জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে যা বললেন ইউএনও নাহিদা বারিক

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা বারিক উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘সরকার দেশকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিনত করার লক্ষ্য নিয়ে নানাবিধ উন্নয়নমুলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সদর উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের উন্নয়নমুলক কাজ সঠিক সময়ে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি দপ্তরকে রুটিন মাফিক কাজ করে যেতে হবে। তাই জনপ্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয় করে যেতে হবে। এখন থেকে প্রতিমাসে উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভা হবে।

১১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের হলরুমে মাসিক উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে এসব কথা বলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস।

সভায় উপস্থিত ছিলেন- সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির, বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলী, গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নওশেদ আলী ও এনায়েত নগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা বিআরডিবি অফিসার বেলাল হোসেন, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মনিরুল হক, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সুরাইয়া আশরাফী, কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ গফফার হোসেন, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রদীপ চন্দ্র রায় ও পিআইও আনোয়ার হোসেন প্রমূখ।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতৃত্বে ১৯আইনজীবী

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগ পর গঠিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি। কমিটিতে আইনজীবীদের বেশ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ২০৫ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ১৯ জন আইনজীবীকে নেতৃত্বে বিভিন্ন পদে রাখা হয়েছে। এসব আইনজীবীরা আদালতপাড়ার রাজনীতির বাহিরেও বিভিন্ন এলাকায় রাজনীতিতে বেশ সক্রিয়। অনেক আইনজীবীরা সমাজে বেশ গুরুত্ব দিয়েই প্রতিষ্ঠিত। বিএনপির নেতাকর্মীরা শত শত মামলায় আইনজীবীদের আইনী সহায়তাও বেশ গুরুত্ব সহকারে দেখেছেন জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা।

জানাগেছে, গত ১৮ মার্চ নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। কমিটিতে আংশিক কমিটির সকলকেই স্বপদে রাখা হয়েছে। যেখানে সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির ও সেক্রেটারি পদে অধ্যাপক মামুন মাহমুদ। কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ^াস। তিনি সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। একই সঙ্গে তিনি ফতুল্লা থানা বিএনপির আহ্বয়ক। অপর সহ-সভাপতি পারভেজ আহমেদ। তিনিও একজন আইনজীবী। যদিও বর্তমানে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলর তার সনদ আজীবনের জন্য বাতিল করেছে। তিনি নিজেকে ব্যারিস্টার দাবি করেন।

কমিটিতে আইন বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম মোল্লা। তিনি আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন।

সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রয়েছেন অ্যাডভোকেট মাহামুদুল হাসান খোকা, সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জাকির, অ্যাডভোকেট মাহামুদুল হক আলমগীর ও অ্যাডভোকেট আবদুর রহিম। এদের মধ্যে আবুল কালাম আজাদ জাকির নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। গত নির্বাচনে তিনি সেক্রেটারি পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন। আদালতপাড়ায় রাজনীতিতে তিনি বেশ সক্রিয়। একইভাবে মাহামুদুল হক আলমগীর গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ফতুল্লার এনায়েতনগর ইউনিয়ন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন। তিনি এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারি পদে রয়েছেন। আবদুর রহিম সোনারগাঁও বিএনপির নেতাকর্মীদের মামলাগুলো পরিচালনা করে থাকেন।

কমিটিতে নির্বাহী সদস্য পদে রয়েছেন অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দীন সরকার, অ্যাডভোকেট আজিজুল হক হান্টু, অ্যাডভোকেট আল-আমিন সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট মোজ্জামেল মল্লিক শিপলু, অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন, অ্যাডভোকেট গিয়াসউদ্দীন, অ্যাডভোকেট মোশারফ হোসেন, অ্যাডভোকেট মামুন মাহামুদ, অ্যাডভোকেট গোলজার হোসেন, অ্যাডভোকেট রেজাউল হক, অ্যাডভোকেট সিদ্দিকুর রহমান ও অ্যাডভোকেট শাহআলম মানিক।

এসব সদস্যদের মাঝে বিএনপির রাজনীতিতে প্রায় সকলেই সক্রিয়। বেশকজন আদালতপাড়ার রাজনীতিতেও সক্রিয়। আজিজুল হক হান্টু জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের শীর্ষ পদেও রয়েছেন। মোজ্জামেল মল্লিক শিপলুও রাজনীতিতে সক্রিয়। আল-আমিন সিদ্দিকী ফতুল্লা থানা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। বর্তমানে তিনি বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারি পদে রয়েছেন। বাকিরাও বেশ সক্রিয় রাজনীতিতে। পাশাপাশি বিএনপির আন্দোলন করতে গিয়ে মামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীদের আইনি লড়াইয়েও এরা সক্রিয় থাকেন।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটিতে আইনজীবীদের গুরুত্ব দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সেক্রেটারি অধ্যাপক মামুন মাহামুদ অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম’কে বলেন, এক সময় আইনজীবী ও শিক্ষক সমাজই রাজনীতিতে বেশি ছিল। কিন্তু বর্তমানে ব্যবসায়ী ও সুবিধাবাদীদের কারনে শিক্ষিত সমাজ রাজনীতি থেকে দুরে সরে যাচ্ছে। যে কারনে আমরা জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আইনজীবী, শিক্ষক ও মুক্তিযোদ্ধাদের গুরুত্ব দিয়েছি। তা ছাড়া এসব শিক্ষিক সমাজের লোকজন সমাজেও বেশ গ্রহণযোগ্য ও সম্মানিত।

তিনি আরও বলেন, আমরা প্রায় এক যুগ ধরে আন্দোলন করতে গিয়ে হাজার হাজার বিএনপি নেতাকর্মী মামলায় জর্জরিত। এসব মামলায় আমাদের আইনী সহযোগীতা করে আসছেন আইনজীবীরা। আইনী সাপোর্টটাও বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের কাছ থেকে পাচ্ছেন। আইনজীবীরা সচেতন নাগরিক। এসব বিষয় বিবেচনা করেই বেশকজন আইনজীবীকে বিভিন্ন পদে রাখা হয়েছে।

রূপগঞ্জে বসুন্ধরা সহ তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভূমিদস্যূতার অভিযোগ

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

বসুন্ধরা সহ দেশের তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভূমিদস্যূতার অভিযোগে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। ইষ্ট ওয়েট প্রপার্টি ডেভলপমেন্ট প্রাইভেট লিমিডেট, বসুন্ধরা সাইনিয়া সার্ভিসেস লিমিডেট ও আশালয় হাউজিং এন্ড ডেভেলপার্স লিমিডেট নামে তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এই ৫ হাজার মানুষের জমি দখলের অভিযোগ তোলা হয়।

জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার রূপগঞ্জ ইউনিয়নের বেশকটি গ্রামের ৫ হাজার মানুষের বসতভিটা, ফসলি জমি রক্ষার দাবিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন এলাকাবাসী। ১১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সেলিম রেজার হাতে এই লিখিত অভিযোগ ভুক্তভোগীদের নিয়ে দাখিল করেন অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার।

এছাড়াও নারায়ণগঞ্জে পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের সচিব বরাবর এই লিখিত অভিযোগের অনুলিপি প্রদান করা হয়। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যালয়েও এই অভিযোগের অনুলিপি প্রদান করা হয়।

এসব দপ্তরে অভিযোগ দায়েয়ের সময় অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, এসব ভূমিদস্যূ প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষের জমি বসত ভিটা জোরপূর্বক দখল করছে। জমি কিনে একটি আর বালি দিয়ে ভরে দশটি জমি। কোন ধরনের কাগজপত্র ছাড়াই তারা নিরীহ মানুষের জমি দখল করছে। যদি এভাবে নিরীহ মানুষের জমি বসত ভিটে ভূমিদস্যূরা জোর করে দখল করে নেয় তাহলে মানুষ যাবে কোথায়?

লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগীরা উল্লেখিত বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবীতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে জানায়, রূপগঞ্জ উপজেলাধীন রূপগঞ্জ ইউনিয়নের পিতলগঞ্জ ও মোগলান মৌজায় অবস্থিত মধূখালী গ্রামে প্রায় ৫ হাজার লোকের বসবাস সহ ৬টি সামাজিক, ১টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পুকুর, ফসলী জমিসহ মানুষ চলাচলের পাকা রাস্তাসহ হাজারের অধিক বসত ঘর রয়েছে। কিন্তু কিছুদিন যাবৎ একটি ভূমিদস্যু চক্র এই গ্রামের জমিতে জোরপূর্বক বালি ফেলে দখলে নেয়ার জন্য ড্রেজার পাইপ স্থাপন করেছে।

তারা আরও জানায়- শুধু তাই নয়, জমি ক্রয় না করে জোরপূর্বক বালি ফেলে ভরাটের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এতে আমরা গ্রামবাসি সঙ্কিত ও আতঙ্কিত। আমাদের বিতারিত করে এ গ্রামটি দখল করে ভূমিদস্যুরা আবাসন প্রকল্প করার পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকারের ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ব্যতীত পিতলগঞ্জ চেয়ারম্যান বাড়ী বাজারের দক্ষিণ পার্শে রাস্তার উপরে (ডেমড়া-কালিগঞ্জ সড়কের উপর) ড্রেজার পাইপ বসিয়ে বালি দ্বারা এলাকাটি ভরাটের উদ্দ্যোগ গ্রহণ করেছে। ড্রেজার পাইপ বসানোর জন্য ভূমিদস্যুরা জেলা প্রশাসন বা পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন প্রকার অনুমতি গ্রহণ করে নাই।

ভুক্তভোগীরা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখেন- ফসলী জমি ভরাট করে কোন প্রকার প্রকল্প গ্রহণ না করার জন্য ইতোমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন। ভূমিদস্যুরা বালু দ্বারা উক্ত গ্রাম এলাকা ভর্তি করে আবাসন প্রকল্প করার জন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের কোন প্রকার অনুমতি গ্রহণ করে নাই। শুধুমাত্র প্রভাব প্রতিপত্তি ব্যবহার করে স্থানীয় অধিবাসী কৃষকের জমি জোরপূর্বক দখল করে নিচ্ছে। এ মর্মে স্থানীয় প্রশাসনকে ইতোপূর্বে আমরা লিখিতভাবে জানিয়েছি। কিন্তু ভূমিদস্যুদের তৎপরতা বন্ধ হয় নাই। গ্রামবাসীগণ ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিদস্যুদের কর্মকান্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছে।

ওই সময় নিরীহ জমির মালিক আব্দুল মান্নান, আব্দুর রউফ, সিরাজ, আনোয়ার হোসেন, রাসেল মিয়া, শহিফুল ইসলাম, বিলকিস বেগম, হাসিনা, বাদল মিয়া, মোক্তার হোসেন, গোলজার হোসেন, আলী আকবর সহ ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সদস্যওরাও উপস্থিত ছিলেন।

৫হাজার নিরীহ মানুষের পক্ষে বিভিন্ন দপ্তরে দৌড়াচ্ছেন তৈমূর আলম

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

আবারো ভূমিদস্যূদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টে এপিলেট ডিভিশনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৫ হাজার নিরীহ মানুষের ভূমি রক্ষায় তাদের পাশে দাড়িয়েছেন। নিরীহ মানুষের পক্ষে একাই তিনি সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে দৌড়াচ্ছেন। এসব অসহায় নিরীহ মানুষদের মাঝে সরকারি দলের আত্মীয় স্বজন ও সরকারি দলের সমর্থিত লোকজনও রয়েছেন যাদের জমি বসত ভিটা জোর করে বালি দিয়ে ভরে দখল করে নিয়ে যাচ্ছে ভূমিদস্যূরা।

জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার রূপগঞ্জ ইউনিয়নের বেশকটি গ্রামের ৫ হাজার মানুষের বসতভিটা, ফসলি জমি রক্ষার দাবিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন এলাকাবাসী। ১১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সেলিম রেজার হাতে এই লিখিত অভিযোগ ভুক্তভোগীদের নিয়ে দাখিল করেন অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার।

এছাড়াও নারায়ণগঞ্জে পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের সচিব বরাবর এই লিখিত অভিযোগের অনুলিপি প্রদান করা হয়। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যালয়েও এই অভিযোগের অনুলিপি প্রদান করা হয়।

ইষ্ট ওয়েট প্রপার্টি ডেভলপমেন্ট প্রাইভেট লিমিডেট, বসুন্ধরা সাইনিয়া সার্ভিসেস লিমিডেট ও আশালয় হাউজিং এন্ড ডেভেলপার্স লিমিডেট নামে তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এই ৫ হাজার মানুষের জমি দখলের অভিযোগ তোলা হয়।

এসব দপ্তরে অভিযোগ দায়েয়ের সময় অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, এসব ভূমিদস্যূ প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষের জমি বসত ভিটা জোরপূর্বক দখল করছে। জমি কিনে একটি আর বালি দিয়ে ভরে দশটি জমি। কোন ধরনের কাগজপত্র ছাড়াই তারা নিরীহ মানুষের জমি দখল করছে। যদি এভাবে নিরীহ মানুষের জমি বসত ভিটে ভূমিদস্যূরা জোর করে দখল করে নেয় তাহলে মানুষ যাবে কোথায়?

লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগীরা উল্লেখিত বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবীতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে জানায়, রূপগঞ্জ উপজেলাধীন রূপগঞ্জ ইউনিয়নের পিতলগঞ্জ ও মোগলান মৌজায় অবস্থিত মধূখালী গ্রামে প্রায় ৫ হাজার লোকের বসবাস সহ ৬টি সামাজিক, ১টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পুকুর, ফসলী জমিসহ মানুষ চলাচলের পাকা রাস্তাসহ হাজারের অধিক বসত ঘর রয়েছে। কিন্তু কিছুদিন যাবৎ একটি ভূমিদস্যু চক্র এই গ্রামের জমিতে জোরপূর্বক বালি ফেলে দখলে নেয়ার জন্য ড্রেজার পাইপ স্থাপন করেছে।

তারা আরও জানায়- শুধু তাই নয়, জমি ক্রয় না করে জোরপূর্বক বালি ফেলে ভরাটের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এতে আমরা গ্রামবাসি সঙ্কিত ও আতঙ্কিত। আমাদের বিতারিত করে এ গ্রামটি দখল করে ভূমিদস্যুরা আবাসন প্রকল্প করার পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকারের ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ব্যতীত পিতলগঞ্জ চেয়ারম্যান বাড়ী বাজারের দক্ষিণ পার্শে রাস্তার উপরে (ডেমড়া-কালিগঞ্জ সড়কের উপর) ড্রেজার পাইপ বসিয়ে বালি দ্বারা এলাকাটি ভরাটের উদ্দ্যোগ গ্রহণ করেছে। ড্রেজার পাইপ বসানোর জন্য ভূমিদস্যুরা জেলা প্রশাসন বা পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন প্রকার অনুমতি গ্রহণ করে নাই।

ভুক্তভোগীরা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখেন- ফসলী জমি ভরাট করে কোন প্রকার প্রকল্প গ্রহণ না করার জন্য ইতোমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন। ভূমিদস্যুরা বালু দ্বারা উক্ত গ্রাম এলাকা ভর্তি করে আবাসন প্রকল্প করার জন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের কোন প্রকার অনুমতি গ্রহণ করে নাই। শুধুমাত্র প্রভাব প্রতিপত্তি ব্যবহার করে স্থানীয় অধিবাসী কৃষকের জমি জোরপূর্বক দখল করে নিচ্ছে। এ মর্মে স্থানীয় প্রশাসনকে ইতোপূর্বে আমরা লিখিতভাবে জানিয়েছি। কিন্তু ভূমিদস্যুদের তৎপরতা বন্ধ হয় নাই। গ্রামবাসীগণ ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিদস্যুদের কর্মকান্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছে।

ওই সময় নিরীহ জমির মালিক আব্দুল মান্নান, আব্দুর রউফ, সিরাজ, আনোয়ার হোসেন, রাসেল মিয়া, শহিফুল ইসলাম, বিলকিস বেগম, হাসিনা, বাদল মিয়া, মোক্তার হোসেন, গোলজার হোসেন, আলী আকবর সহ ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সদস্যওরাও উপস্থিত ছিলেন।

আইনজীবী সমিতির সভাপতির বাড়ির দেয়াল ভেঙ্গে দিয়েছে জয়নাল

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

জাতীয়পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা জয়নাল আবেদীনের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েলের বাড়ির প্রধান ফটকের দেয়াল ভেঙ্গে দেয়ার অভিযোগ ওঠেছে। জয়নাল আবেদীন তার লোকজন দিয়ে দেয়াল ভেঙ্গে দেয়। শুধু তাতেই তিনি খ্যান্ত হননি সেই দেয়াল মেরামত করতে গেলে দেয়ালের কাজে বাধা দেয় জয়নাল আবেদীন।

১১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার দক্ষিণ সস্তাপুর এলাকায় অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েলের বাড়ির প্রধান ফটকের দেয়াল মেরামতের সময় লোকজন নিয়ে সেখানে বাধা দেয় জয়নাল আবেদীন। তবে বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেছেন, যেখানে দেয়ালে কাজ করা হচ্ছে সেই জায়গাটি আমার। এমনকি হাসান ফেরদৌস জুয়েল যে জায়গাটি ৪ শতাংশ নিজের দাবি করে দখলে রেখেছেন সেই জায়গাটিও আমার। জমিটি নিয়ে মামলা চলছে। আমি দেয়াল ভাঙ্গিনি। আমার জায়গায় দেয়াল তৈরি করা হলে আমি সেখানে বাধা দিয়েছি কিন্তু ভাংচুর করিনি।

তিনি আরও বলেন, ৪ শতাংশ জমিটি যদি জুয়েল মালিকানা পায় তাহলে আমি ছেড়ে দিব। যদি এ বিষয়ে আইনজীবীদের নিয়ে বসতে চায় তাহলে আমি বসতে রাজি আছি। এমনকি বসার আগে আমি প্রয়োজনে হলফনামা দিয়ে বসবো যে, যদি আমি কাগজ পত্রে না পাই তাহলে জায়গাটি ছেড়ে দিব। আর যদি সে পায় তাহলে সে ছেড়ে দিবে।’

তবে জয়নাল আবেদীন এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের কাছে বলেন, যদি জুয়েল বলে থাকে আমি দেয়াল ভেঙ্গে দিয়েছি তাহলে দিয়েছি। কারন জায়গাটি আমার। এবং ৪শতাংশ জমিটিও আমার। এটা নিয়ে মামলা চলমান আছে। আমি বসতে রাজি আছি যদি জায়গা না পাই তাহলে ছেড়ে দিব।’

যদি জায়গাটি আপানার হয় তাহলে আপনি দেয়াল না ভেঙ্গে কিংবা আপনার জায়গায় দেয়াল নির্মাণ করা হলে সেখানে আইনের আশ্রয় না দিয়ে আপনি নিজে কেন কাজে বাধা দিতে গেলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আজকে আমার জায়গায় গিয়েছি। গিয়ে দেখি তারা দেয়াল নির্মাণ করছে তাই বাধা দিয়েছি।’

আপনি জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদের নাম উল্ল্যেখ করে নির্মাণ কাজে থাকা শ্রমিকদের বলেছেন এসপি সাহেবের নির্দেশ আছে এখানে কাজ করা যাবেনা। এমন বিষয়টি সত্য কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা সত্য না। এসপি সাহেব আমাকে নির্দেশ দিবে কেন? আমি তো পুলিশ না।

এ বিষয়ে আদালতপাড়ায় আইন পেশায় কর্মরত অবস্থায় অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল বলেন, আমার ৪ শতাংশ জমিটি দখলে নেয়ার চেষ্টা করছে জয়নাল। প্রবেশের গেটের দেয়ালটি জয়নাল লোকজন দিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছে। সেখানে আবারো মেরামত করতে গেলে বৃহস্পতিবার জয়নাল নিজে লোকজন নিয়ে গিয়ে কাজে বাধা দিয়েছে।’

ঘটনা সূত্রে জানা গেছে, কয়েক বছর আগে নারায়ণগঞ্জ সমিতির নির্বাচিত সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েলের বাবা তার জীবনের শেষ আয়ের টাকা দিয়ে ৪শতাংশ জমিটি কিনেন। কিন্তু আল জয়নাল সেই জমির চার দিকের জমিগুলো ক্রয় করে জুয়েলের এ জমি দখলের চেষ্টা করেন। প্রভাব খাটিয়ে জুয়েলের কাছ থেকে জমি ক্রয় করারও প্রস্তাব দেয় জয়নাল। জমিটি বিক্রি করতে সম্মত না হওয়ার কারণে জোর করে জয়নাল দেয়াল নির্মাণ করেন। ওই সময় জয়নালের লোকজন জুয়েলের আপন ভাইকে মারধর করে চোখ উপড়ে ফেলেছিলেন বলেও থানায় মামলা হয়।

এই জমিয়ে নিয়ে এর আগে জুয়েলের একটি মামলায় জয়নালের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। পরে একই দিন জয়নাল মীমাংসার প্রস্তাবের শর্তে জুয়েলের জিম্মায় জয়নালকে জামিন দেন আদালত।

জানাগেছে, ২০১৫ সালের এপ্রিলে মামলায় জয়নালকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। মামলার বাদী ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল। নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এইচএম শফিকুল ইসলামের আদালতে স্বশরীরে জয়নাল আবেদীন হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

তবে বিকালে সমঝোতায় তিনি ছাড়া পেয়েছেন। বেলা ১১টায় নারায়ণগঞ্জের আদালত জয়নালকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিলেও কোর্ট পুলিশ তাকে কারাগারে না পাঠিয়ে সমঝোতার জন্য আদালতের গারদে রেখে দেয় বিকাল ৪টা পর্যন্ত। অবশেষে বিকালে বাদীর সঙ্গে আপস ও সমঝোতার ভিত্তিতে বাদী অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েলের জিম্মায় জামিন পান জয়নাল আবেদীন।

জমিসংক্রান্ত মামলাটি ছাড়াও ফেরদৌসের ছোট ভাইয়ের ওপর হামলা ও চোখে উপরে ফেলে হত্যাচেষ্টার অভিযোগেও দায়ের করা মামলায় জয়নালকে সন্দেহভাজন হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। ওই মামলায় জয়নাল হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়েছেন।

টিটু খোকনে শুরুতেই ধাক্কা খেলেন খোরশেদ ও মন্তু

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

গত ৩১ মার্চ নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় যুবদল। যা গত শুক্রবার ৫ এপ্রিল মিডিয়াতে প্রকাশ করা হয়। এর পর দিন ৬ এপ্রিল বন্দরে উপজেলা যুবদলের বর্তমান কমিটি বাতিল করে একই মুহুর্তে উপজেলা যুবদলের ১৯ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছেন মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও সেক্রোরি মমতাজ উদ্দীন মন্তু। এই কমিটি গঠনের মাত্র ১২ ঘন্টার মধ্যেই কেন্দ্রীয় যুবদল তার সকল কার্যক্রম স্থগিত করে দেয়। যার পিছনে কাজ করেছেন জেলা যুবদলের নেতারা সহ মহানগর যুবদলের বেশকজন নেতাও। যারা মুলত মহানগর যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে ক্ষুব্ধ এবং জেলা যুবদলের দাবিকৃত বন্দরের ৫টি ইউনিয়নে যারা নেতৃত্বে আসতে চান জেলা যুবদলের হয়ে তারাই।

পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের পর গত ৭ এপ্রিল মাসদাইরে মহানগর যুবদলের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় যেখানে মহানগর যুবদলের অধিকাংশ শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন না। উল্টো তারা মিডিয়াতে নানা বক্তব্য দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মহানগর যুবদলের সভাপতি ও সেক্রেটারির প্রতি। ফলে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের শুরুতেই বড় ধাক্কা খেলেন খোরশেদ ও মন্তু। আগামীর আন্দোলনে অতীতের মত মহানগর যুবদলকে রাজপথে জোড়ালো দেখা যাবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান নেতাকর্মীরা। আবার কেউ কেউ বলছেন, এবার মহানগর যুবদলের দুটি ব্যানারেও কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি নিয়েছেন আরেকটি গ্রুপ। যারা খোরশেদ ও মন্তুর কর্মকান্ডে ক্ষুব্দ তারা পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করবেন বলে ইতিমধ্যে অনেকেই জানিয়েছেন। আবার কমিটি গঠনের পর বেশকজন নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে খোরশেদ ও মন্তুর বিরোধী নেতাদের সংখ্যা বাড়ছেই।

জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বাহিরে বন্দরের ৫টি ইউনিয়ন এলাকা নিয়ে মহানগর যুবদলের ঘোষণা করা বন্দর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের ১২ ঘন্টার মধ্যে তা স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় যুবদল। ৬ এপ্রিল শনিবার বন্দরে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন করেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও সেক্রেটারি মমতাজ উদ্দীন মন্তু। কমিটি গঠনের ১২ ঘন্টার মধ্যেই এই কমিটির সকল কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় যুবদলের কমিটি।

আরও জানাগেছে, ২০১২ সালে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর থেকে বন্দরের ৫টি ইউনিয়ন তৎকালীন জেলা যুবদল দাবি করে আসছিল। ওই সময় কেন্দ্রীয় যুবদলের নেতারা ৫টি ইউনিয়ন জেলার আওতাধীন থাকবে বলে একটি চিঠিও দিয়েছিলেন। কিন্তু জেলা যুবদলের তৎকালীন সভাপতি ও সেক্রেটারি বিরোধ থেকে সরে দাড়িয়ে ৫টি ইউনিয়ন পরিচালনার জন্য মহানগর কমিটিকে সুযোগ করে দেয়। যার ফলে সেখানে বন্দর উপজেলা যুবদলের কমিটি গঠন করেছিল মহানগর যুবদল। সেই সঙ্গে সিটি কর্পোরেশনের ভিতরের এলাকা নিয়ে বন্দর থানা যুবদলের কমিটিও গঠন করে মহানগর যুবদল।

এর আগে জেলা যুবদলের আওতাধীন দাবি করে বন্দর উপজেলা যুবদলের ব্যানার নিয়ে ঢাকায় এক কর্মসূচিতে যোগদান করতে গেলে কমলাপুর এলাকায় মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীদের দ্বারা মারধরের শিকার হন বন্দর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মহিউদ্দীন শিশির। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সভাপতির পদে রয়েছেন শহিদুল ইসলাম টিটু ও সেক্রেটারি রয়েছেন গোলাম ফারুক খোকন। এর আগের কমিটিতে সভাপতি ছিলেন মোশারফ হোসেন ও সেক্রেটারি ছিলেন শাহআলম মুকুল।

মহিউদ্দীন শিশিরকে মারধরের প্রতিবাদ জানিয়ে বন্দরে তৎকালীন জেলা বিএনপির সভাপতি বর্তমান চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমূর আলম খন্দকার ও মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের বিরুদ্ধে জুড়া ঝাড়ু মিছিল করেছিলেন কেন্দ্রীয় ওলামাদলের সহ-সভাপতি মুন্সী সামসুর রহমান খান বেনু ও বন্দর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম হিরন। এমনকি ওইদিন তৈমূর আলম খন্বদকার ও মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের কুশপুত্তলিকাদাহ করেছিলেন তারা।

পরবর্তীতে তৎকালীন জেলা যুবদলের সভাপতি মোশারফ হোসেন ও সেক্রেটারি শাহআলম মুকুল বিরোধ এড়াতে মহানগর যুবদলের উপর ছেড়ে দেয় ওই ৫টি ইউনিয়ন। কিন্তু বর্তমান জেলা যুবদল সেই ৫টি ইউনিয়ন নিজেদের দাবি করায় আবারো মহানগর ও জেলা যুবদলের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে। ওই এলাকা থেকে জেলা ও মহানগর যুবদলের দুটি কমিটিতেই নেতাদের পদে রাখা হয়েছে।

এদিকে বন্দর উপজেলা যুবদলের কমিটির কার্যক্রম স্থগিতের বিষয়ে কেন্দ্রীয় যুবদলের দপ্তর বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল ‘সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম’কে বলেন, বন্দর উপজেলা যুবদলের কমিটি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি ও সেক্রেটারির নির্দেশ এই কমিটির কার্যক্রম স্থগিত রাখা। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের যুবদলের নেতাদের জানানো হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, এখন কাগজের মাধ্যমে এভাবে কমিটি হবেনা। সকল কমিটি এখন সম্মেলনের মাধ্যমে গঠন করা হবে।’

বন্দর উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন জেলা নাকি মহানগর কমিটির আওতাধীন থাকবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা পরে সিদ্ধান্ত জানাবো। আপাতত আমরা এ বিষয়ে কিছু বলছিনা। মহানগর যুবদল বন্দরে যে কমিটি গঠন করেছে সেটা আমরা স্থগিত করেছি।’

এদিকে জেলা যুবদলের সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু দাবি করেছেন- বন্দরে সিটি কর্পোরেশনের বাহিরের ৫টি ইউনিয়ন জেলা যুবদলের আওতাধীন হিসেবেই রাখা হয়েছে। ওই ৫টি ইউনিয়ন থেকে অনেক নেতাদের জেলা যুবদলে রেখেই জেলা যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করেছেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি ও সেক্রেটারি।

তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে আমাদের জানানো হয়েছে আলোচনার মাধ্যমে কমিটি গঠন করতে। আমরা আলোচনার মাধ্যমেই গঠন করব। আর সীমানা নিয়ে কোন জটিলতা নাই। ৫টি ইউনিয়ন মহানগর যুবদলের আওতাধীন থাকবে।’

৬ এপ্রিল শনিবার নজরুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও শাহাদুল্লাহ মুকুলকে সদস্য সচিব করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও সেক্রেটারি মমতাজ উদ্দীন মন্তু ১৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেন। বন্দর উপজেলা যুবদলের বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে ৯০ দিনের জন্য এই ১৯ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি অনুমোদন করেছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদল।

কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে পারভেজ খান ও সদস্য হিসেবে রয়েছেন মনিরুল ইসলাম মনু, মোঃ রুবেল মিয়া, বাবুল হোসেন মেম্বার, আবদুস সাত্তার, মোঃ মামুন ভূইয়া, মোঃ জাহিদ খন্দকার, আল-মামুন প্রধান, মোঃ নুর হোসেন, গোলজার হোসেন ভূইয়া, মোঃ আসাবুদ্দিন, মোঃ শিপন মাহমুদ, মোঃ বর জাহান, সেলিম খন্দকার, কামরুল ইসলাম, জাহিরুল খন্দকার জনি, সম্রাট হাসান সুজন।

শামীম ওসমানের ১২ দিন, সেলিম ওসমানের বরফ: এসপি দেখালেন, অ্যাস পার ‘ল’

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদকে ইঙ্গিত করে গত ৬ এপ্রিল আওয়ামীলীগের কর্মী সভায় শামীম ওসমান বলেছেন, প্লিজ, ডোন্ট প্লে এই নারায়ণগঞ্জে। কারো ফাঁদে পাড়া দিয়ে খেইলেন না।’ এসপিকে ইঙ্গিত করে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছিলেন, খেলা হবে না। আগামী ১০/১২ দিনের মধ্যে টের পাইবেন।’ এমন পরিস্থিতিতে এমপি সেলিম ওসমান ৯ এপ্রিল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, হয়তো আজকের পর বরফ গলবে।’ ওই অনুষ্ঠানে এসপি হারুন বলেছেন, আমাদের মাঝে কোন বরফই নাই, বরফ গলার প্রশ্নই আসেনা।’ তিনি বলেন, ‘যদি কোন জুয়ারী, মাদক বিক্রেতা, ভূমিদস্যূ, সন্ত্রাসী, তেল চোরকে পুলিশ গ্রেপ্তারের পর দেখেন আপনাদের লোক হয় তাহলে সমস্যা নাই, অ্যাস পার ‘ল’ আদালত থেকে জামিন করিয়ে নিবেন।’ এসপি এও বলেছেন, যদি কোন পুুলিশ সদস্য ভুল করে তাহলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোন নিরীহ লোকজন যেনো হয়রানির শিকার না হন।’

তবে এই পরিস্থিতির অবসান হয়েছে কিনা তা দেখতে আরও বেশকজন অপেক্ষা করতে নারায়ণগঞ্জের মানুষকে। তবে এমন পরিস্থিতিতে মানুষের মাঝে সবচেয়ে বেশি আলোচনা অপরাধীদের সঙ্গে পুুলিশ সুপার কি মিউয়ে গেলেন নাকি অপরাধী দমনে তিনি অঁটল থাকবেন এবং আছেন। যদিও এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ সুপার আরও দিগুণ পরিমানে জুয়ারী, তেল চোর, সন্ত্রাসী, মাদক বিক্রেতা, ভূমিদস্যূদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখার কথা বলছেন। নারায়ণগঞ্জে এই পুুলিশ সুুপার যোগদানের পর কয়েকশ মাদক বিক্রেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অনেক অপকর্মের হোতাদের নারায়ণগঞ্জ ছাড়া করেছেন। শহরে এখন চুরি ছিনতাই পকেটমার মাদক বিক্রি, জমি দখল, নিরীহ মানুষকে হুমকি ধমকি খুন খারাপি অনেকটাই কমে আসছে। যে কারনে পুলিশ সুুপারের কঠোর অবস্থানকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের মানুষ স্বপ্ন দেখতেও শুরু করেছেন। তবে প্রভাবশালীরাও চেষ্টা করছেন পুলিশ সুপারকে কোনঠাসা করতে। অনেকেই বলছেন ম্যানেজ করারও চেষ্টা চলছে। হুমকি ধমকি আকাড় ইঙ্গিতে চলছে। শেষ পর্যন্ত অপরাধীদের বিরুদ্ধে পুুলিশ সুুপার তার অবস্থানে টিকে থাকবেন কিনা তা দেখার অপেক্ষায় এখন নারায়ণগঞ্জের শান্তিকামী মানুষ।

নারায়ণগঞ্জে সাম্প্রতিক সময়ে নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী এমপি একেএম শামীম ওসমানের লোকজন ও তার আত্মীয়স্বজন বিভিন্ন অভিযোগে যখন আইনের ফাঁদে জড়িয়ে যাচ্ছেন এবং তা নিয়ে যখন পুুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে প্রকাশ্য বিরোধ দেখা দিয়েছে তখন এমপি সেলিম ওসমান বলেছেন, এখন থেকে বরফ গলবে।’ তবে পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ বলেছেন বরফ গলার প্রশ্নই আসেনা।’

৯ এপ্রিল মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে বন্দরের লাঙ্গলবন্দে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব পূণ্য¯œান উদযাপন উপলক্ষ্যে আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনের এমপি একেএম সেলিম ওসমান। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ।

প্রধান অতিথি এমপি সেলিম ওসমান বলেন, আমাদের চলে যেতে হবে। আমরা প্রশাসনে অনেক দেখেছি প্রয়োজনে তিন দিনেও চলে যেতে হয়েছে। প্রয়োজনে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আবার এমনও দেখেছি তিন বছর পার হয়ে গেছে আমরা যেতে দেইনি। আমরা জনপ্রতিনিধিরা আছি, ডিসি আছেন, এসপি আছেন, আমাদের আইনের মাধ্যমেই এগিয়ে যেতে হবে। আইনের মাঝে কোন রকম ঝগড়া বিবাদ হতে পারেনা। আমি যতক্ষণ চেয়ারে থাকবো সেই চেয়ারকে সম্মান করতেই হবে। আজকে সাংবাদিকদের মাধ্যমেই হয়তো সাংবাদিকদের কলমেই বরফ হয়তো গলে যাবে। নয় হয়তো দেখবেন আগামীতে কোন মিটিং এ হয়তো আমি নাই, হয়তো ডিসি নাই, হয়তো এসপি নাই। যে কোন ঘটনা ঘটে যেতে পারে। কালকে ক্রু হয়ে যেতে পারে।

এমপি সেলিম ওসমানের বক্তব্যের পর এমন বরফ গলার বিষয়ে এসপি হারুন অর রশীদ বলেন, আমাদের মাঝে কোন বরফই নেই। বরফ গলার কোন প্রশ্নই আসেনা। আমরা উনারকে সম্মান করি উনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। সেই হিসেবে উনার প্রতি আমাদের অনেক ভক্তি শ্রদ্ধা থাকবে। উনার এলাকায় আইন শৃঙ্খলার বিষয়ে কাউকে গ্রেপ্তারের পর উনি যদি বলেন তাহলে অবশ্যই সেটা ভেরিফাই করব এবং ব্যবস্থা নিব।

এসপি আরও হারুন আরও বলেন, আপনার সংসদীয় এলাকা সদর থানার কালিরবাজারে আমরা এক দিনে ৪১ জন জুয়ারীকে গ্রেপ্তার করেছি। অনেকেই এঁটার সাথে জড়িত। আমরা চাই নারায়ণগঞ্জে একটা সুস্থ্য পরিবেশ বিরাজ করুক। আপনারা যারা আইন প্রেণতা রয়েছেন আমাদের কোন ভুল হলে বলবেন। আমাদের মধ্যে কোন বিরোধ নেই, কোন দ্বন্ধ নেই, কোন কথা কাটাকাটি হয় নাই।

এর আগে এমপি সেলিম ওসমান বলেন, শামীম ওসমান আমার ছোট ভাই। কিন্তু আমি যখন কোন অনুষ্ঠানে যাই তখন আমি মাননীয় সংসদ সদস্য, নারায়ণগঞ্জ-৪ বলেই অবহিত করি। টেবিলে এক, আর আমার বাসার ড্রয়িং রুমে আরেক। তাকে আমার সম্মানটা দিতেই হবে। সে করে আওয়ামীলীগ, আমি করি জাতীয়পার্টি। বাহিরে গেলে হয়তো দুজনে বিতর্কে অবস্থান নিতে পারি। আমি বলতে চাই যত বড় সমস্যাই হোক না কেন এক টেবিলে বসে সমাধান করা সম্ভব।

এমপি সেলিম ওসমান বলেন, আমাদের মধ্যে তর্ক বিতর্ক অনেক কিছুই হতে পারে। এমনও হতে পারে এখন পাশাপাশি বসে পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলছি, উনি আমার রাজনৈতিক দলের নেতাকে ধরে নিয়ে গেল। উনার সাথে অবশ্যই আমার কথাবার্তা হতে পারে। হতেই পারে। মিথ্যা ভুল তথ্যে ধরে ফেললেন তাতে উনার সাথে আমার ঝগড়াঝাটি হতেই পারে। এটা আমাদের কাজ। এসপি সাহেবের ভুল হলে আমার সঙ্গে ঝগড়া হতেই পারে। ঘরের ভাই বোনের যেমন ঝগড়া হয় সেভাবে হবে। এটাকে যেনো পুুজি করে নারায়ণগঞ্জকে যেনো ক্ষতিগ্রস্থ না করা হয়। আমরা কেউ চিরজীবনের জন্য আসি না। উনি (এসপি) হয়তো নারায়ণগঞ্জে ভাল করেছেন উনাকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হবে। জাতীয় নির্বাচনে জরুরীভাবে উনাকে এখানে আনা হয়েছিল। আরেকজন এ রকম স্ট্রং এসপির প্রয়োজন আছে সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। উনার ট্রান্সফার হতেই পারে। আমরা হয়তো ব্যবসায়ী রাজনীতিক সবাই মিলে উনাকে হয়তো সেদিন বিদায় সংবর্ধনা দিব। এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। ঝগড়াও হতে পারে আবার আমরা বিদায় সংবর্ধনাও দিতে পারি।

সেলিম ওসমান আরও বলেন, আমাদের ঝগড়া বিবাদে যেনো আমাদের উন্নয়ন বন্ধ না হয়। এ ধরনের যদি কোন পরিবেশ সৃষ্টি হয় তাহলে আমি সংসদ সদস্য থাকবোনা। আমি চাইনা আমার কারনে নারায়ণগঞ্জের মানুষের অশান্তির সৃষ্টি হোক।

সভায় পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ এমপি সেলিম ওসমানকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, আজকে যে প্রবলেমটা হয়ে যায় আমি যখন কাউকে ধরে আনি, তখন কিছু লোক থাকে যাদের কোন কাজকর্ম নেই। তারাই বলবে, দেখছেন আপনার লোকজনকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেল। তাকে পেয়েছে একটা জায়গায় হয়তো জুয়া খেলা ছিল, অথচা তেল চুরির সঙ্গে ছিল, অথবা মাদক ব্যবসায়ে জড়িত ছিল তাকে ধরে নিয়ে আসছে। এখন সেই লোকটা যদি কারো হয়ে যায়, তাহলে সমস্যা নেই। আপনি তাকে জামিন করাইয়া নিয়া আইসা পড়েন। তাহলে সমস্যা হতোনা কেউ জানলো না। আমি মনে করি উনি (সেলিম ওসমান) যে বক্তব্যটা রেখেছেন আইন সবার জন্য সমান। আমরা আদালতে পাঠাবো আপনারা নিয়া আসবেন।

এর আগে এসপি বলেন, নারায়ণগঞ্জে আমার আড়াই হাজার পুলিশ এখানে কাজ করছে। সেখানে কাজ করতে গিয়ে একটা দুইটা তিনটা পুলিশ ভুল করে ফেলতে পারে। সেই ভুলটা যদি আমি জানি তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আমি ব্যবস্থা নিব। ব্যবস্থা নিয়েছিও। অনেক পুলিশ সদস্যকে চাকুরীচুত্য করেছি। অনেক পুলিশ সদস্যকে আমি ক্লোজড করে রেখেছি কারন তাদের বিরুদ্ধে যখন কমপ্লেন আসছে। এটা নিয়ে ভুল বুঝাবুঝির কোন অবকাস নেই।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, উনি (সেলিম ওসমান) ব্যবসা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের বিষয়ে বলেছেন। আমি আরেকটা উনার সঙ্গে করতে চাই সেটা হলো মাদকটা নারায়ণগঞ্জ থেকে নির্মূল করতে হবে। এটার সঙ্গে যদি আপনি থাকেন তাহলে এখন যেভাবে মাদকের বিরুদ্ধে পুুলিশ অভিযান পরিচালনা করছে আগামীতে আরও দিগুণভাবে অভিযান পরিচালনা করবে। এখন মাদক ব্যবসায়ীদের পাওয়া যায়না,ইয়াবা ব্যবসায়ীদের পাওয়া যায়না, আমরা খুজছি। তেল চোরদের এখন আর পাওয়া যায়না। কারন ১৬৪ ধারায় জবানবন্ধি দিয়ে পালিয়েছে।

এসপি বলেন, আমি কাজ করতে চাই। আমরা কাজের সুযোগ চাই। আশা করি নারায়ণগঞ্জ যে একটা প্রাচ্যের ডান্ডি, যে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের জন্ম হয়েছে, যে নারায়ণগঞ্জে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু এসেছেন। সারা পৃথিবীর মানুষ নারায়ণগঞ্জে ব্যবসা বানিজ্য করেছেন, সেই নারায়ণগঞ্জকে যদি সুন্দর শহর গড়তে চাই তাহলে অবশ্যই মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করতে হবে। সেই কাজটিই আমরা করছি। এখানে অনেক চাঁদাবাজ আছে, অনেক মাদক ব্যবসায়ী আছে, অনেক ভূমিদস্যূ আছে, সাধারণ মানুষ তাদের কাছে জিম্মি হয়ে আছে। আমরা শুধু সেগুলো দেখতে চাই। আপনি শুধু আমাদের সঙ্গে শেয়ার করবেন কারা ভুমিদস্যূতায় জড়িত, কারা তেল চুরির সাথে জড়িত, আপনি যেহেতু বলেছেন এগুলোর বিষয়ে আইনী ব্যবস্থা নিতে, আমরা পুলিশ বাহিনী আরও দিগুণ উৎসাহিত হয়ে এগুলোর বিরুদ্ধে কাজ করব। তবে অবশ্যই কোন নিরীহ মানুষ যেনো হয়রানি না হয়। কোন পুলিশ কর্মকর্তার দ্বারা সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এসপি আরও বলেন, এখন আমাদের পুলিশকে কোন দিকে ফেলানোর কেউ যেনো চেষ্টা না করে। আমরা আমাদের ওয়ে থেকে আমরা সঠিক পথে থেকে কাজ করতে চাই।’

এর আগে গত ৬ এপ্রিল বাংলা ভবনে ফতুল্লা আওয়ামীলীগের জরুরী কর্মী সভায় জেলা পুলিশ সুপারকে ইঙ্গিত করে শামীম ওসমান বলেছিলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের যদি কেউ খেলাতে চান, প্লিজ ডোন্ট প্লে, নারায়ণগঞ্জে খেইলেন না। সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করবে। আর প্রশ্ন করার আগে তাকে জুয়ার মামলার আসামী করে দিবেন। কইরেন না। আমার আত্মীয়স্বজনকে মদের সাপ্লাইয়ার বানাবেন। মনে করবেন আমি ভয় পেয়ে যাবো। এগুলো করে আমাকে কাবু করা মছিমত। আমাকে কাবু করা যাবে না।

তিনি বলেন, আমাদের মাঝে যদি খারাপ হয তাকে আমরা ছাড় দিব না। কিন্তু আমাদের মধ্য থেকে যদি কাউকে ইচ্ছা করে জামেলায় ফেলার চেষ্টা করা তাহলে কথা দিচ্ছি নারায়ণগঞ্জের মাটিতে ২৪ ঘন্টার মধ্যে চাড়া নাচাই দিব। এক সেকেন্ড ছাড় দিবনা, এক সেকেন্ডও না। একটা সেকেন্ড কোন নেতাকর্মীকে বিনা কারনে জামেলায় ফেলতে কেউ চেষ্টা করলে ছাড় দিব না। কোন ব্যবসায়ী মাথা নত করে ব্যবসা করবেনা। কারন এই দেশ শেখ হাসিনার। এই নারায়ণগঞ্জও শেখ হাসিনার।

তখন তিনি নেতাকর্মীদের বলেন, সমস্যা শুধু একটাই আমাদের হাত পা বাধা। কারন আমরা দল করি। আমরা নারায়ণগঞ্জে ৫ লাখ লোকের সমাবেশ কইরা দেখাইতে চাই নারায়ণগঞ্জের আওয়ামীলীগের নেতারা নেতাকর্মীদের পাশে আছে।

নেতাকর্মীদের আশ^স্থ করে বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কি খালেদা জিয়া? না। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা। উনি নারায়ণগঞ্জের খোজ রাখেন কখন কি হচ্ছে। জাস্ট আগামী ১০/১২ দিনেই টের পাবেন। আপনারা শান্ত থাকুন। তবে বাহিরের মানুষকে দোষ দিতে নাই। ভুল পদক্ষেপ নেয়াইয়া বাহিরের মানুষকে ব্যবহার করতে চায়। সরকার আমাদের, প্রশাসন আমাদের, সিভিল প্রশাসন আমাদের, পুলিশ বাহিনী আমাদের, দায়িত্বও আমাদের। তাই নেত্রীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে তা আমরা করব না। আমাদের মৃত্যু হয়ে যাবে তাও নেত্রীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হতে দিব না।

তিনি বলেন, তবে এই নারায়ণগঞ্জকে কেউ যদি এসে মনে করে ওই কাউন্সিলরকে ফাঁসাবো, ওই চেয়ারম্যানকে ঢুকাবো, কারো সাথে কন্ট্রাকে যাবো, ওইদিক থেকে চাঁদাবাজি করব, এখান থেকে চাঁদাবাজি করব, ব্যবসায়ীদেরকে ফোন করব, শ্রমিক নামধারী শ্রমিকরা আইসা নীট গার্মেন্টস মালিকদের ভয় দেখাবেন, বাস মালিকদের কাছ থেকে চাঁদা তুলবেন, অটো রিক্সা থেকে পয়সা খাবেন, নাহ ওইটা হবে না। এই নারায়ণগঞ্জে হবে না।

এখানে উল্লেখ্যযে, গত ২৯ মার্চ শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ কর্মী মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহনিজামের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় জিডি করেছিলেন ওই থানার ওসি শাহ মোহাম্মদ মঞ্জুর কাদের। জিডির একদিন পর ভারতে চলে গেছেন শাহনিজাম। এছাড়াও এর দুইদিন পর ফতুল্লায় ভাসমান মেরী আন্ডারসন জাহাজের বার থেকে বিয়ার ও মদ উদ্ধার করে পুলিশ ও ৬৮ জনকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় মামলায় শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহমেদ টিটুকে মাদক বিক্রয়ে সহযোগীতাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়। তিনিও ভারতে চলে গেছেন। এছাড়াও শিশু সাকি অপহরণের অভিযোগ করা হয় সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর নাজমুল আলম সজলের বিরুদ্ধে। তিনিও পরবর্তীতে ওমরাহ পালনে সৌদি আরবে চলে গেছেন। এর আগে শামীম ওসমানের আরেক কর্মী মীর হোসেন মীরুকে দুইবার মামলা ও গ্রেপ্তার করা হয়। শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমানের শ্যালক বিকির বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা হয়। নারায়ণগঞ্জ শহরের একটি জুয়ার আসন থেকে ৪২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মহানগর শ্রমিকলীগের সেক্রেটারি কামরুল হাসান মুন্না ও বর্তমান সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর কবির হোসেন সহ ২২জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়।

এসব ঘটনায় ব্যবসায়ীরা ইতিমধ্যে প্রতিবাদ সভা করেছেন গত বুধবার। ওই দিন নারায়ণগঞ্জ শহরে জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে মহড়া দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ। ওইদিন শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে জলকামান, সাজোয়া যান, পুলিশ আর্ম কার দেখা যায়। এর আগে গত ২ মার্চ শামীম ওসমানের সমাবেশের সামনেও পুলিশের এমন প্রস্তুতি দেখা যায়। বুধবার পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ বলেছেন, অপরাধী কাউকে ছাড় দিব না, সে যত বড় ক্ষমতাশালী লোক হোক।’

এদিকে গত শনিবার ফতুল্লার বাংলা ভবনে জরুরী কর্মী সভা করেছেন শামীম ওসমান। যেখানে তিনি নারায়ণগঞ্জের সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আইভী, এসপি হারুন অর রশীদ ও কেন্দ্রীয় শ্রমিকলীগ নেতা কাউসার আহমেদ পলাশকে ইঙ্গিত করে বেশ কিছু বক্তব্য রাখেন। ওই কর্মী সভায় পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে শ্লোগানও দিয়েছিল নেতাকর্মীরা। পুুলিশের কঠোর অবস্থান নিয়ে বক্তারা সেদিন কঠোর সমালোচনাও করেন। এর আগে ৩ এপ্রিল ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ করেন। গত ৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেয়ার সিদ্ধান্ত জানালো পরবর্তীতে আর ব্যবসায়ীরা স্মারকলিপি দেননি।

রূপগঞ্জে ৫ হাজার পরিবারের জমি রক্ষার দাবিতে ডিসি বরাবর লিখিত

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার রূপগঞ্জ ইউনিয়নের বেশকটি গ্রামের ৫ হাজার মানুষের বসতভিটা, ফসলি জমি রক্ষার দাবিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন এলাকাবাসী। ১০ এপ্রিল বুধবার সকালে এই আবেদন করেন ভুক্তভোগীরা।

লিখিত আবেদনে ভুক্তভোগীরা উল্লেখিত বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবীতে জেলা প্রশাসককে জানায়, রূপগঞ্জ উপজেলাধীন রূপগঞ্জ ইউনিয়নের পিতলগঞ্জ ও মোগলান মৌজায় অবস্থিত মধূখালী গ্রামে প্রায় ৫ হাজার লোকের বসবাস সহ ৬টি সামাজিক, ১টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পুকুর, ফসলী জমিসহ মানুষ চলাচলের পাকা রাস্তাসহ হাজারের অধিক বসত ঘর রয়েছে। কিন্তু কিছুদিন যাবৎ একটি ভূমিদস্যু চক্র এই গ্রামের জমিতে জোরপূর্বক বালি ফেলে দখলে নেয়ার জন্য ড্রেজার পাইপ স্থাপন করেছে।

তারা আরও জানায়- শুধু তাই নয়, জমি ক্রয় না করে জোরপূর্বক বালি ফেলে ভরাটের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এতে আমরা গ্রামবাসি সঙ্কিত ও আতঙ্কিত। আমাদের বিতারিত করে এ গ্রামটি দখল করে ভূমিদস্যুরা আবাসন প্রকল্প করার পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকারের ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ব্যতীত পিতলগঞ্জ চেয়ারম্যান বাড়ী বাজারের দক্ষিণ পার্শে রাস্তার উপরে (ডেমড়া-কালিগঞ্জ সড়কের উপর) ড্রেজার পাইপ বসিয়ে বালি দ্বারা এলাকাটি ভরাটের উদ্দ্যোগ গ্রহণ করেছে। ড্রেজার পাইপ বসানোর জন্য ভূমিদস্যুরা জেলা প্রশাসন বা পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন প্রকার অনুমতি গ্রহণ করে নাই।

ভুক্তভোগীরা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখেন- ফসলী জমি ভরাট করে কোন প্রকার প্রকল্প গ্রহণ না করার জন্য ইতোমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন। ভূমিদস্যুরা বালু দ্বারা উক্ত গ্রাম এলাকা ভর্তি করে আবাসন প্রকল্প করার জন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের কোন প্রকার অনুমতি গ্রহণ করে নাই। শুধুমাত্র প্রভাব প্রতিপত্তি ব্যবহার করে স্থানীয় অধিবাসী কৃষকের জমি জোরপূর্বক দখল করে নিচ্ছে। এ মর্মে স্থানীয় প্রশাসনকে ইতোপূর্বে আমরা লিখিতভাবে জানিয়েছি। কিন্তু ভূমিদস্যুদের তৎপরতা বন্ধ হয় নাই। গ্রামবাসীগণ ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিদস্যুদের কর্মকান্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছে।

ছাত্রদলে ২৪ ঘন্টা ও যুবদলে ১২ ঘন্টার সেক্রেটারি!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

দীর্ঘদিন যাবত বিএনপির সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িত শাহাদুল্লাহ মুকুল। ছাত্রদলের রাজনীতি করতে করতে যখন ছাত্রদলের বুড়ো খ্যাতদের তালিকায় ওঠে যায় তার নাম তখন তাকে বন্দর থানা ছাত্রদলের সেক্রেটারি পদে অধিষ্ট করা হয়। কিন্তু তৎকালীন মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল তার একক সিদ্ধান্তে কমিটি গঠন করলেও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নির্দেশে ২৪ ঘন্টার মধ্যে সেই কমিটি বাতিল করেন তিনি।

এবার একই কায়দায় পড়েছে বন্দর উপজেলা যুবদলের কমিটি গঠনেও। এখানেও তাকে যুবদলের সেক্রেটারি করা হয়। তবে এবার ২৪ ঘন্টাও পেরুতে পারেনি তার সেক্রেটারি পদটি। বাতিল না করলেও এবার ১২ঘন্টার মধ্যেই কমিটির সকল কার্যক্রম স্থগিত করে দেয় কেন্দ্রীয় যুবদল। ফলে ছাত্রদলের কমিটিতে ছিলেন ২৪ ঘন্টা সেক্রেটারি এবার যুবদলের কমিটিতে সেক্রেটারি তিনি ১২ ঘন্টার!

জানাগেছে, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের তৎকালীন আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল একক সিদ্ধান্তে সদর ও বন্দর থানা সহ ৬টি ইউনিয়নের কমিটি ঘোষণা করেন। যেখানে অন্যান্য ৬ যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন না। ওই যুগ্ম আহ্বায়কদের কেন্দ্রীয়ভাবে জোড়ালো তদবিরের কারনে ২৪ ঘন্টার মধ্যেই সকল কমিটি বাতিল করে দেন মনিরুল ইসলাম সজল।

মুলত ওইসব কমিটিগুলো বর্তমান চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও তৎকালীন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের বাসায় বসে কমিটির খসড়া তৈরি করা হয়। যা জেলা বিএনপির কার্যালয়ে কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই সময় বন্দরে ছাত্রদলের কমিটিতে শাহাদুল্লাহ মুকুলকে সভাপতি করতে চেয়েছিলেন তৈমূর আলম খন্দকার। মুকুল হলেন বন্দর থানা বিএনপির সভাপতি নূরউদ্দীন আহমেদের ভাতিজা। নূরউদ্দীন আহমেদ ওই সময় তৈমূর আলম খন্দকারের সঙ্গে রাজনীতি করতেন।

পরবর্তীতে বন্দর উপজেলা ছাত্রদলের নেতা হারুন অর রশিদ লিটনকে সভাপতি ও শাহাদুল্লাহ মুকুলকে সাধারণ সম্পাদক করে সাত সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটিতে ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে এসএম নুরুজ্জামান, ১ম যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সাত্তার, যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আল-আমিন ভূঁইয়া জনি ও দপ্তর সম্পাদক করা হয় বিজয় হোসেন পনির।

বন্দর থানা ছাত্রদলের নেতা মোহাম্মদ রাসেলকে আহ্বায়ক করে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এতে যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে করা হয় আশিকুর রহমান আলী, কামরুল হাসান রনি, রাহিদ ইসতিয়াক, জনি মোল্লা, শিপলু, মহসিন, অহিদুর রহমান, অহিদুজ্জামান শাহজাদা, বাপ্পী দেওয়ান, জাহিদ হাসান দিপু, মুনজুর হোসেন ও শামীম মিয়া।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের কমিটিতে সভাপতি মমিনুর রহমান বাবু ও রিপন সরকারকে সাধারণ সম্পাদক করে ৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। এতে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয় এরশাদ আলী, সিনিয়র সহ-সভাপতি আহসান খলিল শ্যামল, সহ-সভাপতি আলী নূর হোসেন, সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম সাগর, যুগ্ম সম্পাদক রিয়াজুল আলম ইমন, শাহরিয়ার খান তুষার ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয় নাইম সিদ্দিক তুষারকে।

এ ছাড়াও সরকারী তোলারাম কলেজ শাখা ছাত্রদলের কমিটিতে সভাপতি করা হয় কাউসার আহম্মেদ নামে একজনকে এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয় সাইদুর রহমানকে। সিনিয়র সহ-সভাপতি আশিকুর রহমান অনি, সহ-সভাপতি মাসুদ রানা, যুগ্ম সম্পাদক শাহজালাল, সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয় বাইজিদ আল কাউসার ও রফিকুল ইসলামকে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়।

একইভাবে নারায়ণগঞ্জ কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি করা হয় জোবায়ের হোসেন ঝলক, সাধারণ সম্পাদক শান্ত জামাল, সিনিয়র সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম ইরাম, যুগ্ম সম্পাদক রিকসন ও মাসুম বিল্লাহকে সহ-সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করা হয়।

অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ সদর থানা ছাত্রদলের সাত সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে সভাপতি রাফিউদ্দীন আহম্মেদ রিয়াদ ও সাধারণ সম্পাদক শেখ মাগফুর ইসলাম পাপন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম আপন, সিনিয়র সহ-সভাপতি এমএএম সাগর, সহ-সভাপতি আব্দুর সাত্তার, যুগ্ম সম্পাদক জাহিদ হোসেন খন্দকার ও ফারহান আহম্মেদ নাঈমকে যুগ্ম সম্পাদক করা হয়। এসব কমিটিগুলো ২৪ ঘন্টার মধ্যে বাতিল করা হয়। ছাত্রদলের এসব নেতাদের অনেকেই এখন স্বেচ্ছাসেবক দল ও যুবদলের রাজনীতিতে পদ পেয়েছেন। আবার অনেকেই রাজনীতি থেকে সরে গেছেন। অনেকের ছিটেফুটাও অস্তিত্ব দেখা যায়না।

এদিকে, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বাহিরে বন্দরের ৫টি ইউনিয়ন এলাকা নিয়ে মহানগর যুবদলের ঘোষণা করা বন্দর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের ১২ ঘন্টার মধ্যে তা স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় যুবদল। ৬ এপ্রিল শনিবার বন্দরে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন করেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও সেক্রেটারি মমতাজ উদ্দীন মন্তু। কমিটি গঠনের ১২ ঘন্টার মধ্যেই এই কমিটির সকল কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় যুবদলের কমিটি।

আরও জানাগেছে, ২০১২ সালে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর থেকে বন্দরের ৫টি ইউনিয়ন তৎকালীন জেলা যুবদল দাবি করে আসছিল। ওই সময় কেন্দ্রীয় যুবদলের নেতারা ৫টি ইউনিয়ন জেলার আওতাধীন থাকবে বলে একটি চিঠিও দিয়েছিলেন। কিন্তু জেলা যুবদলের তৎকালীন সভাপতি ও সেক্রেটারি বিরোধ থেকে সরে দাড়িয়ে ৫টি ইউনিয়ন পরিচালনার জন্য মহানগর কমিটিকে সুযোগ করে দেয়। যার ফলে সেখানে বন্দর উপজেলা যুবদলের কমিটি গঠন করেছিল মহানগর যুবদল। সেই সঙ্গে সিটি কর্পোরেশনের ভিতরের এলাকা নিয়ে বন্দর থানা যুবদলের কমিটিও গঠন করে মহানগর যুবদল।

এর আগে জেলা যুবদলের আওতাধীন দাবি করে বন্দর উপজেলা যুবদলের ব্যানার নিয়ে ঢাকায় এক কর্মসূচিতে যোগদান করতে গেলে মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীদের দ্বারা মারধরের শিকার হন বন্দর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মহিউদ্দীন শিশির।

ওই ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে বন্দরে তৎকালীন জেলা বিএনপির সভাপতি বর্তমান চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমূর আলম খন্দকার ও মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের বিরুদ্ধে জুড়া ঝাড়– মিছিল করেছিলেন কেন্দ্রীয় ওলামাদলের সহ-সভাপতি মুন্সী সামসুর রহমান খান বেনু ও বন্দর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম হিরন। পরবর্তীতে তৎকালীন জেলা যুবদলের সভাপতি ও সেক্রেটারি বিরোধ এড়াতে মহানগর যুবদলের উপর ছেড়ে দেয় ওই ৫টি ইউনিয়ন। কিন্তু বর্তমান জেলা যুবদল সেই ৫টি ইউনিয়ন নিজেদের দাবি করায় আবারো মহানগর ও জেলা যুবদলের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে। ওই এলাকা থেকে জেলা ও মহানগর যুবদলের দুটি কমিটিতেই নেতাদের পদে রাখা হয়েছে।

কমিটির কার্যক্রম স্থগিতের বিষয়ে কেন্দ্রীয় যুবদলের দপ্তর বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল ‘সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম’কে বলেন, বন্দর উপজেলা যুবদলের কমিটি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি ও সেক্রেটারির নির্দেশ এই কমিটির কার্যক্রম স্থগিত রাখা। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের যুবদলের নেতাদের জানানো হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, এখন কাগজের মাধ্যমে এভাবে কমিটি হবেনা। সকল কমিটি এখন সম্মেলনের মাধ্যমে গঠন করা হবে।’

বন্দর উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন জেলা নাকি মহানগর কমিটির আওতাধীন থাকবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা পরে সিদ্ধান্ত জানাবো। আপাতত আমরা এ বিষয়ে কিছু বলছিনা। মহানগর যুবদল বন্দরে যে কমিটি গঠন করেছে সেটা আমরা স্থগিত করেছি।’

এদিকে জেলা যুবদলের সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু দাবি করেছেন- বন্দরে সিটি কর্পোরেশনের বাহিরের ৫টি ইউনিয়ন জেলা যুবদলের আওতাধীন হিসেবেই রাখা হয়েছে। ওই ৫টি ইউনিয়ন থেকে অনেক নেতাদের জেলা যুবদলে রেখেই জেলা যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করেছেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি ও সেক্রেটারি।

তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে আমাদের জানানো হয়েছে আলোচনার মাধ্যমে কমিটি গঠন করতে। আমরা আলোচনার মাধ্যমেই গঠন করব। আর সীমানা নিয়ে কোন জটিলতা নাই। ৫টি ইউনিয়ন মহানগর যুবদলের আওতাধীন থাকবে।’

৬ এপ্রিল শনিবার নজরুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও শাহাদুল্লাহ মুকুলকে সদস্য সচিব করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও সেক্রেটারি মমতাজ উদ্দীন মন্তু ১৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেন। বন্দর উপজেলা যুবদলের বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে ৯০ দিনের জন্য এই ১৯ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি অনুমোদন করেছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদল।

কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে পারভেজ খান ও সদস্য হিসেবে রয়েছেন মনিরুল ইসলাম মনু, মোঃ রুবেল মিয়া, বাবুল হোসেন মেম্বার, আবদুস সাত্তার, মোঃ মামুন ভূইয়া, মোঃ জাহিদ খন্দকার, আল-মামুন প্রধান, মোঃ নুর হোসেন, গোলজার হোসেন ভূইয়া, মোঃ আসাবুদ্দিন, মোঃ শিপন মাহমুদ, মোঃ বর জাহান, সেলিম খন্দকার, কামরুল ইসলাম, জাহিরুল খন্দকার জনি, সম্রাট হাসান সুজন।

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধীতে ফতুল্লা ছাত্রলীগের শ্রদ্ধাঞ্জলী

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু মোহাম্মদ শরীফুল হকের সমর্থনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রামের বাড়ী গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া জাতির জনকের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে ফতুল্লা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

ছাত্রলীগ নেতারা জানিয়েছেন- গত ৮এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু মোহাম্মদ শরীফুল হকের সমর্থনে ফতুল্লা থেকে গাড়ীবহরে মো. কাউসার প্রধান ও হুমায়ুন কবির বাবুর নেতৃত্বে নেতাকর্মী গোপালগঞ্জ টুঙ্গিপাড়া গ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবনে যান।

সেখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সমাধীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন তারা। এসময় কাউসার প্রধান ও বাবুর সফরসঙ্গী ছিলেন- ফতুল্লা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি কাজল চৌধুরী, সেচ্ছাসেবকলীগের নেতা রুস্তুম খন্দকার, জাহাঙ্গীর হোসেন, বদু মামা, রাসেল, সরকার মোহাম্মদ কনক, সৈয়দ মুন্না, রাজু, সঞ্জয় ও সাজ্জাদ প্রমূখ।

সর্বশেষ সংবাদ