নগরীর ফুটপাতে ৫ হাজার দোকান: চাঁদাবাজদের পকেটে দৈনিক ৩ লক্ষাধিক টাকা!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ নগরীর চাষাড়া থেকে ডিআইটি পর্যন্ত ফুটপাতে বসেছে প্রায় ৫ হাজারের অধিক স্থায়ী দোকান। এসব দোকান থেকে দৈনিক ৩ লাখ টাকার বেশি চাঁদা তোলা হচ্ছে। প্রতিদিন সন্ধা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এই চাঁদা তুলে যাচ্ছে এক শ্রেণির ডেভিল অর্থাৎ শয়তানেরা। কিন্তু এসব শয়তানদের ধরতে পারছেনা পুলিশ কিংবা প্রশাসন। চাষাড়ার শহীদ মিনার প্রাঙ্গন ও এর আশপাশেই রয়েছে প্রায় ১ হাজার অস্থায়ী দোকান।

স্থানীয়দের সূত্রে, নাম ওঠেছে মহানগর বিএনপির একজন শীর্ষ নেতার ভাইয়ের নেতৃত্বে সন্ধা থেকে চাঁদা তোলা হচ্ছে দৈনিক। এসব অস্থায়ী দোকান বসাতে দোকান প্রতি চাঁদাবাজদের দেয়া হয়েছে দোকানের আয়তন বুঝে ৫০ হাজার থেকে লাখ টাকা। এ ছাড়াও বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তি, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও দোকান ভাড়া দিয়ে প্রতিদিন তুলছেন চাঁদা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চাষাড়া শহীদ মিনারের সামনে থেকে বালুর মাঠ হয়ে ইসলাম হার্ট সেন্টার, শহীদ মিনারের ভেতরের প্রাঙ্গন ও শহীদ মিনারের চারদিকে, চাষাড়া মেইন রোড থেকে ডিআইডি পর্যন্ত দুই পাশে বসেছে কয়েক হাজার দোকান। এ ছাড়াও ফ্রেন্স মার্কেটের মোড় থেকে মেট্রোহল হয়ে ১নং রেলগেট পর্যন্ত, ২নং রেলগেট সহ কালিরবাজার, রেলীবাগান, খানপুর, উকিলপাড়া, মিশনপাড়া, হটার্স মার্কেটের সামনের রাস্তা সহ নগরীর প্রায় প্রতিটি সড়কের দুই পাশে অস্থায়ী দোকান বসানো হয়েছে।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন অভিযান দিয়ে উচ্ছেদের চেষ্টা করলেও অভিযানের পরপরই বসছে দোকানপাট। পুরো নারায়ণগঞ্জ নগরী এখন ফুটপাতের দোকানদারদের দখলে চলে গেছে। রাজনৈতিক প্রভাবে এসব অস্থায়ী দোকান বসানোর কারনে মার্কেটগুলোর দোকানদাররা পড়েছে বিপাকে। মার্কেটগুলোর দোকানের সামনে জোরপূর্বক প্রভাব দেখিয়ে বসে যাচ্ছে হকার। মার্কেটের দোকানদারদের সঙ্গে ক্ষমতা দেখাচ্ছে ফুটপাতের দোকানদাররা। চাষাড়া শহীদ মিনার প্রতিদিন সন্ধা থেকে দোকানদের দখলে চলে যায় শহীদ মিনারের প্রাঙ্গনটি। বুঝাই যায়না এখানে একটি শহীদ মিনার প্রাঙ্গন।

গত ৫ আগস্টের পূর্বেও নগরীর এসব দোকান বসিয়ে চাঁদা আদায় চলতো। কিন্তু সেই চিত্র পরিবর্তন হয়নি। কয়েক বছর আগে সাবেক মেয়র আইভী ফুটপাত উচ্ছেদ করতে গেলে সাবেক এমপি শামীম ওসমান বাধা দেয়। এ নিয়ে দুই পক্ষের মাঝে গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু তবুও ফুটপাত উচ্ছেদ করতে পারেনি মেয়র আইভী। প্রতি মাসে ফুটপাত থেকে কোটি টাকা চাঁদা উঠার কারনে বৃহত্তর আয়ের উৎস হয়ে গেছে এই নগরীর ফুটপাত ও ফুটপাতে বসানো দোকানগুলো। কিন্তু সরকারের পতন ঘটলেও সেই ফুটপাত থেকে চাদাবাজি বন্ধ হয়নি।