সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ সাফায়েত আলম সানি বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকে যদি না জানি তাহলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, বঙ্গবন্ধুর চেতনা কখনোই বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। তাই বঙ্গবন্ধুর চেতনা বাস্তবায়ন করতে হলে বঙ্গবন্ধুকে আগে জানতে হবে।
১৫ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে বন্দর কুশিয়ারায় হাজ্বী এম এ মালেক উচ্চ বিদ্যালয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল ও নেওয়াজ বিতরণ অনুষ্ঠান বিশেষ আলোচকের বক্তব্যে এ কথা বলেন শেখ সাফায়েত আলম সানি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আরাফাত রহমান জুম্মনের উদ্যোগে আয়োজিত দোয়া মাহফিল ও নেওয়াজ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বন্দর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ রশিদ।
শেখ সাফায়েত আলম সানি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা সবাই বলেন কিন্তু সেই অজোপাড়া গাঁ টুঙ্গিপাড়া থেকে কীভাবে সততা ও সাহসের মাধ্যমে আজকের বঙ্গবন্ধু হলেন সেটা অনেকে জানেন না। আমাদেরকে সেই ইতিহাস জানতে হবে। তিনি কত বার জেলে গেছেন? কয়টি মামলার আসামী হয়েছেন? সেসব বিষয় জানতে হবে।
তিনি বলেন, কারন বঙ্গবন্ধুকে যদি না জানি তাহলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, বঙ্গবন্ধুর চেতনা কখনোই বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। তাই রাজনৈতিক পাঠচক্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের আদর্শ তরুণদের ধারণ করতে হবে।
বক্তব্যের শুরুতে সাফায়েত আলম সানি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণ করে বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন স্বাধীনতার পরে আমাদের স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করছিলেন তখন ব্রিটিশ সাংবাদিক অ্যান্থনি মাসকারেনহাস তাকে একটি প্রশ্ন করেছিলেন যে ‘আপনার দেশ তো স্বাধীন হয়েছে, সেই স্বাধীন দেশের শাসন কার্যের দায়িত্ব আপনি গ্রহণ করবেন। সে ক্ষেত্রে আপনার যোগ্যতা কি?’ তিনি বলেছিলেন-‘আমি আমার জনগণকে ভালোবাসি’। সেই অ্যান্থনি মাসকারেনহাস বঙ্গবন্ধুকে আরো একটি প্রশ্ন করেন- ‘এই দেশটির শাসন কার্য গ্রহণ করার ক্ষেত্রে আপনার অযোগ্যতা কি?’ উত্তরে তিনি বলেছিলেন- ‘আমি আমার দেশের জনগণকে অত্যাধিক ভালোবাসি।’ এই ছিলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু। যিনি উজাড় করে বাঙালি মানুষকে ভালোবেসেছেন। বাঙালি মানুষের ভাগ্যন্নোয়নের জন্য, বাঙালি মানুষের জন্য ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত একটি উন্নত বাংলাদেশ গঠন করার জন্য তিনি তার জীবন যৌবনের ১৪টি বছর জেলের মধ্যে কাটিয়েছেন এবং আমাদের একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র উপহার দিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের অত্যাধিক ভালোবাসতেন বলেই একজন রাষ্ট্রপ্রধান হয়েও কোন রাষ্ট্রীয় বাসভবনে থাকতেন না। তার নিজস্ব ধানমন্ডির ৩২নম্বর বাড়িতে বসবাস করতেন। এমনকি সেখানে তার নিরাপত্তার জন্য একটি গার্ড পর্যন্ত রাখতেন না। তিনি বাঙালি জাতিকে এতটাই ভালোবেসেছিলেন যে, ষড়যন্ত্রকারীরা তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার এমন রিপোর্ট তার কাছে থাকার পরেও তিনি জাতির পিতা কখনোই বিশ্বাস করতে পারেননি যে তার সন্তানরাই তাকে হত্যা করতে পারে। কারন তার মন ছিল সাগরের মতো বিশাল। কিন্তু কিছু কুলাঙ্গার, কিছু নরপিশাচ এই সুযোগটি নিয়ে আমার জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে তার স্বপরিবারে হত্যা করেছিল এবং বাংলাদেশকে সেই উল্টো পথের যাত্রী হিসেবে কায়েম করেছিলো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারাকে ব্যাহত করতে এবং আওয়ামী লীগকে জনবিচ্ছিন্ন করতে ১৯৭৫ সালের মতো বর্তমানেও বিভিন্ন গুজব ও প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর অপকৌশল চালিয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের জাল বুনা হচ্ছে বলেও নিজের বক্তব্যে অভিযোগ করেন ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা।
ছাত্রলীগের সাবেক নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধী দলে থাকার সময়েই পরিকল্পনা করেছিলেন, দায়িত্বে আসলে কীভাবে দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। এখন তিনি দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। জাতির জনকের সেই অসমাপ্ত কাজগুলো বাস্তবায়ন করে একটি ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।’
তিনি বলেন, দেশপ্রেম, কতর্ব্যনিষ্ঠা ও সামগ্রিক পরিকল্পনার মাধ্যমে আজকে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা গণতন্ত্রের মানসকন্যা, বিশ্ব মানবতার মা জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন জাতির জনকের সেই অসমাপ্ত কাজগুলো বাস্তবায়ন করে একটি ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য কাজ করে যাচ্ছে ঠিক তখনই তার সেই উন্নয়নের ধারাকে ব্যাহত করতে সেই একইভাবে ১৯৭৫সালে যেমন ষড়যন্ত্র গুজবের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হয়েছিলো যে ব্যাংক লুট হয়ে যাচ্ছে, দেশে কোন রকমের গণতন্ত্রের চর্চা নেই সেই একইভাবে আজ ২০১৯ সালে এসেও একই রকমের প্রোপাগান্ডা ও গুজবের মাধ্যমে আমাদের উন্নয়নের যাত্রাকে ব্যাহত করে দেয়ার জন্য আওয়ামী লীগকে জনবিচ্ছিন্ন করে দেয়ার জন্য এবং বাংলাদেশ যাতে উন্নত রাষ্ট্রে পরিনত না হতে পারে সেজন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের জাল তারা বুনে যাচ্ছে। তাদের সেই ষড়যন্ত্র কোনভাবেই বাস্তবায়ন হবেনা ইনশাহআল্লাহ।
বন্দর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির মৃধা, মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গাজী এমএ সালাম, বন্দর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন পনির, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ২৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন আনু, কুশিয়ারা রিয়াজুল জান্নাহ জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট সমাজসেবক ওয়াহিদুজ্জামান নাদিম।
দোয়া মাহফিল ও নেওয়াজ বিতরণ অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে ছিলেন- জনি, আনসার, বাবু, মোঃ শামীম, সম্রাট, সায়েম, আরফান আব্দুল্লাহ, পিয়াস, আসলাম, সোহাগ, শুভ, রাজন, আশিক, নাজমুল, নয়ন, জিলন ও মোমেন।