খোরশেদ অটো চয়েস: মহানগর বিএনপির কমিটি ভাঙ্গলেই নেতৃত্ব পাবেন তিনি

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

হটাত করে গুঞ্জন শুরু হয়েছে যে, যে কোনো সময় ভেঙ্গে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির কমিটি। তবে বর্তমান কমিটির নেতারা বলছেন এটা স্রেফ গুজব। কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার কোনো কারন নাই। কিন্তু কমিটি ভেঙ্গে যাওয়ার আলোচনা হচ্ছে বেশ জোরেসোরে। গত সপ্তাহে মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালামকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডেকে নেয়ার পর এই আলোচনা আরো বেশি ডালপালা মেলেছে। যদি তাই হয় তাহলে কাদের হাতে আসতে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নতুন নেতৃত্ব? এই আলোচনায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, কমিটি ভেঙ্গে নতুন কমিটি হলেই সেখানে নেতৃত্বে থাকবেন মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি সদ্য সাবেক কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ।

খোরশেদের এমন নিশ্চিয়তার বিষয়ে রাজনৈতিক বোদ্দারা বলছেন, মহানগর বিএনপির কমিটির নেতৃত্বে আহ্বায়ক পদে আছেন অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব পদে আছেন অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসূফ খান টিপু। কমিটি ভেঙ্গে গেলে রানিং কমিটির নেতাদের হাতেই নতুন করে নেতৃত্ব ওঠে আসার ইতিহাস খুবই কম। সেক্ষেত্রে কমিটি ভাঙ্গলে তাদের পুনরায় নেতৃত্ব আসাটা অনিশ্চিত। ফলে তাদেরকে নেতৃত্ব ছাড়তেই হবে যদি কমিটি কেন্দ্রীয় বিএনপি ভেঙ্গে দেয়। সেক্ষেত্রে হয়তো কমিটির সাধারণ সদস্য পদে জায়গা হতে পারে তাদের। বর্তমান পরিস্থিতি এমনটা হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, এই কমিটি সামনের এক দেড় বছর টিকবে সেটা হলফ করে বলা যাচ্ছেনা।

সাখাওয়াত হোসেন খান ও আবু আল ইউসুফ খান টিপুর বাহিরে মহানগর বিএনপির কমিটি গঠনের বিষয়ে সর্বপ্রথম আলোচনায় আছেন, অ্যাডভোকেট আবুল কালাম। তিনি এর আগের কমিটিতে সভাপতি ছিলেন। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির চারবারের সাবেক এমপিও তিনি। তার পিতাও ছিলন বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন নেতা। এরপর আলোচনায় মহানগর বিএনপির নেতৃত্ব আসা নিয়ে আলোচনায় আছেন তারই পুত্র মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সদ্য সাবেক কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা। তিনি মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল, মহানগর ছাত্রদলেরও সাবেক সভাপতি। নারায়ণগঞ্জ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি ও কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। তিনি বর্তমানে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক পদেও রয়েছেন।

এ ছাড়াও আলোচনায় আছেন মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমান মুকুল। তিনি বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হলেও বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন। তিনি বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক একাধিকবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। তিনি সাবেক এমপি আবুল কালামের চাচাতো ভাই এবং আশার চাচা। এদের সঙ্গে সর্বোত্তম আলোচনায় আছেন কাউন্সিলর খোরশেদ।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, আবুল কালামকে আহ্বায়ক পদে রাখা হলে কখনই তার ভাই মুকুল কিংবা তার ছেলে আশাকে সদস্য সচিব পদে রাখা হবেনা। এক্ষেত্রে কালামের সঙ্গে সদস্য সচিব পার্টনার হবেন খোরশেদ। যদি কালাম তার ছেলের হাতে নেতৃত্ব আনতে চান সেক্ষেত্রে আশার সঙ্গে কালামের ভাই মুকুল নেতৃত্বে আসতে পারবেন না, এক্ষেত্রে খোরশেদ আহ্বায়ক ও আশা হতে পারে সদস্য সচিব। যদি মুকুল নিজেও নেতৃত্ব আসেন সেক্ষেত্রেও তার ভাতিজা আশা কিংবা ভাই কালাম তার সঙ্গে নেতৃত্বে পাচ্ছেন না। কারন একই পরিবারের দুই সদস্যের হাতে বিএনপি নেতৃত্ব তুলে দিবে না। ফলে যেদিকেই যাক নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির কমিটি ভাঙ্গলেই নেতৃত্ব পাচ্ছেন খোরশেদ, হয় আহ্বায়ক নয়তো সদস্য সচিব। এই চারজনের বাহিরে মহানগর বিএনপির নেতৃত্ব দেয়ার মত যোগ্য কেন্দ্রীয় বিএনপির কাউকে মনে করছেনা।

অন্যদিকে খোরশেদের ভাই তৈমুর আলম খন্দকার জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা থেকে বহিস্কৃত হয়ে তৃণমুল বিএনপির মহাসচিব পদে দায়িত্ব পালন করছেন। তবে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির রাজনীতিকে চাঙ্গা করতে খোরশেদের ক্ষেত্রে তৈমূর আলমের বিষয়টি আমলে নিচ্ছেনা কেন্দ্রীয় বিএনপি। কেন্দ্রীয় বিএনপি চায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি হবে একটি শক্তিশালী সংগঠন। একই সঙ্গে নির্বাচনকেন্দ্রীক হবে একটি শক্তিশালী দল। যারা জনগণের ভোট টানতে সমর্থ হবে। খোরশেদ সিটি কর্পোরেশন হওয়ার পর টানা তিনবার নির্বাচিত কাউন্সিলর। এর আগেও পৌরসভা থাকাকালীন সময়ে তিনি একবার কাউন্সিলর হোন। ফলে টানা চারবার তিনি কাউন্সিলর। আবুল কালামও চারবারের এমপি। ফলে বেশি সম্ভাবনা দেখক যাচ্ছে কালাম ও খোরশেদের নেতৃত্বে আসতে পারে মহানগর বিএনপির কমিটি।

দুই পরিবারের বিশাল কর্মী সমর্থকরা মুখিয়ে আছেন এমন একটি কমিটির প্রত্যাশায়। তাদের বিশাল কর্মী বাহিনী রাজপথে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তৈমূর আলমের কারনে হতাশায় ভুগলেও সেই হতাশা কাটতে পারে খোরশেদের নেতৃত্বে আসার মাধ্যমে। তৈমূর আলম তৃণমুল বিএনপির রাজনীতিতে গেলেও খোরশেদ সাংবাদিক সম্মেলন করে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে তিনি বিএনপিতে তার নেতাকর্মীদের নিয়ে সক্রিয় থাকেন। মহানগর যুবদলের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার সময় মহানগরীর প্রতিটা এলাকায় খোরশেদের নিজস্ব কর্মী সমর্থক রয়েছে।