সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁয়ের সনমান্দি ইউনিয়নের নাজিরপুর গ্রামের গোলজার হোসেনের দুই ছেলে মোখলেছুর রহমান ও মাসুম হলো সোনারগাঁয়ের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে অন্যতম। এ ছাড়াও সোনারগাঁয়ে গোলজার হোসেনের দুই ছেলের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডেও অতিষ্ট সোনারগাঁয়ের মানুষ। সনমান্দি ইউনিয়নের প্রতিটি এলাকায় মাদক ছড়িয়েছে গোলজার হোসেনের দুই ছেলে।
গোলজার হোসেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সামান্য ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী হলেও সনমান্দি ইউনিয়নে তার দাপটে টিকে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। এলাকায় তার দুই ছেলে মাদকের ব্যবসা পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছে। সেই সোনারগাঁ সহ মোখলেছুর রহমান নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রভাবশালীদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। সেই সুবাদে কখনও শামীম ওসমান, কখনও সেলিম ওসমান কখনও বা আজমেরী ওসমানের নাম ভাঙ্গিয়ে সোনারগাঁয়ে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে।
এ ছাড়াও এসব মাদক ব্যবসায়ীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে সনমান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান জিন্নাহ। গোলজার হোসেন নিজেকে চেয়ারম্যান জিন্নাহর কাছের লোক পরিচয় দিয়ে তার দুই ছেলের মাধ্যমে সোনারগাঁয়ে মাদক ব্যবসায় নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।
জানাগেছে, ৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসেনের জাতীয় পার্টির প্রয়াত এমপি একেএম নাসিম ওসমানের ছেলে আজমেরী ওসমানের বাসায় জেলা পুুলিশের ডিবি পুুলিশ, ফতুল্লা থানা পুলিশ ও সদর থানা পুলিশ ব্লক রেইড চালায়। ওই সময় আজমেরী ওসমান পালিয়ে গেলেও গোলজার হোসেনের ছেলে মোখলেছুর রহমান সহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের জিআইও-২ সাজ্জাদ রোমেন অভিযানের বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের আমলাপাড়ার বাসিন্দা মৃত হাজী আহসান উল্লাহর ছেলে বাচ্চু মিয়া বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলায় এজাহারনামীয় প্রধান আসামি করা হয়েছে আজমেরী ওসমানকে। অন্য আসামিরা হলো- জেলা ছাত্র সমাজের আহ্বায়ক ও ফতুল্লার ইসদাইর এলাকায় মো. ফকির চানের ছেলে শাহাদাৎ হোসেন রুপু, সোনারগাঁয়ের নাজিরপুর এলাকার গোলজার হোসেনের ছেলে ও শহরের গলাচিপা ডিএন রোডের বাসিন্দা মোখলেছুর রহমান এবং জুয়েল।
মামলায় শাহাদাৎ হোসেন রুপু ও মোখলেছুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হলেও আজমেরী ওসমান ও জুয়েল পলাতক রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় একটি নম্বর থেকে কল করে আজমেরী ওসমানের পরিচয় দিয়ে মামলার বাদী বাচ্চু মিয়ার কাছে ৬৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদার টাকা আনার জন্য মোখলেছুর রহমান কালিমন্দিরের সামনে বাচ্চু মিয়ার সাথে দেখা করে।
পরে আজমেরী ওসমান তাকে ডাকছে বলে মোখলেছুর রহমান সহ অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন জোর করে টেনে-হিচড়ে তাকে কালিরবাজারের মাংস পট্টির আফসু মহাজনের হোটেলের সামনে নিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করে। মারধরের পর চাঁদার টাকা না দিলে বাচ্চু মিয়াকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তারা চলে যায়।
এমন অভিযোগের পর বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে শহরের আল্লামা ইকবাল রোডের আজমেরী ওসমানের বাসা ও অফিস দেওয়ান মঞ্জিলে অভিযান চালায় জেলা গোয়েন্দা (ডিবি), ফতুল্লা মডেল থানা ও সদর মডেল থানার পুলিশের সদস্যরা। সেখানে আজমেরী ওসমানকে পাওয়া না গেলেও অভিযুক্ত দুই আসামিকে প্রেপ্তার করে পুলিশ।