হীন স্বার্থে হিন্দু সম্প্রদায়কে ব্যবহার করেছে স্বৈরাচারী সরকার: গিয়াসউদ্দীন

ডেস্ক রিপোর্ট, সান নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেছেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাইয়েরা বলেছেন পুর্বের চাইতে বেশী আনন্দ উৎসাহ ও নিরাপত্তা নিয়ে এবার তারা দুর্গা পূজার প্রস্তুতি নিয়েছেন। ছোট বেলায় বুঝ হওয়ার পর আমরা যারা স্কুলে গিয়েছিলাম বন্ধুদের সাথে সেভানে হিন্দু আর মুসলিম ছিলাম। পূজায় অনুদানের জন্য এমন আয়োজন কখনো দরকার হয়নি। পূজায় নিরাপত্তা দেয়ার জন্য এমন আয়োজন করা হয়েছে এটা আমার কাছে অবাক লেগেছে। দেশটা তো আমাদের সকলের। মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেছি, হিন্দু-মুসলিম, বোদ্ধ-খ্রিস্টান সবাই রক্ত দিলাম। কিন্তু সেখানে পূজার আয়োজন করতে এমন অনুষ্ঠান করতে হয় কেনো? যেদিন থেকে স্বৈরাচারী সরকার নিজের স্বার্থ হাসিল করার জন্য হিন্দু সম্প্রদায়কে, তাদের ব্যাক্তিগত সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করা শুরু করলো । সেদিন থেকেই জন্ম নিলো এমন অবস্থা। এই বিরোধ যারা সৃষ্টি করেছে তাদের সময় আপনারা হিন্দু সম্প্রদায়রা নিশ্চই বলতে পারেন নাই, স্বাভাবিক ভাবে পূজা উদযাপন করেছেন।

১ অক্টোবর মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) গলাচিপা শ্রী শ্রী রামকানাই জিউর মন্দিরে, আসন্ন শারদীয় দূর্গাপূজা উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি এবং জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের যৌথ মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে গিয়াসউদ্দিন বলেন, আপনারা বলতে পারছেন স্বাভাবিক ভাবে পূজা উদযাপন করছেন কিন্তু আমরা বলতে পারছি না। কারণ আমরা ভীত-সংকিত অবস্থায় আছি। প্রতি স্বৈরাচার হিন্দু সম্প্রদায়কে ব্যবহার করে, হিন্দু সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠানে আঘাত হেনে, ধর্মীয় উপাসনালয় আঘাত এনে তাদের রাজনৈতিক স্বার্থকে হাসিল করার জন্য চেষ্টা করেছে। আর এগুলার দোষ চাপানো চেষ্টা করেছে আমরা যারা তাদের পূর্বের বিরোধী ছিলাম, তাদের উপর। আপনারা নিশ্চিন্তে পূজা উদযাপন করবেন, কিন্তু আমরা কিন্তু আমরা ভীত, এই হিন্দু সম্প্রদায়কে দিয়ে তারা অনেকদিন রাজনীতি করেছে। অতীত স্বৈরাচার যে কোন অঘটন ঘটাবে না আর এই ঘটনার দায়ভার অন্যদের উপর ফালাবে না সেটা কিন্তু বলা যাচ্ছে না। এই জন্য আমরা ভীত আছি। কিন্তু আপনাদের ভীত হওয়ার কোন কারণ নাই, কেননা আপনারা আজকে নিরাপদ। আপনাদের ব্যবহার করার জন্য আমরা রাজনীতিবীদরা আসি না। আপনাদের ব্যবহার করবো না, আপনারা যাকে খুশি ভোট দিবেন। এটা আপনাদের গণতান্ত্রীক অধিকার, এই অধিকারকে সম্মান করে বিএনপি।

তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করে আমাদের একটা আদর্শ উপহার দিয়ে গেছে, দেশপ্রেম ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করা। যেখানে কোন ধর্ম বর্ণ নাই, যে দেশ সকলের জন্য। আপনাদের অনুরোধ করবো আপনারা দয়া করে কেউ কোন দলের ব্যবহার হবেন না, কোন দলের নিদ্রিষ্ট ব্যাক্তি হিসেবে চিহ্নিত হবেন না। যদি চিহ্নিত হন তাহলে যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন পূজার অনুষ্ঠানে এমন নিরাপত্তার জন্য সভা করতে হবে। আর যদি না করেন তাহলে ছোট বেলায় যে পূজা দেখেছি সেখানে ফিরে যেতে পারবেন। কোনটায় থাকতে চান সেটা আপনাদের বিষয়।

তিনি আরও বলেন, আগে স্বৈরাচার ক্ষমতায় ছিলো, যারা এখানে ব্যবসায়ী তারা যদি চাঁদা দিয়ে থাকেন তাহলে সেই স্বৈরাচারের দোষরদের দিয়ে আপনাদের ব্যবসা বাণিজ্য করতে হয়েছে। কিন্তু আমরা যখন থাকি আপনাদের চাঁদা দিতে হয়না, আপনাদের ফোন করে বলিও না কে কোন ব্যবসা করেন। তাই আপনাদের সেই চেতনা থাকতে হবে কাদের সময় আপনারা নিরাপদ কাদের সময় নিরাপদ না। আপনাদের সম্মান- আপনাদের কার্যক্রম যা কিছু করা লাগে, আমাদের বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ ও সহকর্মী একসাথে করবো। একটুও কম করবো না।

সভায় জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা শংকর কুমার দে’র সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ঢাকা বিভাগীয় সহ সাঙগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু ও বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী প্রবীর কুমার সাহা প্রমুখ।

সূত্র: যুগের নারায়ণগঞ্জ