সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিবহন শ্রমিকদলের প্রয়াত সাংগঠনিক সম্পাদক হালিম মিয়ার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী ঐক্যবদ্ধভাবে পালন করেছেন নারায়ণগঞ্জের শ্রমিকদলের নেতারা। প্রায় এক যুগেও এসব শ্রমিকদলের শীর্ষ নেতাদের একই অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি।
জানাগেছে, ১৮ আগস্ট রবিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের বাস টার্মিনাল এলাকায় জেলা পবিরহন শ্রমিকদলের প্রয়াত সাংগঠনিক সম্পাদক হালিম মিয়ার ২য় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া মাহফিলে প্রয়াত নেতা হালিম মিয়ার ছেলে স্বাধীন উপস্থিত ছিলেন।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। পরিবহন শ্রমিকদল নেতা শহীদ হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর শ্রমিকদলের আহ্বায়ক এসএম আসলাম।
এ ছাড়াও অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- মহানগর বিএনপি নেতা মনির হোসেন খান, নারায়ণগঞ্জ জেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধান, জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি পারভেজ মল্লিক, মহানগর তাঁতীদলের আহ্বায়ক মীর আলমগীর হোসেন।
শ্রমিকদলের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- মহানগর শ্রমিকদলের সিনিয়র নেতা ফারুক হোসেন, মহানগর শ্রমিকদলের সদস্য সচিব আলী আজগর, যুগ্ম আহ্বায়ক মনির মল্লিক, লুৎফর রহমান মন্টু, লিটন মিয়া, ফজলুল হক, শরীফ হোসেন, শ্রমিকদল নেতা সেলিম হোসেন, বাবুল হোসেন, হুমায়ুন কবির, মতিন চৌধুরী, শফিকুল ইসলাম, সজীব খন্দকার, রবিউল হোসেন, দিলীপ হোসেন, বাচ্চু মিয়া, বাদশা মিয়া, মোক্তার হোসেন, আবু হোসেন, রিপন মিয়া, জামাই মনির, কবির হোসেন সহ কয়েকশ শ্রমিকদল নেতাকর্মী।
জানাগেছে, এর আগে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর এসব শ্রমিকদল নেতাদের একসাথে বসতেও দেখা যায়নি। অতীতে যারা বিভিন্ন নেতাদের বলয়ে রাজনীতি করে আসছিলেন তাদেরকে একসাথে নিয়ে প্রয়াত শ্রমিকদল নেতাকে স্মরণ করলেন বিএনপি নেতারা। শ্রমিকদলের নেতাদের ঐক্যবদ্ধ করার পেছনে মূখ্য ভুমিকা রাখলেন নারায়ণগঞ্জের আলোচিত আইনজীবী নেতা ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান।
এদিকে আরও জানাগেছে, মহানগর শ্রমিকদলের আহ্বায়ক এসএম আসলাম রাজনীতি করতেন বিএনপির সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীনের সঙ্গে। মাঝখানে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন।
মহানগর শ্রমিকদলের সদস্য সচিব আলী আজগর মুলত তৈমূর আলম খন্দকারের সঙ্গে রাজনীতি করেই তার উত্থান হয়। পরবর্তীতে এসএম আসলাম চলে যান গিয়াসউদ্দীনের সঙ্গে এবং আলী আজগর চলে যান বিএনপির সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালামের সঙ্গে রাজনীতিতে।
এর আগে মহানগর শ্রমিকদলের সাবেক সভাপতি ফারুক হোসেন রাজনীতি করেছিলেন তৈমূর আলম খন্দকারের সঙ্গে। মাসদাইরে তৈমূর আলম খন্দকারের বাসায় শ্রমিকদলের সম্মেলনে ফারুক হোসেন সভাপতি ও আওয়ামীলীগে চলে যাওয়া আনোয়ার হোসেন আশিককে সেক্রেটারি নির্বাচিত করা হয়। ওই সম্মেলনেও শ্রমিকদলের নেতাদের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি হয়।
এসএম আসলাম ও আলী আজগরকে দিয়ে মহানগর শ্রমিকদলের কমিটি হওয়ার পরেও নারায়ণগঞ্জে পাল্টাপাল্টি কমিটি গঠন করা হয় যেখানে বিদ্রোহী কমিটিতে ফারুক হোসেনকে সভাপতি রেখে ও শাহজাহান মিয়াকে সেক্রেটারি করা হয়। এমনকি সদর থানা শ্রমিকদলেরও পাল্টা কমিটি গঠন করা হয়। ওই সময় এসব নেতাদের অভিভাবক হিসেবে ছিলেন কেন্দ্রীয় শ্রমিকদলের তৎকালীন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের খাজা ভূঁইয়া।
শ্রমিকদল নেতা শহীদ হোসেন এক সময় রাজনীতি করতেন আবুল কালামের সঙ্গে। শ্রমিকদল নেতা মনির মল্লিক, লিটন মিয়া, সেলিম হোসেন, লুৎফর রহমান মন্টু, ফজলুল হক রাজনীতি করতেন তৈমূর আলম খন্দকারের সঙ্গে। এর আগে তারাও আবুল কালামের সঙ্গে রাজনীতি করেছিলেন।
মুলত এসব শ্রমিকদলের নেতারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নেতার নেতৃত্বে শ্রমিকদলের রাজনীতি করতেন। যে কারনে একই সঙ্গে এসব শ্রমিকদল নেতারা একই অনুষ্ঠানে জমায়েত হয়নি। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে তারা পৃথক পৃথকভাবে রাজনীতি করতেন। তবে এই প্রথম শ্রমিকদলের এসব নেতারা একই অনুষ্ঠানে জমায়েত হলেন যেখানে সাখাওয়াত হোসেন খান প্রধান অতিথি। অনুষ্ঠান শেষে এসব নেতাদের আজকের মত ভবিষৎেও ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
এখানে আরও উল্লেখ্যযে, এর আগে মহানগর কেন্দ্রীক শ্রমিকদলের নেতারা ছিলেন আবুল কালাম ও তৈমূর আলমের বলয় ভিত্তিক রাজনীতিতে। সেই বলয় ভেঙ্গে তারা এখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজনীতি করছেন। এসব নেতাদের একজোট করতে কাজ করছেন সাখাওয়াত হোসেন খান। এমনকি বাংলাদেশ হোসিয়ারী শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচনেও সাখাওয়াত হোসেন খানই একমাত্র ভুমিকা রেখেছিলেন। শ্রমিকদলের ওই নির্বাচনে সকল ধরণের সহযোগীতা সাখাওয়াত হোসেন খান করেছেন। যে কারনে শ্রমিকদলের নেতারাও তার প্রতি আস্থা রাখতে শুরু করেছেন।