সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের সাংবাদিকদের নিষেধাজ্ঞা জারির মত ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আসাদুজ্জামান। তার অপসারণ দাবিতে নারায়ণগঞ্জ বন্দরে মানববন্ধন করেছেন সাংবাদিকেরা। এ দুর্নীতিবাজ ডাক্তার নারায়ণগঞ্জের সাংবাদিকদের কালিমা লেপনের চেষ্টা করেছেন। দীর্ঘদিন এই হাসপাতালে কর্মরত আসাদুজ্জামানের দুর্নীতি খতিয়ে দেখারও দাবি জানানো হয়।
জানাগেছে, দৈনিক সংবাদচর্চা পত্রিকায় নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালের দুর্নীতি ও অপকর্মের সংবাদ প্রকাশ করায় পত্রিকাটি ও সংবাদকর্মীকে হাসপাতালে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বন্দর মডেল প্রেসক্লাব।
১২ মে রবিবার বিকালে নারায়ণগঞ্জের বন্দর সোনাকান্দা এলাকার মডেল প্রেস ক্লাবের সামনে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বন্দর মডেল প্রেস ক্লাবের সভাপতি এসএম শাহীন, সহ-সভাপতি জিকে রাসেল, আবদুল মান্নান খান বাদল, আনোয়ার পারভেজ সুজন, সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক মো. শরিফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াবুর রহমান, অর্থ সম্পাদক মো. শামীম ইসলাম, প্রচার ও দপ্তর সম্পাদক মো. রাশেদুল হাসান অভি, কার্যকরী সদস্য এজাজ আহমেদ, শ্যামল চন্দ্র দাস, এশিয়ার টিভির জেলা প্রতিনিধি খালেদ আল আমিন, দৈনিক সংবাদচর্চা পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক মো. মমিনুল ইসলাম, সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ রিফাত ও শিপন মীর প্রমূখ।
উপস্থিত বক্তব্যে খালেদ আল আমিন বলেন, আজকে দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে বলতে হচ্ছে যে আমরা সংবাদকর্মীরা সমাজের ঘটে যাওয়া অপকর্ম, অন্যায়, অবিচারের বিরুদ্ধে কাজ করি। এগুলো করতে গিয়ে আমরা অনেক বাধা বিপত্তির মধ্যে পড়ি। তেমনই একটি ঘটনা ঘটেছে। সেটা হলো নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের কু-কর্ম ও অপরাধ তুলে ধরার কারণে দৈনিক সংবাদচর্চা পত্রিকার সাংবাদিকদের তারা ওই হাসপাতালে ঢুকতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তবে সত্যর কথনো মৃত্যু হয়না সত্যের জয় অবধারিত। তাদের নোটিশ সাটানোর ১২ ঘন্টার মধ্যে তারা আবার সেই নোটিশ তুলে নিয়েছে। নোটিশ তুলতে তারা বাধ্য হয়েছে কারণ তারা আসলেই অপরাধী আর এটা প্রমাণিত হয়েছে।
মানববন্ধনে এস এম শাহীন বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যে কাজটি করেছে প্রথমেই আমি ধিক্কার জানাই। সেই সাথে আরএমও ডা. আসাদুজ্জামনকে অপসারণের দাবি জানাচ্ছি। তার মতো দুর্নীতিবাজ, চোর একটি সরকারি হাসপাতালে থাকতে পারে না। আমি তার অপসারণের দাবি জানাচ্ছি। সেই সাথে ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা সাংবাদিকরা কারও দুশমন নই এবং কারও বন্ধুও নই। আমরা জনগণের পক্ষে দেশের স্বার্থে কাজ করি। এটাই আমাদের কাজ। আমরা সমাজে ঘটে যাওয়া অন্যায় অবিচার লেখনীর মাধ্যমে মানুষের সামনে তুলে ধরবো। এতে করে যাদের বিরুদ্ধে লিখবো তারা আমাদের নিন্দা করবে উস্কে দিবে। তারপরেও আমাদের কাজ চালিয়ে যেতে হবে আমরা পিছপা হবোনা। আমাদের নিয়ে ওরা সমালোচনা করবে, খারাপ দৃষ্টিতে তাকাবে কিন্তু আমরা প্রতিবাদ করবো এবং কঠোরভাবে প্রতিহত করবো। আমরা সকলেই ঐক্যবদ্ধভাবে আছি এবং থাকবো এবং ভবিষ্যতে কোন অপশক্তিকে, দুর্নীতিবাজকে আমরা প্রশয় দিবো না।
আরিফুল ইসলাম বলেন, দৈনিক সংবাদচর্চা নারায়ণগঞ্জের মধ্যে একটি জনপ্রিয় পত্রিকা। এই পত্রিকা সমাজে ঘটে যাওয়া অপকর্ম ও দুর্নীতির বিষয়গুলো তাদের লেখনীর মাধ্যেমে তুলে ধরে। ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে সরকারি হাসপাতাল। এটা কারও ব্যাক্তিগত কিংবা বাপ-দাদার সম্পত্তি নয়। ওই হাসপাতালের আরএমও আসাদুজ্জামান কিভাবে পত্রিকার সাংবাদিকদের অবরুদ্ধ করে রাখে সেটা আমার বোধগম্য হয়না। আমি বলতে চাই, এরকম দুঃসাহস করবেন না। নারায়ণগঞ্জে মাটিতে আপনারা ডাক্তার হয়েছেন সাংবাদিকদের সাথে কখনো খারাপ ব্যবহার করবেন না। সাংবাদিকরা শুধু কলম নয় হাতে লাঠি নিয়েও অপবাদের প্রতিবাদ করতে পারে।
আসাদুজ্জামানকে উদ্দেশ্যে করে তিনি আরও বলেন, শুধু ওষুধ চুরির ঘটনা নয় লাশ নিয়েও তারা বাণিজ্য করে। ওই লোক বিভিন্ন সময় হত্যাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়। এরকম প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। আরেকটি বিষয় সেটা হলো নারায়ণগঞ্জের মতো জায়গায় অন্যান্য আরএমও সর্ব্বোচ্চ দুই থেকে তিন বছর কাজ করেন। সেখানে বর্তমান আরএমও কিভাবে ৭ থেকে ৮ বছর থাকে? তা আমি জানতে চাই সিভিল সার্জনের কাছে। সিভিল সার্জন ও মাননীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, এই নারায়ণগঞ্জ থেকে বর্তমান আরএমওকে বহিষ্কার করে নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালকে একটি দুর্নীতি মুক্ত হাসপাতাল হিসেবে উপহার দিবেন।