আবদুল্লাহ আল মামুন, বিশেষ প্রতিবেদক:
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুুর রহমানের ৯৯তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস বর্ণাঢ্য আয়োজনে পালন করেছে নারায়ণগঞ্জ আইন কলেজ। আইন কলেজের ছাত্র-ছাত্রী সংসদের ভিপি এমএম হাসান ও জিএস আমজাদ হোসেনের উদ্যোগে জাতির জনককে শ্রদ্ধা জানিয়ে জাতির জনকের জন্মদিন ও শিশু দিবসটি পালন করা হয়।
১৭ মার্চ রবিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ আইন কলেজে জাতির জনকের ৯৯তম জন্মদিনে আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও কেক কাটার মাধ্যমে জাতির জনককে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে এই কর্মসূচি পালন করেছে আইন শিক্ষার্থীরা।
বর্ণাঢ্য এই আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ আইন কলেজের অধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ভূঁইয়া। আলোচনা সভায় তিনি বলেন, আজ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ৯৯তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস। বঙ্গবন্ধু শিশুদের খুবই ভালবাসতেন এবং স্নেহ করতেন। তাই আমি মনে করি বঙ্গবন্ধু থেকে আমাদের শিক্ষা নিয়ে শিশুদের প্রতি যতœশীল হওয়া উচিত।
বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে নারায়ণগঞ্জ আইন কলেজের প্রভাষক অ্যাডভোকেট রবিউল আমিন রনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষমতা গ্রহণের পর দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ড গতিশীল হয়ে ওঠে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত হায়েনার দল শেখ মুজিবের সাফল্য ও বাঙ্গালীর উন্নয়ন মেনে নিতে পারেনি। তারা নতুন ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে। তখন তিনি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের শিকার হন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সামরিক বাহিনীর কিছু উচ্চাভিলাষী ও বিপদগামী সৈনিকের হাতে তিনি স্বপরিবারে শাহাদাত বরণ করেন। কিন্তু আমি বলতে চাই শারীরিকভাবে শেখ মুজিবের মৃত্যু হলেও তিনি জাতির হৃদয়ে অমর, অক্ষয় হয়ে আছেন।
জাতির জনকের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ আইন কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপি এমএম হাসান বলেন, হাজার বছরে শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন আইনের ছাত্র। বাংলাদেশের স্বাধীনতা বাঙ্গালী হাজার বছরের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম অর্জন। আর এ স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের সঙ্গে যার নাম চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে তিনি হলেন বাঙ্গালী জাতির অবিসাংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের মাধ্যমে ১৪ আগস্ট পাকিস্তান ও ১৫ আগস্ট ভারত স্বাধীনতা লাভের পর তিনি ঢাকায় আসেন এবং আইন পড়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হন।
আইন কলেজের এই ছাত্র নেতা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি উন্নয়নের রূপকার জননেতা একেএম শামীম ওসমান ও এমপি নজরুল ইসলাম বাবু হলেন আইনের ছাত্র। আমি চাই দেশের প্রতিটা এমপি হোক আইনের ছাত্র। যাতে তারা আইন প্রণেতা হিসেবে সংসদে যুগপযোগী আইন প্রণয়ন করতে পারেন। তাছাড়া আমার নেতা ছাত্র সমাজের নয়নের মনি একেএম অয়ন ওসমানও একজন আইনের ছাত্র।
নারায়ণগঞ্জ আইন কলেজের ছাত্র-ছাত্রী সংসদের জিএস আমজাদ হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির প্রতিটি মুক্তির আন্দোলনে ছিলেন দিকনিদর্শক। তিনি ১৯৬৬ সালের বাঙ্গালী মুক্তির সনদ ছয় দফা দাবি পেশ করেন। যে কারনে তাকে কারারুদ্ধ জীবন যাপন করতে হয়েছিল দীর্ঘদিন। কিন্তু আন্দোলনের মুখে পাকিস্তান সরকার তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। ১৯৬৯ সালে ২৩ ফেব্রুয়ারি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত রেসকোর্স ময়দানে এক নাগরিক সংবর্ধনায় তাকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করেন।
জিএস আমজাদ হোসেন আরোও বলেন, আমি আজ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ৯৯তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে বলতে চাই বঙ্গবন্ধু শুধু একটা নাম নয় বঙ্গবন্ধু মানে সারা বাংলা। বঙ্গবন্ধু মানে জাতির মুক্তি।
বঙ্গবন্ধুর মানবসেবার কথা উল্লেখ্য করে করে ছাত্র সংসদের এজিএস শাহাদাত হোসেন বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন মানবসেবক। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি মানবসেবায় মনোনিবেশ করে নজির সৃষ্টি করেছিলেন। ছাত্র জীবনে তিনি তার গায়ের চাদর খুলে দিয়েছিলেন তার সহপাঠীকে। যার মাধ্যমে মানবতার সেবক হিসেবে খ্যাতি পান তিনি।
এসব কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন- আইন শিক্ষক বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নজিবুল্লাহ বিপু, ছাত্র নেতা জায়েদুল ইসলাম, মো: ইকবাল হোসেন, প্রশান্ত রায়, মেহেদী হাসান, হিমেল সরকার, আলাউদ্দিন, মরিয়ম বেগম, মোসাৎ শারমিন আক্তার, তুলসী রানী, ফারুক, নীরব, জুমা, মীর শোভা, সৌদিয়া, জান্নাত, রোমানা, সালেহা, মরিয়ম, সাফায়েত, হযরত আলী, দেলোয়ার হোসেন, লিজা, মামুন, খোকন, সজীব, আলী নূর, আইরিন, মনিরা, সাদিকা ও নারায়ণগঞ্জ আইন কলেজের শিক্ষার্থীরা।
নারায়ণগঞ্জ আইন কলেজের শিক্ষার্থী বদিউজ্জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন আনিসুর রহমান। পবিত্র গীতা থেকে পাঠ করেন তুলসী রানী এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে কবিতা পাঠ করেন নাদিমউদ্দিন আহমেদ। জাতির জনক সহ তার পরিবারের সকলের প্রতি দোয়া মাহফিল শেষে সকলের মাঝে নেওয়াজ বিতরণ করেন আইন কলেজের জিএস আমজাদ হোসেন।