কায়সারকে হুশিয়ার করে যা বললেন শামীম ওসমান

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত সম্পর্কে শামীম ওসমান বলেন, কায়সার আমার হাতে তৈরি করা কর্মী এবং এই পরিবারের সন্তান। আমি বিশ্বাস করিনা যে কায়সার এমন কোন কর্ম করবে যে কর্মের কারনে এদেশে রাজাকার আলবদর আলসামস উপকৃত হবে। আমি বিশ্বাস করিনা যে কায়সার এমন কোন কর্মকান্ড করবে যে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীরা উৎসাহিত হবে। যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, সেতো কোন রাজাকার আলবদরের সন্তান নয়। আমি বিশ্বাস রাখছি ইনশাহআল্লাহ আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই দেখবেন আজকে যেমন খোকন সাহা, আনিসুর রহমান দিপু, কামাল, সামসু ভাই সহ সকলে যেমন সবাই আজকে মহাজোটের প্রার্থী, শেখ হাসিনার প্রতীক লাঙ্গলের পক্ষে যখন ঐক্যবদ্ধ হয়েছে তখন আমি আশা করছি আমার ভাতিজা কায়সার হাসনাতও এখানে এসে লাঙ্গলে প্রতীকে ভোট চাইবে।

কায়সারকে উদ্দেশ্য করে শামীম ওসমান আরও বলেন, আমি চাইনা আওয়ামীলীগ পরিবারের নেতাকর্মী আজীবনের জন্য বহিস্কার হয়ে যাক। আমি কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত জানি। আর জানি বলেই এখানে সবাই কিন্তু পরিষ্কারভাবে একটি কথা বলে গেছেন। এ মুহুর্তে আমাদের কায়সারকে নিয়ে চিন্তা করার দরকার নাই। কারন কায়সার আমাদের অপজিশন প্রার্থী না।

এর আগে শামীম ওসমান প্রয়াত আওয়ামীলীগ নেতা আবুল হাসনাতকে স্মরণ করে বলেন, আমার নেতা মোবারক ভাই, আবুল হাসনাত ভাইকে যেনো আল্লাহ বেহেসত নসিব করেন।

শামীম ওসমান যুবলীগ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বলেন, কেউ যদি দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করেন তাহলে কমিটি ভেঙ্গে দেয়া হবে। আজীবনের জন্য বহিস্কার করা হবে। কোন ছাড় দেয়া হবে না। আর যদি কেউ মনে করেন বিএনপিকে সাহায্য করবেন, আমি পরিষ্কারভাবে বলে দিলাম এই নির্বাচন খোকার নির্বাচন না। এই নির্বাচন শেখ হাসিনার নির্বাচন। শেখ হাসিনার সন্তান আমরা বেচেঁ আছি। প্রয়োজনে আমার নির্বাচন ছেড়ে দিয়ে সোনারগাঁয়ে এসে নির্বাচন করব। দেখতে চাই কার কত মাথা আছে। কোন ছাড় দেয়া হবে না। এই লড়াই দেশ বাচাঁনোর লড়াই। এই লড়াইয়ে কোন পরিবারকে বেঈমানী করার সুযোগ দেয়া হবে না। ভাল করে বললাম ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, নেত্রীর পক্ষে অবস্থান নেন। খোকা কোন সাবজেক্ট না। সাবজেক্ট একটাই শেখ হাসিনা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু। এই সাবজেক্টের সাথে যদি কেউ পিছন থেকে ছুড়ি মারার চেষ্টা করে মনে রাখবেন নারায়ণগঞ্জের স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির কাছে ঘৃণার পাত্র হয়ে যাবেন। পরে কিন্তু দরজা বন্ধ হয়ে গেলে ওই দরজা আর খোলা হবে না। এই মুহুর্তে ফাইনাল সিদ্ধান্তের কথা বললাম না। আশা করি সঠিক সিদ্ধান্ত নিবেন। ভুল হতে পারে সবারই। রাগ অভিমান থাকতে পারেনা। কিন্তু এমন কিছু করবেন না দেশের জন্য ক্ষতি হয়ে যায়। যারা সারাজীবন একটা পতাকার নিজে রাজনীতি করেছেন, শেখ মুজিবের আদর্শের পক্ষে রাজনীতি করেছেন, সেই সকল কিছু অম্লান করে দিবেন না। যেখানে মানুষের মুখের বুর্লি হতেন সেখানে কিন্তু মানুষের মুখের গালি হইয়েন না। জামাত শিবির রাজাকাররা উস্কানি দিবে। ওই উস্কানীতে কান দিয়েন না। সামনে থাকা কিছু লোক হয়তো বলবে আপনিই সব। ধান্ধা করবে টাকা খাবে। এদের সাফাইয়ে কান দিয়েন না। কয়দিন পর একা হয়ে গেছেন।

নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী একেএম শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনে গিয়ে এ আসনের মহাজোটের প্রার্থী লিয়াকত হোসেন খোকার লাঙ্গল প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেছেন।

১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে রবিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় আওয়ামীলীগ কার্যালয়ের সামনে বিজয় র‌্যালী ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শামীম ওসমান। তবে তিনি এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর শামীম ওসমান তার বড় ভাই নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনের এমপি একেএম সেলিম ওসমানের পক্ষে বন্দরের সমরক্ষেত্র মাঠে গিয়ে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন।

একেএম শামীম ওসমান জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন সম্পর্কে বলেন, নির্বাচনে কার বিরুদ্ধে ভোট চাইবো। আজকে যাদেরকে নিয়ে নির্বাচন করছে তারা কারা? আজকে বিএনপির সঙ্গে জামাত শিবির। আমাদের শরীরের রক্ত কি পানি হয়ে গেছে? পৃথিবীর কোন রাষ্ট্রে নাই রাজাকার নির্বাচন করছে। আমি অবাক হই বাংলাদেশে যখন তারা রাজনীতি করেন। কাদের নেতৃত্বে? এতদিন করেছে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে, এখন করছে ওই বর্ণচোরা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে। যারা রাজনীতি করে আজকে বেশ্যায় পরিনত হয়েছে। এরা পলিটিক্যাল প্রস্টিটিউট। এরা এদেশের মানুষকে লজ্জা দিচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ভোট চাইতে আমার লজ্জা লাগে।

শামীম ওসমান বলেন, সোনারগাঁয়ের খবর জানি। ৩০ তারিখে বিজয় মিছিলের প্রস্তুতি নেন ইনশাহআল্লাহ। লাঙ্গল পাস করবে। আমার নির্বাচন থুইয়া আমি এখানে আসছি কেন? আমার প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী খুইজ্জা পায়না মানুষ। দিছে কোন যোগ্য লোক, একজন দিয়েছে। আমি নির্বাচন গত ৫ বছর ধইরা করছি। চিন্তা কইরেন না আমি বলিনা যে, আমি সোনারগাঁয়ে ৮টার সময় আসবো। তবে নির্বাচনের দিন সকাল ১০টার সময় শামীম ওসমান সোনারগাঁয়ে থাববে এবং রেজাল্ট নিইে আমরা যাবো ইনশাহআল্লাহ।

এ আসনের ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নানকে নিয়ে শামীম ওসমান বলেন, আর মান্নানকে সাহেবকে নিয়ে বলতে চাই, নির্বাচন করছেন নির্বাচন করেন কোন আপত্তি নাই। ভোট দিলে পাস করবেন। কিন্তু আমি যা শুনি সেগুলো যদি হয়, যদি মনে করেন অন্য পথ ধরবেন, তাহলে আমি বলে যাচ্ছি দশ বছর আমরা বহু অত্যাচারিত হয়েছি। বাড়ি ঘরে হামলা হয়েছে। আমাদের বহু নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। আমার বাড়ি থেকে আরম্ভ করে আওয়ামীলীগের এমন কোন বাড়ি নাই যেখানে হামলা করা হয়নি। চন্দনশীলের পা নাই, ২০ মানুষ হারিয়েছি। মনে করিয়ে দিয়েন না। দশ বছর ক্ষমতায় আছি বিএনপির নেতার গায়ে একটি ফুলের টোক্কা দেই নাই। যদি মনে করেন এটা দূর্বলতা তাহলে পরিষ্কারভাবে বলে যাই এটা আমাদের দুর্বলতা না। আমরা ক্ষমা করেছি। কিন্তু কেউ যদি এবার অন্য কোন পথ অবলম্বন করেন, যদি চিন্তা করেন জ্বালাওপোড়াও করবেন, ২৪ তারিখের মধ্যে ঘটনা ঘটানো হবে, ২৪ তারিখের আগেই দেশে কিছু ঘটনা ঘটানো হবে। ওরা নির্বাচন করতে চায়না, ওরা নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার চেষ্টা করছে। কোথায় কি হয় জানিনা। নারায়ণগঞ্জে কিছু হতে দেয়া হবে না। সোনারগাঁয়ের মান্নান সাহেব আপনাকে আামি চিনি, আপনার দৌড় কতটুকু আমি জানি। আমি আপনাকে পরিস্কারভাবে বলতে চাই সাবধান, একদম সাবধান। এখানে কোন খেলা খেলবেন না। ওই জায়গা থাকবে না কিন্তু, মা কইয়া গো কইতে সুযোগ দিমুনা। পরিস্কার কইয়া দিলাম। কোন ছাড় হবে না। কারন লড়াইটাই হচ্ছে স্বাধীনতার পক্ষে বিপক্ষে লড়াই।

শামীম ওসমান বলেন, বিএনপির অপজিশন প্রার্থী হচ্ছে মান্নান। সেও আমারে মানে। আমি তাকে দুশমন ভাবিনা। মান্নানের বুঝা উচিত এটা তো জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন না। জাতীয় সংসদে মানুষ যায় আইন পাশ করার জন্য। আইন পাস করতে হলে ওখানে বাংলা ইংরেজী অনেক লেখা থাকে, পড়তে হয়। আমরাও এলএলবি পাস করেও পড়তে পারিনা। এখন আইন সভায় যাবো, আইন সভায় যাইয়া আমি যদি পড়তেই না পাড়ি তাহলে আইন সভায় যাইয়া করবটা কি আমরা? রাজনীতি কোন জায়গায় চলে যাচ্ছে। বিএনপি এতই অসহায় হয়ে গেছে, আমাদের শ্রদ্ধেয় মুরুব্বী রেজাউল করিম ভাই উনাকে যদি বিএনপি মনোয়ন দিতো তাহলে আমি ভাবতাম ঠিক আছে। একজন যোগ্য মানুষকে মনোনয়ন দিয়েছে। যে লেখাপড়া জানে, যার পিছনে জ্ঞান বুদ্ধি আছে।

তিনি আরও বলেন, আমি মান্নানকে ছোট করে দেখছিনা। জাতীয় সংসদে কথা বলতে গেলে কিছুটা যোগ্যতা লাগে। পার্লামেন্টে কথা বলতে গেলে প্রথমে তো লিখতে হবে পার্লামেন্ট। মেম্বার অব পার্লামেন্ট লিখতেও তো কষ্ট হয় অনেকের।

বিএনপি নির্বাচনে হামলার নাটক সাজাচ্ছে বলে মন্তব্য করে শামীম ওসমান বলেন, নাটক করতে করতে এক সময় যদি আমরা বুঝি আপনারা নাটক করছেন। তখন বলবো এরা এমনেও নাটক করে ওমনেও নাটক করে, তখন আমরা যদি ধরি, একবার যদি ধরা শুরু হয় বাংলাদেশে থাকা কিন্তু আপনাদের থাকা সম্ভব হবেনা। নাটক কইরেন না। জনগণের ভোটে পাস করেন আপত্তি নাই। কিন্তু কোন ষড়যন্ত্র করে লাভ হবে না। এই নির্বাচন খোকার নির্বাচন না, কসম করে বলছি এই নির্বাচন স্বাধীনতার পক্ষে বিপক্ষে নির্বাচন। দেশটাকে বাঁচানোর নির্বাচন। নতুবা এই দেশ আফগানিস্তান হয়ে যাবে, জঙ্গীবাদের দেশ হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, বিএনপি নেতা খন্দকার মোশারফ হোসেন পাকিস্তানের আইএসআইয়ের সঙ্গে কথা বলছে। আমরা কি এখণও চুপ করে থাকবো? আমি থাকবো কিনা জানিনা। আমাকে প্রতি মুহুর্তে আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হচ্ছে। ২০০১ সালের ১৬ জুন আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। আমার চোখে আমি মৃত। আমার জীবন নিয়ে চিন্তা নাই। এই লড়াই দেশ বাচাঁনোর লড়াই।

এ সময় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও মহাজোটের মনোনিত প্রার্থী লিয়াকত হোসেন খোকা, নারায়ণগঞ্জের সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা বেগম বাবলী, আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু, চন্দন শীল, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু, মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, নারায়ণগঞ্জ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এসএম ওয়াজেদ আলী খোকন, কেন্দ্রীয় মহিলা লীগ নেত্রী ডা. সেলিনা আক্তার, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট নূর জাহান প্রমুখ।

এতে সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালামের সঞ্চালনা সভাপতিত্ব করেন সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূইয়া।

এছাড়াও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সোনরগাঁও পৌর মেয়র সাদেকুর রহমান, সনমান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান জিন্নাহ, জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হা-মীম শিকদার শিপলু, শম্ভপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ, কাচপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ ওমর, পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম প্রমুখ। এর আগে সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে যোগদান করেন আওয়ামীলীগ ও জাতীয়পার্টির বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

মান্নানকে শামীম ওসমানের হুংকার: সাবধান!

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনের ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে আজহারুল ইসলাম মান্নানকে রীতিমত হংকার দিয়েছেন আওয়ামীলীগের এমপি শামীম ওসমান। ১৬ ডিসেম্বর রবিবার বিকেলে সোনারগাঁয়ে আওয়ামীলীগের উদ্যোগে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে এমন হুংকার দেন শামীম ওসমান।

ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী মান্নানকে নিয়ে শামীম ওসমান বলেন, মান্নানকে সাহেবকে নিয়ে বলতে চাই, নির্বাচন করছেন নির্বাচন করেন কোন আপত্তি নাই। ভোট দিলে পাস করবেন। কিন্তু আমি যা শুনি সেগুলো যদি হয়, যদি মনে করেন অন্য পথ ধরবেন, তাহলে আমি বলে যাচ্ছি দশ বছর আমরা বহু অত্যাচারিত হয়েছি। বাড়ি ঘরে হামলা হয়েছে। আমাদের বহু নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। আমার বাড়ি থেকে আরম্ভ করে আওয়ামীলীগের এমন কোন বাড়ি নাই যেখানে হামলা করা হয়নি। চন্দনশীলের পা নাই, ২০ মানুষ হারিয়েছি। মনে করিয়ে দিয়েন না। দশ বছর ক্ষমতায় আছি বিএনপির নেতার গায়ে একটি ফুলের টোক্কা দেই নাই। যদি মনে করেন এটা দূর্বলতা তাহলে পরিষ্কারভাবে বলে যাই এটা আমাদের দুর্বলতা না। আমরা ক্ষমা করেছি। কিন্তু কেউ যদি এবার অন্য কোন পথ অবলম্বন করেন, যদি চিন্তা করেন জ্বালাওপোড়াও করবেন, ২৪ তারিখের মধ্যে ঘটনা ঘটানো হবে, ২৪ তারিখের আগেই দেশে কিছু ঘটনা ঘটানো হবে। ওরা নির্বাচন করতে চায়না, ওরা নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার চেষ্টা করছে। কোথায় কি হয় জানিনা। নারায়ণগঞ্জে কিছু হতে দেয়া হবে না। সোনারগাঁয়ের মান্নান সাহেব আপনাকে আামি চিনি, আপনার দৌড় কতটুকু আমি জানি। আমি আপনাকে পরিস্কারভাবে বলতে চাই সাবধান, একদম সাবধান। এখানে কোন খেলা খেলবেন না। ওই জায়গা থাকবে না কিন্তু, মা কইয়া গো কইতে সুযোগ দিমুনা। পরিস্কার কইয়া দিলাম। কোন ছাড় হবে না। কারন লড়াইটাই হচ্ছে স্বাধীনতার পক্ষে বিপক্ষে লড়াই।

এর আগে নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী একেএম শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনে গিয়ে এ আসনের মহাজোটের প্রার্থী লিয়াকত হোসেন খানের লাঙ্গল প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেছেন।

১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে রবিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় আওয়ামীলীগ কার্যালয়ের সামনে বিজয় র‌্যালী ও আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন শামীম ওসমান। তবে তিনি এর আগেও গত ১৪ ডিসেম্বর শামীম ওসমান তার বড় ভাই নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনের এমপি একেএম সেলিম ওসমানের পক্ষে বন্দরের সমরক্ষেত্র মাঠে গিয়ে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন তিনি।

ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নানকে নিয়ে আরও শামীম ওসমান বলেন, বিএনপির অপজিশন প্রার্থী হচ্ছে মান্নান। সেও আমারে মানে। আমি তাকে দুশমন ভাবিনা। মান্নানের বুঝা উচিত এটা তো জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন না। জাতীয় সংসদে মানুষ যায় আইন পাশ করার জন্য। আইন পাস করতে হলে ওখানে বাংলা ইংরেজী অনেক লেখা থাকে, পড়তে হয়। আমরাও এলএলবি পাস করেও পড়তে পারিনা। এখন আইন সভায় যাবো, আইন সভায় যাইয়া আমি যদি পড়তেই না পাড়ি তাহলে আইন সভায় যাইয়া করবটা কি আমরা? রাজনীতি কোন জায়গায় চলে যাচ্ছে। বিএনপি এতই অসহায় হয়ে গেছে, আমাদের শ্রদ্ধেয় মুরুব্বী রেজাউল করিম ভাই উনাকে যদি বিএনপি মনোয়ন দিতো তাহলে আমি ভাবতাম ঠিক আছে। একজন যোগ্য মানুষকে মনোনয়ন দিয়েছে। যে লেখাপড়া জানে, যার পিছনে জ্ঞান বুদ্ধি আছে।

তিনি আরও বলেন, আমি মান্নানকে ছোট করে দেখছিনা। জাতীয় সংসদে কথা বলতে গেলে কিছুটা যোগ্যতা লাগে। পার্লামেন্টে কথা বলতে গেলে প্রথমে তো লিখতে হবে পার্লামেন্ট। মেম্বার অব পার্লামেন্ট লিখতেও তো কষ্ট হয় অনেকের।

বিএনপি নির্বাচনে হামলার নাটক সাজাচ্ছে বলে মন্তব্য করে শামীম ওসমান বলেন, নাটক করতে করতে এক সময় যদি আমরা বুঝি আপনারা নাটক করছেন। তখন বলবো এরা এমনেও নাটক করে ওমনেও নাটক করে, তখন আমরা যদি ধরি, একবার যদি ধরা শুরু হয় বাংলাদেশে থাকা কিন্তু আপনাদের থাকা সম্ভব হবেনা। নাটক কইরেন না। জনগণের ভোটে পাস করেন আপত্তি নাই। কিন্তু কোন ষড়যন্ত্র করে লাভ হবে না। এই নির্বাচন খোকার নির্বাচন না, কসম করে বলছি এই নির্বাচন স্বাধীনতার পক্ষে বিপক্ষে নির্বাচন। দেশটাকে বাঁচানোর নির্বাচন। নতুবা এই দেশ আফগানিস্তান হয়ে যাবে, জঙ্গীবাদের দেশ হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, বিএনপি নেতা খন্দকার মোশারফ হোসেন পাকিস্তানের আইএসআইয়ের সঙ্গে কথা বলছে। আমরা কি এখণও চুপ করে থাকবো? আমি থাকবো কিনা জানিনা। আমাকে প্রতি মুহুর্তে আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হচ্ছে। ২০০১ সালের ১৬ জুন আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। আমার চোখে আমি মৃত। আমার জীবন নিয়ে চিন্তা নাই। এই লড়াই দেশ বাচাঁনোর লড়াই।

একেএম শামীম ওসমান জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন সম্পর্কে বলেন, নির্বাচনে কার বিরুদ্ধে ভোট চাইবো। আজকে যাদেরকে নিয়ে নির্বাচন করছে তারা কারা? আজকে বিএনপির সঙ্গে জামাত শিবির। আমাদের শরীরের রক্ত কি পানি হয়ে গেছে? পৃথিবীর কোন রাষ্ট্রে নাই রাজাকার নির্বাচন করছে। আমি অবাক হই বাংলাদেশে যখন তারা রাজনীতি করেন। কাদের নেতৃত্বে? এতদিন করেছে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে, এখন করছে ওই বর্ণচোরা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে। যারা রাজনীতি করে আজকে বেশ্যায় পরিনত হয়েছে। এরা পলিটিক্যাল প্রস্টিটিউট। এরা এদেশের মানুষকে লজ্জা দিচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ভোট চাইতে আমার লজ্জা লাগে।

শামীম ওসমান বলেন, সোনারগাঁয়ের খবর জানি। ৩০ তারিখে বিজয় মিছিলের প্রস্তুতি নেন ইনশাহআল্লাহ। লাঙ্গল পাস করবে। আমার নির্বাচন থুইয়া আমি এখানে আসছি কেন? আমার প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী খুইজ্জা পায়না মানুষ। দিছে কোন যোগ্য লোক, একজন দিয়েছে। আমি নির্বাচন গত ৫ বছর ধইরা করছি। চিন্তা কইরেন না আমি বলিনা যে, আমি সোনারগাঁয়ে ৮টার সময় আসবো। তবে নির্বাচনের দিন সকাল ১০টার সময় শামীম ওসমান সোনারগাঁয়ে থাববে এবং রেজাল্ট নিইে আমরা যাবো ইনশাহআল্লাহ।

শামীম ওসমান প্রয়াত আওয়ামীলীগ নেতা আবুল হাসনাতকে স্মরণ করে বলেন, আমার নেতা মোবারক ভাই, আবুল হাসনাত ভাইকে যেনো আল্লাহ বেহেসত নসিব করেন।

আওয়ামীলীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত সম্পর্কে বলেন, কায়সার আমার হাতে তৈরি করা কর্মী এবং এই পরিবারের সন্তান। আমি বিশ্বাস করিনা যে কায়সার এমন কোন কর্ম করবে যে কর্মের কারনে এদেশে রাজাকার আলবদর আলসামস উপকৃত হবে। আমি বিশ্বাস করিনা যে কায়সার এমন কোন কর্মকান্ড করবে যে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীরা উৎসাহিত হবে। যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, সেতো কোন রাজাকার আলবদরের সন্তান নয়। আমি বিশ্বাস রাখছি ইনশাহআল্লাহ আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই দেখবেন আজকে যেমন খোকন সাহা, আনিসুর রহমান দিপু, কামাল, সামসু ভাই সহ সকলে যেমন সবাই আজকে মহাজোটের প্রার্থী, শেখ হাসিনার প্রতীক লাঙ্গলের পক্ষে যখন ঐক্যবদ্ধ হয়েছে তখন আমি আশা করছি আমার ভাতিজা কায়সার হাসনাতও এখানে এসে লাঙ্গলে প্রতীকে ভোট চাইবে।

কায়সারকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, আমি চাইনা আওয়ামীলীগ পরিবারের নেতাকর্মী আজীবনের জন্য বহিস্কার হয়ে যাক। আমি কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত জানি। আর জানি বলেই এখানে সবাই কিন্তু পরিষ্কারভাবে একটি কথা বলে গেছেন। এ মুহুর্তে আমাদের কায়সারকে নিয়ে চিন্তা করার দরকার নাই। কারন কায়সার আমাদের অপজিশন প্রার্থী না।

শামীম ওসমান যুবলীগ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বলেণ, কেউ যদি দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করেন তাহলে কমিটি ভেঙ্গে দেয়া হবে। আজীবনের জন্য বহিস্কার করা হবে। কোন ছাড় দেয়া হবে না। আর যদি কেউ মনে করেন বিএনপিকে সাহায্য করবেন, আমি পরিষ্কারভাবে বলে দিলাম এই নির্বাচন খোকার নির্বাচন না। এই নির্বাচন শেখ হাসিনার নির্বাচন। শেখ হাসিনার সন্তান আমরা বেচেঁ আছি। প্রয়োজনে আমার নির্বাচন ছেড়ে দিয়ে সোনারগাঁয়ে এসে নির্বাচন করব। দেখতে চাই কার কত মাথা আছে। কোন ছাড় দেয়া হবে না। এই লড়াই দেশ বাচাঁনোর লড়াই। এই লড়াইয়ে কোন পরিবারকে বেঈমানী করার সুযোগ দেয়া হবে না। ভাল করে বললাম ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, নেত্রীর পক্ষে অবস্থান নেন। খোকা কোন সাবজেক্ট না। সাবজেক্ট একটাই শেখ হাসিনা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু। এই সাবজেক্টের সাথে যদি কেউ পিছন থেকে ছুড়ি মারার চেষ্টা করে মনে রাখবেন নারায়ণগঞ্জের স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির কাছে ঘৃণার পাত্র হয়ে যাবেন। পরে কিন্তু দরজা বন্ধ হয়ে গেলে ওই দরজা আর খোলা হবে না। এই মুহুর্তে ফাইনাল সিদ্ধান্তের কথা বললাম না। আশা করি সঠিক সিদ্ধান্ত নিবেন। ভুল হতে পারে সবারই। রাগ অভিমান থাকতে পারেনা। কিন্তু এমন কিছু করবেন না দেশের জন্য ক্ষতি হয়ে যায়। যারা সারাজীবন একটা পতাকার নিজে রাজনীতি করেছেন, শেখ মুজিবের আদর্শের পক্ষে রাজনীতি করেছেন, সেই সকল কিছু অম্লান করে দিবেন না। যেখানে মানুষের মুখের বুর্লি হতেন সেখানে কিন্তু মানুষের মুখের গালি হইয়েন না। জামাত শিবির রাজাকাররা উস্কানি দিবে। ওই উস্কানীতে কান দিয়েন না। সামনে থাকা কিছু লোক হয়তো বলবে আপনিই সব। ধান্ধা করবে টাকা খাবে। এদের সাফাইয়ে কান দিয়েন না। কয়দিন পর একা হয়ে গেছেন।

এ সময় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও মহাজোটের মনোনিত প্রার্থী লিয়াকত হোসেন খোকা, নারায়ণগঞ্জের সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা বেগম বাবলী, আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু, চন্দন শীল, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু, মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, নারায়ণগঞ্জ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এসএম ওয়াজেদ আলী খোকন, কেন্দ্রীয় মহিলা লীগ নেত্রী ডা. সেলিনা আক্তার, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট নূর জাহান প্রমুখ।

এতে সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালামের সঞ্চালনা সভাপতিত্ব করেন সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূইয়া।

এছাড়াও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সোনরগাঁও পৌর মেয়র সাদেকুর রহমান, সনমান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান জিন্নাহ, জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হা-মীম শিকদার শিপলু, শম্ভপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ, কাচপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ ওমর, পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম প্রমুখ। এর আগে সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে যোগদান করেন আওয়ামীলীগ ও জাতীয়পার্টির বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

খোকার লাঙ্গলে ভোট চাইলেন শামীম ওসমান

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী একেএম শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনে গিয়ে এ আসনের মহাজোটের প্রার্থী লিয়াকত হোসেন খোকার লাঙ্গল প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেছেন।

১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে রবিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় আওয়ামীলীগ কার্যালয়ের সামনে বিজয় র‌্যালী ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শামীম ওসমান। তবে তিনি এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর শামীম ওসমান তার বড় ভাই নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনের এমপি একেএম সেলিম ওসমানের পক্ষে বন্দরের সমরক্ষেত্র মাঠে গিয়ে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন।

একেএম শামীম ওসমান জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন সম্পর্কে বলেন, নির্বাচনে কার বিরুদ্ধে ভোট চাইবো। আজকে যাদেরকে নিয়ে নির্বাচন করছে তারা কারা? আজকে বিএনপির সঙ্গে জামাত শিবির। আমাদের শরীরের রক্ত কি পানি হয়ে গেছে? পৃথিবীর কোন রাষ্ট্রে নাই রাজাকার নির্বাচন করছে। আমি অবাক হই বাংলাদেশে যখন তারা রাজনীতি করেন। কাদের নেতৃত্বে? এতদিন করেছে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে, এখন করছে ওই বর্ণচোরা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে। যারা রাজনীতি করে আজকে বেশ্যায় পরিনত হয়েছে। এরা পলিটিক্যাল প্রস্টিটিউট। এরা এদেশের মানুষকে লজ্জা দিচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ভোট চাইতে আমার লজ্জা লাগে।

শামীম ওসমান বলেন, সোনারগাঁয়ের খবর জানি। ৩০ তারিখে বিজয় মিছিলের প্রস্তুতি নেন ইনশাহআল্লাহ। লাঙ্গল পাস করবে। আমার নির্বাচন থুইয়া আমি এখানে আসছি কেন? আমার প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী খুইজ্জা পায়না মানুষ। দিছে কোন যোগ্য লোক, একজন দিয়েছে। আমি নির্বাচন গত ৫ বছর ধইরা করছি। চিন্তা কইরেন না আমি বলিনা যে, আমি সোনারগাঁয়ে ৮টার সময় আসবো। তবে নির্বাচনের দিন সকাল ১০টার সময় শামীম ওসমান সোনারগাঁয়ে থাববে এবং রেজাল্ট নিইে আমরা যাবো ইনশাহআল্লাহ।

এর আগে শামীম ওসমান প্রয়াত আওয়ামীলীগ নেতা আবুল হাসনাতকে স্মরণ করে বলেন, আমার নেতা মোবারক ভাই, আবুল হাসনাত ভাইকে যেনো আল্লাহ বেহেসত নসিব করেন।

আওয়ামীলীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত সম্পর্কে বলেন, কায়সার আমার হাতে তৈরি করা কর্মী এবং এই পরিবারের সন্তান। আমি বিশ্বাস করিনা যে কায়সার এমন কোন কর্ম করবে যে কর্মের কারনে এদেশে রাজাকার আলবদর আলসামস উপকৃত হবে। আমি বিশ্বাস করিনা যে কায়সার এমন কোন কর্মকান্ড করবে যে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীরা উৎসাহিত হবে। যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, সেতো কোন রাজাকার আলবদরের সন্তান নয়। আমি বিশ্বাস রাখছি ইনশাহআল্লাহ আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই দেখবেন আজকে যেমন খোকন সাহা, আনিসুর রহমান দিপু, কামাল, সামসু ভাই সহ সকলে যেমন সবাই আজকে মহাজোটের প্রার্থী, শেখ হাসিনার প্রতীক লাঙ্গলের পক্ষে যখন ঐক্যবদ্ধ হয়েছে তখন আমি আশা করছি আমার ভাতিজা কায়সার হাসনাতও এখানে এসে লাঙ্গলে প্রতীকে ভোট চাইবে।

কায়সারকে উদ্দেশ্য করে শামীম ওসমান আরও বলেন, আমি চাইনা আওয়ামীলীগ পরিবারের নেতাকর্মী আজীবনের জন্য বহিস্কার হয়ে যাক। আমি কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত জানি। আর জানি বলেই এখানে সবাই কিন্তু পরিষ্কারভাবে একটি কথা বলে গেছেন। এ মুহুর্তে আমাদের কায়সারকে নিয়ে চিন্তা করার দরকার নাই। কারন কায়সার আমাদের অপজিশন প্রার্থী না।

শামীম ওসমান যুবলীগ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বলেণ, কেউ যদি দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করেন তাহলে কমিটি ভেঙ্গে দেয়া হবে। আজীবনের জন্য বহিস্কার করা হবে। কোন ছাড় দেয়া হবে না। আর যদি কেউ মনে করেন বিএনপিকে সাহায্য করবেন, আমি পরিষ্কারভাবে বলে দিলাম এই নির্বাচন খোকার নির্বাচন না। এই নির্বাচন শেখ হাসিনার নির্বাচন। শেখ হাসিনার সন্তান আমরা বেচেঁ আছি। প্রয়োজনে আমার নির্বাচন ছেড়ে দিয়ে সোনারগাঁয়ে এসে নির্বাচন করব। দেখতে চাই কার কত মাথা আছে। কোন ছাড় দেয়া হবে না। এই লড়াই দেশ বাচাঁনোর লড়াই। এই লড়াইয়ে কোন পরিবারকে বেঈমানী করার সুযোগ দেয়া হবে না। ভাল করে বললাম ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, নেত্রীর পক্ষে অবস্থান নেন। খোকা কোন সাবজেক্ট না। সাবজেক্ট একটাই শেখ হাসিনা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু। এই সাবজেক্টের সাথে যদি কেউ পিছন থেকে ছুড়ি মারার চেষ্টা করে মনে রাখবেন নারায়ণগঞ্জের স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির কাছে ঘৃণার পাত্র হয়ে যাবেন। পরে কিন্তু দরজা বন্ধ হয়ে গেলে ওই দরজা আর খোলা হবে না। এই মুহুর্তে ফাইনাল সিদ্ধান্তের কথা বললাম না। আশা করি সঠিক সিদ্ধান্ত নিবেন। ভুল হতে পারে সবারই। রাগ অভিমান থাকতে পারেনা। কিন্তু এমন কিছু করবেন না দেশের জন্য ক্ষতি হয়ে যায়। যারা সারাজীবন একটা পতাকার নিজে রাজনীতি করেছেন, শেখ মুজিবের আদর্শের পক্ষে রাজনীতি করেছেন, সেই সকল কিছু অম্লান করে দিবেন না। যেখানে মানুষের মুখের বুর্লি হতেন সেখানে কিন্তু মানুষের মুখের গালি হইয়েন না। জামাত শিবির রাজাকাররা উস্কানি দিবে। ওই উস্কানীতে কান দিয়েন না। সামনে থাকা কিছু লোক হয়তো বলবে আপনিই সব। ধান্ধা করবে টাকা খাবে। এদের সাফাইয়ে কান দিয়েন না। কয়দিন পর একা হয়ে গেছেন।

এ আসনের ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নানকে নিয়ে শামীম ওসমান বলেন, আর মান্নানকে সাহেবকে নিয়ে বলতে চাই, নির্বাচন করছেন নির্বাচন করেন কোন আপত্তি নাই। ভোট দিলে পাস করবেন। কিন্তু আমি যা শুনি সেগুলো যদি হয়, যদি মনে করেন অন্য পথ ধরবেন, তাহলে আমি বলে যাচ্ছি দশ বছর আমরা বহু অত্যাচারিত হয়েছি। বাড়ি ঘরে হামলা হয়েছে। আমাদের বহু নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। আমার বাড়ি থেকে আরম্ভ করে আওয়ামীলীগের এমন কোন বাড়ি নাই যেখানে হামলা করা হয়নি। চন্দনশীলের পা নাই, ২০ মানুষ হারিয়েছি। মনে করিয়ে দিয়েন না। দশ বছর ক্ষমতায় আছি বিএনপির নেতার গায়ে একটি ফুলের টোক্কা দেই নাই। যদি মনে করেন এটা দূর্বলতা তাহলে পরিষ্কারভাবে বলে যাই এটা আমাদের দুর্বলতা না। আমরা ক্ষমা করেছি। কিন্তু কেউ যদি এবার অন্য কোন পথ অবলম্বন করেন, যদি চিন্তা করেন জ্বালাওপোড়াও করবেন, ২৪ তারিখের মধ্যে ঘটনা ঘটানো হবে, ২৪ তারিখের আগেই দেশে কিছু ঘটনা ঘটানো হবে। ওরা নির্বাচন করতে চায়না, ওরা নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার চেষ্টা করছে। কোথায় কি হয় জানিনা। নারায়ণগঞ্জে কিছু হতে দেয়া হবে না। সোনারগাঁয়ের মান্নান সাহেব আপনাকে আামি চিনি, আপনার দৌড় কতটুকু আমি জানি। আমি আপনাকে পরিস্কারভাবে বলতে চাই সাবধান, একদম সাবধান। এখানে কোন খেলা খেলবেন না। ওই জায়গা থাকবে না কিন্তু, মা কইয়া গো কইতে সুযোগ দিমুনা। পরিস্কার কইয়া দিলাম। কোন ছাড় হবে না। কারন লড়াইটাই হচ্ছে স্বাধীনতার পক্ষে বিপক্ষে লড়াই।

শামীম ওসমান বলেন, বিএনপির অপজিশন প্রার্থী হচ্ছে মান্নান। সেও আমারে মানে। আমি তাকে দুশমন ভাবিনা। মান্নানের বুঝা উচিত এটা তো জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন না। জাতীয় সংসদে মানুষ যায় আইন পাশ করার জন্য। আইন পাস করতে হলে ওখানে বাংলা ইংরেজী অনেক লেখা থাকে, পড়তে হয়। আমরাও এলএলবি পাস করেও পড়তে পারিনা। এখন আইন সভায় যাবো, আইন সভায় যাইয়া আমি যদি পড়তেই না পাড়ি তাহলে আইন সভায় যাইয়া করবটা কি আমরা? রাজনীতি কোন জায়গায় চলে যাচ্ছে। বিএনপি এতই অসহায় হয়ে গেছে, আমাদের শ্রদ্ধেয় মুরুব্বী রেজাউল করিম ভাই উনাকে যদি বিএনপি মনোয়ন দিতো তাহলে আমি ভাবতাম ঠিক আছে। একজন যোগ্য মানুষকে মনোনয়ন দিয়েছে। যে লেখাপড়া জানে, যার পিছনে জ্ঞান বুদ্ধি আছে।

তিনি আরও বলেন, আমি মান্নানকে ছোট করে দেখছিনা। জাতীয় সংসদে কথা বলতে গেলে কিছুটা যোগ্যতা লাগে। পার্লামেন্টে কথা বলতে গেলে প্রথমে তো লিখতে হবে পার্লামেন্ট। মেম্বার অব পার্লামেন্ট লিখতেও তো কষ্ট হয় অনেকের।

বিএনপি নির্বাচনে হামলার নাটক সাজাচ্ছে বলে মন্তব্য করে শামীম ওসমান বলেন, নাটক করতে করতে এক সময় যদি আমরা বুঝি আপনারা নাটক করছেন। তখন বলবো এরা এমনেও নাটক করে ওমনেও নাটক করে, তখন আমরা যদি ধরি, একবার যদি ধরা শুরু হয় বাংলাদেশে থাকা কিন্তু আপনাদের থাকা সম্ভব হবেনা। নাটক কইরেন না। জনগণের ভোটে পাস করেন আপত্তি নাই। কিন্তু কোন ষড়যন্ত্র করে লাভ হবে না। এই নির্বাচন খোকার নির্বাচন না, কসম করে বলছি এই নির্বাচন স্বাধীনতার পক্ষে বিপক্ষে নির্বাচন। দেশটাকে বাঁচানোর নির্বাচন। নতুবা এই দেশ আফগানিস্তান হয়ে যাবে, জঙ্গীবাদের দেশ হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, বিএনপি নেতা খন্দকার মোশারফ হোসেন পাকিস্তানের আইএসআইয়ের সঙ্গে কথা বলছে। আমরা কি এখণও চুপ করে থাকবো? আমি থাকবো কিনা জানিনা। আমাকে প্রতি মুহুর্তে আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হচ্ছে। ২০০১ সালের ১৬ জুন আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। আমার চোখে আমি মৃত। আমার জীবন নিয়ে চিন্তা নাই। এই লড়াই দেশ বাচাঁনোর লড়াই।

এ সময় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও মহাজোটের মনোনিত প্রার্থী লিয়াকত হোসেন খোকা, নারায়ণগঞ্জের সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা বেগম বাবলী, আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু, চন্দন শীল, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু, মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, নারায়ণগঞ্জ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এসএম ওয়াজেদ আলী খোকন, কেন্দ্রীয় মহিলা লীগ নেত্রী ডা. সেলিনা আক্তার, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট নূর জাহান প্রমুখ।

এতে সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালামের সঞ্চালনা সভাপতিত্ব করেন সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূইয়া।

এছাড়াও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সোনরগাঁও পৌর মেয়র সাদেকুর রহমান, সনমান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান জিন্নাহ, জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হা-মীম শিকদার শিপলু, শম্ভপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ, কাচপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ ওমর, পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম প্রমুখ। এর আগে সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে যোগদান করেন আওয়ামীলীগ ও জাতীয়পার্টির বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

সোনারগাঁয়ে মেয়রের বর্বর নির্যাতনের শিকার দুই শিশু কিশোর

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

হাউ মাউ করে কাঁদছে এক শিশু ও এক কিশোর। তবুও নাছোরবান্দা বদমেজাজী মেয়র সাদেকুর রহমান অমানবিকভাবে জনসম্মুখে নির্যাতন করে যাচ্ছেন। যা বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। সোনারগাঁও পৌরসভার মেয়র সাদেকুর রহমান কিশোরটিকে লাঠি দিয়ে মারধর করছেন আর বলছেন, এমনে চালায় গাড়ি?

এমন একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। কিশোরটি একটি অটোরিক্সা চালক। সে কোন চোর ছিনতাইকারীও ছিল না। ভিডিওতে দেখা যায় সোনারগাঁও পৌরসভার লোক ও কারুশিল্প যাদুঘরের সামনে এই কিশোরকে মারধর করছেন মেয়র। কিশোরটির ছোট ভাই হাউ মাউ করে কাঁদলেও মেয়র সাদেকুর রহমান তার মারধর চালিয়ে যায়। আল্লাহগো আল্লাহগো বলে কাঁদলেও থামেনি মেয়র। এ এক বর্বরতাকে হার মানিয়েছে তার এই অমানবিক নির্যাতন। মেয়র কখনও লাথি মেরেছেন, কখনও হাতে থাকা লাঠি দিয়ে পিটিয়েছেন। আর বলছেন গাড়ি এভাবে চালায়? কিন্তু তিনি একবারও ভাবেননি দুটি শিশু এ বয়সে কেন অটোরিক্সা চালক হলো? মেয়র হিসেবে এই দুটি শিশুর প্রতিও মেয়রের দায়িত্ব ছিল। তারা তো এ বয়সে স্কুলে যাওয়ার কথা। চোর ছিনতাইকারী পকেটমার তো হয়নি। ওই সময় আশপাশের লোকজন তাকে নিবৃত করার চেষ্টা করলেও তিনি থামেননি। কিশোরটি হাউ মাউ করে কেঁদে কেঁদে মেয়র সাদেকুর রহমানের পায়ে ধরছিল কিন্তু তবুও মেয়র মারধর করছেন। মেয়রের সঙ্গে শিশুটিকে মারতে দেখা গেল কন্ঠ শিল্প রিপনকেও। অথচ রিপন একজন সাংস্কৃতিকমনা ব্যক্তি। শিশুটি বাঁচানোর চেষ্টা না করে উল্টো মেয়রের নির্যাতনের দিকে ঠেলে দিতেও দেখা গেল ভিডিওতে তাকেও। এভাবেই সমাজে গরীব মার খায়। অসহায়ের অসহায়ত্বও মানুষের মনে নাড়া দেয়না। এমন সব মন্তব্য ফেসবুকে এই ভিডিওতে ওঠে আসছে।

তবে ওই দুই শিশু ও কিশোরের খোঁজ দিতে পারেননি কেউ। তবে কিশোরটি একটি অটো চালক। তার সঙ্গে বসা ছিল তারই ছোট ভাই একজন শিশু। এমন একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। এমন বর্বরতার বিচার দাবিতেও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেছে।

জানাগেছে, সোনারগাঁও আমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১৮ বছর তিনি চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তারপর তিনি টানা দুই মেয়াদে মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করছেন। এলাকায় বেশ জনপ্রিয় হলেও তিনি বদমেজাজী একজন মেয়র হিসেবেই পরিচিত। তিনি আইন কানুন তোয়াক্কা করেন না। ওই সময় থেকেই তিনি বিচার শালিশির নামে মানুষের উপর নির্যাতন করে আসছিলেন। তবে বয়সের ভারে নুব্জ হলেও তেজ কমেনি এই মেয়রের। নিজেই এখন রাস্তা ঘাটে অসহায় শিশু কিশোরদের মারধর করতে শুরু করে দিলেন। এমনটাই মন্তব্য আসছে ফেসবুকে এই ভিডিওতে।

নারায়ণগঞ্জে ৪ মামলায় আসামি যারা

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের তিনটি থানায় পৃৃথক ৪টি নাশকতার মামলায় বিএনপি জামাতের ২২১জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এসব মামলায় ১০৯ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ৪টি মামলায় আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা সরকার উৎখাত করার ষড়যন্ত্রে নাশকতার পরিকল্পনা করেছিল।

থানা পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশ বাদী হয়ে ৩৯ জনকে আসামী করে নাশকতার মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবির, হাজী নূরউদ্দীন আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আওলাদ হোসেন, মনিরুল ইসলাম সজল, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক অহিদুল ইসলাম ছক্কু, মহানগর শ্রমিকদলের প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক গোলাম কাদের, শহর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এমএইচ মামুন সহ ৩৯জনকে আসামী করা হয়।

শনিবার শীতলক্ষ্যা ফাঁড়ির এসআই আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় গ্রেপ্তারকৃত ১৪জনকে আসামী করা হয়। এ মামলায় অভিযোগ করা হয় আসামীরা সরকার উৎখাতে ষড়যন্ত্র করে নাশকতার পরিকল্পনা করেছিল। আসামীদের কাছ থেকে ২টি অবিস্ফোরিত ককটেল ও ৫টি ইটের টুকরো উদ্ধার দেখানো হয়।
এদিকে ফতুল্লা মডেল থানায় পৃথক দুটি মামলায় বিএনপি জামাতের ১৩১ জনকে আসামী করা হয়েছে। এ দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে ৬৩ জনকে।

শনিবার সকালে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের এসআই কামরুল হাসান ও এসআই আব্দুল শাফিউল আলম বাদী হয়ে পৃথক দুটি নাশকতার মামলা দায়ের করেন। নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা নয়ামাটি পাগলা হাইস্কুল, প্রাইমেরী স্কুলের পাশের গলি ও মাসদাইরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন নারায়ণগঞ্জ ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা থেকে আসামীদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

এ মামলায় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে প্রাথমিকভাবে বিএনপির মনোনিত মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান রোজেল, মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রশিদুর রহমান রশু সহ ১৩১ জনকে দুটি মামলায় আসামী করা হয়। এছাড়াও মোল্লা সল্ট ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের মালিক খবির উদ্দীন মোল্লা, সুপার স্টার বাল্প লিমিটেডের মালিক ইব্রাহীম, ডা. আলী আশরাফ, সৈয়দ নূরউদ্দীন আহমেদ খুশি, ডা.মানিক ও খুলিলুর রহমানকে নাশকতার পরিকল্পনায় পৃষ্টপোষকত ও অর্থযোগানদাতা হিসেবে আসামী করা হয়। দুটি মামলায় মুল অভিযোগ আসামীরা সরকার উৎখাতে ষড়যন্ত্র করে নাশকতার পরিকল্পনা করেছে। মামলায় ১৮টি অবিস্ফোরিত ককটেল ও ৩০টি জিহাদী বই উদ্ধার দেখানো হয়।

অন্যদিকে বন্দর থানা পুলিশের এসআই হানিফ বাদী হয়ে আরেকটি নাশকতার মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ৫১জনকে আসামী করা হয়। গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে ৩২ জনকে। বন্দরের গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ থেকে আটক করা হয় তাদের। গ্রেপ্তারকৃত ৩২জনকে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আসামীদের আদালতে প্রেরণ করেছে থানা পুলিশ।

‘আমি মুরগীওয়ালা সেলিম ওসমান’

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনের সংসদ সদস্য ও মহাজোটের প্রার্থী একেএম সেলিম ওসমান বলেছেন, আমি যদি আবারো আপনাদের গোলামীর সুযোগ পাই তাহলে এ এলাকার কেউ হতদরিদ্র থাকবেনা। বন্দরের কোন স্কুল চার তলার নিচে থাকবে না। এটা আমার ওয়াদা। আমি যা বলি তাই করি। মনে রাখবেন সেলিম ওসমান বন্দরবাসীর উন্নয়ণ চায়। উন্নয়ণমুলক যেকোন কাজে আমি অংশীদার হতে পারলে নিজেকে ধণ্য মনে হয়। সেলিম ওসমান দলের নেতাদের কথা শুনেনা। সেলিম ওসমান সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে।

১৫ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২১নং ওয়ার্ডের শাহীমসজিদ এলাকায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সেলিম ওসমান আরো বলেন, আমি ওসমান পরিবারের কেউনা। আমি মাছওয়ালা সেলিম ওসমান আমি মুরগীওয়ালা সেলিম ওসমান। আমি অসহায় মানুষের জন্য সেলিম ওসমান। যেখানে অসহায় দুঃখী মানুষ সেখানেই সেলিম ওসমান। আমার একটাই স্বপ্ন সেটা আমার ভবিষৎ প্রজন্মের উন্নয়ন। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমরা যুদ্ধ করেছি বঙ্গবন্ধুর ডাকে। আজ বিএনপির হান্নান সরকার আমাকে উন্নয়ণমুলক কাজে সহায়তা করছে। আপনাদের সমস্যাগুলো হান্নানের কাছে বলবেন। হান্নানের ডাকে প্রয়োজনে প্রতিমাসে আপনার কথা শোনার জন্য আপনাদের গোলাম চলে আসবে।

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির দপ্তর সম্পাদক হান্নান সরকারের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, নারায়ণগঞ্জ জেলা মহিলা লীগের সভাপতি প্রফেসর ড. শিরিন বেগম, নারায়ণগঞ্জ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট এসএম ওয়াজেদ আলী খোকন, নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়পার্টির আহ্বায়ক আবুল জাহের, মহানগর মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ইসরাত জাহান খান স্মৃতি, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ সাফায়েত আলম সানি, নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়পার্টির যুগ্ম সম্পাদক আজিজুল হক আজিজ, মহানগর জাতীয়পার্টি আহ্বায়ক সানাউল্লাহ সানু, বন্দর থানা ছাত্রলীগ সভাপতি নাজমুল হাসান আরিফ, বন্দর মহিলা আওয়ামীলীগ সভানেত্রী সালিমা রহমান শান্তা, সোনিয়া আহমেদ, যুবলীগ নেতা আলী হোসেন, ছামসুল হাসান, আওয়ামীলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন, সালাউদ্দিন ও নাজমুল প্রমূখ।

বিএনপির জানাযা বাকি, বলেছিলেন এই কাজী মনির

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

‘বিএনপি মরে গেছে, এখন জানাযা বাকি’ এমন মন্তব্য করে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির রাজনীতিতে তোলপাড় করে দিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-১(রূপগঞ্জ) আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনিত প্রার্থী কাজী মনিরুজ্জামান মনির। অথচ সেই কাজী মনিরের হাতেই ওঠলো দলের প্রতীক। কাজী মনিরের এমন মন্তব্যে প্রতিবাদ জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে তার পদত্যাগ করেছিলেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।

ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের কয়েক মাস পর নারায়ণগঞ্জের মাসদাইরে তৎকালীন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের বাসায় জেলা ও শহর বিএনপির যৌথ প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় নেতাদের নারায়ণগঞ্জে সমাবেশে যোগদান উপলক্ষ্যে ওই প্রস্তুতি সভাটি করা হয়।
ওই সভার শুরুর পূর্বে বিএনপি নেতারা প্রথমে তৈমূর আলম খন্দকারের বাড়ির সামনে বাগানে জড়ো হন। ওই সময় স্থানীয় সাংবাদিক ও বিএনপির নেতাকর্মীদের সামনে কাজী মনির বলেছিলেন, বিএনপি তো মরে গেছে, এখন জানাযা বাকি।’ এমন মন্তব্য পরদিন নারায়ণগঞ্জের একটি জনপ্রিয় অনলাইনে প্রকাশিত হয়। যার পরদিন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভুইয়ার নেতাকর্মীরা নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে কাজী মনিরের পদত্যাগ দাবি করেন। যদিও কাজী মনিরের ওই মন্তব্যের বিষয়ে শহর বিএনপির তৎকালীন সেক্রেটারি এটিএম কামাল বলেছিলেন, ‘প্রস্তুতি সভায় কাজী মনির এমন কোন মন্তব্য করেননি।’ তবে কাজী মনির প্রস্তুতি সভার পূর্বে এমন মন্তব্য করেন।

২০১১ সালে বিএনপির ডাকা হরতালে রূপগঞ্জে কাজী মনিরের ফ্যাক্টরীতে হামলা চালায় স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। কাজী মনির আপাততমস্তক একজন ব্যবসায়ী। তার কাছে রাজনীতি কিছু না। তাই তিনি তার দলের ডাকা হরতালে তার ফ্যাক্টরী খোলা রাখতেন। যে কারন যুবলীগ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দাবি করেছিলেন, তাদের দলের ডাকা হরতালে বিএনপি নেতা হয়ে তিনি তার ফ্যাক্টরী কেন খোলা রাখলো? এমনও অভিযোগ করেন, কাজী মনিরের ফ্যাক্টরীতে হরতালে শ্রমিকেরা উপস্থিত না হলে বেতনের দিগুন কেটে নিতেন। তবে ওই ঘটনায় জেলা বিএনপির নেতারা নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনও করেছিলেন। অথচ সেই কাজী মনির এখন বিএনপির প্রার্থী!

৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর সারাদেশে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারার ঘটনায় প্রতিবাদ সভা করে ব্যবসায়ীদের বৃহত সংগঠন বিজেএমইএ। সেই সভায় বেগম খালেদা জিয়াকে আগুন সন্ত্রাসী হিসেবে সহ নানা ধরনের অভিযোগে অভিযুক্ত করে বক্তব্য রাখেন ব্যবসায়ীরা। সেই সভায় বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গিয়ে উপস্থিত ছিলেন কাজী মনির। এ খবরও স্থানীয় মিডিয়াতে প্রকাশিত হয়।

২০০৯ সালের ২৫ নভেম্বর জেলা বিএনপির সম্মেলনে জেলা বিএনপির সেক্রেটারি নির্বাচিত হন কাজী মনির। কমিটিতে সভাপতি হন তৈমূর আলম। সেক্রেটারি হয়েও বিএনপির আন্দোলন সংগ্রাম তো দুরের কথা দলের মানবনন্ধনেও উপস্থিত ছিলেন না কাজী মনির। জেলা বিএনপির রাজনীতি একাই সামাল দিয়েছিলেন তৈমূর। কিন্তু গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি কাজী মনিরকে জেলা বিএনপির সভাপতি করা হয়। বেশকটি মামলায় কাজী মনির আসামী হলেও তাকে রহস্যজনক কারনে জেল খাটতে হয়নি।

এ আসনে বিএনপির হেভিওয়েট মনোনয়ন প্রত্যাশি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভুইয়া দীর্ঘদিন যাবত কাজ করে আসলেও তলে তলে কাজটি করেছেন কাজী মনির। দুজনকে পিছনে ফেলে মনোনয়নের কাগজটা ভাগিয়ে এনেছেন কাজী মনির। কিন্তু রূপগঞ্জের সাধারণ মানুষের সঙ্গে কাজী মনিরের সম্পর্ক নেই। কারন তিনি সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের সঙ্গে হাত মিলিয়ে টিস্যূ দিয়ে মুছেন। অনেক সময় তিনি রাস্তায় বের হলে হাতে টিস্যূ বা রুমাল হাতে রাখেন। তবে কাজী মনিরের অনুগামীরা দাবি করেন তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ্য থাকায় তাকে সচ্ছভাবে চলাফেলা করতে হয়। এমনকি তাকে দেশের বাহিরের বোতলজাতকৃত পানি পান করতে হয়। যে এ বোতল পানির মূল্য ১৬শ টাকা। এমন নেতাকে নিয়ে এখন খেটে খাওয়া মানুষের কোন আগ্রহ নেই।

লাঙ্গলে ভোট চাইলেন বিএনপি নেতা!

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনের আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরীক দল জাতীয়পার্টির এমপি ও মহাহোটের প্রার্থী একেএস সেলিম ওসমানের নির্বাচনী সভায় সভাপতিত্ব করেছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির দপ্তর সম্পাদক হান্নান সরকার। তিনি বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামের ঘটনায় বেশকটি নাশকতার মামলায় আসামী। তবে তিনি এর আগেও সেলিম ওসমানের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় ছিলেন। এর আগে তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন সেলিম ওসমানকে নির্বাচিত করতে যত টাকা লাগে তিনি খরচ করবেন।

এখানে উল্লেখ্যযে, এছাড়াও এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিএনপির কাউন্সিলর সুলতান আহমেদের সভাপতিত্বেও সেলিম ওসমানের নির্বাচনী সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ আসনে সেলিম ওসমানের পক্ষে সরাসরি নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন বিএনপির সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি আতাউর রহমান মুকুল, সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত হাসেম শকু, দপ্তর সম্পাদক হান্নান সরকার, সিটি কর্পোরেশনের বিএনপির কাউন্সিলর সুলতান আহমেদ, কাউন্সিলর গোলাম নবী মুরাদ সহ বিএনপির বেশকজন কাউন্সিলর। তারা নিয়মিত সেলিম ওসমানের নির্বাচনী সভায় গিয়ে সেলিম ওসমানকে নির্বাচিত করার ঘোষণা দিচ্ছেন। এ আসনে বিএনপি থেকে কাউকে মনোনিত করা হয়নি। এখানে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এসএম আকরামকে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনিত করা হয়েছে।

১৫ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২১নং ওয়ার্ডের বন্দর শাহী মসজিদ এলাকায় সেলিম ওসমানের নির্বাচনী সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ও কাউন্সিলর হান্নান সরকার। ওই সময় হান্নান সরকার লাঙ্গল প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন।

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর বিএনপি নেতা হান্নান সরকারের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ জেলা মহিলা লীগের সভাপতি ড. শিরিন বেগম, নারায়ণগঞ্জ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট এসএম ওয়াজেদ আলী খোকন, নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়পার্টির আহ্বায়ক আবুল জাহের, মহানগর জাতীয়পার্টির আহ্বায়ক সানাউল্লাহ সানু, মহানগর মহিলা লীগের সভাপতি সাবেক কাউন্সিলর ইসরাত জাহান খান স্মৃতি, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ সাফায়েত আলম সানি ও মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসনাত রহমান বিন্দু প্রমুখ।

ধানের শীষের ঝান্ডা হাতে মান্নানের শোডাউন

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

সন্ত্রাসী হামলার পরেও নির্বাচনী আওয়াজ থেকে থমকে নেই নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনের ঐক্যফ্রন্টের ধানের শীষ প্রতীকে মনোনিত প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নান। ১৫ ডিসেম্বর শনিবার সকাল থেকে সোনারগাঁও পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় কয়েক হাজার নেতাকর্মী সমর্থক, স্থানীয় মান্যগণ্য ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ব্যক্তিবর্গ সহ সাধারণ ভোটারদের নিয়ে শোডাউন করেছেন আজহারুল ইসলাম মান্নান।

জানাগেছে, শনিবার সকাল থেকে পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড থেকে ১নং ওয়ার্ড পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার মানুষকে নিয়ে শোডাউন করেছেন আজহারুল ইসলাম মান্নান। এসময় স্থানীয় লোকজন ও সাধারণ ভোটাররাও এসে শোডাউনে যোগদান করেন। সোনারগাঁয়ে এই প্রথম শুধুমাত্র ধানের শীষ প্রতীকে বিশাল এই শোডাউন দেখালো।

অন্যদিকে এ আসনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে জাতীয়পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচনে রয়েছেন বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সিংহ প্রতীকে মাঠে রয়েছেন আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত। এদের ছাড়াও সব মিলিয়ে ৮ জন প্রার্থী এ আসনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। তবে বর্তমান এমপি তেমন কোন চমক এখনও দেখাতেই পারেননি।

গত বৃহস্পতিবার উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম ও সোনারগাঁও থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোরশেদ আলমের সামনেই সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন আজহারুল ইসলাম মান্নান। ওই ঘটনায় যদিও তাৎক্ষনিক হামলাকারী পৌর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয়দানকারী রনি বিল্লাহকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পরে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে রনি বিল্লাহকে তিন মাসের কারাদন্ড দেন আদালত। এ রনি বিল্লাহ স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার পক্ষে কাজ করে আসছিলেন। মুলত সন্ত্রাসী রনি বিল্লাহ সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালামের বলয়ে রাজনীতি করে আসছিলেন। তবে আজহারুল ইসলাম মান্নানের উপর ন্যাক্কাজনক হামলায় সাধারণ মানুষের কাছে মান্নানের প্রতি সমর্থন আরও বেড়ে গেছে।

প্রার্থী ধানের শীষের, আওয়ামী ভোটে ভরসা

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী এসএম আকরাম বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে ভোট প্রার্থনায় আগ্রহী নন। বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজনের সঙ্গে তিনি বৈঠক করলেও বিএনপির অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আচরণ করছেন অনেকটা সতীনের মত। তবে আওয়ামীলীগের সাবেক এই এমপি নির্বাচনী বৈতরী পার হওয়ার জন্য ভরসা করছেন আওয়ামীলীগের একটি অংশের ভোটের উপর।

জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের বন্দরের ৫টি ইউনিয়ন ও সদরের দুটি ইউনিয়ন এলাকা ছাড়া বাকি পুরো এলাকাটিই নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত। এ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে দায়িত্বে রয়েছেন ডা. সেলিনা হায়াত আইভী। সিটি কর্পোরেশনের এলাকায় আইভীর ভোট ব্যাংক রয়েছে। টানা দুইবার মেয়র পদে জয়ী হয়েছেন আইভী। একবার শামীম ওসমানকে পরাজিত করে এবং পরের বার বিএনপির প্রার্থীকে পরাজিত করে তিনি মেয়র হন।

বিএনপি নেতাকর্মীরা বলছেন, নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এসএম আকরাম এখন ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হলেও তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদের দেখলে অনেকটা নাক ছিটকাচ্ছেন। বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর এসএম আকরাম ভরসা রাখতে পারছেন না। দুচারজন বিএনপির ওয়ানম্যান খ্যাত নেতাদের নিয়ে দুদিন এলাকায় ঘুরলেও জন¯্রােত তৈরি করতে পারেননি। যদিও সাবেক এমপি আবুল কালামকে তার সঙ্গে নামকাওয়াস্তে একবার দেখাও গিয়েছিল।

নেতাকর্মীরা আরও বলছেন, নারায়ণগঞ্জে শহর কেন্দ্রীক রাজনীতিতে উত্তর মেরু ও দক্ষিন মেরুর মধ্যে বিরোধ দ্বন্ধ রয়েছে। এদিকে শামীম ওসমান অন্যদিকে মেয়র আইভী। নির্বাচনী আচরণ বিধিতে বাধা নিষেধ থাকায় মেয়র আইভী নির্বাচনের প্রচারণায় থাকতে পারবেন না। এতে এসএম আকরামের জন্যও আরেকটু সুযোগ হয়ে দাড়িয়েছে। নতুবা মেয়র আইভীকে অনেকটা বাধ্য হয়েই মহাজোটের প্রার্থী সেলিম ওসমানের পক্ষেই নামতে হতো। কারন তিনি জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন।

আওয়ামীলীগের বিরোধের কারনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী এসএম আকরাম ওসমান বিরোধী ভোটের উপর ভরসা করছেন। তবে কেউ কেউ সন্দেহ পোষণ করে বলেছেন, ইতিমধ্যে মেয়র আইভী ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ানের সঙ্গে গোপন আতাত রয়েছে। এমন আতাতে শামীম ওসমান বিরোধীদের অনেকেই রয়েছেন। যারা বর্তমানে শামীম ওসমানের সঙ্গে থাকলেও কয়েক মাস আগেও যারা ওসমান বিরোধী ছিলেন তারাও ওসমান পরিবারকে এবার সাইজ করতে নীল নকশা তৈরি করেছেন।

আবার কেউ কেউ বলছেন, ২০১১ সালে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র আইভীকে সুযোগ করে দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ান এসএম আকরাম। তিনি আওয়ামীলীগের সমর্থন পাননি। যে কারনে নির্বাচনের পরের দিন আওয়ামীলীগ থেকে পদত্যাগ করেন। ওই সময় তিনি জেলা আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক পদে ছিলেন। যার প্রতিদান এবারের নির্বাচনে দক্ষিণ মেরুর আওয়ামীলীগ নেতারা দিতে যাচ্ছেন।

নেতাকর্মীরা আরও বলছেন- নির্বাচনের দুদিন আগে জেলা আওয়ামীলীগের একজন শীর্ষ নেতা বন্দরের মাঠে নামবেন। বিশাল বাজেট নিয়ে তিনি লাঙ্গলের বিরুদ্ধে মাঠে নামবেন। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে যে সেটাপ রয়েছে সেই সেটাপে এসএম আকরামের পক্ষে কাজ করবেন। তবে এসব বিষয় নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীরা বললেও আরো নানান ধরনের সন্দেহ ও তথ্য বের হয়ে আসছে। তবে দক্ষিণ মেরুর আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা এখনও মহাজোটের প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামেননি। যে কারনে এসব বিষয়গুলো আরো জোড়ালোভাবে দেখা যাচ্ছে। তবে প্রশ্ন রয়েছে শেষ পর্যন্ত মেয়র আইভীর অনুগামী ও আইভীর ভোট ব্যাংক কার বাক্সে যাবে? এমপি সেলিম ওসমান নাকি এসএম আকরামের বাক্সে। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জে যেসব বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো রয়েছে সেইসব দলের সমর্থকদের ভোটও যাবে এসএম আকরামের বাক্সে। যে কারনে বিএনপির উপর ভরসা করছেন না এসএম আকরাম।

সর্বশেষ সংবাদ