ফতুল্লায় র‌্যাবের অভিযানে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের দুই জঙ্গী গ্রেপ্তার

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় অভিযান চালিয়ে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১১) এর একটি দল আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমান উগ্রবাদী বই, ল্যাপটপ ও লিফলেট উদ্ধার করা হয়। ২০ মে সোমবার বিকেলে র‌্যাবের মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আলেপ উদ্দীন (পিপিএম) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, র‌্যাব-১১ এর আওতাধীন এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধির পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে ক্রমাগত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল ১৯ মে রবিবার রাত ১১টায় নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন মাসদাইর ভূঁইয়ার বাগ এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসার আল ইসলাম (আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) এর সক্রিয় সদস্য আবু সাঈদ ও এসএম মাহাদী হাসান ওরফে গোলাম রাব্বীকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আবু সাঈদ মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি এলাকার এবং মাহাদী হাসান বরিশাল জেলার গৌরনদী এলাকার। তারা বর্তমানে ফতুল্লায় বসবাস করে আসছিল। আসামীদের কাছ থেকে ল্যাপটপসহ বিপুল পরিমান উগ্রবাদী বই ও লিফলেট উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব আরও জানায়, আবু সাঈদ ২০১১ সালে ফতুল্লার আদর্শ স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করে এবং ২০১৬ নারায়ণগঞ্জ মেরিন একাডেমী থেকে মেরিন বিষয়ে ডিপ্লোমা করে। পড়াশোনার পাশপাপাশি ২০১৫ সালের দিকে অনলাইনে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করে। ২০১৪ সালে চরমোনা পীরের অনুসারী ছিলেন। চরমোনাই পীরের বিভিন্ন মাহফিলে গিয়ে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়।

পরবর্তীতে ফেজবুকে বিভিন্ন উগ্রবাদী পোষ্ট পড়ে এবং ইউটিউব দেখে উগ্রবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়। পরবর্তীতে কথিত বড়ভাই এর মাধ্যমে ২০১৬ সালে আনসার আল ইসলাম (আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) এ যোগদান করে। আনসার আল ইসলাম এ যোগদানের পর সে সংগঠনের দাওয়াতি কাজ করত। সে ফেজবুকে ও অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন উগ্রবাদী লেখা পোষ্ট করত এবং তা শেয়ার করে মানুষের মধ্যে পৌছে দিত।

এ ছাড়াও সে ২০১৭ সালের শেষের দিকে নারায়ণগঞ্জে একটি ফিল্যান্সিং ব্যবসা শুরু করে। তার ফিল্যান্সিং অফিসে নিয়মিত আনসার আল ইসলামের হালাকা অনুষ্ঠিত হত এবং এই হালাকায় নারায়ণগঞ্জ ছাড়াও আশে পাশের জেলাগুলো হতে আনসার আল ইসলামের বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্যগণ উপন্থিত হত বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়। আবু সাঈদ নারায়ণগঞ্জের আনসার আল ইসলামের (আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করত। আবু সাঈদ ও এসএম মাহাদী হাসান ওরফে গোলাম রাব্বী দুজনের বাসা একই এলাকায় হওয়ায় আবু সাঈদের সাথে তার পরিচয় হয়। তার মাধ্যমে এসএম মাহাদী হাসান ওরফে গোলাম রাব্বী আনসার আল ইসলামে যোগদান করে। সে আনসার আল ইসলামের দাওয়াত পাওয়ার পরে সংগঠনটির পক্ষে দাওয়াতি কাজ করত ও অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন উগ্রবাদী মতবাদ প্রচার করত বলে জানা যায়। এছাড়াও এসএম মাহাদী হাসান ওরফে গোলাম রাব্বী সংগঠনটির ইয়ানত কালেকশন করত বলে স্বীকার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।