দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:
বিগত সাড়ে ৪ বছরে সংসদ সদস্যের দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে এলাকার উন্নয়ন কাজে অতীতের করা ভুল ত্রুটির ক্ষমা চাইতে জনগণের সামনে আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছেন বলে দাবি করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। সেই সাথে ভবিষ্যতে এমন ভুল ত্রুটি আর হবেন না বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
৯ ডিসেম্বর বিকেলে বন্দরের মদনপুর কেওঢালা এলাকায় ইউনিয়নবাসীর উদ্যোগে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন কথা বলেন। আলোচনা সভায় তিনি মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ সালাম এর মায়ের আত্মা মাগফেরাত ও বেহেস্ত কামনা করেন।
সকলের উদ্দেশ্যে সেলিম ওসমান বলেন, অতীতে কাজ করতে গিয়ে আমার ছোট ছোট ভুল ভ্রান্তি হয়েছে। আমি এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বারদের মাধম্যে উন্নয়ন কাজ গুলো করেছি। এখানে সম্পূর্ন ভুলটা ছিল আমার। আমি যদি তিন মাস অন্তর অন্তর প্রতিটি ওয়ার্ডে গিয়ে আপনাদের সাথে বসে আলোচনার মাধ্যমে উন্নয়ন কাজ গুলো করতাম তাহলে হয়তো এখন আরো অনেক বেশি উন্নয়ন করা সম্ভব হতো। যে উন্নয়ন কাজ গুলো অনেক আগেই সম্পন্ন হয়েছে সেগুলো এখন এই সময়ে এসে বলতে লজ্জাবোধ করছি। আজকে আজ আমি আপনাদের সামনে আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছি। আমি আপনাদের কাছে আরো একবার আপনাদের গোলামী করার সুযোগ চাই। যদি আপনারা আমাকে সেই সুযোগটি দেন তাহলে ভবিষ্যতে সরকারী উন্নয়নের পাশাপাশি আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে উন্নয়ন কর্মকান্ডও অব্যাহত থাকবে। আর ভবিষ্যত প্রজন্মকে ভাল রাখতে যা যা করনীয় আছে তার সবটুকুই আমি করবো। শনিবারের মত আজকেও নিজের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষে এলাকার সাধারণ মানুষকে বিগত দিনের ভুল ভ্রুটি সম্পর্কে বলার অনুরোধ জানিয়ে মঞ্চে আহবান জানান এমপি সেলিম ওসমান।
এসময় মঞ্চে ১০৮ বয়সী বৃদ্ধ ভাষা সৈনিক জবেদ আলী মঞ্চে এসে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, আমি আপনার দাদা খান সাহেব ওসমান আলীর নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলনে অংশ নিয়েছি। উনিই আমার গুরু। ওসমান সাহেবের বংশের মানুষ আপনি আপনাকে দেখার অনেক ইচ্ছা আমার ছিল। আজকে সামনে দেখে অনেক খুশি হয়েছি। আপনি বন্দরে যে উন্নয়ন করেছেন তা স্বাধীনতার পর আমি আর দেখি না।
প্রতি উত্তরে এমপি সেলিম ওসমান বলেন আমি নিজেকে অনেক সৌভাগ্যবান মনে করছি উনি আমার দাদার সাথে আন্দোলন করেছেন ১০৮ বছর বয়সে এখানে দাড়িয়ে উন্নয়নের প্রশংসা করছেন এর থেকে সৌভাগ্যের আর কি হতে পারে।
এছাড়াও অত্র এলাকায় স্থানীয় একজন যুবক এমপি কাছে দাবী রেখে বলেন, আমি এই এলাকার সন্তান। এম.এ পাস করে এখনো বেকার। আমাদের এলাকায় অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান রয়েছে। উনারা স্থানীয়দের চাকরি দেন না। বাইরের জেলা থেকে লোক এসে এখানে চাকরি করছে আর আমরা স্থানীয়রা বেকার বসে আছি। উনারা যাতে স্থানীয়দের চাকরি করার সুযোগ দেন সেই ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য আপনার কাছে দাবী রাখছি। প্রতিউত্তরে এমপি সেলিম ওসমান বলেন, শুধুমাত্র সাটির্ফিকেট দিয়ে এখন চাকরি পাওয়া সম্ভব নয়। পাশাপাশি অভিজ্ঞতা ও মেধার প্রয়োজন। আমার আপসোস হয় আমরা বিকেএমইএ এর মাধ্যমে প্রশিক্ষনের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজার শিক্ষিত যুবক-যুবকের চাকরির ব্যবস্থা করেছি। অথচ আমাদের স্থানীয়রা সেগুলোর খোঁজ রাখেন না প্রশিক্ষন নেন। নারায়ণগঞ্জে স্থানীয়রা বিনিয়োগ করবেন কিন্তু স্থানীয়রা চাকরি করতে পারবেন না সেটা হয়না। নিজেকে যোগ্যতা সম্পন্ন হিসেবে গড়ে তুলতে হবে তাহলে একজন মানুষও বেকার থাকবেন না।
মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম.এ সালাম এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন জলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম.এ রশিদ, মহানগর আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন, মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক সানাউল্লাহ সানু, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া, মদনপুর ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি আবুল খায়ের বাশার, সাধারণ সম্পাদক গোলাপ হোসেন, জেলা আওয়ামী মহিলা লীগের সভানেত্রী ড. শিরীন বেগম, মহানগর আওয়ামী মহিলালীগের সভানেত্রী ইসরাত জাহান খান স্মৃতি, জেলা মহিলা পার্টির সভানেত্রী আঞ্জুমান আরা ভুইয়া, মহানগর যুবসংহতির সাধারণ সম্পাদক রিপন ভাওয়াল, মহানগর যুবলীগ নেতা শামসুল হাসান, মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, বন্দর উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ছালিমা হোসেন শান্তা, সাধারণ সম্পাদক সখিনা বেগম, বন্দর উপজেলা ছাত্র সমাজের সভাপতি শফিকুল ইসলাম শফিক সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা।