সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
গত ২৭ ফেব্রুয়ারী হয়ে গেল বিএনপির জাতীয় বর্ধিত সভা। ওই সভায় বক্তব্য রেখেছেন দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সহ শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ। ওই বর্ধিত সভায় ডাক পেয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ও মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। নারায়ণগঞ্জে সরকারবিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথ কাঁপানো এই নেতাকে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা।
করোনাকালে করোনা বীর হিসেবে দেশ ছাড়িয়ে বিশ্বব্যাপী আলোচিত হয়ে ওঠা নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৪ বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। একজন কাউন্সিলর হিসেবে সিটি কর্পোরেশনে সর্বোচ্চ ভোটের ওয়ার্ডে ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে। একইভাবে মহানগরীর ২৭টি ওয়ার্ডে একমাত্র খোরশেদ, যার প্রতিটা ওয়ার্ডে নিজস্ব কর্মী রয়েছে তার। মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি পদে দায়িত্ব পালনকালে সিটি কর্পোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডের বাহিরেও বন্দরের আরো ৫টি ইউনিয়নে যুবদলের হাজার হাজার নেতাকর্মী সৃষ্টি করেছেন তিনি। যার নেতৃত্বে ২০০৯ সাল থেকে রাজপথে নেতাকর্মীরা ব্যাপক আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন।
স্থানীয় নেতাকর্মীদের মতে, মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের মত সাংগঠনিক নেতা নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির রাজনীতিতে বিকল্প কেউ নেই। শুধুমাত্র রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কারনে খোরশেদকে মহানগর বিএনপির নেতৃত্ব থেকে দূরে রাখা হয়েছে। নতুবা মহানগর যুবদলের নেতৃত্ব ছাড়ার পর মহানগর বিএনপির নেতৃত্বে একমাত্র খোরশেদই ছিলেন যোগ্য নেতৃত্ব। খোরশেদের অনুগামী নারায়ণগঞ্জ মহানগরীতে সবচেয়ে বেশি। খোরশেদ নেতৃত্ব না থাকায় তার কিছু সংখ্যক নেতাকর্মী এদিক সেদিক ছড়িয় ছিটিয়ে থাকলেও নেতৃত্ব পেলে সকলে একযোগে খোরশেদের নেতৃত্বে এককাতারে দাঁড়াবেন নেতাকর্মীরা।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ-৫(সদর-বন্দর) আসনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে প্রাথমিকভাবে মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী হিসেবে বিএনপির জাতীয় বর্ধিত সভায় খোরশেদ ডাক পাওয়ায় তার অনুগামী নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হয়ে ওঠেছেন। মহানগর বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মীরা খোরশেদকে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। নেতাকর্মীরা মনে করছেন মহানগর বিএনপির বর্তমান কমিটি ভেঙ্গে গেলে পরবর্তী নেতৃত্বে আসবেন খোরশেদ। কারন খোরশেদের বিকল্প নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর রাজনীতিতে আর কেউ নেই। ব্যাপক নেতাকর্মী সমর্থক ও জনপ্রিয়তার কারনে ২০১৮ সালের নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পান তিনি।
প্রায় ৬০টির বেশি রাজনৈতিক মামলার শিকার হয়েছেন মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাজপথে ব্যাপক আন্দোলন সংগ্রাম করে নিজের জাত চিনিয়েছেন তিনি। একাধিকবার রাজপথ থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন। জেল খেটেছেন একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছে। বছরের পর বছর গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপন বনজঙ্গনে কাটিয়েছেন। সকালে দলের হরতাল অবরোধ পালন করতে গিয়ে রাতে ঝোপ ঝাড়ে দিন যাবত করেছেন খোরশেদ। রাজপথে হরতাল অবরোধ পালন করতে গিয়ে পুলিশি লাঠিপেটার শিকার হয়েছেন একাধিকবার।
এদিকে ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। দুই বছর পেরিয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেনি। আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর ৪জন যুগ্ম আহ্বায়ক সহ ১৫জন নেতাকর্মী পদত্যাগের ঘোষণা করেন। বর্তমানে জটিল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে মহানগর বিএনপির কমিটির নেতাদের মাঝে। নানা কারণে মহানগর বিএনপির বর্তমান কমিটি ভেঙ্গে যেতে পারে বলে অনেকের আশংকা। যে কারনে কেউ কেউ বলছেন- মহানগর বিএনপির বর্তমান কমিটি যখনই ভেঙ্গে দেয়া হোক, তখনি পরবর্তী নেতৃত্বে খোরশেদের মত নেতৃত্ব আসতে পারে। কারন খোরশেদ কেন্দ্রীয় বিএনপির নজরে রয়েছে এটা প্রমানিত হয়েছে জাতীয় বর্ধিত সভায় খোরশেদকে ধানের শীষ প্রতীকে প্রার্থী হিসেবে নিমন্ত্রন জানানোয়।
নেতাকর্মীরা বলছেন, ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের তৎকালীন ওসি আক্তার হোসেন যিনি আওয়ামীলীগের একজন এমপির মেয়ে জামাতা, সেই ওসি আক্তার জেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক মামুন মাহামুদ ও মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদসহ বিএনপির বেশকজন নেতাকর্মীকে ডিআইটি রাজপথ থেকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে শীর্ষ দুই বিএনপির নেতার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন ওসি আক্তার হোসেন। সেই মামুন মাহামুদ আজকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক, কিন্তু মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ঝাল বেধ করে এগিয়ে যেতে না পাড়ায় ত্যাগের বিনিময়ে আছেন অবমুল্যায়িত।