সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ শিক্ষকদের অবদান তুলে ধরে বলেছেন, ভাল মানুষ ও নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সার্থক মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রত্যেকের জীবনে শ্রদ্ধেয় শিক্ষকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আমি হাওর অঞ্চলের মানুষ প্রতিদিন মাইলের পর মাইল পায়ে হেটে প্রাইমারী স্কুলে যেতাম। প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকরা পিতৃত্বসুলভ ও আন্তরিকতার সহিত আমাদেরকে পাঠ দান করাইতেন।
তিনি বলেন, শিক্ষকরা আমাদের বেত দিয়ে ও ডাস্টার দিয়ে লেখাপড়ার জন্য পিটিয়েছেন তখন আমাদের বাবা-মা কোন কিছু মনে করতেন না। তারা মনে করতেন শিক্ষক যা করছেন তা আমার ছেলের ভালোর জন্য করেছেন এবং মধুর সম্পর্ক মনে করেছেন।
এসপি আরও বলেন, আমি সকল শিক্ষককে বলব না, কিছু শিক্ষককে বলব যারা কোন টাকার বিনিময়ে পড়াতেন না, গরীব ছাত্রদের বিনা পয়সায় পড়াতেন। বর্তমান সমাজের দিকে লক্ষ করলে দেখবেন যে, ছাত্ররা শিক্ষকদের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। আজ-কাল শিক্ষকরা ছাত্রদের গায়ে হাত তুললে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন হচ্ছে। আসলে আমরা আমাদের জায়গা থেকে সরে যাচ্ছি। ছাত্র-শিক্ষদের সেই মধুর সম্পর্ক আর নাই।
৯ সেপ্টেম্বর সোমবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জে আলী আহাম্মদ কুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তনে আইপিডিসি ও প্রথম আলোর উদ্যোগে ‘প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। ওই অনুষ্ঠানে এসপি এসব কথা বলেন।
পুলিশ সুপার তার প্রিয় শিক্ষকের স্মৃতিচারণ করতে যেয়ে বলেন, ‘কলেজ জীবনে গাঙ্গুলী স্যার আমাদের যে আন্তরিকতা ও পিতৃসুলভ আচরণ দিয়ে পড়াতেন তা কোন দিন ভুলবার নয়। কিছু দিন আগে হাই স্কুলের শিক্ষক বিএসসি সাইফুল স্যার তার স্কুলের সকল ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে সোনারগাঁ জাদুঘরে এসে ঘুরে গেছেন। এই গল্প সে সারা থানা এলাকায় বলে বেড়িয়েছেন। কলেজ জীবনের গাঙ্গুলী স্যার এখনো চিরকুট লিখে পাঠান ‘বাবা হারুন, এই লোকটার মেয়ের বিয়ে কিছু করতে পারলে করো’ স্যারের এই চিরকুট পেয়ে আমি আমার সাধ্যমত সাহায্য করেছি। তাই প্রিয় শিক্ষকদের কোন দিনও ভুলবার নয়।
আইপিডিসি ও প্রথম আলোর উদ্যোগে ‘প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা’ অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য এবং কিছু বলার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আইপিডিসি ও প্রথম আলোকে ধন্যবাদ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং সুধীজন।