সাখাওয়াত ও টিপুর সঙ্গে ওসমানদের সখ্যতা, নিয়েছিল ২ কোটি: মুকুল

সান নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির মুলধারার শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল। একই সঙ্গে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুর সঙ্গে ওসমানদের সঙ্গে সখ্যতার অভিযোগ তুলেছেন তিনি।

১৫ মার্চ শনিবার বন্দর উপজেলা ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপি ও মহানগরীর ২৬নং ও ২৭নং ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিল কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন আতাউর রহমান মুকুল।

বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য কামনায় এবং ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর কারাবন্দী কর্মীদের সংবর্ধনা, ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুকুল বলেন, আমি সবসময় দলকে ধরে রাখতে চেষ্টা করেছি। দলের জন্য যতটুকু প্রয়োজন সেই কাজটা আমি করেছি। যখন থেকে দল ক্ষমতাচ্যুত হই তখন থেকেই দলের হাল ধরে রেখেছি। আমাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে কিন্তু আমি দলকে ছেড়ে যাইনি। দলের প্রতিটি কার্যক্রমে আমি অংশগ্রহণ করেছি।

তিনি দাবি করেন, ৫ আগষ্ট দেশ নতুন করে স্বাধীন হওয়ার পরদিনই আমি শান্তি মিছিল করেছি, বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণ করেছি। তারেক জিয়ার কথা কেউ রাখেনি। তিনি বলেছেন, দেশকে শান্তিপূর্ণ রাখতে হবে। আমি সেই ভাবে দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেছি।

সাখাওয়াত ও টিপুর কঠোর সমালোচনা করে মুকুল আরও বলেন, মহানগরের যে কমিটি দেয়া হয়েছে সেটা হলো সেলিম ওসমানের কমিটি। সেটা কিভাবে? সাখাওয়াতের স্ত্রী ছিলো সেলিম ওসমানের পিএস। তার কথাই সেলিম ওসমান শুনতো। সেলিম ওসমান দুই কোটি টাকা দিয়েছিলো সাখাওয়াতকে নির্বাচন করার জন্য। ওসমান পরিবারের কার সখ্যতা সেটা যাচাই-বাছাই করার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি অনুরোধ রইলো। যদি আমার দ্বারা বিএনপির তিল পরিমান ক্ষতি হয়ে থাকে তাহলে চিরজীবনের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করে দিন, আমার কোন আপত্তি নেই। কিন্তু বলতে হবে কেনো আমাকে বহিষ্কার করা হলো। কি অন্যায় করেছি? কি ক্ষতি করেছি? সেটা বিএনপিকে বলতে হবে। যারা কোন আন্দোলন সংগ্রাম না ঘরে বসেছিলো তারা নাকি এমপি নির্বাচন করবে! যারা লুটপাট করে তাদের কোন জায়গা আমার কাছে নেই। আমি জনগণের কল্যাণে কাজ করি। দেশনেত্রীর সুস্থ্যতা কামনায় ও তারেক রহমান খুব দ্রুত যেন দেশে এসে নেতৃত্ব দিতে পারেন সেজন্য সকলের কাছে দোয়া চাই।

মহানগর বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সবুর খান সেন্টু বলেছেন, ৫ আগষ্ট আমরা ফ্যাসিষ্ট হাসিনাকে পতন করতে পেরেছি। আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ ছিলো, এই ফ্যাসিষ্ট হাসিনার পতন হোক এবং সেটা হয়েছে। আমাদের উপর অনেক জুলুম অত্যাচার করেছে এই ফ্যাসিষ্ট সরকার, যার চিহ্ন আমার শরীরে রয়েছে। আমরা লোভের বশিভূত হয়ে দল করিনা, দল করি শহীদ জিয়ার আদর্শের উপর ভিত্তি করে। তার আদর্শ ছিলো বলেই আজও মানুষ ধানের শীষে ভোট দেয়। আগামীতেও নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনে মানুষ ধানের শীষে ভোট দিবে বলে আমি আশাবাদী।

বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট বিল্লাল হোসেনের সভাপতিত্বে ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, মহানগর বিএনপির সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মোল্লা, শহিদুল ইসলাম রিপন, মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, ফখরুল ইসলাম মজনু, ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল আহমেদ বাবুল, সদর থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ আহমেদ টিটু, ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবীর বুলবুল, ২৭নং ওয়ার্ড সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম।

বক্তব্যের পুর্বে কারানির্যাতিত নেতাকর্মীদের সম্মাননা প্রদান করেন উপস্থিত নেতৃবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- মহানগর বিএনপি নেতা মেজবাহ উদ্দিন স্বপন, শহীদ মেম্বার, আবুল কাশেম, এনায়েতুল্লাহ, ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আমীর আহমেদ, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মোস্তফা কামাল সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।