সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির ৮তলা বিশিষ্ট ডিজিটাল বার ভবন নির্মাণ কাজ এবার হলো দৃশ্যমান। পুরাতন ভবন ভাঙ্গা থেকে শুরু করে পাইলিং কাজ শেষে এবার পিলার নির্মাণ কাজ চলছে। ২৩ জুলাই মঙ্গলবার পাইলিং এর উপরে পিলার নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এর আগে আইনজীবী সমিতির আইনজীবীরা দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে এই নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নারায়ণগঞ্জের ১২’শ আইনজীবীর কল্যাণে এমন একটি ভবন নির্মাণ কাজ যখন দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে তখন আইনজীবীদের বাহবা পেতে শুরু করেছেন আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া।
জানাগেছে, মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া এই দৃশ্যমান কাজ পরিদর্শন করেন।
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী সমিতির কার্যকরী পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আলী আহম্মদ ভূঁইয়া, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট বিদ্যুৎ কুমার সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট আব্দুর রউফ মোল্লা, আপ্যায়ণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান কাজল, লাইব্রেরী সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুবাস বিশ্বাস, ক্রীড়া সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাজ্জাদুল হক সুমন, সমাজ সেবা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ রাশেদ ভূঁইয়া, আইন ও মানবাধিককার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ স্বপন ভূঁইয়া, কার্যকরী পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট হাসিব উল হাসান রনি, অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান, অ্যাডভোকেট নূসরাত জাহান তানিয়া, অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান ও অ্যাডভোকেট আহসান হাবিব ভূ্ইঁয়া গোলাপ সহ আইনজীবী সমিতির অন্যান্য আইনজীবীগণ।
সার্বক্ষনিক আইনজীবী সমিতির কার্যকরী পরিষদের নেতৃবৃন্দ ডিজিটাল ভবন নির্মাণ কাজ পরিদর্শন পর্যবেক্ষন করছেন। যেখানে কঠোর ঘাম ঝড়ানো পরিশ্রম করছেন সমিতির সভাপতি ও সেক্রেটারি।
অন্যদিকে শত বছরের আগাম ইতিহাস গড়তে যাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া। তরুণ দুই আইনজীবী নেতা নারায়ণগঞ্জের ১২’শ আইনজীবীর কল্যাণে ও আইনজীবী সমিতির উন্নয়নে কাজ করে ইতিমধ্যে আইনজীবীদের কাছে ডায়নামিক লিডার হিসেবে প্রমানিত হয়েছেন। একটি বহুতল ভবনের আয়ষ্কুাল শত বছরেরও বেশি হয়ে থাকে। তেমনি শত বছরও নারায়ণগঞ্জের আইনজীবীদের মাঝে কর্মের মাধ্যমে বেঁচে থাকবেন তারা। এমনি নারায়ণগঞ্জের আইনজীবীদের জন্য একটি ভবন নির্মিত হচ্ছে যা শত বছরই টিকে থাকবে। যার ইট বালি কণা সিমেন্টের সঙ্গে মিশে থাকবেন জুয়েল মোহসীনের নাম।
জানাগেছে, এই ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করতে দুই আইনজীবী নেতাকে অনেক কাঠখোর পোহাতে হয়েছে। এসেছিল অনেক বাধা বিপত্তি। তবুও থমকে যায়নি তারা। নানা জল্পনা কল্পনা ও নানা গুঞ্জন গুজব আলোচনা সমালোচনা সমস্যা বাধা বিপত্তি পেড়িয়ে নারায়ণগঞ্জের ১২’শ আইনজীবীর স্বপ্ন আজ বাস্তবায়নের পথে। এর সামনে থেকে কাজ করছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া।
আইনজীবীরা বলছেন- নারায়ণগঞ্জের তরুণ দুই ডায়নামিক আইনজীবী নেতার কঠোর পরিশ্রমের ফলে ইতিহাস সৃষ্টি হতে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জের আদালতপাড়ায়। অতীতে অনেক রথি মহারথিরা সমিতির দায়িত্বে এসে বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কর্মকান্ড করে আসলেও এত বড় বিশাল আকাশচুম্বি কাজ হাতে নেয়ার সাহস করেনি যা জুয়েল মোহসীন করেছেন। যে কারনে অনেক সিনিয়র নেতারাও বিশ্বাস করতে পারেননি এটা তারা করতে পারবেন। ফলে এটাকে শত বছরের আগামী ইতিহাসই ধরে নিচ্ছেন আইনজীবীরা।
নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির পূরাতন ভবনের স্থলে ৮তলা বিশিষ্ট ডিজিটাল বার ভবন নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। ইতিমধ্যে পাইলিংয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন উপরে ব্লক তৈরি হওয়ার পরেই হুরহুর করে ওঠে যাবে আইনজীবী সমিতির ডিজিটাল বার ভবন। যেখানে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির ১২’শ আইনজীবীর স্বপ্ন। ১২’শ আইনজীবীর স্বপ্নের ডিজিটাল বার ভবন নির্মাণে দিন রাত পরিশ্রম করেছেন সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও সেক্রেটারি মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া।
সূত্রে জানাগেছে, ২০১৫ সালে নারায়ণগঞ্জে এসেছিলেন তৎকালীন আইন মন্ত্রী। ওইদিন আইনজীবী সমিতির একটি অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জের মহাজোটের এমপি একেএম সেলিম ওসমান সমিতির পুরাতন ভবনের স্থলে একটি ডিজিটাল বার ভবন করে দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আইন মন্ত্রীর অনুমতি চান। ওইদিন তাৎক্ষনিক আইন মন্ত্রীও এমপি সেলিম ওসমানকে অনুমতি দেন। এ সংক্রান্ত একটি আহ্বায়ক কমিটিও গঠন করা হয়। ওই সময় সমিতির সেক্রেটারি পদে দায়িত্বে ছিলেন হাসান ফেরদৌস জুয়েল।
পরবর্তী বছরে আইনজীবী সমিতিতে হাসান ফেরদৌস জুয়েল সভাপতি ও মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া সেক্রেটারি নির্বাচিত হওয়ার পর আইনজীবী সমিতির ডিজিটাল বার ভবন নির্মাণের জন্য যাবতীয় কাগজপত্রাদির সমস্যা নিরসনে কাজ করেন তারা। আইন মন্ত্রনালয় থেকে শুরু করে সকল দাপ্তরিক কাগজপত্রাদি সংগ্রহ করেন। একই সঙ্গে সকল দপ্তরের অনুমতি গ্রহণ করেন। এর জন্য জুয়েল মোহসীন দিন রাত দৌড়াদৌড়ি করেছেন বিভিন্ন ব্যক্তি ও দপ্তরে। এসব কাজে আবার পেছন থেকে অনেকেই বাধা সৃষ্টি করেছিলেন বলেও অনেক আইনজীবীরা জানিয়েছেন। তবে পিছু হটেনি জুয়েল মোহসীন। তারা দুজন ডিজিটাল বার ভবনটি নির্মাণে অনেকটা চ্যালেঞ্জ হিসেবেই গ্রহণ করেন। তাদের সবচেয়ে বড় সাহস জুগিয়েছেন এমপি সেলিম ওসমানের তিন কোটি টাকা অনুদান ঘোষণা। সেই সঙ্গে আইনজীবী সমিতির আইনজীবীরা ও সমিতির বাহিরের অনেকের কাছে ধর্ণা দিয়েছেন দিন রাত এই জুয়েল মোহসীন। তারাও তাদেরকে সাহস জুগিয়েছেন। কেউ কেউ ভয় দেখিয়েছেন। কেউ কেউ নিরুৎসাহি করেছেন।
সকল দাপ্তরিক অনুমতি গ্রহণের পর সামনে চলে আসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এমন নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের আইনজীবীদের মাঝে নানা শঙ্কা তৈরি হয়। অনেকেই বলেছেন- ‘নির্বাচনে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় না আসলে ভবন হবেনা। সেলিম ওসমান এমপি না হলে সেলিম ওসমান টাকা দিবেনা। জাতীয় নির্বাচনের মহাজোট ক্ষমতায় এবং সেলিম ওসমান এমপি হওয়ার পর আবার কেউ কেউ বলেছেন- জুয়েল মোহসীনের হাতে সেলিম ওসমান অনুদানের টাকাই দিবেনা। সেলিম ওসমানের কাঁছ থেকে টাকা আনতে পারবেনা তারা। সেলিম ওসমান তাদের বিশ্বাস করেন না।’
এমন সময় চলে আসে আইনজীবী সমিতির নির্বাচন। এই নির্বাচনেও শুরু হয় নানা আলোচনা সমালোচনা গুঞ্জন ও গুজব। এখানেও গুজবে চলে আসে- ‘সমিতিতে সংখ্যাঘরিষ্ঠতা না পেলে জুয়েল মোহসীনের হাতে সেলিম ওসমান ভবন নির্মাণের টাকা দিবেনা। কিন্তু নির্বাচনের আগেই সেলিম ওসমান ১ কোটি টাকা অনুদান জুয়েল মোহসীনের হাতে তুলে দেন। এই টাকা দেয়ার পর আবার শুরু হয়- বাকি টাকা আনতে পারবেনা তারা। টাকা দিলেও সেলিম ওসমান নিজেই ভবন করবেন।’ এমন সব নানা গুঞ্জন ও গুজবে ছড়িয়ে পড়ে নারায়ণগঞ্জের আদালতপাড়া। এতে অনেক আইনজীবীদের মাঝে শঙ্কা তৈরি হলেও জুয়েল মোহসীন একের পর এক কাজে সফলতা পেয়েই যায়। অনেক আইনজীবী বলেছিলেন- ‘অনেকেই আবার ঘুমের মধ্যেই জুয়েল মোহসীনের ব্যর্থতা স্বপ্ন দেখতেন।’ সমিতির নির্বাচনের পর এমপি সেলিম ওসমান আরও ৫০ লাখ টাকা তুলে দেন।
তবে এর আগে আবার এসবের মাঝে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির পুরাতন ভবনকে নতুন ভবন দাবি করেন বিএনপির আইনজীবীরা। ভবন ভেঙ্গে সেখানে ডিজিটাল বার ভবন নির্মাণে বাধা হয়ে দাড়ায় বিএনপির আইনজীবীরা। সেখানে তারা প্রতিবাদ সভা করে কঠোর হুশিয়ারী দিয়ে বলেছিলেন- রক্তের বন্যা বয়ে যাবে তবুও সমিতির ভবন ভাঙ্গতে দেয়া হবেনা। জুয়েল মোহসীন অইনজীবীদের মুলা ঝুলিয়েছেন। তারা এটা করতে পারবে না। তারা ভবন ভেঙ্গে আইনজীবীদের রোহিঙ্গতার মত অবস্থানে রাখতে চায়।’ এমন পরিস্থিতিতে আইনজীবীদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করেন জুয়েল মোহসীন। অনেকেই বুঝেও না বুঝার ভান ধরে রাজনীতি করতে গেলে তাদের বাধার পরেও ভবনটি নিয়ম মাফিক ভেঙ্গে দেন জুয়েল মোহসীন। ভবন ভাঙ্গার পর আলোচনায় চলে আসে- এই ভবন তারা ভেঙ্গেছে, সেখানে তারা সেলিম ওসমানের অনুদানের টাকা আনতে পারবেনা। তারা কোর্টে মুখই দেখাতে পারবেনা। তাদের ভবিষৎ অন্ধকার। এত বড় কাজ হাতে নিয়ে তারা ব্যর্থ হবে। কেউ কেউ বলতেন- আদালতপাড়ায় জুয়েল মোহসীন এজলাসেই আইনজীবীদের সামনে দাড়াবে পারবেন না। কারন তারা ভবন ভেঙ্গে আইনজীবদের ভাসমান বানিয়েছেন। তারা ভবন নির্মাণের টাকা আনতেও পারবেনা, ভবন নির্মাণ করতেও পারবে না।’
কিন্তু অবশেষে সেই ভবন এখন নির্মাণের পথে। ৭ জুলাই রবিবারও আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সেক্রেটারি নির্মাণ কাজ পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করেছেন। নিয়মিত তারা দুজন প্রতিটি কাজ খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছেন। এর আগে সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েল তার অসুস্থ্য স্ত্রী অ্যাডভোকেট সৈয়দা ওয়াহিদা আক্তার রিতাকে চিকিৎসার জন্য চলে যান ভারতে। সেখান গিয়েও ভবন নির্মাণের বিষয়ে প্রতিনিয়ত খোজ খবর রেখেছেন তিনি। ফলে অনেক ত্যাগের বিনিময়ে শত বছরের আগাম ইতিহাস গড়তে যাচ্ছেন অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া। যার সাক্ষী এই ১২’শ আইনজীবী।
এখানে আরও উল্লেখ্যযে, নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির আগের পুরাতন ভবনেও ডিজিটালাইজেশনের ছোয়া দেন হাসান ফেরদৌস জুয়েল। ওয়াইফাই জোন করেছিলেন তিনি। আইনজীবীদের জন্য প্রথম তিনিই ডাইরেক্টরী বের করেছিলেন। এ ছাড়াও সমিতির সকল আইনজীবীদের তথ্য সম্বলিত ওয়েব সাইট করেছিলেন তিনিই। পুরাতন বার ভবনের নিচ তলায় তথ্য কেন্দ্র করা হয় যেখানে যে কোন মক্কেল তার আইনজীবীকে মুহুর্তের মধ্যে খুজে পায়। অথচ এই ছোট তথ্য কেন্দ্রটি একজন সিনিয়র আইনজীবী বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
নারায়ণগঞ্জের আইনজীবীদের কল্যাণে সবচেয়ে কার্যকর বেনাভোলেন্ড ফান্ড। এই ফান্ড তৈরিতে বড় ভুমিকা হাসান ফেরদৌস জুয়েলের। ওই সময় অনেক সিনিয়র আইনজীবীরাও বাধা সৃষ্টি করেছিলেন। নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে অনুুষ্ঠিত সভায় জুয়েলের হাত থেকে মাইক কেড়ে নেয়া হয়েছিল। ওই সময় তারা বেনাভোলেন্ড ফান্ড তৈরিতে বিরোধীতা করেছিল। কিন্তু সাধারণ আইনজীবীদের চাওয়ায় সেই ফান্ড তৈরি হয়। আজকে সেই ফান্ড আইনজীবীদের জন্য সবচেয়ে কার্যকরী। একজন আইনজীবী মৃত্যুবরণের সঙ্গে সঙ্গে তার পরিবারের হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেয় সমিতি। এক সপ্তাহের মধ্যে পরবর্তী সকল টাকা পরিশোধ করে। আইন পেশার বয়সের রেশিও অনুযায়ী সর্বোচ্চ প্রায় অর্ধ কোটি টাকা তার পরিবার পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। আজকে এই ফান্ড সকল আইনজীবীদের কল্যাণে তা প্রমানিত হলো।