সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি পদে প্রত্যাশা নিয়ে পুুরোদস্তর মাঠে নেমেছেন আওয়ামীলীগের ৪ নেতা। ইতিমধ্যে এদের মধ্যে দুএকজন সেক্রেটারি পদে প্রার্থী হিসেবে মুখ খুললেও বাকিরা কৌশলে নিজেদের অবস্থান জানানি দিচ্ছেন। দলীয় কর্মসূচিগুলোতে নিয়মিত নেতাকর্মীদের নিয়ে অংশগ্রহণ দিচ্ছেন শোডাউন দিয়েই। এরা হলেন অ্যাডভোকেট মামুন সিরাজুল মজিদ, মাসুম আহমেদ, গাজী আব্দুস সালাম ও একেএম ইব্রাহীম কাশেম। জেলার অন্যান্য থানা কমিটিগুলো যখন একের পর এক হচ্ছে তখন আটসাট বেধে নেমেছেন বন্দরের নেতারাও।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন খুরশিদ আলম সাগর। বেশকয়েক বছর পূর্বে রাজনৈতিক বিরোধের জের ধরে এই পদ থেকে তিনি স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন। তার স্থলে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আবেদ হোসেন। তবে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে জেলা আওয়ামীলীগের বেশকজন নেতা দাবি করেছেন খুরশিদ আলম সাগর তার স্বপদে বহাল রয়েছেন। ফলে সেক্রেটারি পদটি এখন প্রশ্নবিদ্ধ।
এমন পরিস্থিতিতে উদ্ভব হয়েছে নতুন সংকট। বন্দর থানাধীন এলাকার সিটি কর্পোরেশনের বাহিরের ৫টি ইউনিয়ন এলাকা নিজেদের আওতাধীন দাবি করছেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সেক্রেটারি আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল। জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে বন্দরের মুছাপুর এলাকায় একটি কর্মী সভা করেছিলেন মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সেক্রেটারি খোকন সাহা।
ওই সময় থেকে জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের দুটি কমিটির নেতারাই দাবি করছেন বন্দরের ৫টি ইউনিয়ন তাদেরই নিয়ন্ত্রণে। এ নিয়ে জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগ সীমানা সংক্রান্ত জটিলতায় পড়ে যান। এ বিষয়ে ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকা দিপু মনিও সুরাহ করতে পারেননি বিষয়টি। ফলে অমীমাংসিত রয়েছে বন্দরের ৫টি ইউনিয়ন। যদিও জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতারা তাদের নিজেদের মত করে সংগঠনের নিয়ম মাফিক দাবি করছেন। ফলে দোটানায় পড়েছেন পদ প্রত্যাশা নেতারা। কারন বন্দরে দুটি কমিটি হবে নাকি একটি হবে? আবার জেলা দিবে নাকি মহানগরই থাকবে এমনটা ভাবতেই পুরোদমে রাজনীতিতে নামতে পারছেন না পদ প্রত্যাশিরা। জেলা নাকি মহানগর কমিটির দ্বারস্থ হবে তা নিয়েও বেশ সংশয়ে নেতারা। ফলে অনেক নেতারাই আবার পদের আশা করলেও নিজেদেরকে গুটিয়ে নিয়েছেন। এর মধ্যে চার নেতা নিজ নিজ অবস্থান থেকে রাজনীতিকে আলোচনায় এসছেন।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি পদে এবার বেশ আলোচনায় এসেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী যুব আইনজীবী পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মামুন সিরাজুুল মজিদ। ইতিমধ্যে তিনি আওয়ামীলীগের বেশকটি কর্মসূচিতে বেশ আলোচিত শোডাউন দিয়েছেন। বন্দরের নেতাকর্মীদের নিয়ে আওয়ামীলীগের ব্যানারে কর্মসূচি পালন করে আসছেন মামুন সিরাজুল মজিদ।
মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী আব্দুস সালামও আলোচনায় রয়েছেন সেক্রেটারি পদে। তিনি বন্দর থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। কমিটি গঠন জট লাগায় তিনি এখনও ছাত্রলীগের পদেই রয়েছেন। আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে সক্রিয়তা নিয়ে এবার তিনিও আলোচনায় সেক্রেটারি পদে।
মাসুম আহমেদ ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তরুণ এই চেয়ারম্যানও আলোচনায় রয়েছেন থানা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি পদে। ভোটের মাধ্যমে সম্মেলন হলে তিনিও থাকবেন ভোটের প্রতিযোগীতায় সেক্রেটারি পদের লড়াইয়ে। তবে চেয়ারম্যান পদে থাকার সুবাদে নিয়মিতই আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন মাসুম আহমেদ।
এদিকে সেক্রেটারি পদে ইতিমধ্যে আলোচনায় নেমেছেন একেএম ইব্রাহীম কাশেম। তিনি কলাগাছিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি পদে রয়েছেন। ইতিমধ্যে তিনিও আটসাট বেধেই মাঠে নেমেছেন। নেতাকর্মীদের মুখেও তার নাম শোনা যাচ্ছে সেক্রেটারি পদে। তবে এখন দেখার বিষয় বন্দর থানা আওয়ামীলীগের কমিটি গঠনে সীমানা জটিলতা নিরসন কবে নাগাদ শেষ হবে। তারপর কমিটি। তবে হাল ছাড়ছেন না পদ প্রত্যাশিরা। তারা তাদের মত করে রাজনীতিতে পোক্ত অবস্থান তৈরি করতে মাঠে নেমেছেন।