সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকায় বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের মঞ্চে স্থানীয় আওয়ামীলীগের বিতর্কিত রাজু সহ আওযামীলীঘেষা লোকজনের উপস্থিতি দেখায় চরম সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এর জন্য মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগরকে দায়ী করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
সাগরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠেছে- তিনি স্থানীয় আওয়ামীলীগের লোকজনের উপস্থিতি ও তাদের সহযোগীতায় একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন। মহানগর যুবদলের সামনের কমিটিতে স্থান করে নিতে নজরুল ইসলাম আজাদের সামনে নিজের শক্তির জানানি দিতে গিয়ে আওয়ামীলীগের লোকজনের সহযোগীতা নিয়েছেন এবং তাদের উপস্থিত করিয়ে বিএনপিতে জায়গা করে দেয়ার চেষ্টা করছেন সাগর। যদিও সাগর অনুগামীরা দাবি করছেন ভিন্ন কথা।
ঘটনা সূত্রে, গত ২৭ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন আদমজী এম ডব্লিউ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্মরণে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা পুরস্কার ও অসহায় দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নজরুল ইসলাম আজাদ। এই অনুষ্ঠানে আয়োজক সাগর।
এই ঘটনার খবরটি পরদিন স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে তুমুল সমালোচনার সৃষ্টি হয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানাগেছে যে- ওই অনুষ্ঠানে সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলী এলাকার বহু অপকর্মের হোতা ওসমান পরিবারের ঘনিষ্ট ক্যাডার ওই এলাকার মৃত হুমায়ুন কবিরের ছেলে সজুর ছোট ভাই রাজু। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার উপর হামলা ও গুলি বর্ষণের অভিযোগে একাধিক হত্যা মামলার আসামী রাজু। তার ভাই এই সজুর বিরুদ্ধে রয়েছে ছাত্র-জনতার উপর গুলি বর্ষণ, হামলাসহ ৮টি হত্যা মামলা। রাজুর বিরুদ্ধে রয়েছে অন্তত ৪টি হত্যা মামলা।
স্থানীয়দের আরো অভিযোগ-গত ৫ আগষ্টের পর কদমতলী এলাকার সজু ও তার ভাই রাজুও পালিয়ে যায়। বর্তমানে তারা নতুন রুপে এলাকায় ফিরে এসেছে। বিএনপি নেতাদের সুবিধা দিয়ে সেজে যাচ্ছে হাইব্রিড বিএনপি নেতা। সজু এলাকায় আত্মগোপনে থাকলেও সেদিন বিএনপি নেতা আজাদ এমডব্লিউ স্কুলে মাঠে এসেছে- এমন খবরে তার পিছু নেয় রাজু। আজাদ যখন মঞ্চে উঠবেন ঠিক সেই সময় আজাদের পিছু পিছু অল্প কিছু লোকজন নিয়ে হাজির হয় রাজু। মঞ্চের পিছনে ঘুরতে থাকে সে।
ঠিক ওই সময় স্থানীয়রা অনুষ্ঠানের আয়োজক আলোর দিশারী যুব সামাজিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগরের নিকট বিষয়টি নজরে আনেন। সাগর তাৎক্ষনিক সন্ত্রাসী ও হত্যা মামলার আসামী রাজুকে মুহুর্তের মধ্যে স্থান ত্যাগ করতে নির্দেশ দেন। পরে রাজু কৌশলে স্থান ত্যাগ করেন।
তবে এ বিষয়ে রাকিবুর রহমান সাগরের ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন, রাজুর পিতা হুমায়ুন কবির বিএনপির রাজনীতি করতেন। রাজু কোনো দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নাই। তবে রাজুর ভাই সজুর আওয়ামীলীগের সঙ্গে সখ্যতা ছিল। তারপরেও ঘটনার দিন রাজু অনুষ্ঠানে আসলে রাকিবুর রহমান সাগর তাকে সকলের সামনে ধমকে দিয়ে তাড়িয়ে দেন। সাগর তার নিজস্ব লোকজন নিয়েই কর্মসূচি সফল করেছে। আওয়ামীলীগের লোকজনের উপর ভর করতে হবে সেটা সঠিক নয়।
ওই অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজিব, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপন, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল, যুবদল নেতা মাজহারুল ইসলাম জোসেফ, মহানগর মহিলা দলের সদস্য সচিব আয়েশা আক্তার দিনা প্রমুখ।