সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, আমাদের মাঝে চলে এসেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। নারায়ণগঞ্জে যাতে পরিপূর্ণ নিরাপত্তা এবং আনন্দ উৎসাহের মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসব পালিত হয়, তার জন্য অতন্দ্র প্রহরী হয়ে আমরা আপনাদের পাশে থাকব। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদের সাথে ভার্চুয়াল মিটিং করে এ ব্যাপারে কঠোর দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। কোনো জেলা বা মহানগরে যদি দুর্গোৎসব চলাকালীন সময়ে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে তাহলে সে জেলা বা মহানগর কমিটিকে জবাবদিহি করতে হবে বলে হুঁশিয়ারিও জানিয়েছেন তিনি।
আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসব সফল ও সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ১৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে গলাচিপা রামকানাই মন্দিরে এই মত বিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত উপস্থিত হিন্দু নেতৃবৃন্দের দাবির প্রেক্ষিতে বলেন, যে সকল হিন্দু নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে গত ৫ আগস্টের পরে মামলা হয়েছে, আমি প্রশাসনের সাথে কথা বলবো যাতে দুর্গাপূজার আগে তাদেরকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা না হয়। সিদ্ধিরগঞ্জের লক্ষ্মীনারায়ন কটন মিল মন্দিরে পূজা আয়োজন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা খুব শীঘ্রই সমাধান করা হবে বলেও আশ্বাস প্রদান করেন অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত।
তিনি আরো বলেন, বিগত দিনগুলোতে একটি শব্দ মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরি করে রেখেছিলো সেই শব্দটি হচ্ছে ধর্মীয় সংখ্যালঘু। গত ৫ আগস্টের পর থেকে এই শব্দটি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এখন কেউ ধর্মীয় সংখ্যালঘু না। আমরা সবাই সমান, সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। মুসলমান হিসেবে আমার এই দেশে যতটুকু অধিকার, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান সকলের সমান অধিকার। এদেশে আমরা সবাই বাংলাদেশী হিসেবে বসবাস করবো।
দুর্গাপূজার মন্ডপগুলোতে হিন্দি সিনেমার গান না বাজিয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগীত বাজানোর আহ্বান জানিয়ে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত বলেন, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে দুর্গোৎসব পালন করবেন। মন্ডপগুলোতে ধর্মীয় গান বাজাবেন, হিন্দি বা বাংলা সিনেমার গান বাজানো থেকে বিরত থাকবেন।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী। এখানে সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠান জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালনের হাজার বছরের ঐতিহ্য রয়েছে। এবারও আমরা শারদীয় দুর্গোৎসবে সেই ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবো। সকল সনাতন ধর্মাবলম্বী ভাইবোনদের সহযোগিতায় ও সকল রাজনৈতিক দল এবং প্রশাসনকে সাথে নিয়ে আমরা উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা আয়োজনে বদ্ধপরিকর। কেউ কোনো গুজবে কান দিবেন না, গুজব প্রচার করবেন না। যদি কোথাও কোনো সমস্যা দেখা দেয় তাহলে আপনারা মন্দির কমিটি, পূজা উদযাপন পরিষদ এবং প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করবেন। সবাইকে শারদীয় দুর্গোৎসবের আগাম শুভেচ্ছা।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা শংকর কুমার দে’র সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শিখণ সরকার শিপন, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বিষ্ণুপদ সাহা ও সাধারণ সম্পাদক সুশীল দাসের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু।
আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের উপদেষ্টা প্রবীর কুমার সাহা, হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের সম্মানিত সাবেক ট্রাস্টি ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের উপদেষ্টা পরিতোষ কান্তি সাহা, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ূন কবির, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এইচ এম আনোয়ার প্রধান, মহানগর ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানা, মহানগর বিএনপির নেতা সরকার আলম, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রদীপ কুমার দাস, মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি লিটন চন্দ্র পাল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সহ সভাপতি উত্তম সাহা, হিমাদ্রি সাহা হিমু, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি তিলোত্তমা দাস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বিশ্বাস, সোনারগাঁ উপজেলার সভাপতি লোকনাথ দত্ত, সিদ্ধিরগঞ্জের সভাপতি শিশির ঘোষ অমর, সাধারণ সম্পাদক খোকন বর্মন, ফতুল্লা থানার সভাপতি প্রদীপ মন্ডল, রূপগঞ্জ উপজেলার সভাপতি গনেশ পাল, আড়াইহাজারে সভাপতি হারাধন চন্দ্র দে, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের দপ্তর সম্পাদক অভিরাজ সেন সজল, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষ্ণ আচার্যসহ বিভিন্ন পূজা মন্ডপের প্রতিনিধিবৃন্দ।