সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
প্রতীক বরাদ্ধের পরেই ঘোড়া প্রতীক নিয়ে সোনারগাঁয়ের নির্বাচনী মাঠ দৌড়াচ্ছেন মাহফুজুর রহমান কালাম। তার সঙ্গে ঘোড়া প্রতীকে আওয়াজ তুলেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়র সহ কয়েকশ জনপ্রতিনিধিরাও। কালামের ঘোড়ার পক্ষে শ্লোগান তুলছেন আওয়ামীলীগের মুলধারার নেতারাও। অন্যদিকে নৌক প্রতীক নিয়েও বেশ ব্যাকফুটে রয়েছেন মোশারফ হোসেন। এবার মোশারফ হোসেন নৌকা প্রতীক পেলেও নির্বাচনী আওয়াজ তুলতে পারছেন না। যেখানে আওয়ামীলীগের বিরাট অংশ চলে গেছেন কালামের ঘোড়া মার্কার দিকে। আবার রয়েছেন স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার পরোক্ষ সমর্থন। ফলে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার বিজয় নিয়ে বেশ শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সেদিকে জয়ের সম্ভাবনা বাড়ছে কালামের ঘোড়া প্রতীকের।
জানাগেছে, ১৫ মার্চ শুক্রবার সকাল থেকে রাত অবধি সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন এলাকায় ঘোড়া প্রতীকের পোস্টার নিয়ে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়িয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহফুজুর রহমান কালাম। উপজেলার সাদিপুুর ইউনিয়ন এলাকায় কালাম নির্বাচনী গণসংযোগে গেলে সেখানে এলাকার কৃষক শ্রমিক সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ব্যক্তিরাও তার সঙ্গে সংযোগে অংশ নেয়। আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও কালামের ঘোড়া মার্কায় দিনব্যাপী ভোট প্রার্থনা করেন। দুপুরের জুমা নামাজের পর কালামের গণসংযোগ শোডাউনে রূপ নেয়।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ঘোড়া প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন মাহফুজুর রহমান কালাম। তিনি সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি যিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। তার প্রতিদ্বন্ধি হিসেবে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন আওয়ামীলীগের মনোনিত নৌকা প্রতীকে লড়বেন। তিনি আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতের আপন চাচা। আপাতত নির্বাচনী পরিস্থিতি বলছে দুজনের মধ্যে বেশ ভোটের লড়াই হবে। কারো জয়ের সম্ভাবনা কম নয়। কিন্তু বর্তমানে নির্বাচনী প্রচারণা বলছে কালামের জয়ের সম্ভাবনাই বেশি।
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী ১২ জন প্রার্থীর প্রতীক বরাদ্ধ করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ আতাউর রহমান। ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্ধ দেয়া হয়।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক পাওয়া মোশারফ হোসেনকে তার দলীয় প্রতীক নৌকা তুলে দেন নির্বাচন কর্মকর্তা। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্ধি উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান কালাম নেন ঘোড়া প্রতীক। ফলে আগামী ৩১ মার্চ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণে নৌকা প্রতীক ও ঘোড়া প্রতীকে হবে নির্বাচনী লড়াই।
এছাড়াও ভাইস চেয়ারম্যান পদে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা শিক্ষানুরাগী আবু নাইম ইকবাল পেয়েছেন তালা প্রতীক। বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান শাহআলম রূপন নিয়েছেন মাইক প্রতীক, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এম জাহাঙ্গীর হোসেন পেয়েছেন চশমা প্রতীক, বাবুল ওমর বাবু পেয়েছেন টিউবওয়েল, মনির হোসেন পেয়েছেন উড়োজাহাজ ও সাংবাদিক শাহজালাল মিয়া পেয়েছেন বই প্রতীক।
উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী নাসিমা আক্তার পেয়েছেন পদ্ম ফুল, হেলেনা আক্তার পেয়েছেন কলস, ফরিদা পারভীন শ্যামলী চৌধুরী পেয়েছেন ফুটবল ও মাহমুদা আক্তার ফেন্সী পেয়েছেন হাঁস প্রতীক।
তবে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু নাইম ইকবাল, শাহআলম রূপন ও বাবুল হোসেন ওমর তিনজনই চেয়েছিলেন তালা প্রতীক। তাদের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় তারা লটারিতে যান। লটারিতে আবু নাইম ইকবাল তালা প্রতীক পান এবং প্রথম হন বাবুল হোসেন ওমর ও দ্বিতীয় হন শাহআলম রূপন।
একইভাবে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হেলেনা আক্তার, ফরিদা পারভীন ও মাহামুদা আক্তার ফেন্সী চান কলস প্রতীক। তাদের মধ্যেও কোন সমঝোতা না হওয়ায় লটারিতে কলস প্রতীক পান হেলেনা আক্তার। তবে আলোচনায় থাকা দুই প্রার্থী ফেন্সী ও শ্যামলী চৌধুরী লটারিতে হেরে যান। পরে দ্বিতীয় হওয়া ফেন্সী নেন হাঁস প্রতীক ও শ্যামলী চৌধুরী নেন ফুটবল প্রতীক।