যতম হাতিয়ার হয়ে ওঠেছিলেন শাহিন আহমেদ সৌরভ। দুলাল প্রধান ও খান মাসুদের সঙ্গে বন্দরের বিভিন্ন সেক্টর নিয়ন্ত্রণে সৌরভ ভুমিকা রাখেন। এক সময় বিএনপির কর্মী হিসেবে পরিচিত থাকলেও গেল প্রায় ১০বছর যাবত সে আওয়ামীলীগের হয়ে বন্দরে ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিল। ছাত্র জনতা আন্দোলনের সময়ও সৌরভ খান মাসুদ ও দুলাল প্রধানের হয়ে কাজ করেছেন এবং আন্দোলন দমানোর জন্যসন্ত্রাসী করেছেন। সেই কারনেই শাহিন আহমেদ সৌরভ ছাত্র হত্যা মামলার আসামীও হয়েছেন।
৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকেলে বন্দর ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজিত সন্ত্রাসী চাঁদাবাজী দখলবাজি রোধে এ সমাবেশে যোগদান করতে যাওয়ার পথে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুর উপর হামলা চালায় ওই খান মাসদ ও দুলাল প্রধানের সহযোগী শাহিন আহমেদ সৌরভ, রাজিব, নুর হোসেনের নেতৃত্বে। টিপুর উপর এই সন্ত্রাসী হামলায় সৌরভ, রাজিব, নূর হোসেন ছাড়াও আরো ছিল সৈয়ম, শিশু, রবিন, ডিপ্টি, রহমান, বাপ্পী, রিফাত, রাজু, শাহাদাত হোসেন, হেবফিজুল্লাহ, রাকিব, সানি, জুয়েল,বশির আহমেদ আকাশ, জুয়েল, মামুন, মোস্তাক, টুটুল, তন্ময় সহ অর্ধ সন্ত্রাসী। টিপুকে মারাত্মকভাবে মারধর করে গুরুত্বর জখম করে। কয়েক দফা হামলা চালানো হয়। টিপুর সাথে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীরাও পিটিয়ে জখম করা হয়।
অথচ একদিন পর ৭ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল ১১টায় নাররায়ণগঞ্জ নগরীতে ওইসব সন্ত্রাসীদের নিয়ে শোডাউন করেছেন মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা। শোডাউন শেষে তিনি সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শাহিন আহমেদ সৌরভকে বিএনপির নির্যাতিত কর্মী দাবি করেন এবং উল্টো টিপুকে শাসিয়ে বক্তব্য রাখেন। শোডাউনের ব্যানারেও টিপুর ছবিকে বিকৃতভাবে ছাপানো হয়।
ভিন্নদিকে ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, বন্দর ইউনিয়নের বহু অপকর্মের হোতা নূর হোসেনও খান মাসুদ ও দুলাল প্রধানের ঘনিষ্ট সহচর হিসেবে ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিলেন। এলাকার নিরীহ মানুষদের জমি দখল করে জোরপূর্বক বালু ভরাট, ড্রেজার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, মানবপাচার, মাদক ব্যবসায়ীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়া, কিশোর গ্যাং লালন পালন করা সহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত নূর হোসেন। একই সঙ্গে বিগত সময়ে খান মাসুদ ও দুলাল প্রধানের হয়ে বিএনপি জামাতের নেতাকর্মীদের উপর নির্যাতন চালায়। আন্দোলন সংগ্রাাম আসলেই নেতাকর্মীদের নামের তালিকা নূর হোসেন থানায় জমা দিতো এবং বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়িতে হানা দিতো , পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দিতো।
সেই নূর হোসেনই কাউন্সিলর আশার কাধে ভর করে বিএনপির রাজনীতিতে ঢুকে যাচ্ছিল। নূর হোসেন বিএনপির ব্যানারে বন্দরে কর্মসূচি পালন করতে গেলে হামলা মামলা জেলজুলুমে নির্যাতিত নেতাকর্মীরা বাধা দেন এবং নূর হোসেনের কর্মসূচি বাতিল করে দেন। এর জন্য বন্দর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সম্রাট হাসান সুজনের উপর নানা বিষয়ে মিথ্যাচার করে দোষ চাপাতে থাকেন নূর হোসেন। খান মাসুদ ও দুলাল প্রধানের সহযোগী হওয়ায় মুলত নূর হোসেনকে বিএনপিতে মেনে নিতে পারছিল না সুজন। যে কারনে সুজনকে দমাতেই বিরাট সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সৃষ্টি করেছেন নূর হোসেন। সেই আশা ও মুকুলদের উপর ভর করে নূর হোসেন, শাহিন আহমেদ সৌরভ, রাজিবরা দলের ত্যাগী নির্যাতিত নেতা টিপুর উপর সন্ত্র্রাসী হামলা চালানো।