সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত একটি কর্মসূচিতেও ছিলেন না কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূঁইয়া। মাঝে নির্বাচনের সময় তিনি নামকাওয়াস্তে নির্বাচনী গণসংযোগ করেছেন বেশকটি।
এ ছাড়াও নেত্রীর মুক্তির দাবিতে দিপু ভূ্ইঁয়া রাজপথের একটি কর্মসূচিতে ছিলেন এমনটা কেউ বলতে পারেননি। এমনকি সর্বশেষ কবে নাগাদ নেত্রীর মুক্তির দাবিতে দিপু ভূঁইয়া শ্লোগান কিংবা বক্তব্য দিয়েছেন তা হয়তো খোদ দিপু ভূঁইয়াও মনে করতে পারবেন না। অথচ সেই দিপু ভূঁইয়াকে দেয়া হয়েছে নারায়ণগঞ্জের বিশেষ দায়িত্ব! যিনি নিজেই কোন কর্মসূচিতে থাকেন না অথচ তাকে দেয়া হয়েছে বিএনপির সদস্যপদ তদারকির দায়িত্ব।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, প্রতিনিয়তই বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সঙগঠনগুলো বিভিন্ন ইস্যূর সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জেলা ও মহানগর কেন্দ্রীক বিক্ষোভ সমাবেশ মিছিল কর্মসূচি পালণের ঘোষণা দিয়ে আসছিল। গত দেড় বছর ধরে যাবত বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর এ ধরণের একটি কর্মসূচিতেও আসেননি ধনকুবের খ্যাত দিপু ভুঁইয়া। রাজপথের আন্দোলন সংগ্রাম তো দুরের কথা দিপু ভুইয়া গত দেড় বছর জেলা ও মহানগর পর্যায়ে একটি মানববন্ধনেও ছিলেন না। এমনকি নিজ এলাকা রূপগঞ্জেও তাকেও ছিটেফুটোও দেখা মিলেনি নেত্রীর দাবিতে। অথচ সেই দিপু ভুইয়াকে দেয়া হলো বিশেষ দায়িত্ব।
এদিকে জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির বিশেষ দায়িত্ব পেয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান ও মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূঁইয়া। বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্যদের সাথে ৬ অক্টোবর রবিবার বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়াররম্যান তারেক রহমান সাংগঠনিক বিষয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির ৪০ জন সদস্যদের নিয়ে সাংগঠনিক আলোচনা করেন।
ওই আলোচনায় নারায়ণগঞ্জ জেলা থেকে উপস্থিত ছিলেন- আজহারুল ইসলাম মান্নান এবং মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু। আলোচনা শেষে নারায়ণগঞ্জের জন্য তাদেরকে বিশেষ দায়িত্ব প্রদান করা হয়।
সূত্রে জানাগেছে, মান্নান ও দিপু ভূঁইয়াকে দেওয়া দায়িত্বের মধ্যে আছে ২০১৮ সালের মে হতে জুলাই পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলার নেতাদের কেন্দ্র থেকে যে পরিমাণ সদস্য সংগ্রহ বই বিতরণ করা হয়েছে, তার হিসেব নির্ধারণ করা হবে। এসব ব্যবহৃত বইয়ের মুড়িগুলো কেন্দ্রে প্রেরণ করা হয়েছে কিনা, না হয়ে থাকলে কোথায় কিভাবে কোন দপ্তরে সংরক্ষিত আছে তার সঠিকতা নিরূপণ করা। এছাড়া নতুন সদস্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে অব্যবহৃত বইগুলোর দ্রুত ব্যবহার নিশ্চিত করা। সদস্য সংগ্রহ করে বইয়ের চাহিদা নিরূপণ করা। সদস্য সংগ্রহ অভিযানের সাফল্য মূল্যায়ন করা।
বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, দিপু ও মান্নানকে রবিবার পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসে ডেকে নিয়ে এ ব্যাপারে কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে যথার্থভাবে এসব কাজের মূল্যায়ন করতে বলা হয়েছে। দ্রুত মূল্যায়ন ও দায়িত্বভারের প্রতিবেদন কেন্দ্রে দিতে হবে। সেই সঙ্গে বিএনপির রাজনীতিকে আরো গতিশীল করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বিএনপির অফিস সূত্রে, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান ১৮৪টি বই, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ ১২৭টি বই গ্রহণ করেন। এছাড়া জেলার ১১জন নেতাকে ১০৫২টি বই দেওয়া হয়। অথচ প্রয়োজন ছিল ৮২০টি বই।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির প্রয়োজন ছিল ১৭০টি বই। তার মধ্যে নেওয়া হয়েছে ১৪৫টি। এর মধ্যে মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম নিয়েছেন ১৩৪, সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল ৬টি ও সিনিয়র সহ-সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান নিয়েছিলেন ৫টি বই।