সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ- বারদী ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সহ-সভাপতি পদে বহাল থেকে নিজেকে বিএনপি নেতা পরিচয় দিয়ে দাবিয়ে বেড়াচ্ছে কবির হোসেন মৃধা। তাদের দাবি- গত ৫ আগস্ট শেষ বিকেল থেকে তিনি বিএনপি নেতা সেজে বসেছেন। বিগত সাড়ে ১৫ বছর যেসব বিএনপির নেতাকর্মীরা আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে হামলা মামলা জেল জুলুমের শিকার হয়েছেন সেইসব নেতাকর্মীদের উল্টো হুমকি ধমকি ও অপপ্রচার করিয়ে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন কবির হোসেন মৃধা। বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিমের কাধে ভর করে এলাকা ধাবিয়ে বেড়াচ্ছে কবির মৃধা। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মিথ্যা দাবি করেছেন এক সময়ের ছাত্রনেতা কবির হোসেন মৃধা।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, সোনারগাঁও উপজেলার বারদী ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে নাম আসে কবির হোসেন মৃধার। এ ছাড়াও তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রাথমিক সদস্য ফরম পুরণ করে ফেসবুকেই সেই ফরম প্রকাশ করেছিলেন। বিগত সাড়ে ১৫ বছর বিএনপি ও বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে নানান কটাক্ষ করে ফেসবুকে মন্তব্য করতেন তিনি। আওয়ামীলীগের নানা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতেন। মাঝে বাদ দেননি জাতীয় পার্টিও। আওয়ামীলীগের রাজনীতি করে আবার জাতীয় পার্টির সঙ্গেও সখ্যতা গড়েছিলেন তিনি।
কবির হোসেন মৃধা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক ইমন কুমার বনিকের কর্মী হয়ে প্রচারণায় ছিলেন। এ ছাড়াও আওয়ামীলীগ নেতা এরফান হোসেন দ্বীপের প্রচার প্রচারণায় ছিলেন। সরকারি দলের দাপট খাটিয়ে হয়েছেন স্কুল কমিটির সভাপতিও। সেই সুবাধে জাতীয় পার্টির তৎকালীন এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার সঙ্গেও সখ্যতা গড়েছেন। শেখ মুজিবুর রহমানের প্রচারপত্র ও বই বিতরণেও সক্রিয় ছিলেন কবির হোসেন। প্রতিটা জাতীয় নির্বাচনে সরকারি দলের পক্ষে নির্বাচন করেছেন তিনি।
বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ফেসবুকে নিয়মিত বিএনপি ও বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতেন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনেও আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ছিলেন। কিন্তু হটাত করে গত ৫ আগস্টের শেষ বিকেল থেকে ফেসবুকে অরাজনৈতিক কর্মী হিসেবে দাবি পোস্ট করেন। এর দুদিন পর সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিমের সঙ্গে কর্মসূচিতে নামেন কবির হোসেন মৃধা, হয়ে যান বিএনপির নেতা! এখন তিনি এলাকায় বিএনপি নেতা দাবি করে আসছেন। বারদী আশ্রম ও এর আশপাশের এলাকা ফুটপাত দখলে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে।
তবে এসব বিষয়গুলো মিথ্যা বানোয়াট ও অপপ্রচার দাবি করে কবির হোসেন মৃধা বলেন, আমি নিজেই আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে ৮টি মামলার আসামী হয়েছি। আমি আওয়ামীলীগের আমলে নির্যাতিত। আমি কিভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর অত্যাচার করবো? কোনো কারনে কেউ যদি সন্দেহবসত আমাকে অহেতুক দোষারোপ করে তাহলে আমার কি করণীয়? আমি একজন শিক্ষানুরাগী হিসেবে বিদ্যালয়ের উন্নয়নের স্বার্থে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে মিটিংয়ে গিয়েছি, এর বাহিরে আওয়ামীলীগ- জাতীয় পার্টির দলীয় কর্মসূচিতে ছিলাম না। আমাকে না জানিয়ে কে বা তারা বারদী ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটিতে নাম বসিয়ে দেয়। আমি তা জেনে সাথে সাথে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের ঘোষণা করি এবং ফেসবুকেও বিষয়টি জানিয়ে দেই। আমি একজন সমাজকর্মী হিসেবেই সমাজের ভালো কাজে থাকতে চাই। যারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়েছে, তারা মুলত প্রতিহিংসার বসবর্তী হয়ে প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে। আমি কারো বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র করিনা, দয়া করে আপনারাও আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র থেকে বিরত থাকুন।