সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির রাজনীতি এখন দুই মোড়লে বিভক্ত। জেলা বিএনপির রাজনীতি দুটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে রাজনীতি করছেন। বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূঁইয়ার সিন্ডিকেট নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতৃত্ব দিচ্ছে। অপর মোড়ল বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ। এই দুই মোড়লের মাঝে এবার কমিটি ভাঙ্গা গড়ার লড়াই শুরু হয়েছে। দিপু ভূঁইয়া ও আজাদ সিন্ডিকেট নারায়ণগঞ্জ বিএনপিকে কুক্ষিগত করে রেখেছেন। এর বাহিরে গিয়ে কেউ সুবিধা করতে পারছেন না। যে কারনে দিপু ভূঁইয়া ও আজাদকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির রাজনীতিতে দুই মোড়ল হিসেবে নেতাকর্মীদের কাছে আখ্যায়িত হয়ে আসছেন।
এদিকে নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি যে কোনো সময় বিলুপ্ত করা হতে পারে। যদিও গত ১৫ জুন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে বিএনপির সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন সভাপতি ও জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হোন বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায়। যদিও গত ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর গিয়াসউদ্দিনকে আহ্বায়ক ও গোলাম ফারুক খোকনকে সদস্য সচিব এবং অধ্যাপক মামুন মাহামুদকে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক করে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় বিএনপি।
জেলা বিএনপির সম্মেলনের পরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেনি গিয়াস ও খোকন। জেলা জুড়ে বিচরণও ঘটাতে পারেনি তারা। খোকন কেবল রূপগঞ্জ ও গিয়াস সিদ্ধিরগঞ্জের গন্ডি পেরুতে পারেনি। কালেভদ্রে গিয়াস ফতুল্লায় মার্চ করার চেষ্টা করলেও খোকন বের হতে পারেনি রূপগঞ্জ থেকে। গিয়াস তার প্রত্যাশিত নারায়ণগঞ্জ-৪( ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের ভেতরেই করছেন রাজনীতি। গোলাম ফারুক খোকন তার নেতা দিপু ভূঁইয়ার প্রত্যাশিত নারায়ণগঞ্জ-১(রূপগঞ্জ) আসনের বাহিরে যাচ্ছেন না। জেলা বিএনপির শীর্ষ দুই নেতা পড়ে আছেন দুটি আসন নিয়ে। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর জেলা বিএনপির আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় নিজ দলের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতেও ব্যর্থ হচ্ছেন তারা।
অন্যদিকে সারাদেশের বেশকটি জেলা ও মহানগর শাখার কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। নারায়ণগঞ্জে এমন অবস্থায় আলোচনায় নতুন কমিটি গঠন নিয়ে। কেউ কেউ বলছেন আবারো কাজী মনিরুজ্জামান মনির ও মামুন মাহামুদের নেতৃত্বে কমিটি গঠন হতে পারে বলে ধারণা করছেন। আবার অনেকে বলছেন, কাজী মনিরের সঙ্গে সদস্য সচিব পদে আলোচনায় আছেন আজহারুল ইসলাম মান্নান। যদিও সদস্য সচিব মামুন মাহামুদ ও মান্নান জোরালোভাবে আলোচনায় থাকলেও আরো বেশকজন নেতা সদস্য সচিব পদে আসার আলোচনায় আছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন জাহিদ হাসান রোজেল, মাসুকুল ইসলাম রাজীব, শহিদুল ইসলাম টিটুর মত নেতারা।
এদিকে নেতাকর্মীরা জানান, নজরুল ইসলাম আজাদের সিন্ডিকেটে বলয়ে আছেন কাজী মনিরুজ্জামান মনির, শিল্পপতি শাহআলম, মামুন মাহামুদ, নাসির উদ্দীন, শহিদুল ইসলাম টিটু, জাহিদ হাসান রোজেল, মাসুকুল ইসলাম রাজীব এবং দিপু ভূঁইয়ার সিন্ডিকেট বলয়ে আছেন গিয়াসউদ্দিন, গোলাম ফারুক খোকন, আতাউর রহমান খান আঙ্গুর, মাহামুদুর রহমান সুমন, মশিউর রহমান রনি। দুটি সিন্ডিকেটে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির রাজনীতি। বর্তমানে দিপু ভূঁইয়ার নিয়ন্ত্রণে জেলা বিএনপি। এই কমিটি ভেঙ্গে গেলে নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাবে আজাদ সিন্ডিকেট। তবে অতিদ্রুত কমিটি না ভাঙ্গলেও গিয়াস খোকনের এই কমিটি আগামী নির্বাচন নাগাদ সময় পাবেনা বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বোদ্দারা।