সান নারায়ণগঞ্জ
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আওতাধীন বন্দর উপজেলা বিএনপির ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহিদ খন্দকার ও মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তাঁরা মিয়াকে চাঁদাবাজির অভিযোগে পানিতে চুবিয়েছে গ্রামবাসী- এমন খবরটি স্থানীয় গণমাধ্যমসহ জাতীয় গণমাধ্যমে গুরুত্বসহকারে প্রকাশিত হয়েছে। দেশব্যাপী আলোচিত হয়ে ওঠেছে সংবাদটি। যদিও গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন খবরের ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন জাহিদ খন্দকার। যদিও পানিতে পরে থাকাবস্থায় তাঁরা মিয়া সহ আরো বেশকজনকে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে। ওই ছবিতে জাহিদ খন্দকারকে দেখা যায়নি।
জানাগেছে, গত ১ ডিসেম্বর রবিবার নারায়ণগঞ্জের বন্দরে কৃষি জমির সেচ প্রকল্পের চাঁদা না পেয়ে হামলা করায় বিএনপির দুই নেতাকে গণপিটুনি দিয়ে পানিতে চুবিয়েছেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী- এমন খবরটি অনলাইন সহ বিভিন্ন স্থানীয় পত্রিকা ও জাতীয় গণমাধ্যম কালের কণ্ঠ, ইত্তেফাক সহ বেশকটি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
খবরে দাবি করা হয়- উপজেলার পিচ কামতাল এলাকার জহিদ্দার বিলে এ ঘটনা ঘটে।গণপিটুনির শিকার দুই বিএনপি নেতা হলেন- মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তাঁরা মিয়া ও ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহিদ খন্দকার।
এ দিকে চাঁদাবাজদের হামলায় এক নারী ইউপি সদস্যসহ পাঁচজন রক্তাক্ত জখম হয়েছেন। তারা হলেন: সেচ প্রকল্পের মালিক আমান উল্লাহ (৪০), তার স্ত্রী মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী মেম্বার লাভলী বেগম (৩৬), তাদের ছেলে সোহান (২১), স্থানীয় বাসিন্দা আহাদ আলী (৫৫) ও তার ছেলে বাহাউদ্দীন (৩৫)।
স্থানীয়রা জানান, বন্দর উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের বাজুরবাগ এলাকার আমান উল্লাহ দীর্ঘ দিন ধরে জহিদ্দার বিলে ইরি জমিতে পানি সেচ করে আসছেন। এরই মধ্যে বালিগাঁও এলাকার হযরত আলী মিয়ার ছেলে যুবদল নেতা পরিচয় দানকারী পাপ্পু ও পিচকামতাল এলাকার মৃত সায়েদ আলী মিয়ার ছেলে মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তাঁরা মিয়াসহ ১০ থেকে ১২ জন আমান উল্লাহর কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছেন।
আমান উল্লাহ চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় রোববার দুপুরে পাপ্পু, বিএনপি নেতা তারা মিয়া, ফারুক, খালেক ও আব্দুর রহিম, হযরত আলী, ইউসুফ ও ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি জাহিদ খন্দকারসহ অজ্ঞাত ২০ থেকে ২৫ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমান উল্লাহর ওপর হামলা করে। এ সময় আমান উল্লাহর প্রাণ রক্ষার্থে ডাক চিৎকার দিলে স্থানীয় লোকজন এসে তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় নারী ইউপি সদস্য লাভলী বেগমসহ কমপক্ষে পাঁচ গ্রামবাসী আহত হন।
ধামগড় ইউনিয়নের নারী ইউপি সদস্য লাভলী বেগম বলেন, ‘বিগত দিনে তুফানে সেচ প্রকল্প এলাকায় খুঁটি ভেঙে গিয়েছিল। সেটা ঠিক করতে হবে। আমান উল্লাহ এটা ঠিক করার ব্যবস্থা করেছেন। এর মধ্যে তারা এসে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন। আমি এই এলাকায় মেম্বার হিসেবে সেখানে গিয়েছি। তারা আমাকেও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে। এতে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের প্রতিরোধ করেছে। এলাকাবাসী মিলে তারা মিয়া, ফারুক ও পাপ্পুকে পানিতে চুবিয়েছেন।’
তবে মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তারা মিয়ার দাবি, আমান উল্লাহর সেচ কাজে বাধা দেন গ্রামবাসী। এতে গ্রামবাসীকে সমর্থন জানিয়ে তাদের সঙ্গে যোগ দেন তারা মিয়া ও পাশের ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহিদ খন্দকার। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।
তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে এই এলাকার নদীর তীরের মাটি কেটে বিক্রি করে আমান উল্লাহ গং। এবার যাতে সেটি না পারে সেজন্য আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে পুলিশ নিয়ে দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাধা দেই। তখন আমান উল্লাহর সহযোগী মুছাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি বাহাউদ্দিন পুলিশের সামনেই আমাকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। ওই সময় আমি পাশের জলাশয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রাণে রক্ষা পাই।’