দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:
৯ ডিসেম্বর ছিল মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এদিনে নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত তার মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেননি। ফলে এ আসনের মহাজোটের প্রার্থী বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা বেশ বেকায়দায় পড়েছেন। এর আগে তিনি বিনাপ্রতিদ্বন্ধিতায় এমপি হলেও এখানে ভোটের মাঠে তিনি ছিলেন না। ৫বছর এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও তিনি এখানে অবস্থান পাকাপোক্ত করতে পারেননি। যে কারনে এখানে কায়সার হাসনাত ও বিএনপির প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নানের সঙ্গেই হবে নির্বাচনের মুল লড়াই।
তবে এ আসনে ভোটের হিসেবে রয়েছে নানান হিসেবে নিকেশ। যেখানে বিএনপির প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নানের বিপক্ষে রয়েছেন এ আসনের সাবেক এমপি রেজাউল করিম ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু জাফর। এই দুইজন নেতা পুরোদমে মান্নানের পক্ষে নির্বাচনী মাঠে না থাকলে মান্নানের জয়ের সম্ভাবনা কম। যদিও খন্দকার আবু জাফর এখানে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পেলেও তিনি মনোনয়ন পত্র দাখিলই করেননি। তিনি মান্নানের মনোনয়নের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এখানে রেজাউল করিমের বিশাল ভোট ব্যাংক রয়েছে। যার বেশির ভাগ ভোট চলে যাবে কায়সার হাসনাতের বাক্সে। কারন কায়সার যখন এমপি ছিলেন ওই সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর নির্যাতনের মাত্রা কমই ছিল।
এখানে আওয়ামীলীগের একটি অংশ কায়সার হাসনাতের সঙ্গে দূরত্ব রয়েছে এবং এমপি খোকা হলেন মহাজোটের প্রার্থী। সেই হিসেবে খোকার পক্ষেও থাকবে আওয়ামীলীগের একটি অংশ। তবে তিন প্রার্থীর মধ্যে কায়সার হাসনাতই সবচেয়ে বেশি এ আসনে জনপ্রিয়। সাধারণ মানুষের কাছে কায়সার হাসনাত একজন সাদা মানুষ। কায়সার হাসনাতের চাচা মোশারফ হোসেনও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করলেও তিনি আপীল করেও বৈধতা পাননি। তবে তিনি থাকবেন কায়সার হাসনাতের পক্ষেই। তিনি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও গত নির্বাচনে তিনি আওয়ামীলীগের মনোনয়নও পেয়েছিলেন।
এসব কারনে বিএনপি নেতাকর্মীরা বলছেন, এখানে মান্নানের জয় নিশ্চিত করতে হলে মাঠে নামতে হবে রেজাউল করিম ও খন্দকার আবু জাফরকে। আবার এমপি খোকার জয় নিশ্চিত করার সুযোগ ছিল কায়সার হাসনাত নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানো। আবার রেজাউল ও জাফর পন্থীদের ভোট যদি এমপি খোকা টানতে পারেন সেক্ষেত্র খোকা কিছুটা হলেও এগিয়ে থাকবেন। তবে সকল হিসেবে নিকেশে এগিয়ে থাকছেন কায়সার হাসনাত। যদিও নির্বাচন নাগাদ এমন পরিস্থিতির অনেক কিছুই উলোটপালট হতে পারে।
তবে কায়সার হাসনাত তার মনোনয়ন পত্র দাখিলের দিন কয়েক হাজার আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে মনোনয়ন দাখিল করতে গিয়ে বলেছিলেন, আমি এমপি হতে আসিনি। আমি সোনারগাঁয়ের আওয়ামীলীগকে বাঁচাতে আসছি।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে এ আসনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পান উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন। ওই নির্বাচনে আওয়ামীলীগ তার মহাজোটের শরীক দল জাতীয়পার্টিকে এ আসনটি ছেড়ে দিলে মোশারফ হোসেন মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নেন। মোশারফ হোসেন কায়সার হাসনাতের আপন চাচা। ওই নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় এমপি নির্বাচিত হন লিয়াকত হোসেন খোকা।