‘শামীম ওসমান অনেকের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে, আমি কারো হাতে লাঠিও তুলে দিবো না’

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

হত্যা নির্যাতন মিথ্যা মামলা দিয়ে স্বৈরশাসক তাদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন জেলা বিএনপর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন।

তিনি বলেন, গত ষোল বছর পুলিশ দিয়ে গুলি চালি আন্দোলন দমন করতে চেয়েও পারেনি। ছাত্র জনতার বুকে নির্মম গুলি চালিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি তাদের। ৫আগস্ট বোনকে নিয়ে স্বৈরশাসক হাসিনা। নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েও আমরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাইনি। আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে গেছি।

২০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকেলে ফতুল্লা থানাধীন এনায়েত নগর ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওই কথা বলেন তিনি।

সাবেক এমপি শামীম ওসমানকে ইঙ্গিত করে গিয়াসউদ্দিন বলেন, এখানে একজন গডফাদার ছিলো। ৫ আগস্ট সেও পালিয়েছে। তিনি কিন্তু তার কোনো কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে করে নেননি। এবার আপনারা ভেবে দেখুন আপনারা এতদিন কার সঙ্গে ছিলেন। আমরা কখনও দেশ ছেড়ে যাইনি। কখনও যাবো না।

তিনি বলেন, যারা বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে অপকর্ম করবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। মানুষ যাকে ভালেবাসবে সেই বিএনপি নেতা হবে। এখানে শামীম ওসমান রাজনীতি করেছেন, অনেকের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছেন। আমি কারো হাতে একটি লাঠিও তুলে দিবো না। কোনো সন্ত্রাসীর ঠাঁই বিএনপিতে হবে না।

তিনি আরও বলেন, প্রশাসন অস্ত্র খুঁজে পায় না। তাদের বলবো দৈনিক পত্রিকাগুলে দেখুন। সেখানে দেখেন কারা অস্ত্র ব্যবহার করেছিল। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে কারা গুলি করেছিলো। সেসব অস্ত্র উদ্ধার করুন। নয়তো মানুষের কাছে আপনাদের ইমেজ পুনরুদ্ধার হবে না। আবারও প্রশ্নবিদ্ধ হবেন।

তিনি বলেন, বিএনপিতে নতুন করে কাউকে আমদানি করতে হবে না। কারো অত্মীয় স্বজন যদি আওয়ামী লীগ করে তাকে যদি সাপোর্ট করতে চান তাহলে আপনাকেও ছাড় দেয়া হবে না। আমি যতদিন এই দায়িত্বে থাকবো ততদিন পর্যন্ত এমন কোনো অনৈতিক কাজে কেউ জড়িত থাকলে তাকে ছাড় দিবো না।

থানা পুলিশ যেন দালালের আখড়া না হয় সেদিকে নজর দেয়ার আহ্বান জানিয়ে গিয়াসউদ্দিন বলেন, বিগত সময় স্বৈরশাসকের কারণে পুলিশের মনোবল ভেঙ্গে গিয়েছে। আমরদ পুলিশকে সাহায্য করতে চাই। সেকারণে আপনাদের সচেষ্ট থাকতে হবে। মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। আবারও যদি আপনারা ঘুষ বাণিজ্যে লিপ্ত থাকেন, মানুষের সেবা না করেন তাহলে মানুষ আপনাদের আবারও দূরে সরিয়ে দিবে।

তিনি বলেন, সর্বোচ্চ টেক্স দেয়া হয় এই ফতুল্লা থেকে। ফতুল্লা একটি শিল্প অধ্যুষিত এলাকা। কিন্তু সেভাবে এই এলাকার উন্নয়ন হয়নি। আমারা চাই এই এলাকাকে সিটির অন্তর্ভুক্ত করে এই এলাকার উন্নয়ন করতে হবে।

কোনো ভাইয়ের রাজনীতি না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, স্লোগান হবে একমাত্র জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া আর তারেক রহমানের। রাজনীতি করতে হবে তাদের। আমার ছবি দিয়ে কেনে ব্যানার ফেস্টুন করবেন না। এসব দেখলে মানুষ ভয় পায়। আপনাকে যদি মানুষ ভয় পায় তাহলে আপনি যত বড় নেতা হোন তাকে সঙ্গে নেয়া হবে না। মানুষের জন্য কাজ করতে হবে।

এনায়েত নগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহৃুদুল হক আলমগীরের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন, ফতুল্লা থানা বিএনেির সাবেক সভাপতি খোন্দকার মনিরুল ইসলাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি সুলতান মাহমুদ মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী বারী ভূইয়া, যুগ্ম সম্পাদক আক্তার হোসেন, কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বিল্লাল হোসেন, ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাসান মাহমুদ পলাশ, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন প্রমূখ। জনসভা সঞ্চালনায় ছিলেন এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান সুমন।