নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে সুজন: ক্ষতিগ্রস্ত হলে আশার উপর দায় বর্তাবে

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সম্রাট হাসান সুজন। প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা সুজনের পেছনে লেগেছে বলে বন্দর ইউনিয়ন বিএনপি ও উপজেলা যুবদলের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন। বন্দর থানা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খান মাসুদ ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুউদ্দীন মাহামুদ দুলাল প্রধানের ঘনিষ্ট সহচর শাহিন আহমেদ সৌরভ, নূর হোসেন, রাজিব গংরা সুজনের ক্ষতি করার জন্য হন্য হয়ে খুঁজছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। চরম নিরাপত্তাহীনতায় সুজন এলাকায় থাকতে পারছেন না।

তবে সুজনের দাবি- উপরোক্ত সন্ত্রাসীরা যদি সুজনের কোনো ধরণের ক্ষতি সংগঠন করে তাহলে এর দায় নিতে হবে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাউসার আশাকেই। ফেসবুকে ভিডিও বার্তাতেও এমন অভিযোগ করেছেন সুজন। সুজন সেখানে বলেছেন, ‌’আমাকে হত্যা করার জন্য সন্ত্রাসীরা এলাকায় ঘুরছে। দেশীয় ও আগ্নোয়াস্ত্র হাতে কোমরে নিয়ে প্রকাশ্যে আমার এলাকায় এসে মহড়া দিচ্ছে। যদি আমার ও আমার পরিবারের কোনো সদস্যের উপর হামলা কিংবা ক্ষতি হয় তাহলে এর জন্য দায়ী থাকবেন আবুল কাউসার আশা। আশার নির্দেশেই সন্ত্রাসীরা আমার ক্ষতি করার জন্য আমার পিছু লেগেছে।’

তবে সুজন এও বলেছেন, ‌’বিগত ১৭ বছর স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র মুক্তির জন্য রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম লড়াই করেছি। রাব ও পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করে থানায় বেধে পিটিয়ে কোমরের হাড় ভেঙ্গে দিয়েছে, তবুও রাজপথ ছাড়িনি। আমি আওয়ামীলীগ-জাতীয়পার্টির লেজুরবৃত্তিকারী কোনো দালালদের ভয় পাই না। তারা আওয়ামীলীগ ও জাতীয়পার্টির উপর ভর করে বিএনপিকে ঘায়েল করতে চায়।’

ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, গত ৫ আগস্টের পর হটাত করে বিএনপি নেতা বনে যান বন্দর তিনগাঁও এলাকার বিতর্কিত ব্যক্তি নূর হোসেন। নুর হোসেনের উদ্যোগে ২৩ আগস্ট তিনগাঁও এলাকায় বিএনপির ব্যানারে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। কিন্তু বিগত সাড়ে ১৫ বছর আন্দোলন সংগ্রাম করা ত্যাগী নির্যাতিত নেতাকর্মীরা নূর হোসেনের আয়োজনে অনুষ্ঠান মেনে নিতে পারেনি। কারন নূর হোসেন খান মাসুদ ও দুলাল প্রধানের ঘনিষ্ট সহচর ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করা হয় আবুল কাউসার আশাকে। স্থানীয় ত্যাগী নির্যাতিত নেতাকর্মীরা ক্ষুব্দ হয়ে নূর হোসেনের সমাবেশ বানচাল করে দেন।

এই ঘটনার জন্য উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সম্রাট হাসান সুজন ও তার ভাই বন্দর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রাজু আহমেদের উপর ক্ষুব্দ হয়ে ওঠে নূর হোসেন গংরা। সেদিন অনুষ্ঠান বানচাল করা হলেও সেখানে মহড়া দেন আশা। সুজন ও রাজুর বাড়ির সামনে গিয়ে মহড়া দিয়ে আতংক সৃষ্টিও করেছেন আশা। ওইদিন ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিডিয়াতে নূর হোসেন সুজনের বিরুদ্ধে ৩ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মিথ্যা অভিযোগ তুলে দেন। অভিযোগ করা হয়-মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নাম ভাঙ্গিয়ে সুজন নূর হোসেনের কাছে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন। কিন্তু ঘটনা ছিল সমাবেশকে কেন্দ্র রাজনৈতিক বিরোধ।

এদিকে ৬ সেপ্টেম্বর বন্দর তিনগাঁও এলাকায় বন্দর থানা উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে সন্ত্রাস নৈরাজ্য চাঁদাবাজি দখলবাজির বিরুদ্ধে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ওই সমাবেশ বানচাল করতে সকাল থেকে চেষ্টা করে নূর হোসেন, শাহিন আহমেদ সৌরভ, রাজিব গংরা। সমাবেশ পণ্ড করতে গিয়ে এলাকাবাসী ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের হাতে গণপিটুনি খেয়ে ফেরত আসে নূর হোসেন গং। অন্যদিকে ওই অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে বন্দর নবীগঞ্জ কামালউদ্দীনের মোড়ে আবু আল ইউসুফ খান টিপুর উপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। টিপুকে অমানসিকভাবে বেদম মারধর করা হয়। দৌড়ে পালাতে গিয়ে রাস্তায় পড়ে গেলেও সেখানে কিল ঘুষি লাথি মারতে থাকে সন্ত্রাসীরা। একটি বাড়িতে পালাতে গেলে সেখানেও হামলা চালানো হয়।

এই ঘটনার পর নারায়ণগঞ্জ নগরীতে আবুল কাউসার আশা টিপুর উপর হামলাকারীদের নিয়ে টিপুর ছবিকে বিকৃত করে শোডাউন দেন এবং টিপুর বিরুদ্ধে সমাবেশ করে উল্টো বক্তৃতায় টিপুকে শাসায় আশা। এই ঘটনায় আবুল কাউসার আশা ও আতাউর রহমান মুকুলকে অন্যতম আসামী করে বন্দর থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন টিপু। ওই মামলায় হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন শেষে গত ৬ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে জামিন লাভ করেন ৭ আসামী। সেদিন আসামীরা বিতর্কিত লোকজনকে নিয়ে কোর্টপাড়ায় ব্যাপক শোডাউন করে আতংক সৃষ্টি করেন।