সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
জীবন অমূল্য রতন। জীবন আল্লাহতায়ালার অনেক বড় নেয়ামত। জীবন আছে বলেই পৃথিবীতে মানুষের দেহের মূল্যায়ন আছে। দেহের সাথে জীবন ও আত্মার সম্পর্কের ফলে হাত ধরতে পারে, পা চলতে পারে, চোখ দেখতে পারে, মুখ বলতে পারে। যেদিন এই সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে, সেদিন নিছক একটি দেহ ও একটি কাষ্ঠখণ্ডের মাঝে কার্যত তেমন কোন পার্থক্য থাকবে না। এজন্য প্রতিটি মানুষের উচিত, জীবনের প্রতি সচেতন হওয়া। পৃথিবী নামক এই গ্রহের মাঝে দুঃখের বেদনা আছে, সুখের স্বাদ আছে, না পাওয়ার কষ্ট আছে, প্রাপ্তির আনন্দ আছে।
দুঃখ-সুখের এই মিশ্র পদচারণার নামইতো জীবন। এই পিচ্ছিল পথের চড়াই-উৎরাই পাড়ি দিয়েই এগুতে হবে সুখময় জীবনের সন্ধানে। তাই পথ যতই বন্ধুর হোকনা কেন? পরিস্থিতি যতই বিপদ সংকুল হোকনা কেন? জীবনের প্রতি অনাস্থা ও অবজ্ঞা করা যাবেনা। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অমূল্য বাণী-তোমাদের কেউ যেন বিপদে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর আকাঙ্খা না করে। একান্ত যদি করতেই হয় তাহলে যেন এভাবে করে- হে প্রভু! যদি পৃথিবীতে বেঁচে থাকা কল্যাণকর হয় তাহলে তাহলে বাঁচিয়ে রাখ। আর যদি মরে যাওয়া কল্যাণকর হয় তাহলে মৃত্যু দিয়ে দাও। বুখারী- মুসলিম।
যেখানে মৃত্যুর আকাঙ্খা করা নিষেধ সেখানে আত্মহত্যারতো প্রশ্নই আসেনা। বোকার স্বর্গে বসবাসকারী কিছু মানুষ জীবনের চূড়ান্ত সমাধানের লক্ষ্য হিসেবে আত্মহত্যা বেঁছে নেয়। হায়! এ যেন কুকুরের ধাওয়া থেকে বাঁচতে গিয়ে বাঘের মুখে পতিত হওয়া।
পরকালে আত্মহত্যার ভয়াবহ শাস্তির কথা উল্লেখ করে মহান আল্লাহতায়ালা পবিত্র আল কুরআনে ইরশাদ করেন- আর তোমরা নিজেদের হত্যা করনা। নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা তোমাদের প্রতি দয়ালু। এবং যে কেউ জুলুম করে অন্যায়ভাবে তা (আত্মহত্যা ) করবে অবশ্যই আমি তাকে অগ্নিদগ্ধ করবো। আর আমার পক্ষে তা সম্ভব। সূরা আন নিসা।
হাদীস শরীফে এসেছে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি দুনিয়াতে কোন বস্তু দিয়ে নিজেকে হত্যা করবে, কেয়ামতের দিন তাকে সেই বস্ত দিয়েই শাস্তি দেয়া হবে। বুখারী-মুসলিম।
অন্য রেওয়ায়েতে এসেছে- যে ব্যক্তি ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে সে দোযখে অনুরূপভাবে নিজ হাতে ফাঁসির শান্তি ভোগ করতে থাকবে। আর যে বর্শার আঘাত দ্বারা আত্মহত্যা করবে দোযখেও সেভাবে সে নিজেকে শাস্তি দিবে। আর যে নিজেকে নিক্ষেপ করে আত্মহত্যা করবে কেয়ামতের দিন সে নিজেকে উপর থেকে নিক্ষেপ করে হত্যা করবে।
আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে জীবনকে কদর করে চিরস্থায়ী সুখ অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
লেখক: মুফতি উসমান গনী কাসেমী