‘স্বৈরাচারী সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা লুন্ঠন করে পালিয়ে গেছে’

সান নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন বলেছেন, স্বৈরাচারী হাসিনার সময়ে আমাদের দেশের রাজনীতি অনেক কঠিন ছিলো। ফ্যাসিষ্ট হাসিনা এদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারকে হরণ করে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচন, কখনো দিনের ভোট রাতে করে আবার ডামি নির্বাচন করে বলপূর্বক ক্ষমতায় ছিলো। এদেশের অর্থ, সম্পদ লুট করেছে, অন্যায়, অত্যাচার, নিপীড়ন করেছে, সেই কারনে দেশের সর্ব বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি তার প্রতিবাদ করেছে।

৬ ডিসেম্বর শুক্রবার দিবাগত রাত ৯ টায় সিদ্ধিরগঞ্জের ৫নং ওয়ার্ডে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এর প্রতিবাদ করায় মিথ্যা মামলা দিয়ে দীর্ঘদিন কারাগারে আটক করে রাখে। সুচিকিৎসার জন্য বিদেশেও যেতে দেয়নি। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দেয়ার কারনে দীর্ঘদিন যাবৎ তিনি দেশের বাইরে রয়েছেন। কিন্তু তিনি বিভিন্ন সময় আমাদেরকে দিকনির্দেশনা দিয়ে রাজপথে রেখেছেন। এতে করে অনেকে মামলা-হামলার শিকার হয়েছে, আবার অনেকে পলাতক জীবন যাপন করেছে। সর্বশেষ ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে গত ৫ আগষ্ট ফ্যাসিষ্ট হাসিনা এ দেশ ছেড়ে পালিয় যেতে বাধ্য হয়েছে। তার যে সন্ত্রাসী, লুটেরা ও চোরের বাহিনী ছিলো তারাও পালিয়ে গেছে আবার অনেকে দেশের ভিতর লুকিয়ে আছে।

বর্তমানে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। তারেক রহমান নির্দেশ দিয়েছেন এ সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য। একটি ধ্বংসস্তুপের মধ্যে এ সরকার দাঁড়িয়ে আছে। স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা লুন্ঠন করে পালিয়ে গেছে। এ অর্থ-সম্পদ নিয়ে তারা বিদেশে অবস্থান করছে।

সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াসউদ্দিন বলেন, ছাত্র দলের সাবেক সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম একজন সৎ ও নীতিবান মানুষ সেটা তার কথাতেই প্রকাশ পায়। কারন আমি যে জিনিসগুলো পছন্দ করি সেগুলো সে শুধু পছন্দই করেনা গড়েও তোলে। তার মত মানুষ ১০নং ওয়ার্ডে আছে সেটা আমি অবগত ছিলাম না। আমি অত্যন্ত আশাবাদী তার মত যোগ্য নেতৃত্ব আগামীতে সিদ্ধিরগঞ্জে নেতৃত্ব দিবে। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার নির্যাতন, নিপিড়নের সময়ও আমার সন্তানরা সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করেছে এবং অসংখ্য মামলার আসামী হয়েছে ও কারাবরণ করেছে। এত বিপদসংকুল অবস্থায়ও আমার সন্তানদের বলিনি তোমরা রাজনীতি করোনা।

তিনি আরও বলেন, অনেকে মনে করে দেশ নতুন করে স্বাধীনতা হয়েছে তাই এখন আর কোন কিছু করনীয় নেই। ১০নং ওয়ার্ডের শফিকুল ইসলাম, ছাত্র দলের সাবেক সহ-সভাপতি একটি কথা বলেছেন, আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করেছি কিন্তু কারো সাথে আপোষ করিনি। যারা স্বৈরাচারী সরকারের দোসর ছিলো তাদের সাথে আতাঁত করাকে আমি পছন্দ করিনা, আমি প্রতিবাদ করি। তার এ বক্তব্যকে আমি স্বাগত জানাই। কারন তারা এলাকায় এলাকায় লুটতরাজ, নির্যাতন, নিপীড়ন করেছে।

এখন শুনতে পাওয়া যায়, সেই সকল দোসরদের সাথে মিলে বিএনপির কিছু কিছু নেতাকর্মীরা বিভিন্ন কল-কারখানা লুটতরাজে লিপ্ত। এদেরকে ছাড় দেওয়া যাবে না। তাদেরকে ধরিয়ে দিলে আমি শাস্তির ব্যবস্থা করবো। কারন এ ধরনের চরিত্রের মানুষ দলে থাকলে আগামীতে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এমনও নেতাকর্মী রয়েছে যারা আন্দোলন সংগ্রামে আসেনি কিন্তু স্বৈরাচারীদের আতাঁত করে চলতো।

শফিকুল ইসলাম বলেছে, এসব কথার জন্য কেউ তাকে পছন্দ করেনা, কিন্তু আমরা তাকে পছন্দ করবো। এমন নেতৃত্ব আমরা চাই যে, অন্যায়ের কাছে মাথা নত করবেনা, শত্রুর সাথে আপোষ করবোনা, নিজের স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টা করবেনা। এমন নেতাই আমাদের প্রয়োজন। আমি একদিন এ জেলা বিএনপির সভাপতি পদে থাকবোনা কিন্তু আমার বাড়ি সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায়। আমি চাইবো সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে এমন সৎ, যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে উঠুক।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মোঃ সাদরিল, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ৪নং ওয়ার্ডের সভাপতি আবুল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক কামরুল হাসান শরিফ, ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এড. আখতারুজ্জামান মন্টু, মহানগর যুবদল নেতা শফিকুল ইসলাম শফিক সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

এর আগে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের নেতা ও সাবেক মহানগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম শফিক, নাসিক ১০নং ওয়ার্ডস্থ মাঝিপাড়া এলাকায় নেতাকর্মী নিয়ে জড়ো হতে শুরু করে। পরে একটি মিছিল নিয়ে এলাকার প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন শেষে চৌধুরী বাড়ি বাস ষ্ট্যান্ড গিয়ে ৫ টি বাসে করে, জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সাংসদ গিয়াসউদ্দিনের বাসভবনে গিয়ে উপস্থিত হয়।