সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার বক্তাবলী ইউনিয়নে ৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করেছেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাহিদা বারিক। এসময় তিনি কাজগুলোর উন্নয়নের অগ্রগতি তদারকি করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিনব্যাপী বক্তাবলী ইউনিয়নে এসব উন্নয়ন কাজের পরিদর্শন করেন এবং কাজের কোন অনিয়ম হচ্ছে কিনা সেই সব বিষয়ে খোজ খবর নেন। বিগত সময়ে যারা নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তাদের কেউ এভাবে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করেননি বলে নাহিদা বারিকের প্রশংসা করেন এলাকাবাসী। এর আগেও তিনি কাশিপুর এলাকায় দিনব্যাপী বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কাজ পরিদর্শন করেছিলেন।
জানাগেছে, ১১ জুন মঙ্গলবার সকাল থেকে বক্তাবলী ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে গিয়ে এসব উন্নয়নমুলক প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন ও তদারকি করেন তিনি।
এখানে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজগুলো হলো- বক্তাবলী ইউনিয়নের কানাইনগর মতিন ডাক্তারের বাড়ীর সামনে খালের উপর ব্রীজ নির্মাণ, গুচ্ছগ্রাম খালের উপর ব্রীজ নির্মাণ, কানাইনগর গাজী আব্দুল লতিফ বেপারীর বাড়ীর সামনে খালের উপর ব্রীজ নির্মাণ, চর রাধানগর খালের উপর ব্রীজ নির্মাণ, চর আলীরটেক খালের উপর ব্রীজ নির্মাণ, ডিক্রিরচর আব্দুল খালেক মাষ্টারের বাড়ীর সামনে খালের উপর ব্রীজ নির্মাণ, রামনগর শহিদুল্লাহ মাষ্টারের বাড়ীর সামনে খালের উপর ব্রীজ নির্মাণ, প্রতাপনগর আনন্দবাজার খালের উপর ব্রীজ নির্মাণ এবং ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচির আওতায় পূর্ব গোপালনগর সামসুদ্দিন মিয়ার বাড়ী হয়ে বাবুলের ইটের ভাটা বক্তাবলী ফেরীঘাট সংলগ্ন রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প।
অন্যদিকে এসব এসব ছাড়াও বক্তাবলী ইউনিয়ন ভূমি অফিস, বক্তাবলী ইসলামীয়া সিনিয়ার আলিম মডেল মাদ্রাসা, পূর্ব গোপালনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন ও বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদ পরিদর্শন করেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার হিসেবে বক্তাবলীর ১১টি গৃহহীন পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণ করার প্রকল্প পরিদর্শন করেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ১১টি পরিবারের সদস্যদের সাথে আলোচনা করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া গৃহহীনদের প্রতিটি ঘর নির্মাণ করতে ১ লাখ টাকা দেয়া হবে বলেও জানান তিনি। এতে করে কাউকে ১টি টাকাও ঘুষ না দেয়ার কথাও জানান তিনি।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাহিদা বারিক তপ্ত রোদে প্রচন্ড গরমে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বক্তাবলী ইউনিয়নে এসব উন্নয়ন কাজের পরিদর্শন করেন। বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলীকে সাথে নিয়ে সকালে পূর্ব গোপালনগর এলাকার মাটি ভরাট করে নতুন রাস্তা নির্মাণ কাজের খোজখবর নেন। পরে পূর্ব গোপালনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের খোজখবর নেন। নদী পাড় হয়ে গোপালনগর এলাকার রাস্তার পরিদর্শন করেন।
এখান থেকে ছুটে গিয়ে বক্তাবলী ইসলামীয়া সিনিয়র আলিম মডেল মাদ্রাসার বিভিন্ন সমস্যার খোজখবর নেন এবং মাদ্রাসার উন্নয়নের আশ্বাস দেন তিনি। এ ছাড়াও কানাইনগর ও প্রসন্ননগর গুচ্ছগ্রাম এলাকার নতুন রাস্তা ও কালভার্ট নির্মাণ কাজের খোজখবর নেন এবং শ্রমিকদের সাথে আলোচনা করেন তিনি। এমনকি বিভিন্ন এলাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করতে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সাথে আলোচনা করেন এবং স্থানীয় লোকদের সাথে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সাথে কেমন সম্পর্ক তারও খোজখবর নেন উপজেলা প্রশাসনের এই শীর্ষ কর্মকর্তা।
উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনে ছুটে যান বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে। সেখানে গিয়ে পরিষদের রেজিস্ট্রার খাতা দেখেন তিনি। রেজিস্ট্রারে কোন অনিয়ম রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখেন। পরে তিনি বক্তাবলী ইউনিয়ন ভূমি অফিস পরিদর্শন করেন। সেখানেও গিয়ে তিনি রেজিস্ট্রার খাতা খতিয়ে দেখেন।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিক দিনব্যাপী এসব উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন ও তদারকি শেষে বলেন, ‘বক্তাবলীতে গিয়ে আমি খুব অভিভুত। রাস্তাঘাট ও এলাকার পরিবেশ দেখে খুব ভাল লেগেছে। যতগুলো প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করা হয়েছে এতে করে স্থানীয় চেয়ারম্যানের দক্ষতা প্রমাণ পাওয়া গেছে। বর্তমান সরকার সারা দেশে যেভাবে উন্নয়ন করছে তা মডেল হিসেবে পরিনত হয়েছে। আর সারা দেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জেও ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। সরকারের দেয়া প্রকল্পের কাজগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হোক সেই প্রত্যাশা করছি এবং আমরা সেভাবেই কাজ করছি।’