গত ১১ অক্টোবর শুক্রবার একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার ৩-এর পাতায় প্রকাশিত ‘সোনারগাঁও বিএনপির সভাপতি মান্নান মামলার আসামি করে, পরে নাম বাদ দিয়ে ব্যবসা’ শিরোনামের সংবাদটি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। সংবাদে আমাকে ও আমার ছেলেকেসহ দলীয় কয়েকজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও কাল্পনিক সংবাদ উপস্থাপন করা হয়েছে। সংবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের দিয়ে বাদী করে সোনারগাঁও থানায় ৬টি মামলা দায়ের করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ওই ৬ মামলার কারিগর হিসেবে আমার নাম উল্লেখ করে আসামিদের বাড়িছাড়া করে ঘর-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলের মিথ্যা সংবাদ উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও ইকোনমিক জোনে আগে যারা ঝুট ব্যবসা করত তাদেরকে মামলা দিয়ে দূরে সরিয়ে ঝুট ব্যবসা জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে আমার ছেলে খায়রুল ইসলাম সজিব, দত্তপাড়া গ্রামের বিএনপি নেতা মোশারফ, আতাউর রহমান, নিজামউদ্দিন, বাবুল ও শামীম যার কোনো সত্যতা নেই।
পিরোজপুর ও বারদী এলাকায় কোন জমি দখলের ঘটনা না ঘটলেও সংবাদে মান্নানপন্থি বিএনপি নেতা মেনা ও আব্দুর রহমানসহ একটি বিশাল বাহিনীকে দায়ী করে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। থানায় দায়েরকৃত ৬ মামলার বিষয়ে আমার কোন কিছু জানা না থাকলেও বিএনপির ক্লিন ইমেজখ্যাত অপর একটি পক্ষকে ওই মামলাগুলোতে আমি আসামি করেছি বলে কাল্পনিক তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে আমি ওই ৬ মামলার কোন বাদীকে চিনি না ও তাদের সাথে আমার কোনদিন দেখাও হয়নি। মামলাগুলোর তদন্ত কর্মকর্তারা (পুলিশ) এখনও পর্যন্ত কারও নাম বাদ দিয়ে আদালতে কোন প্রকার চার্জশিটও দাখিল করেননি। তাহলে আমি ও আমার বাহিনী মামলা থেকে আসামিদের নাম বাদ দিতে আওয়ামী লীগ নেতাসহ বিভিন্ন লোকজনদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছি বলে যে কথা সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও কাল্পনীক কাহিনি এতেই প্রতিয়মান হয়।
সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা আমার নেতৃত্বে বিগত ১৮ বছর যাবত ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত থাকলেও বার্ধক্যজনিত কারণে শারীরিকভাবে অসুস্থ সংস্কারপন্থি নেতা রেজাউল করিমকে আমার প্রতিপক্ষ বানিয়ে সংবাদে বিএনপিকে দুই ভাগে বিভক্ত করার কাল্পনিক কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও মান্নানপন্থিরা হামলা-মামলা, বাড়ি-ঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িত হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যার কোন সত্যতা নেই। সংবাদে আমি একটি আবাসন কোম্পানির দালালি করে কোটিপতি ও বিশাল ক্যাডার বাহিনী গড়ে তোলার মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
আমার জায়গা আওয়ামী লীগের দলীয় দাপটে মমতাজ মেম্বার তার ক্যাডার বাহিনী দীর্ঘদিন জোরপূর্বক দখলে রাখলেও গত ৭ আগস্ট পিরোজপুর ইউনিয়নের প্রতাপেরচর এলাকায় মমতাজ মেম্বারের ভবনসহ জায়গা আমার নেতৃত্বে ক্যাডার বাহিনী তার পরিবারের সদস্যদেরকে মারধর করে দখল করে নিয়েছে বলে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। যা সেনাবাহিনীর সদস্যরা তদন্ত করে ও জায়গার কাগজপত্র যাচাই করে এর মালিকানা আমার পক্ষে দেখতে পান। সংবাদে আমার ছেলে জেলা যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক খায়রুল ইসলাম সজিবের অনুসারীরা গত ৫ আগস্ট মেঘনা টোল প্লাজা থেকে টোলের কয়েক কোটি টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে বলে মিথ্যা কল্পকাহিনি রচনা করা হয়েছে।
সব সময় কর্মীবান্ধব হওয়ায় ও জনস্বার্থে সব সময় কাজ করায় সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির রাজনীতিতে আমার জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধ পেয়েছে। সংবাদে বর্তমানে আমি ও আমার বাহিনী সোনারগাঁওয়ে মূর্তিমান আতংক উল্লেখ করে কুৎসা রটানোর অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। আমার বাহিনী সোনারগাঁওয়ের প্রতাপেরচর গ্রামের মিন্টু ও ঝাউচর গ্রামের আল আমিনের বাড়ি-ঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে বলে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। সংবাদে আমার ভয়ে ওই দুই গ্রামসহ আষাঢ়ীয়ারচর গ্রামের বড় বড় ব্যবসায়ী এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া সোনারগাঁওয়ের শীলমান্দী ও মেঘনাঘাট এলাকায় আমার নেতৃত্বে ৩টি ইকোনমিক জোনসহ ৩৮টি শিল্প-প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কাজ-কর্ম নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে আমার ভাই হান্নানসহ বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনরা তা উল্লেখ করা হয়েছে। সংবাদে আমার নেতৃত্বে প্রতিদিন শতাধিক লোক চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক প্রচার করলেও সন্ধ্যা হলেই ভোল পাল্টে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকার ফুটপাতের সকল দোকান ও পরিবহন থেকে চাঁদাবাজির মিথ্যা কাহিনি রচনা করা হয়েছে। এছাড়া সোনারগাঁও উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি আওয়ামী লীগ সমর্থিত হওয়ায় তাদের হত্যা মামলা দিয়ে এলাকাছাড়া করে অনুপস্থিত দেখিয়ে শূন্যস্থানে আমার পছন্দের জনপ্রতিনিধিদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বানানোর সুপারিশ করা হয়েছে মর্মে মিথ্যা তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। সংবাদে আমার বাহিনী সোনারগাঁওজুড়ে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও দখলের সর্গরাজ্য হিসাবে পরিণত করেছে বলে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
সংবাদে আমার সহযোগী বিএনপির স্বনামধন্য নেতা আতাউর রহমানকে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভোরে চাঁদাবাজির অভিযোগে যৌথবাহিনী গ্রেফতার করে ও পরে আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে এসে আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠে মর্মে মিথ্যা গল্প সাজানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একটি গ্রুপ সড়যন্ত্র করে চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলায় যৌথবাহিনী অভিযান পরিচালনা করে ও তাকে আটকের পর এ ব্যাপারে কোনো তথ্য না পাওয়ায় ৫৪ ধারায় আদালতে প্রেরণ করে। আতাউর রহমান এলাকায় একজন বিএনপির ত্যাগী, সৎ, পরিশ্রমী, সাংগঠনিক ও ক্লিন ইমেজের নেতা হওয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ বিএনপির নামধারী একটি গ্রুপ মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে।
প্রকৃত ঘটনা: জনস্বার্থে সব সময় কাজ করায় দীর্ঘ ২০ বছরে সোনারগাঁওয়ে দলমত নির্বিশেষে আমার ব্যাপক জনপ্রিয়তা সৃষ্টি হয়েছে। আমার নেতৃত্বে সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপি এখন আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী ও সুসংগঠিত। সংস্কারপন্থি বিএনপির এক রাজনৈতিক নেতা আমার জনপ্রিয়তা দেখে আমার সুনাম ক্ষুণ্ণ করার জন্য সম্প্রতি উঠেপড়ে লেগেছে। সে ও তার দোসররা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম কর্মীদের মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়ে দৈনিক যুগান্তরসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ প্রচার করাচ্ছে। আমি এ মিথ্যা সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
আলহাজ্ব আজাহারুল ইসলাম মান্নান
কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সভাপতি, সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপি