দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু ও ভুলতা উড়াল সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতুর উদ্বোধন করেছেন উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া উদ্বোধন করেছেন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতার চার লেন বিশিষ্ট ফ্লাইওভার ও লতিফপুর রেলওয়ে ওভারপাস।

১৬ মার্চ শনিবার সকাল ১০টায় সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি।

দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু ও সংযোগ সড়ক নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এর ৭৫ ভাগের জোগান দেয় জাইকা। আর ২৫ ভাগ অর্থ সরকারের। উদ্বোধনের পর সেতুতে যান চলাচল শুরু হয়েছে।

জাপানের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওবায়শি কর্পোরেশন, শিমিজু কর্পোরেশন, জেএফই ইঞ্জিনিয়ার কর্পোরেশন এবং আইএইচআই ইনফ্রা সিস্টেম কোম্পানি লিমিটেড ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে।

আগামী জুন সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের প্রায় চার মাস আগেই সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়।

চার শ’ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮ মিটার প্রস্থ দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দিলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট অনেকটা কমে আসবে বলে মনে করেন সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা।

যেভাবে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমে সম্পৃক্ত হয় গ্রেপ্তারকৃত দুই জঙ্গী

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১১) এর অভিযানে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের দুই জঙ্গী সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ১৬ মার্চ শনিবার ভোর ৬টায় নরসিংদী জেলার পলাশ থানাধীন পলাশ থেকে এলাকা থেকে ওই দুই জঙ্গীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ল্যাপটপ সহ উদ্রাবাদী বই ও লিফলেট উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব-১১ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দীন (পিপিএম) শনিবার বিকেলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

র‌্যাব-১১ জানায়, র‌্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল শনিবার ভোর পৌনে ৫টা থেকে ৬টা পর্যন্ত নরসিংদী জেলার পলাশ থানাধীন পলাশ নামক এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসার আল ইসলাম (আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) এর সক্রিয় সদস্য মোহাম্মদ শিহাব উদ্দিন ওরফে সৌরভ ও মাহাদী হাসান ওরফে মেহেদী হাসান ওরফে রাশেদুল ইসলাম রাশেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে বিভিন্ন ল্যাপটপসহ বিপুল পরিমান উগ্রবাদী বই ও জঙ্গীবাদী লিফলেট উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব আরও জানায়, মোহাম্মদ শিহাব উদ্দিন ওরফে সৗরভ ২০০৯ সালে শাহাবউদ্দিন মেমোরিয়াল একাডেমী, মনোহরদী থেকে এসএসসি, ২০১১ সালে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ২০১৫ সালে মিলিটারী ইনস্টিটিউট অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজি, মিরপুর থেকে ম্যাক্যানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে। ২০১৬ সাল হতে নরসিংদীর পলাশে একটি বেসরকারী কোম্পানীতে ম্যাকানিকাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত আছে। সে ২০১৩ সালে অধ্যয়নরত অবস্থায় জসিম উদ্দীন রাহমানির লেকচার শুনে উগ্রবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়।

মূলতঃ ২০১৪ সালের দিকে সে ফেসবুকে আফগানিস্থান ও সিরিয়াসহ মুসলমানদের উপর বিভিন্ন হামলার চিত্র দেখে তার মধ্যে উগ্রবাদী চেতনা আরো বেশি প্রকট হয়। পরবর্তিতে কথিত বড়ভাই এর মাধ্যমে ২০১৬ সালে আনসার আল ইসলাম (আনসারুল্লাহহ বাংলা টিম) এ যোগদান করে। ২০১৮ সালে নরসিংদীর পলাশে একটি বেসরকারী কোম্পানীতে চাকুরী করা কালীন আনসার আল ইসলামের কয়েকটি সেলের সমন¡য়কের দায়িত্ব পায়।

সংগঠনের সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর জন্য অসংখ্য ভূয়া ফেসবুক আইডি, টেলিগ্রাম, প্রটেকটেড টেক্ট, টর ব্রাউজার ইত্যাদি এ্যাপস্ ব্যবহার করত। সে অনলাইনে আনোয়ার আল আওলাকি, আব্দুল্লাহ আয্যাম, জসিম উদ্দীন রাহমানি সহ বিশে¡র বিভিন্ন উগ্রবাদী লেখকদের লেখাগুলো সম্পর্কে ব্যাপক ষ্টাডি করে নিজেই উগ্রবাদী নোটসীট তৈরি করে তার নিজস্ব কম্পিউটার ও প্রিন্টারের মাধ্যমে প্রিন্ট করে সংগঠনের সদস্যদের কাছে বিতরণ করতো বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়।

সে আরো জানায় যে, তার নেতৃত্বে নরসিংদীর পলাশে আনসার আল ইসলামের বিভিন্ন গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হত সেখানে মিলিত হওয়ার জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগঠনের সদস্যরা আসতো। তার মাধ্যমে মাহাদী হাসা ওরফে মেহেদী হাসান ওরফে রাশেদুল ইসলাম ওরফে রাশেদ গত ৪ মাস আগে আনসার আল ইসলামে যোগদান করে। রাশেদ মূলত আনসার আল ইসলামের দাওয়াত পাওয়ার পরে ফেসবুকের মাধ্যমে বিভিন্ন উগ্রবাদী মতবাদ প্রচার ও দাওয়াতী কাজ করত। গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

র‌্যাব-১১ দাবি করে-প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে র‌্যাব-১১ জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আপোষহীন অবস্থানে থেকে নিরলসভাবে কাজ করে আসছে। ২০১৭-২০১৮ বছরে র‌্যাব-১১ কর্তৃক বেশ কয়েকটি সফল জঙ্গিবিরোধী অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এ সকল অভিযানে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাসহ ১০৬ জন বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্য ও পলাতক আসামীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। বিভিন্ন অভিযানে গ্রেপ্তারকৃত এ সকল জঙ্গিদেরকে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের নেটওয়ার্ক এবং কার্যক্রমের অনেক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। প্রাপ্ত সে সকল তথ্যাদি যাচাই-বাছাই ও বিশ্লেষণের পর জঙ্গি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত যে সকল সদস্য এখনও গ্রেপ্তার হয়নি তাদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য অব্যাহতভাবে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

আইনজীবীদের ভবন কাজ পরিদর্শনে তিন এমপি, জুয়েল মোহসীনকে সেলিম ওসমানের তাগিদ

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির ১২’শ আইনজীবীর স্বপ্নের ডিজিটাল বার ভবন নির্মাণ কাজ পরিদর্শণ করেছেন নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী তিন এমপি। ওই সময় ডিজিটাল বার ভবন নির্মাণের অগ্রগতি সম্পর্কে সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়ার কাছে জানতে চান নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনের মহাজোটের এমপি একেএম সেলিম ওসমান। কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জেনে সন্তোষ প্রকাশ করে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করতে সভাপতি ও সেক্রেটারিকে তাগিদ দেন এমপি সেলিম ওসমান। ওই সময় তিন এমপি জুয়েল মোহসীনের প্রসংশাও করেন।

এখানে উল্লেখ্যযে, এমপি সেলিম ওসমান নারায়ণগঞ্জের ১২’শ আইনজীবীদের কল্যাণে ৮তলা বিশিষ্ট ডিজিটাল বার ভবন নির্মাণে তিন কোটি টাকা অনুদান ঘোষণা করেন। সর্বপ্রথম তিনিই আইন মন্তীর কাছে প্রায় দুই বছর পূর্বে এখানে অঅইনজীবীদের জন্য ডিজিটাল বার ভবন করে দেয়ার অনুমতি চান। পরে আইনজীবী এতে অনুমতি দিলে সেলিম ওসমান ধন্যবাদ জানান। পরবর্তীতে যাবতীয় আইনি কার্যাবলী ও জটিলতা নিরসনে কাজ করেন সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও সেক্রেটারি মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া। ইতিমধ্যে সেলিম ওসমান দেড় কোটি টাকা সমিতির বরাবর প্রদান করেছেন। এছাড়াও আইন মন্ত্রী এবং নারায়ণগঞ্জে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর বীর প্রতীকও এক কোটি টাকা করে অনুদান ঘোষণা করেছেন।

১৬ মার্চ শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির ডিজিটাল ৮তলা বিশিষ্ট বার ভবনের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি দেখতে যান নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের এমপি একেএস সেলিম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি একেএম শামীম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। একই সময়ে যেখানে বার ভবন নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আবদুল হাই, জেলা আওয়ামীলীগ সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার্স অব কর্মার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি খালিদ হায়দার খান কাজল, নারায়ণগঞ্জ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এসএম ওয়াজেদ আলী খোকন, জিপি অ্যাডভোকেট মেরিনা বেগম প্রমুখ।

নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী এই তিন এমপি, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাদের আগমনের খবরে আদালত বন্ধের দিনেও কয়েক’শ আইনজীবী আদালতপাড়ায় জড়ো হন। সমিতির কার্যকরী পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আলী আহমদ ভূঁইয়া, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট বিদ্যুৎ কুমার সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট আব্দুর রউফ মোল্লা, আপ্যায়ণ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান কাজল, লাইব্রেরী সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুবাস বিশ^াস, ক্রীড়া সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা, সাংস্কৃতিক ও সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাজ্জাদুল হক সুমন, সমাজ সেবা সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাশেদ ভূঁইয়া, আইন ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট স্বপন ভূঁইয়া, কার্যকরী পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট হাবিব উল হাসান রনি, অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান, অ্যাডভোকেট নুসরাত জাহান তানিয়া, অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান সহ আইনজীবী সমিতির সিনিয়র ও জুনিয়র অন্যান্য আইনজীবীগণ উপস্থিত ছিলেন।

এখানে আরও উল্লেখ্যযে, নারায়ণগঞ্জে ১২’শ আইনজীবীদের জন্য হতে যাচ্ছে এই ৮তলা বিশিষ্ট ডিজিটাল বার ভবনটি। এই ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেন সমিতির বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া। গত পরিষদ থেকে ভবন নির্মাণে কাগজপত্রের কাজ শুরু করেন জুয়েল মোহসীন। চলছি বছরের ২৪ জানুয়ারি জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ১৭টি পদের মধ্যে ১৬টি পদেই আওয়ামীলীগ প্যানেল থেকে আইনজীবীরা নির্বাচিত হন। নির্বাচনের আগে এমপি একেএম সেলিম ওসমান ১ কোটি টাকা সমিতির ভবন নির্মাণের জন্য অনুদান পরিশোধ করেন। নির্বাচনের পর তিনি আরও ৫০ লাখ টাকা অনুদান দেন। গত বছরে এমপি সেলিম ওসমান তিন কোটি টাকা অনুদানের ঘোষণা দেন। আইন মন্ত্রী আনিসুল হক ও বর্তমান পাট বস্ত্র মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর এক কোটি টাকা করে অনুদানের ঘোষণা দেন। প্রাথমিক পর্যায়ে পুরাতন ভবনটি ভাঙ্গতে অনেক সিনিয়র আইনজীবীরা বিরোধীতা করেছিলেন। সেলিম ওসমান অনুদানের টাকা দিবেন নাকি দিবেন না তা নিয়ে বেশ প্রচার অপপ্রচারও ছিল আদালতপাড়ায়। কিন্তু সেই প্রচারকে পিছনে পেলে এখন যখন ভবন নির্মাণের দিকে তখন সকল আইনজীবীদের প্রসংশা পাচ্ছেন জুয়েল মোহসীন।

সোনারগাঁয়ে কালামের ঘোড়া নিয়ে মা বোনদের কাছে ছুটছেন কর্মীরাও

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

আগামী ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঘোড়া প্রতীকে লড়ছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম। তার ঘোড়া প্রতীকে ভোট প্রার্থনায় এবার সোনারগাঁয়ে মা বোনদের ঘরে ঘরে ছুটছেন আওয়ামীলীগের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও।

জানাগেছে, ১৬ মার্চ শনিবার উপজেলার কাচপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড থেকে ৩নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভোটারদের ঘরে ঘরে ঘোড়া প্রতীকে ভোট প্রার্থণা করেন। প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়ে মা বোনদের বুঝানোর চেষ্টা করেন মাহফুজুর রহমান কালামই যোগ্য প্রার্থী। ঘোড়া প্রতীকে ভোট দেয়ার দাবি জানান কর্মীরা।

এই নির্বাচনে সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদে নৌকা প্রতীক পান উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন। মাহফূজুর রহমান কালাম মনোনয়ন চাইলেও তিনি পাননি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচ করতে আওয়ামীলীগ থেকে কোন ধরনের বাধা নিষেধ না থাকায় তিনি নির্বাচনে লড়ছেন। মোশারফ হোসেন হলেন আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতের আপন চাচা। এই নির্বাচনে চাচা ভাতিজা নৌকার পক্ষেই কাজ করছেন।

অন্যদিকে মাহফুজুর রহমান কালামের পক্ষে নেমেছেন উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদের সাত চেয়ারম্যান এবং ৯০ জন কাউন্সিলর ও মেম্বারগণ। কালামের পক্ষে রয়েছেন সোনারগাঁও পৌর মেয়র সাদেকুর রহমানও। উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটির প্রায় সকল নেতারাও রয়েছেন কালামের পক্ষে। স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার সমর্থনও কালামের দিকেই। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি খোকার পক্ষে কাজ করেছিলেন কালাম। আর নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী সিংহ প্রতীকে কায়সার হাসনাত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও নির্বাচনের ভোট গ্রহণের ৭২ ঘন্টা আগে নানা নাটকীয়তার পর তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাড়ান। ফলে এখানে দ্বিতীয় বারের মত এমপি নির্বাচিত হন এমপি খোকা।

সোনারগাঁয়ের সন্ত্রাসী ডিস আল-আমিন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর ললাটি এলাকার বৃদ্ধ লাল মিয়া হত্যা মামলার আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী ডিস আল-আমিনকে গ্রেপ্তার করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

১৫ মার্চ শুক্রবার দুপুরে সোনারগাঁয়ের তালতলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শীর্ষ সস্ত্রাসী ডিস আল-আমিনের বিরুদ্ধে এলাকায় মাদক ব্যবসা, জমি দখলসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে। আল-আমিন তিলাব গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে।

নারায়ণগঞ্জ ডিবি পুলিশের এসআই আরিফ হোসেন জানিয়েছেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতের ললাটি এলাকায় লাল মিয়া হত্যাকান্ডের মামলায় পলাতক আসামি আল-আমিন ওরফে ডিস আল-আমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোনারগাঁয়ের তালতলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। লাল মিয়া হত্যাকান্ডের ঘটনায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের অভিযোগও রয়েছে।

এখানে উল্লেখ্যযে, গত ২১ফেব্রুয়ারী সোনারগাঁও উপজেলার কাঁচপুর ইউনিয়নের ললাটি পরান বাজার এলাকায় জমি দখল করতে যায় ভাড়াটে সন্ত্রাসী হাবিবুর রহমান হাবিব, মিঠু, আলামিনের নেতৃত্বে ৩০ থেকে ৩৫ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী লাঠিসোটা, হকিস্টিক, লোহার রড নিয়ে। ওই জমি দখল করতে গিয়ে ষাটোর্ষ লাল মিয়াকে পিটিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ হত্যাকান্ডের পর থেকে সন্ত্রাসী আল-আমিন পলাতক রয়েছে। ওই ঘটনায় ডিস আল-আমিনের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে জানিয়েছেন নিহতের পরিবার।

সোনারগাঁয়ে নৌকা ও ঘোড়া সমর্থকদের সংঘর্ষ, আহত ৫

সান নারায়ণঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোশারফ হোসেন ও আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকে মাহফুজুর রহমান কালামের সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এর আগে দুই প্রার্থীর সমর্থকেরা মনোনয়ন দাখিলের দিনেও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে বেশকজন আহত হন। পরে থানায় পাল্টাপাল্টি মামলাও দায়ের করে দুই গ্রুপ।

জানাগেছে, ১৫ মার্চ শুক্রবার সন্ধায় সোনারগাঁও উপজেলার তালতলা এলাকায় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কার্যালয়ের সামনে দুই গ্রুপের এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সহ স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ঘটনার পর উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিয়েছে দুই গ্রুপ।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে, সোনারগাঁও উপজেলার তালতলা এলাকায় জামপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোশারফ হোসেনের পক্ষে একটি নির্বাচনী সভা চলছিল। ওই সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী কালামের সমর্থক তাইজুল ইসলামের নেতৃত্বে রফিকুল ইসলাম, সামসুল, আলীজান, আজিজুল রনি, দেওয়ান কামাল, স্বপন, দুলাল, শাহ আলম, আব্দুন নূর, মোতালেব ও ওসমান সহ ২০/৩০ জনের একটি দল মোশারফ হোসেনের সভাস্থলের নেতাকর্মীদের উস্কানী দেয়। নৌকার প্রার্থীর সমর্থকদের নিয়ে শ্লোগান দিতে দিতে আওয়ামীলীগ কার্যালয়ের যায়। এ সময় উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের লোকজন লাঠিসোটা, লোহার রড, হকিস্টিক, ক্রিকেটের স্ট্যাম্প নিয়ে সংঘর্ঘে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে মিজান, মহসিন, তাইজউদ্দিন, বাবু, জাকির, রমজান আহত হয়। আহতদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সহ স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

ঘটনার বিষয়ে সোনারগাঁ থানা পুুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানান, তালতলা এলাকায় আওয়ামীলীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ অভিযোগ দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন।

এখানে উল্লেখ্য গত ৪ মার্চ সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসে আওয়ামীলীগ প্রার্থী মোশারফ হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহফুজুর রহমান কালামের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। ওই ঘটনায় উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেন এবং পাল্টা মামলা দায়ের করে।

সোনারগাঁয়ে জনপ্রতিনিধিরা নৌকা বিরোধী: ঘোড়ার দৌড়ে মাঠ গরম

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মাহফুজুর রহমান কালামের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যেসব চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন। তারা আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোশারফ হোসেনের সঙ্গে নেই। এসব চেয়ারম্যানের সঙ্গে আবার যোগ দিয়েছেন সোনারগাঁও উপজেলার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও। দুচারজন জনপ্রতিনিধিদের সমর্থন নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে থাকরেও বাকিরা রয়েছেন কালামের পক্ষে। ফলে কালামের নির্বাচনী মাঠ বেশ গরম। এসব জনপ্রতিনিধিদের পিছন থেকে কামালের পক্ষে কাজ করছেন স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা।

জানাগেছে, আগামী ৩১ মার্চ নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঘোড়া প্রতীকে নির্বাচনে নেমেছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান। ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার অফিসে সোনারগাঁয়ের প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্ধ দেয়া হয়। কালামের ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় রীতিমত উচ্ছ্বাস করেছেন সোনারগাঁয়ের জনপ্রতিনিধিদের সংগঠন জনপ্রতিনিধি ঐক্য ফোরাম। তার ঘোড়া প্রতীকে শ্লোগানও দিয়েছেন।

ছবি- বৃহস্পতিবার কালামের ঘোড়া প্রতীক নিতে আসেন সোনারগাঁয়ের জনপ্রতিনিধিরা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মাহফূজুর রহমাম কালামের ঘোড়া প্রতীক নিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ছুটে আসেন সোনারগাঁও পৌর মেয়র সাদেকুর রহমান। যদিও তিনি এসে দেখেন তার আগেই সোনারগাঁয়ের অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা কালামের ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় শোডাউন দিয়েছেন। ওই সময় উপস্থিত ছিলেন কাচপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ ওমর, জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যা হা-মীম শিকদার শিপলু, বারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল হক, নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউসুফ দেওয়ান সহ সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। তবে শুধু তাই নয় উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়াও সেখানে কালামকে দোয়া করে গেছেন। আবার উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান আহমেদ মোল্লা বাদশা নিজেই কালামের মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন।

ছবি- মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী কালাামের সঙ্গে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সহ আওয়ামীলীগ নেতারা।

সোনারগাঁয়ের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরীক দল জাতীয়পার্টি থেকে মনোনয়ন পান লিয়াকত হোসেন খোকা। ওই নির্বাচনে এখানে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন ও উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান কালাম সহ অন্তত ১৫ জন আওয়ামীলীগ নেতা। নির্বাচনে মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে সিংহ প্রতীকে নির্বাচনে দাড়ান কায়সার হাসনাত।

নেতাকর্মীরা আরও জানান, ওই নির্বাচনে কায়সার হাসনাতের পক্ষে ছিলেন মোশারফ হোসেন ও কালাম ছিলেন মহাজোটের প্রার্থীর পক্ষে। নির্বাচনের ৭২ ঘন্টা পূর্বে নাটকীয়তায় নির্বাচন থেকে সরে দাড়ান কায়সার হাসনাত। নির্বাচনে কায়সার হাসনাতের পক্ষে কাজ করতে গিয়ে নেতাকর্মীরা হামলা মামলা নির্যাতনের শিকার হলেও মোশারফ হোসেন ও কায়সার হাসনাত তাদের পাশে দাড়ায়নি। এমনকি কোন ধরনের খোজ খবরও রাখেননি। কাচপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মাহাবুব পারভেজ নির্বাচনে কায়সার হাসনাতের পক্ষে কাজ করায় তার বৃদ্ধ বাবা ও বৃদ্ধা মা সহ ভাই বোনকে আটক করে মাদক উদ্ধারের মামলায় আসামি করে পুলিশ। ওই ঘটনায় মাহাবুব পারভেজ দাবি করেছিলেন সিংহ প্রতীকে কাজ করার কারনেই তার পরিবারকে হয়রানি করা হচ্ছে। কিন্তু কায়সার হাসনাত ও মোশারফ হোসেন কোন ধরনের সহযোগীতা তো দুরের কথা মাহাবুব পারভেজের পরিবারের কোন খবরও নেননি বলে আক্ষেপ করে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন তিনি। নির্বাচনের পর আওয়ামীলীগের হতাশাগ্রস্থ নেতাকর্মীদের নিয়ে কোন সভা কিংবা বৈঠকও করেননি চাচা মোশারফ হোসেন ও ভাতিজা কায়সার হাসনাত। যে কারনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এবার মোশারফ হোসেন নেতাকর্মী সংকটে পড়েছেন। তাদের ছেড়ে নেতাকর্মীরা কাজ করছেন কালামের পক্ষে।

এমপি বাবুর নিয়ন্ত্রণের বাহিরে ভাগিনা: শঙ্কায় নৌকা

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজারের রাজনীতিতে কারোরই খবরদারী চলে নাা। এখানে একক কর্তৃত্ব কেবল স্থানীয় তিন বারের এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর। কিন্তু এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তার পছন্দের প্রার্থী শাহজালাল মিয়া নৌকা প্রতীক পাননি। নৌকা প্রতীকটি ছিনিয়ে এনেছেন মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার।

এখানে বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন শাহজালাল মিয়া যিনি তার মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। নির্বাচনে ভোট গ্রহণের আগেই বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় দুই ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এত নিয়ন্ত্রনের পরেও তার ভাগিনা ইকবাল হোসেন মোল্লাকে নিয়ন্ত্রন করতে পারছেন না এমপি বাবু। উল্টো ভাগিনা ইকবাল দিয়েছেন হুংকার।

জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৩১ মার্চ। এখানে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার। নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহজালাল মিয়া ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ ভূঁইয়াও। কিন্তু হেলো সরকারের পক্ষে গোপনে কেন্দ্রে চিঠি পাঠান জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল হাই ও সেক্রেটারি আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল।

মনোনয়ন পাওয়ার পর গত ৩ মার্চ আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসে শোডাউন করে দলীয় প্রার্থীর সঙ্গে বিদ্রোহী করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন শাহজালাল মিয়া। ওইদিন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের কার্র্যালয়ে রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়ন পত্র জমা দেন হেলো সরকার। তারপর থেকে তিনি আড়াইহাজারেই যেতে পারেননি। কোন ধরনের নির্বাচনী প্রচারণায়ও তিনি নামতে পারেননি। সবশেষ গত ১৩ ফেব্রুয়ারি শাহজালাল মিয়া তার দলের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হেলো সরকারকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ান। কিন্তু নির্বাচন থেকে সরে যায়নি উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি ও এমপি নজরুল ইসলাম বাবুুর ভাগিনা ইকবাল হোসেন মোল্লা। তিনি গত ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার আনারস প্রতীক পেয়েছেন। তিনি হুংকারও দিয়েছেন আড়াইহাজারে নির্বাচনী আচরণের বাহিরে কাউকে কিছু করতে দেয়া হবে না।

জানাগেছে, গত ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনের বছর খানিক আগে থেকেই হেলো সরকার এমপি বাবুর বিরোধীতা করে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল পারভেজের পক্ষে কাজ করেন। ইকবাল পারভেজ ওই নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশি ছিলেন। ইকবালের পক্ষে প্রচারণা চালাতে গিয়ে বিভিন্ন সময় এমপি বাবুর নানা কর্মকান্ডের সমালোচনা করে বক্তব্য রেখেছিলেন হেলো সরকার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নৌকা প্রতীক পেয়ে তৃতীয় বারের মত এমপি নির্বাচিত হন নজরুল ইসলাম বাবু। যদিও নির্বাচনের আগ নাগাদ এমপি বাবুর সঙ্গে মাঠে নামেন হেলো সরকার। গত ১৩ মার্চ শাহজালাল মিয়া তার মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন হেলো সরকার বলেছেন, ‘আড়াইহাজারে আমার নেতা নজরুল ইসলাম বাবু।’

এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, আড়াইহাজারে হেলো সরকারের যে জনপ্রিয়তা তাতে ইকবাল হোসেন মোল্লার সঙ্গে ভোটের লড়াইয়ে জয়ী হওয়াটা কঠিনই হবে। কারন আড়াইহাজারে হেলো সরকারের জনপ্রিয়তা নড়বড়ে। মুলত আড়াইহাজারের নির্বাচনটি অনেকটা সিলেকশনের দিকেই ছিল। কিন্তু স্থানীয় এমপির নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে গেছেন ইকবাল হোসেন মোল্লা। যে কারনে তাকে নির্বাচন থেকে বসানো যায়নি। যদিও ভাইস চেয়ারম্যান পদে রফিকুল ইসলাম ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী হিসেবে দুজনই বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু ইকবাল হোসেন মোল্লা আনারস প্রতীক নিয়ে মাঠে থাকায় হেলো সরকারের নৌকার বিজয় নিয়ে রয়েছে শঙ্কা। তবে শেষ পর্যন্ত ইকবাল হোসেন মোল্লা নির্বাচনে টিকতে পারবেন কিনা তা নিয়েও রয়েছে বেশ সংশয়।

সোনারগাঁয়ে ঘোড়া নিয়ে দৌড়াচ্ছেন কালাম: ব্যাকফুটে মোশারফের নৌকা

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

প্রতীক বরাদ্ধের পরেই ঘোড়া প্রতীক নিয়ে সোনারগাঁয়ের নির্বাচনী মাঠ দৌড়াচ্ছেন মাহফুজুর রহমান কালাম। তার সঙ্গে ঘোড়া প্রতীকে আওয়াজ তুলেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়র সহ কয়েকশ জনপ্রতিনিধিরাও। কালামের ঘোড়ার পক্ষে শ্লোগান তুলছেন আওয়ামীলীগের মুলধারার নেতারাও। অন্যদিকে নৌক প্রতীক নিয়েও বেশ ব্যাকফুটে রয়েছেন মোশারফ হোসেন। এবার মোশারফ হোসেন নৌকা প্রতীক পেলেও নির্বাচনী আওয়াজ তুলতে পারছেন না। যেখানে আওয়ামীলীগের বিরাট অংশ চলে গেছেন কালামের ঘোড়া মার্কার দিকে। আবার রয়েছেন স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার পরোক্ষ সমর্থন। ফলে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার বিজয় নিয়ে বেশ শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সেদিকে জয়ের সম্ভাবনা বাড়ছে কালামের ঘোড়া প্রতীকের।

জানাগেছে, ১৫ মার্চ শুক্রবার সকাল থেকে রাত অবধি সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন এলাকায় ঘোড়া প্রতীকের পোস্টার নিয়ে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়িয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহফুজুর রহমান কালাম। উপজেলার সাদিপুুর ইউনিয়ন এলাকায় কালাম নির্বাচনী গণসংযোগে গেলে সেখানে এলাকার কৃষক শ্রমিক সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ব্যক্তিরাও তার সঙ্গে সংযোগে অংশ নেয়। আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও কালামের ঘোড়া মার্কায় দিনব্যাপী ভোট প্রার্থনা করেন। দুপুরের জুমা নামাজের পর কালামের গণসংযোগ শোডাউনে রূপ নেয়।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ঘোড়া প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন মাহফুজুর রহমান কালাম। তিনি সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি যিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। তার প্রতিদ্বন্ধি হিসেবে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন আওয়ামীলীগের মনোনিত নৌকা প্রতীকে লড়বেন। তিনি আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতের আপন চাচা। আপাতত নির্বাচনী পরিস্থিতি বলছে দুজনের মধ্যে বেশ ভোটের লড়াই হবে। কারো জয়ের সম্ভাবনা কম নয়। কিন্তু বর্তমানে নির্বাচনী প্রচারণা বলছে কালামের জয়ের সম্ভাবনাই বেশি।

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী ১২ জন প্রার্থীর প্রতীক বরাদ্ধ করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ আতাউর রহমান। ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্ধ দেয়া হয়।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক পাওয়া মোশারফ হোসেনকে তার দলীয় প্রতীক নৌকা তুলে দেন নির্বাচন কর্মকর্তা। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্ধি উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান কালাম নেন ঘোড়া প্রতীক। ফলে আগামী ৩১ মার্চ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণে নৌকা প্রতীক ও ঘোড়া প্রতীকে হবে নির্বাচনী লড়াই।

এছাড়াও ভাইস চেয়ারম্যান পদে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা শিক্ষানুরাগী আবু নাইম ইকবাল পেয়েছেন তালা প্রতীক। বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান শাহআলম রূপন নিয়েছেন মাইক প্রতীক, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এম জাহাঙ্গীর হোসেন পেয়েছেন চশমা প্রতীক, বাবুল ওমর বাবু পেয়েছেন টিউবওয়েল, মনির হোসেন পেয়েছেন উড়োজাহাজ ও সাংবাদিক শাহজালাল মিয়া পেয়েছেন বই প্রতীক।

উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী নাসিমা আক্তার পেয়েছেন পদ্ম ফুল, হেলেনা আক্তার পেয়েছেন কলস, ফরিদা পারভীন শ্যামলী চৌধুরী পেয়েছেন ফুটবল ও মাহমুদা আক্তার ফেন্সী পেয়েছেন হাঁস প্রতীক।

তবে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু নাইম ইকবাল, শাহআলম রূপন ও বাবুল হোসেন ওমর তিনজনই চেয়েছিলেন তালা প্রতীক। তাদের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় তারা লটারিতে যান। লটারিতে আবু নাইম ইকবাল তালা প্রতীক পান এবং প্রথম হন বাবুল হোসেন ওমর ও দ্বিতীয় হন শাহআলম রূপন।

একইভাবে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হেলেনা আক্তার, ফরিদা পারভীন ও মাহামুদা আক্তার ফেন্সী চান কলস প্রতীক। তাদের মধ্যেও কোন সমঝোতা না হওয়ায় লটারিতে কলস প্রতীক পান হেলেনা আক্তার। তবে আলোচনায় থাকা দুই প্রার্থী ফেন্সী ও শ্যামলী চৌধুরী লটারিতে হেরে যান। পরে দ্বিতীয় হওয়া ফেন্সী নেন হাঁস প্রতীক ও শ্যামলী চৌধুরী নেন ফুটবল প্রতীক।

ডিবি পুলিশের বিরুদ্ধে মামলার বাদী সেই তেল চোরা ইকবাল গ্রেপ্তার

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লার শীর্ষ তেল চোর ইকবাল হোসেন ওরফে তেল চোরা ইকবালকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ফতুল্লা মডেল থানার একটি মামলায় শীর্ষ এই তেল চোরা ইকবালকে গ্রেপ্তার করা হয়।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ জানিয়েছে, তার বিরুদ্ধে গত ১২ মার্চ ফতুল্লা থানায় একটি মামলায় দায়ের করা হয়। ওই দিন ৫৭ ড্রাম চোরাই তেল উদ্ধার করেছিল পুলিশ। পরে ১৬ জনকে আসামী করে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় এজাহারভুক্ত আসামী এই তেল চোরা ইকবাল।

পুলিশ জানায়, আসামী তোল চোর ইকবাল জিজ্ঞাসাবাদে তেল চুরি করে তা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বিক্রি করার কথা স্বীকার করেছে এবং ইকবাল তেল চোরাকারবারী সিন্ডিকেট দলের অন্যতম সদস্য বলেও স্বীকার করে। জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত গ্রেপ্তারকৃত আসামী স্বীকার করে যে, কুচক্রী মহলের প্ররোচনায় ও স্বার্থন্বেষী মহলের সহযোগীতায় সে ডিবি পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা পিটিশন দায়ের করে। পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পেছনে কারা কারা প্ররোচনা দিয়েছে এবং তাদের নাম ঠিকানা উক্ত জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়। তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা আপাতত সম্ভব হচ্ছে না বলে জেলা পুলিশ থেকে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়।

পুুলিশ আরও জানায়, উক্ত তেল চোর আসামী ইকবাল হোসেন তেল চুরির ঘটনা স্বীকার করে এবং অন্যের প্ররোচনায় ডিবি পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করিয়েছে মর্মে স্বীকার করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাওসার আলমের আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী প্রদান করেছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মনিরুল ইসলাম (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ পেশাদারীত্বের সহিত কাজ করবে। তিনি আরো বলেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে তথা ভূমিদস্যূ, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, জঙ্গীবাদ, জুট সন্ত্রাসী সহ মাদক ও তেল চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে। যাহা আরো বেগবান করা হয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ