সাখাওয়াতকে সুযোগ করে দিলেন কালাম ও এটিএম কামাল

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

২০১৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আংশিক কমিটি গঠনের কয়েক মাসের মাথায় মহানগর বিএনপির ব্যানারে দুটি প্যারালাল কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন বিএনপির দুটি গ্রুপ। যেখানে একটি গ্রুপের নেতৃত্বে মহানগর বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম ও সেক্রেটারি এটিএম কামাল এবং অপর গ্রুপের নেতৃত্বে সিনিয়র সহ-সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান। কালাম ও কামালের বলয়ের কর্মসূচির চেয়ে সাখাওয়াত হোসেন খানের কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ শুরু থেকেই বেশি। বর্তমানে কালাম ও কামালের নেতৃত্ব বাম দলে পরিনত হয়েছে। যা ২৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মাত্র ১৯ জন নেতাকর্মী নিয়ে কৃষকের পক্ষে মানববন্ধন করেন এটিএম কামাল। অনেকেই তাদের মানববন্ধন দেখে মন্তব্য করেছেন এটা কি বিএনপি নাকি কোন বাম দলের মানববন্ধন?

এদিকে নেতাকর্মীরা বলছেন- সাখাওয়াত হোসেন খান তার অনুসারি নেতাকর্মীদের নিয়ে যখন দলীয় কর্মসূচিগুলো জোড়ালোভাবে মহানগর বিএনপির ব্যানারে পালন করে আসছিলেন তখন সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। মহানগর বিএনপিকে দ্বিধাবিভক্তি করার জন্য তাকেই দোষারোপ করা হয়। ফলে সেই অবস্থান থেকে সরে গিয়ে মহানগর বিএনপির ব্যানার বাদ দিয়ে বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ব্যানারে কর্মসূচি পালন করে আসছেন সাখাওয়াত হোসেন খান। কর্মসূচি পালনে কালাম ও এটিএম কামালের নেতৃত্বে মহানগর বিএনপির ব্যানারের কর্মসূচির চেয়ে দ্বিগুন পরিমান নেতাকর্মীদের সমাগম দেখা যায় সাখাওয়াত হোসেন খানের কর্মসূচিতে।

সাখাওয়াত হোসেন খানকেও পাস কাটিয়ে চলার কারনে তিনি প্যারালাল কর্মসূচি পালণ করে আসছিলেন বলে দাবি করছেন তার নেতাকর্মীরা। সাখাওয়াত হোসেন খান অপেক্ষা করছিলেন মহানগর বিএনপির কোন কর্মসূচিতে তাকে জানানো হয় কিনা। যেসব মহানগর বিএনপির কর্মসূচি ও দলীয় সভা সেখানে সাখাওয়াত হোসেন খানকে জানানো হয়না। অনেকটা তাকে বাদ দিয়েই তারা মহানগর বিএনপিরকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন। যেখানে বৃহস্পতিবারের কর্মসূচির মত ১৯ জনের মতই নেতাকর্মীদের সমাগম ঘটাতে সক্ষম হয় কালাম ও কামালের মহানগর বিএনপি। গত ২১ মে জেলা প্রশাসকের বরাবর মহানগর বিএনপি স্মারকলিপি প্রদান করে। দুটি কর্মসূচিতেই সাখাওয়াত হোসেন খানকে দেখা যায়নি।

তবে ২১ তারিখের কর্মসূচির বিষয়ে সাখাওয়াত হোসেন খান দাবি করেন তাকে ওই কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হয়নি। সেদিন জেলার জন্য কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি ছিল। যেহেতু মহানগর কমিটি স্বারকলিপি প্রদান করেছে সেহেতু সাখাওয়াত হোসেন খানকে জানানোর উচিত ছিলে বলে দাবি করেছেন সাখাওয়াতের বলয়ের নেতাকর্মীরা।

অন্যদিকে সাখাওয়াত অনুগামী নেতাকর্মীরা বলছেন- যেহেতু সাখাওয়াত হোসেন খানকে মহানগর বিএনপির কোন কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হয়না সেহেতু সাখাওয়াত হোসেন খান সামনের কোন কর্মসূচি মহানগর বিএনপির ব্যানারে পালন করতেই পারেন। এবং এর সুযোগ করেই দিলেন সভাপতি ও সেক্রেটারি।

এ বিষয়ে মহানগর বিএনপির সেক্রেটারি এটিএম কামাল বলেন, ২৩ মে বৃহস্পতিবার মানববন্ধনে অংশগ্রহণের জন্য সাখাওয়াত হোসেন খানকে আমাদের সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক একাধিকবার ফোন করেছেন তিনি রিসিভ করেননি। আর স্মারকলিপি কর্মসূচিটাও কেন্দ্র ঘোষিত ছিল। এখন মহানগর বিএনপির সচেতন কোন নেতা যদি বলেন তাকে দাওয়াত দেয়া বা জানানো হয়নি তাহলে বিষয়টি সঠিক হয়না। কারন কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি সকলেই উপস্থিত থাকার কথা।

তিনি ২১ তারিখে সাখাওয়াত হোসেন খানকে জানানো হয়েছে কিনা সেটা জানেন না বলে দাবি করে আরও বলেন, আজকে মিডিয়ার মাধ্যমে মহানগর বিএনপির সকল নেতাকে জানাচ্ছি আগামীকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় মহানগর বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে সকলকে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান জানানো হলো। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সভা অনুষ্ঠিত হবে।