সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁয়ের কাচপুর এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী পুলিশের সোর্স মোমেন ও তার বাহিনী এতদিন ছিল ধরাছোয়ার বাহিরে। এলাকায় মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে তার কাছে জিম্মি হয়েছিল কাচপুরবাসী। কেউ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও পুলিশের ভুমিকা ছিল রহস্যজনক। তার বিরুদ্ধে এতদিন ব্যবস্থা না নেয়ার কারনে মোমেন ও তার বাহিনী আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠে কাচপুর এলাকায়।
পুলিশের অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে তার সখ্যতা রয়েছে বলে এলাকায় দাবি নিজেকেই বলে বেড়ান তিনিই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তারপর থেকে এলাকায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন হিসেবে পরিচিতি পায় সে। পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করার সুবাদে সে কাচপুুর এলাকায় বিশাল মাদক ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, সন্ত্রাসী ও মাদক সহ অন্তত ৮ থেকে ১০টি মামলা রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন সে সাত খুনের মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত নূর হোসেনের মতই আরেক নূর হোসেন সৃষ্টি হচ্ছে কাচপুরে। তাই এখননি সময় তাকে আইনের আওতায় আনা।
এবার সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের দায়ে অবশেষে সেই মোমেন ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে সোনারগাঁ থানা পুলিশ। স্থানীয় তিনটি বাড়িতে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের দায়ে সোনারগাঁয়ের শীর্ষ এই মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে পুুলিশ। তার বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সোনারগাঁ থানা পুুলিশ।
জানাগেছে, গত ৩০ মে বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর সোনাপুর এলাকায় নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানের বাড়ি সহ তিন বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে। হামলায় বৃদ্ধাসহ ৫জনকে পিটিয়ে আহত করেছে সন্ত্রাসী বাহিনী। এছাড়াও একটি রড সিমেন্টের দোকানে হামলা চালিয়ে ম্যানেজারকে মারধর করা হয়। ঘটনার সময় বাড়ি থেকে স্বর্ণলংকার ও নগদ টাকা লুট করেছে বলে অভিযোগ উঠে। আহতদের স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পর সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বাবুল ওমর বাবু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছিলেন।
ওই দিন সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বাবুল ওমর বাবু বলেছিলেন, হামলা ও ভাংচুরের ঘটনাটি খুবই ন্যাক্কারজনক। মোমেন একজন পুলিশের চিহ্নিত সোর্স। তাদের অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।
এদিকে ওই হামলা সন্ত্রাসী লুটপাটের ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় মজিবুর রহমানের ভাই জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে মোমেন বাহিনীর প্রধান মোমেন সহ আরও ৬ জনের নাম উল্ল্যেখ করে অপ্সাতনামা আরও ৭/৮জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় আসামি করা হয় কাচপুর সোনাপুর এলাকার আমির হোসেনের ছেলে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী মোমেন, একই এলাকার আলী হোসেনের ছেলে বাপ্পী, রশিদ সরকারের ছেলে বাদশা, রুবেল, জাফর আলীর ছেলে কামাল, জামালের ছেলে বিল্লাল ও ললাটি এলাকার জুয়েল।
মামলায় বাদী অভিযোগ করেন- কাচপুর সোনাপুুর এলাকায় তার রড সিমেন্টের দোকান রয়েছে। তিনি একজন ব্যবসায়ী। উক্ত আসামিরা এলাকায় সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায় করে থাকে। তাদের অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাদীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের বিরোধ ছিল।
তারই জের ধরে ৩০ মে বৃহস্পতিবার দুপুরে উক্ত সন্ত্রাসীরা তাদের বাহিনী নিয়ে দা চাইনিজ কুড়াল দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বিএনপি নেতা মজিবুর রহমানের বাড়িতে হামলা চালায়। ওই সময় মুজিবুর রহমানের বৃদ্ধা মাকেও মারধর করা হয়। হামলা চালিয়ে আড়াই লাখ টাকার আসবাবপত্র ভাংচুর করে ক্ষতিসাধন করে। ঘরে প্রবেশ করে আলমারী থেকে ৩ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। একইভাবে মজিবুর রহমানের বোন সুমা বেগমের বাড়িতেও হামলা চালিয়ে তাকে মারধর করে। সেখানেও হামলা ভাংচুর করে ক্ষতিসাধন ও টাকা লুট করে নিয়ে। এ ছাড়াও রড সিমেন্টের দোকানে হামলা ভাংচুর চালিয়ে দোকানের ক্যাশ থেকে ২ লাখ টাকা লুট করে সন্ত্রাসী বাহিনী।