সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের বিদায়ী জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়াকে সংবর্ধনা দিয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি। ২৩জুন রবিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়ার নেতৃত্বে আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে বিদায়ী জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়াকে সংবর্ধনা জানানো হয়।
দীর্ঘ তিন বছর নারায়ণগঞ্জে জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন রাব্বী মিয়া যিনি সরকারের যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নিত লাভ করেছেন। এই তিন বছরে তিনি ব্যাপক কর্মকান্ড করেছেন বলে দাবি করেছেন। বিদায়ী এই ডিসি প্রতিটি বিদায়ী সংবর্ধনায় তিনি তার কর্মের নিজেই প্রশংসা করছেন। তিনি তুলে ধরছেন তার নানা কর্মকান্ড। রবিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি তাকে বিদায়ী সংবর্ধনা দিতে গেলে ৫২ মিনিট আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে তিনি বক্তব্য রাখেন। যেখানে বেশির ভাগ বক্তব্যে তিনি তার কর্মের প্রশংসা নিজেই করেছেন। সেই সঙ্গে আইনজীবীদের নিয়ে নানা পরামর্শ।
বিদায়ী ডিসি রাব্বী মিয়া তার বক্তব্যে তিনি দাবি করেন- নারায়ণগঞ্জে তিনি তিন বছর দায়িত্ব পালনকালে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কোন ঘটনার সূত্রপাত হলেই তার মাধ্যমে সেইসব ঘটনা একদিনের মধ্যেই সমাধান হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।
গত বছরের ১৬ জানুয়ারি এমপি শামীম ওসমান ও মেয়র আইভীর লোকজনদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা প্রসংঙ্গে ডিসি বলেন, আপনারা দেখেছেন নারায়ণগঞ্জে চাষাড়ায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় একদিন পরেই তা নীরব হয়ে যায়। যেখানে সংঘর্ষে হামলার তলে পড়ে গিয়েছিল এমন ঘটনাও কিন্তু পরদিন নারায়ণগঞ্জ শিথিল হয়ে যায়। সেটা শুধু আমার মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে।
তিনি দাবি করেন- নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বাউন্ডারী বাড়ানো হয়েছে। সার্কিটে হাউজের সামনে গেট লাগানো হয়েছে। কোটের গেটের সামনে এটিএম বুথ বসানো হয়েছে। জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষ আধুনিক করা হয়েছে।
এ ছাড়াও তিনি দাবি করেন- নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী এমপি একেএম শামীম ওসমান তাকে জ্ঞানী ডিসি আখ্যায়িত করেছেন। যে কারনে তিনি গর্ববোধ করেন। অনুষ্ঠানে তিনি প্রায় এক ঘন্টা তার বক্তব্যে নিজেই নিজের কর্মের গুণকীর্তন করেন।
কিন্তু এদিকে জানাগেছে, রূপগঞ্জে ভুমিদস্যূদের বিরুদ্ধে অসহায় মানুষ বারবার অভিযোগ দিয়েও কোন ফল পায়নি। এমনকি উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করেও সেই রিটের কোন ফল পায়নি। রূপগঞ্জে সাধারণ মানুষের জমি ভুমিদস্যূরা দখল করে নিলেও তিনি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। সবশেষ নারায়ণগঞ্জের জনপ্রিয় দৈনিক পত্রিকা যুগের চিন্তা তার আদেশেই বন্ধ হয়েছিল। ওই সময় সাংবাদিক নেতারা মানবন্ধন করে বলেছিলেন- নারায়ণগঞ্জে ডিসি রাব্বী মিয়া কলংকজনক অধ্যায়ের সৃষ্টি করে গেলেন। নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালীদের গুণকীর্তনই ছিল তার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তব্য।
অনেকেই বলছেন- সচরাচর সরকারি কোন কর্মকর্তা বিদায় নেয়ার সময় সকলের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে বলে যান-ভুলত্রুটি হয়ে থাকলে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের এই বিদায়ী ডিসি তার সকল কর্মকান্ডেই ভাল এবং সঠিক দাবি করে বক্তব্য রেখে গেলেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষে এই বিদায়ী সংবর্ধনায় সমিতির সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া সহ উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ আদালতের বর্তমান জিপি অ্যাডভোকেট মেরিনা বেগম, সাবেক জিপি অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির, ভিপি অ্যাডভোকেট এমদাদুল হক তারাজ উদ্দীন, আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আলী আহম্মদ ভূঁইয়া, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট বিদ্যুৎ কুমার সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট আব্দুর রউফ, আপ্যায়ন সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান কাজল, লাইব্রেরী সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুবাস বিশ্বাস, ক্রীড়া সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাজ্জাদুল হক সুমন, সমাজ সেবা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ রাশেদ ভূঁইয়া, আইন ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ স্বপন ভূঁইয়া, কার্যকরী পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট হাসিব উল হাসান রনি, অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান, অ্যাডভোকেট নুসরাত জাহান তানিয়া, অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান ও অ্যাডভোকেট আহসান হাবিব গোলাপ।
এ ছাড়াও অন্যান্য আইনজীবীদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- অ্যাডভোকেট রবিউল আমিন রনি, এজিপি অ্যাডভোকেট দিলীপ বিশ্বাস, অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দীন, অ্যাডভোকেট কাজী মামুন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট অঞ্জন দাস সহ অন্যান্য আইনজীবীগণ।