আব্দুল্লাহ আল মামুন, বিশেষ প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জ-২(আড়াইহাজার) আসনে আবারো এমপি নির্বাচিত হয়ে হ্যাট্রিকের পথে বর্তমান এমপি নজরুল ইসলাম বাবু। এ আসনে বিএনপি থেকে ধানের শীষ প্রতীকে নজরুল ইসলাম আজাদকে মনোনিত করা হলেও তার জয়ের সবচেয়ে বড় বাধা এ আসনে বিএনপি থেকে বঞ্চিত দুই হেভিওয়েট প্রার্থী সাবেক এমপি আতাউর রহমান খান আঙ্গুর ও মাহমুদুর রহমান সুমন। আজাদের জয় ছিনিয়ে আনতে হলে এই নেতার পুরোদমে প্রত্যক্ষ সহযোগীতা ছাড়া সম্ভব নয়। যদিও ইতিমধ্যে দুজনের বাসায় গিয়ে দেখা করেছেন নজরুল ইসলাম আজাদ। আড়াইহাজারের মানুষের কাছে সবচেয়ে অযোগ্য নজরুল ইসলাম আজাদ একজন ধাম্ভিক অহংকারী হিসেবে পরিচিত।
নেতাকর্মীরা বলছেন- আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের এমপি নজরুল ইসলাম বাবু সরব হয়ে ওঠলেও অনেকটা নিরবতাই পালন করছেন বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক পাওয়া নজরুল ইসলাম আজাদ। আড়াইহাজারের বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে আজাদের সম্পর্ক নেই। মহানগরীর বিএনপি নেতাকর্মীরাই থাকছেন আজাদের চারপাশে। যে কারনে আড়াইহাজারের নেতাকর্মীরাও আজাদ থেকে দুরে রয়েছেন। নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে হ্যাট্রিক জয় করতে চান বাবু। আওয়ামীলীগের দূরত্ব কমিয়ে সকলে এখন বাবুর পক্ষে। কিন্তু নজরুল ইসলাম আজাদের জয় পথেই বাধা হয়ে দাড়িয়েছে চাচা সাবেক তিনবারের এমপি আতাউর রহমান খান আঙ্গুর ও ভাতিজা মাহমুদুর রহমান সুমন।
জানাগেছে, কেন্দ্রীয় লবিং কওে বিশেষ সুবিধার মাধ্যমে মনোনয়ন আনলেও আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপি নেই আজাদের পক্ষে। আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির দশটি ইউনিয়নের প্রায় সবগুলো সভাপতিরা ছিল মাহমুদুর রহমান সুমনের বলয়ে। তাছাড়া তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগ নজরুল ইসলাম আজাদ নাকি আড়াইহাজার উপজেলা দশটি ইউনিয়নের আজ অবধি পা ও রাখেননি। গত কয়েক বছরে অনেক ইউনিয়ন এলাকায় তিনি যাননি। কালাপাহাড়িয়া এলাকায় কখনই যাননি আজাদ। যেখানে বিপুল পরিমান ভোট। জেলা ও মহানগর পর্যায়ের কিছু নেতাকর্মী নিয়ে তিনি সবসময় বলয় তৈরি করে ঘুরাফেরা করতেন। ছাত্রদল, যুবদল, মূলদলের নেতাকর্মীরা আজাদের মাধ্যমে পদ ভাগিয়ে আনতে পদপদবী পাওয়ার আশায় রাত দিন ঘুরে বেড়াচ্ছেন তার পিছনে। কিন্তু নেই আড়াইহাজারের নেতাকর্মীরা। একমাত্র বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন অনু ও তার স্ত্রী মহিলা দলের সভাপতি পারভীন আক্তারই রয়েছেন আজাদের পক্ষে। পারভীন আক্তার দুইবার মেয়র পদে নির্বাচনে করেও তিনি পাস করতে পারেননি।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আড়াইহাজারের আইনজীবী বিএনপি নেতা বলেন, নজরুল ইসলাম আজাদকে বিএনপির দল মনোনয়ন প্রদান করলেও তিনি আমজনতার নেতা হয়ে ওঠতে পারেননি। যা নজরুল ইসলাম বাবু পেরেছেন। তিনি আরও বলেন, আজাদ সবসময় দূরের মানুষকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তিনি বলেন, আপনারা লক্ষ্য করে দেখেন তার পিছনে যারা ঘুরাফেরা করে তারা কিন্তু বেশিরভাগ আড়াইহাজার উপজেলার বাহিরের লোক। তাছাড়া তিনি আড়াইহাজারের আইনজীবীদেরও তেমন মূল্যায়ন করেন না।
অন্যদিকে, আড়াইহাজারে সাবেক তিনবারের এমপি আতাউর রহমান আঙ্গুর ও উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুর মনোনয়ন না পাওয়ায় আজাদের ভরাডুবির আশংকা রয়েছে বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তৃণমূল নেতাকর্মী বলেন, আমরা ভেবেছিলাম মাহমুদুর রহমান সুমনের হাতে তুলে দিবেন ধানের শীষ প্রতীক। কিন্তু তা না করে দল যখন আজাদের হাতে ধানের শীষ প্রতীক তুলে দিল তখন বিএনপি নেতাকর্মীরা হতাশ।