সান নারায়ণগঞ্জ ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের দেওভোগ এলাকা থেকে শিশু সাদমান সাকি নিখোঁজের ১৪ মাস পর নিখোঁজের বাবা সৈয়দ ওমর খালেদ এপন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের জনপ্রিয় কাউন্সিলর ও বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল আলম সজলকে জড়িয়ে বক্তব্যের বিষয়টি উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও অবাস্তব অবান্তর বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশন। ১৭ মার্চ রবিবার বিকেলে বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশন এক প্রতিবাদ সভার মাধ্যমে এমন দাবি করেন।
এর আগে গত ১৬ মার্চ শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে এক নিখোঁজ সাকির উদ্ধার চেয়ে এক মানববন্ধনে সৈয়দ ওমর খালেদ এপন বক্তব্য দেন তার ছেলে নিখোঁজের পিছনে শামীম ওসমানের লোকজন জড়িত। কাউন্সিলর নাজমুল আলম সজলের নাম উল্লেখ্য করে এপন দাবি করেন সজলরাই তার ছেলেকে অপহরণ করেছে। তারা শামীম ওসমানের লোক হওয়ায় পুুলিশ তাদের ধরছেনা।
তবে ওই মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন রফিউর রাব্বী, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সেক্রেটারি আবদুর রহমান, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আবদুল কাদির সহ বেশকজন যারা মুুলত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর ঘনিষ্ঠ লোকজন হিসেবে পরিচিত। আর শামীম ওসমানের সঙ্গে মেয়র আইভীর রাজনৈতিক দ্বন্ধ রয়েছে। যেখানে নাজমুল আলম সজল রাজনীতি করেন শামীম ওসমানের সঙ্গে।
নিখোঁজের বাবার ওই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে রবিবার বিকেলে বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের কার্যালয়ে প্রতিবাদ করেছে এসোসিয়েশন। প্রতিবাদ সভায় হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি কবির হোসেন বলেন, বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল আলম সজল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৬নং ওয়ার্ডের জনগণের ভোটে নির্বাচিত একজন কাউন্সিলর। কিন্তু ১৭ মার্চ রবিবার স্থানীয় পত্রিকা ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সাদমান সাকি নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে মানববন্ধনে নিখোঁজের বাবা এপনের যে বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যে প্রণোদিত।
তিনি আরও বলেন, নাজমুল আলম সজল বিভিন্ন সামাজিক রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকায় তাকে একটি কুচক্রী মহলের ইন্দনে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে ১৪ মাস পর তাকে জড়িয়ে বক্তব্য দিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে। আমরা তার তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাই।
কবির হোসেন আরও দাবি করেন, মামলার এজাহারে কোথাও সজলের নাম নেই। এমনকি যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তারাও সজলের নাম বলেনি। সুতরাং নিখোঁজের দীর্ঘদিন পর সজলকে জড়িয়ে নিখোঁজের বাবার এমন বক্তব্য কারো ইন্দনে দেয়া হয়েছে বলে আমরা মনে করি। তাই আমরা এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ নিন্দা জানিয়ে আমরাও নিখোঁজ শিশু সাকিকে খুজে বের করে দিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাই।
প্রতিবাদ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি নাছির শেখ, জেনারেল পরিচালক আতাউর রহমান, হাজী আলী আহম্মদ শেখ, আবদুল হাই, মনির হোসেন, আতাউর রহমান, বাবু সুশান্ত পাল চৌধুরী, বাবু বৈদ্যনাথ পোদ্দার, সাব্বির আহমেদ সাগর, আমির উল্লাহ রতন, এসোসিয়েট পরিচালক নাছিম আহমেদ, আতাউর রহমান, শাহীন হোসেন ও সফিউদ্দীন সোহেল প্রমুখ।
জানাগেছে, গত ২০১৭ সালের ১ ডিসেম্বর শুক্রবার দুপুরে ঘরের বাহিরে খেলতে গিয়ে দেওভোগ কাঠের দোতলা বড় মসজিদ এলাকা থেকে শিশু সাদমান সাকি নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের পর ১৩ দিন পর নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় নিখোঁজের বাবা সৈয়দ ওমর খালেদ এপন একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন।
এখানে উল্লেখ্যযে, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ সাফায়েত আলম সানির বড় ভাই নাজমুল আলম সজল। এর আগে নাজমুল আলম সজল শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে শেখ সাফায়েত আলম সানি সারাদেশের মধ্যে তিনিই একজন ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে কোন ধরনের বিতর্কের বাহিরে থেকে দায়িত্ব শেষ করেছেন। তাদের আরেক ভাই মাহাবুবুর রহমান চঞ্চল ছাত্রলীগের দায়িত্বশীল নেতা ছিলেন। আওয়ামীলীগের একট রাজনৈতিক পরিবার। এই তিন কৃতি রাজনীতিকের বাবাও একজন আওয়ামীলীগ নেতা ও জনসেবক ছিলেন। বিতর্কের বাহিরে থেকেই তারা আওয়ামীলীগের রাজনীতি করে আসছেন। যেখানে নারায়ণগঞ্জে ছাত্র সমাজের আইডল হিসেবে খ্যাতি পেযেছেন সাফায়েত আলম সানি।