দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:
আগামী ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে সোনারগাঁয়ে মহাজোটের প্রার্থী ঘোষণা নিয়ে নাটকীয়তা অপেক্ষা করছে। জাতীয়পার্টিতে হয়েছে নতুন মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা। পুরো পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে জাতীয়পার্টি থেকে মনোনিত প্রার্থীদের হিসেব নিকেশ। সোনারগাঁয়ে জাতীয়পার্টির মনোনিত প্রার্থী লিয়াকত হোসেন খোকাকে প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত আসলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা আশা দেখছেন স্বতন্ত্র মনোনয়ন দাখিল করা আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতকেই মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হতে পারে। এতেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
যদিও নির্বাচন কমিশন বলছে- মনোনয়ন দাখিলের পর প্রার্থীতা বৈধতা ঘোষণা হলে পরে আর দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করার সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে কায়সার হাসনাতকে মহাজোটের প্রার্থী ঘোষণা করা হলেও তাকে ভিন্ন প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে। আবার এখানে এমনটাও হতে পারে জাতীয়পার্টির মনোনয়ন নিয়েই নির্বাচনে যাবেন এমপি খোকা। আওয়ামীলীগের নেতৃত্বধীন মহাজোট থেকে কোন ঘোষণা না আসলে নেতাকর্মীরা ধরে নিবেন এখানে প্রার্থীদের নির্বাচনের বিষয়ে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। এর সম্ভাবনার কারন হিসেবে বলা যায় এখনও জাতীয়পার্টির প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করার জন্য আওয়ামীলীগ থেকে কেন্দ্রীয় কোন নির্দেশনা সোনারগাঁও আওয়ামীলীগ পায়নি। যদি এমনটাই থেকে যায় তাহলে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা কায়সার হাসনাতের পক্ষেই ঝাপিয়ে পড়বেন। কারন যে কজন প্রার্থী রয়েছেন তাদের মধ্যে ভোটের হিসেবে ও যোগ্যতায় কায়সার হাসনাতই রয়েছেন এগিয়ে।
নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন- নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫টি সংসদীয় আসনের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনটি নিয়ে বেশ আলোচিত হয়ে আসছে। হয়তো আগামী ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে নাটকীয় কিছু ঘটলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কারন এখনও মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনিত বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকাকে ঘোষণা করা হয়নি। ৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার জাতীয়পার্টির নতুন মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা একটি টিভি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ৯ ডিসেম্বরের পরে মহাজোটের প্রার্থী চূড়ান্ত ঘোষণা আসবে। কোন কোন আসনগুলো মহাজোটকে ছাড় দেয়া হয়েছে সেটা ওইদিন পরেই বলা যাবে।’ মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে লিয়াকত হোসেন খোকা ঘোষণা না নিয়ে আসতে পারলে ভোটের হিসেবে তিনি বেশ পিছিয়েই পড়বেন।
এ আসনে ভোটের হিসেবেও ঘটতে পারে নাটকীয়তা। এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পান আজহারুল ইসলাম মান্নান ও খন্দকার আবু জাফর। কিন্তু আবু জাফর অনেকটা মান্নানের প্রার্থীতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেই তিনি মনোনয়ন পত্র দাখিল করেননি। এখানে মনোনয়ন পাননি সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম। জাফর মুলত রেজাউল করিমের ঘনিষ্ঠজন। বিএনপিতে তাদের রয়েছে ভোট ব্যাংক। তারা পুরোদমে মান্নানের পক্ষে কাজ না করলে এখানে মান্নানের জয়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ। রেজাউল করিম ও জাফর তাদের অনুসারিদের নিয়ে মান্নানের পক্ষে নির্বাচনী কাজে না থাকলে ধানের শীষের পরাজয় অনেকটা সম্ভাবী।
এক্ষেত্রে সুযোগ নিতে পারেন কায়সার হাসনাত। নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোশারফ হোসেন ও অনন্যা হুসেইন মৌসুমী। মৌসুমী ভোট টানবে নারী ও জাতীয়পার্টির নেতাকর্মীদের একাংশের। এক্ষেত্রে এমপি খোকার ভোট মাইনাস হবে। যদিও গত রবিবার মোশারফ হোসেন ও মৌসুমীর মনোনয়ন বাতিল করা হলে তারা আপীল করেছেন। আপিলে বৈধতা পেলেই তারা নির্বাচনে নামতে পারবেন। আবার মোশারফ হোসেন শেষ মুহুর্তে হয়তো তার ভাতিজা কায়সার হাসনাতকে সমর্থন দিয়ে সরে যেতেও পারেন। এক্ষেত্রে কায়সার যাবে আরও এগিয়ে। কায়সার এমপি থাকাকালীন সময়ে তার দ্বারা মানুষের বড় ধরনের উপকার না হলেও ক্ষতি হয়নি। সোনারগাঁয়ে তার ক্লিন ইমেজ একজন সাদা মনের নেতা হিসেবেই তাকে চিনেন। যদিও আওয়ামীলীগের একটি অংশের সঙ্গে রয়েছে তার দূরত্ব। যদিও মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা না আসে সেক্ষেত্রে আওয়ামীগের প্রায় সবাই নামবেন কায়সার হাসনাতের পক্ষে। তবে এমন হিসেবে নিকেষের মাঝে সুযোগ খুজছেন মৌসুমীও। এখানে মহাজোটের প্রার্থী ঘোষণা নিয়ে ও ভোটের হিসেব নিয়ে বেশ বেকায়দায় রয়েছেন বর্তমান এমপি। এখন দেখার বিষয় কি ঘটতে যাচ্ছে সোনারগাঁও আসনটি নিয়ে।