সোনারগাঁয়ে পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকের বাড়িতে হামলা ভাংচুর, বৃদ্ধা নারীকেও মারধর

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ফলাফল শেষে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসুতার ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। নির্বাচনের দুই দিনের মাথায় ঘোড়া প্রতীকে পরাজিত প্রার্থী মাহফুজুর রহমান কালামের সমর্থকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর করেছে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী মোশারফ হোসেনের সমর্থকেরা।

জানাগেছে, সোনারগাঁয়ের বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড জাতীয় পার্টির সভাপতি হাজী সিদ্দিক মেম্বারের বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাট ও নারীসহ ৮জনকে পিটিয়ে আহত করার পাশাপাশি এলাকায় থাকতে হলে ১ লাখ চাঁদা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেনের সমর্থক স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় হাজী সিদ্দিক মেম্বার বাদি হয়ে সোনারগাঁ থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

জাপা নেতা হাজী সিদ্দিক মিয়া অভিযোগ করে জানান, তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহফুজুর রহমান কালামের পক্ষে নির্বাচন করেছেন। রবিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মাহফুজুর রহমান কালাম পরাজিত হওয়ায় বিজয়ী প্রার্থী মোশারফ হোসেনের সমর্থক মজিবুর মেম্বারের নেতৃত্বে রহিম, রফিকুল, রিপন, সেলিম, খায়ের, রাসেল, কামাল, মোতালেব, হাবিবুর, সোলমান, আতু, মোতালেব ও পনির সহ অজ্ঞাত ৪০/৫০ জন লোক দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে রাতের বেলা তার বাড়ির গেইট ও দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে খাট, সোকেচ, আলমারিসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর এবং নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটপাট করেছে।

এসময় বাধা দেওয়ায় তারা হাজী সিদ্দিক মেম্বার, রাবেয়া বেগম, সামসুন্নাহার, জজ মিয়া, সোবহান, আলামিন, কাইয়ুম ও মোমেন মিয়াকে পিটিয়ে আহত করেছে। এছাড়া এলাকায় থাকতে হলে তাদেরকে ১ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে, অন্যথায় হত্যা করার হুমকি দিয়েছে। চাঁদাবাজদের হুমকির কারণে হাজী সিদ্দিক মেম্বার নিরাপত্তাহীনতায় দিনযাপন করছেন।

এ ব্যাপারে সোনারগাঁ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান মনির বলেন, হাজী সিদ্দিক মেম্বারের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুরের খবর শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। হামলা ঘটনায় তিনি এখনো থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বন্দরে মানবাধিকার কাউন্সিলের বিনামূল্যে চিকিৎসা

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে বাংলাদেশ মানবাধিকার কাউন্সিল বন্দর থানা শাখার উদ্যোগে বিনামূল্যে চক্ষু ও মাথা ব্যাথা নিরাময়ে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে। ২ এপ্রিল মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বন্দরের মদনগঞ্জ টিক্কারমোড় সংলগ্ন নিজস্ব কার্যালয়ে এ কর্মসূচি পালন করে মানবাধিকার সংগঠনটি।

বিনামূল্যে এই চিকিৎসা সেবা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কাউন্সিল বন্দর থানা শাখার সভাপতি কাজিম উদ্দিন প্রধান। বামাকা বন্দর শাখার সেবামুলক কার্যক্রমের সাফল্য কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন ধর্ম সম্পাদক মাওলানা মফিজুল ইসলাম।

বাংলাদেশ মানবাধিকার কাউন্সিল বন্দর থানা শাখার সহ-সভাপতি মঞ্জুর হাসান মঞ্জুর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ জেলা বামাকা’র সাধারণ সম্পাদক এমএ হায়দার রানা, বাংলাদেশ মানবাধিকার কাউন্সিল বন্দর থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ সেন্টু, মফিজ উদ্দিন প্রধান, আওয়ামীলীগ নেতা আলমগীর হোসেন, হোসেইন উজ্জল, সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন, মোঃ ফজলুল করিম, কাউন্সিলর সচিব রিয়াজ, মোসাম্মৎ শিরিনা আক্তার ও খন্দকার হাফিজুল হাকিম রোমান প্রমূখ।

বন্দরে প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা হাবিব সরদারের ইন্তেকাল

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের বন্দরের প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা ও ইসলামপুর জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি হাজী হাবিব সরদার ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহে——-রাজিউন)। মৃত্যকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। ১ এপ্রিল সোমবার বিকেল ৩টার দিকে বন্দরের মদনগঞ্জ ইসলামপুর তার নিজ বাসভবনে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

মৃত্যুকালে তিনি ২ ছেলে, ২ মেয়ে, স্ত্রী, নাতি-নাতনীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে যান। সোমবার রাত ৯টায় মদনগঞ্জের ইসলামপুর জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে নামাজের জানাজা শেষে তাকে মদনগঞ্জ বড় কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।

মরহুমের জানাজায় অংশ নেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য হাজী আমজাদ হোসেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফয়সাল মোহাম্মদ সাগর, ব্যবসায়ী হাজী মোখলেছুর রহমান চৌধুরী, মদনঞ্জ ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন মিয়া, বন্দর থানা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক রাফিয়ান আহমেদ, বীরমুক্তিযোদ্ধা নুর হোসেন, আইয়ুব আলী, আওয়ামীলীগ নেতা আলমগীর হোসেন, স্থানীয় সমাজ সেবক বাতেন মাতবর, মানবাধিকার কর্মী মফিজ প্রধান, মোঃ আনিস, রতন খান ও রলি খান প্রমূখ।

এবার সোনারগাঁয়ে মহাসংকটে চার ইউপি চেয়ারম্যান!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁয়ে মহাজোটের এমপির পক্ষে কাজ করতে গিয়ে আগামীতে মহাসংকটে পড়তে যাচ্ছেন নৌকা প্রতীকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নির্বাচিত ৪ চেয়ারম্যান। ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোশারফ হোসেনের বিরোধীতা করেছিলেন বারদী, পিরোজপুর, কাচপুর ও জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চার চেয়ারম্যান।

এদের মধ্যে দুজনই আওয়ামীলীগের শীর্ষ পদেও রয়েছেন। একজন কেন্দ্রীয় কমিটিতে আরেকজন জেলা কমিটিতে। কিন্তু তারা নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরোধীতা করেছেন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে। ফলে আগামীতে ইউনিয়ন পরিষদের নানা কাজের জন্য মোশারফ হোসেনের কাছে ধর্না দিতে হবে এদের। একই সঙ্গে ভবিষৎে ইউনিয়ন পরিষদে নৌকা প্রতীক পাওয়া এবং চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা এদের একেবারেই কম।

জানাগেছে, ৩১ মার্চ সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হন মোশারফ হোসেন। এখানে নৌকা প্রতীকের বিরোধীতা করে বিদ্রোহী হয়েছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান কালাম। তিনি ঘোড়া প্রতীকে নির্বাচন করে ২৭ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন। তার পক্ষে ছিলেন স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। নির্বাচনের আগে ঘোড়া প্রতীকের পক্ষে কাজ করার অভিযোগে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী এলাকা ছাড়তে খোকাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

অন্যদিকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোশারফ হোসেনের পক্ষে মাঠে কাজ করেছিলেন সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর চৌধুরী বিরু, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক এএইচএম মাসুদ দুলাল, উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া।

যদিও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান আহমেদ মোল্লা বাদশা কাজ করেছিলেন বিদ্রোহী প্রার্থী কালামের পক্ষে। কালামের পক্ষে কাজ করেছিলেন উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচিত চেয়ারম্যান জহিরুল হক, ইউসুফ দেওয়ান, আব্দুর রউফ মোল্লা, আব্দুর রব, হা-মীম শিকদার শিপলু, মোশারফ ওমর, ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম, সোনারগাঁও পৌর মেয়র সাদেকুর রহমান ভূঁইয়া এবং পৌরসভায় নির্বাচিত কাউন্সিলর ও ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ডে নির্বাচিত অন্তত ৯০ জন মেম্বারগণ।

এদের মধ্যে গত পৌর নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে মেয়র নির্বাচিত হন সাদেকুর রহমান। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে কাচপুর ইউনিয়ন পরিষদে মোশারফ ওমর, পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদে ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম, জামপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হা-মীম শিকদার শিপলু ও বারদী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জহিরুল হক চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। মাসুদুর রহমান মাসুম নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য এবং হা-মীম শিকদার কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির সদস্য। কিন্তু তারা নৌকার বিরোধীতা করেছেন নির্বাচনে।

জাতীয় সংসদ সদস্যের আইন প্রনয়ণ করা ছাড়া উল্লেখযোগ্য বেশির ভাগ অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজগুলো এমপির হাতে থাকে না। যদিও এমপিরা এসব দেখাভাল করে থাকেন। বেশির ভাগ থাকে উপজেলা পরিষদে। যেখানে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নিয়েই গঠিত। উপজেলা পরিষদ থেকে কাজ ভাগিয়ে নিতে হলে এখন মোশারফ হোসেনের কাছে ধর্না দিতে হবে চার চেয়ারম্যানকে। কারন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন- এখানে লিয়াকত হোসেন খোকার প্রভাব একেবারেই শূণ্যের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সোনারগাঁয়ে এমপি থাকবেন কোণঠাসা অবস্থায়। তার সঙ্গে যারা ছিলেন তারাও হবেন নাজেহাল। আবার আগামীতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পাওয়া এবং চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে হলে আবারো হাসনাত পরিবারের ছায়াতলে এদের ভীড়তে হবে। ফলে মহাজোটের এমপির পক্ষ নিয়ে মহাসংকটে চার চেয়ারম্যানের ভবিষৎ রাজনীতি।

এখানে উল্লেখ্যযে, গত ৩০ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনে মহাজোটের শরীক দল জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে মনোনয়ন পান বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। ওই নির্বাচনে আওয়ামীলীগের সঙ্গে বিদ্রোহী করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত ও মোশারফ হোসেন। মনোনয়ন বাছাইয়ে মোশারফ হোসেনের মনোনয়ন বাতিল হয়ে গেলে সিংহ প্রতীকে নির্বাচনে লড়াইয়ে নামেন কায়সার হাসনাত। কিন্তু নির্বাচনের ৭২ ঘন্টা পূর্বে কায়সার হাসনাতের বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। তারপর নির্বাচন থেকে সরে দাড়ান তিনি। ওই নির্বাচনে খোকার পক্ষে কাজ করেছিলেন কালাম এবং মোশারফ হোসেন কাজ করেছিলেন কায়সার হাসনাতের পক্ষে। ওই নির্বাচনেও এসব চেয়ারম্যানেরা হাসনাত পরিবারের বিপক্ষে ছিলেন।

হাসনাত পরিবারের কাছে ধরাশয়ী জনপ্রতিনিধি ঐক্য ফোরাম

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে অনেকটা আওয়াজ দিয়েই নেমেছিলেন ৪টি ইউনিয়ন পরিষদে যেসব চেয়ারম্যান নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনে ভোটের ফলাফলে সেই সব সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের বাঘের গর্জন মিউয়ে গেল বিড়ালের গর্জনে। সোনারগাঁয়ের হাসনাত পরিবারের কাছে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে ধরাশয়ী হয়েছেন সাত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানও। যাদের মুলত নেতৃত্ব দিয়েছিলেন জনপ্রতিনিধি ঐক্য ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি স্থানীয় মহাজোটের এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা।

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে জনপ্রতিনিধি ঐক্য ফোরাম নামের সংগঠনটিতে ছিলেন আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান ৪ জন চেয়ারম্যান। এসব চেয়ারম্যানদের অনেকের রাজনীতির হাতেখড়িও হাসনাত পরিবারের মাধ্যমে। ঐক্য ফোরামে আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান ছাড়াও ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানও। সঙ্গে পৌর মেয়র সাদেকুর রহমান ভূঁইয়াও। আরও ছিলেন সাবেক বেশকজন জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও। এসব জনপ্রতিনিধিদের আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলের মনোনয়ন ও নির্বাচিত হতে হলে হাসনাত পরিবারের ছায়াতলে আবারো আসতে হবে বলে দাবি করেছেন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা ও বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে পরাজিত মাহফুজুর রহমান কালামের সোনারগাঁয়ের রাজনীতিও পড়তে যাচ্ছে বেশ সংকটে। এই দুই নেতার পক্ষে যারা অবস্থান নিয়েছেন ভবিষৎে তাদের কি হবে সেটা নিয়ে এখনই চলছে নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক আলোচনা।

গত ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে আওয়ামীলীগ পরিবার হিসেবে পরিচিত সেই হাসনাত পরিবারের উপরই আস্থা রেখেছে সোনারগাঁবাসী। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নানা জল্পনা কল্পনা গুজব প্রপাগান্ডার পর চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন হাসনাত পরিবারের সদস্য মোশারফ হোসেন। যার পক্ষে সরাসরি মাঠে কাজ করেছিলেন আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত। মুলত হাসনাত পরিবারের রাজনীতি টিকিয়ে রাখতেই এখানে নৌকা প্রতীকটি হাসনাত পরিবারের উপর তুলে দেন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় নির্বাচনের স্বার্থে এখানে মহাজোটকে দুইবার আসনটি ছেড়ে দিলেও এবার সুযোগ করে দেয় হাসনাত পরিবারকে। আর ভোট দিয়ে হাসনাত পরিবারকেই বেছে নিয়েছেন সোনারগাঁয়ের মানুষ।

স্থানীয়রা বলছেন, নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণকে ঘিরে অস্তিত্বের লড়াইয়ে নামেন নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনের মহাজোটের এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা ও সোনারগাঁয়ের আওয়ামীলীগের পরিবার হিসেবে পরিচিত পাওয়া হাসনাত পরিবার। নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক পেয়েছেন হাসনাত পরিবারের সদস্য মোশারফ হোসেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্ধি আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকে লড়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান কালাম। এখানে মুলত মুল লড়াইটাই হয়েছে বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা ও আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতের মধ্যে। খোকা ছিলেন কালামের পক্ষে আর মোশারফের পক্ষে ছিলেন কায়সার।

স্থানীয়রা আরও বলছেন, এখানে নির্বাচনে মাহফুজুর রহমান কালাম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে হুমকির মুখে পড়তো হাসনাত পরিবার এবং হাসনাত পরিবারের দুই সদস্য কায়সার হাসনাত ও মোশারফ হোসেনের রাজনীতি। আবার মোশারফ হোসেন নির্বাচিত হওয়ায় এখন সোনারগাঁয়ে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে হুমকির মুখে পড়লেন কালাম। সেই সঙ্গে চরম বিপাকে থাকবেন মহাজোটের এমপি লিয়াকত হোসেন খোকাও। সোনারগাঁয়ে তার প্রভাব বিস্তার নড়বড়ে হয়ে যাবে।

এর কারন হিসেবে সোনারগাঁয়ের মানুষ বলছেন, এখন উপজেলা পরিষদের যাবতীয় কাজ ও নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে হাসনাত পরিবারের হাতে। স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার এখন জাতীয় সংসদে আইন প্রণয়ন ছাড়া আর কিছুই থাকবেনা সোনারগাঁয়ে। এমপি খোকা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করলে এখন এমপি খোকা ও মোশারফ হোসেনের লোকজনদের সঙ্গে হানাহানি মারামারি কিংবা টেহুারবাজি নিয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে বলেও সেটা অনুমেয়। এক্ষেত্রে সোনারগাঁয়ে এমপি খোকার প্রভাব একেবারেই শূণ্যের কোঠায় চলে যেতে পারে। সেই সঙ্গে এমন পরাজয়ের ফলে সোনারগাঁয়ে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে বর্তমানের প্রভাব হারাবেন কালাম। এখন হয়তো আবারো তাকে হাসনাত পরিবারের ছায়াতলে আসতে হতে পারে। ভবিষৎে জাতীয় নির্বাচন কিংবা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দাড়ানোর স্বপ্ন দেখাটাই তখন কালামের জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে ওঠতে পারে। সঙ্গে সোনারগাঁয়ে আবারো প্রভাব ফিরে পেতে যাচ্ছে হাসনাত পরিবার। হয়তো সোনারগাঁও থেকে নারায়ণগঞ্জে ফিরে আসতে হবে এমপি খোকাকে।

আবার অনেকেই বলছেন, যদি কালাম ঘোড়া প্রতীকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে যেতো তাহলে সোনারগাঁয়ে আওয়ামীলীগের ঐতিহ্যবাহী হাসনাত পরিবারের রাজনীতি শেষের দিকে চলে যেতো। তখন সোনারগাঁয়ে আওয়ামীলীগের রাজনীতির একক কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রন চলে যেতো কালামের হাতে। কালামের হাত ধরে সোনারগাঁয়ে টিকে থাকতে পারতেন এমপি খোকাও। সেই লড়াইয়ের কারনেই এমপি খোকা ওঠে পড়ে লেগেছিলেন কালামের পক্ষে বিজয়ের মালা ছিনিয়ে আনতে। কালামের পক্ষেই অবস্থান নিয়ে প্রতিশোধের সুুযোগ নিতে চেয়েছিলেন গোয়ালদির সেই সাবেক এমপি আনম বাহাউল হকও। কারন ২০০১ সালে হাসনাত পরিবারের বিরোধীতার কারনেই পরাজিত হয়েছিলেন বাহাউল। যে কারনে বাহাউলের ভাই সোনারগাঁয়ের পৌর মেয়র সাদেকুর রহমান, শিল্পপতি ফেরদৌস ভূঁইয়া মামুন ও জেলা পরিষদের সদস্য ফারুক ভূঁইয়া কাজ করেছিলেন কালামের পক্ষে। তবে অস্তিতের লড়াইয়ে হাল ছাড়েনি হাসনাত পরিবার। ফলের জয়ের মালা গলায় নিয়ে এখন টিকে রইলো হাসনাত পরিবার।

এদিকে ঘোড়া প্রতীকে লড়েছিলেন আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মাহফুজুর রহমান কালাম। তিনি ঘোড়া প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে ছিলেন। তার পক্ষে ছিলেন স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। নির্বাচনের আগে ঘোড়া প্রতীকের পক্ষে কাজ করার অভিযোগে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী এলাকা ছাড়তে খোকাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

অন্যদিকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোশারফ হোসেনের পক্ষে মাঠে কাজ করেছিলেন সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর চৌধুরী বিরু, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক এএইচএম মাসুদ দুলাল, উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া।

যদিও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান আহমেদ মোল্লা বাদশা কাজ করেছিলেন বিদ্রোহী প্রার্থী কালামের পক্ষে। কালামের পক্ষে কাজ করেছিলেন উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচিত চেয়ারম্যান জহিরুল হক, ইউসুফ দেওয়ান, আব্দুর রউফ মোল্লা, আব্দুর রব, হা-মীম শিকদার শিপলু, মোশারফ ওমর, ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম, সোনারগাঁও পৌর মেয়র সাদেকুর রহমান ভূঁইয়া এবং পৌরসভায় নির্বাচিত কাউন্সিলর ও ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ডে নির্বাচিত অন্তত ৯০ জন মেম্বারগণ। এসব চেয়ারম্যানদের অনেকেই নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু তারা কাজ করেছিলেন নৌকার বিরুদ্ধে গিয়ে ঘোড়া প্রতীকের পক্ষে।

এখানে উল্লেখ্যযে, গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনে মহাজোটের শরীক দল জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে মনোনয়ন পান বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। ওই নির্বাচনে আওয়ামীলীগের সঙ্গে বিদ্রোহী করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত ও মোশারফ হোসেন। মনোনয়ন বাছাইয়ে মোশারফ হোসেনের মনোনয়ন বাতিল হয়ে গেলে সিংহ প্রতীকে নির্বাচনে লড়াইয়ে নামেন কায়সার হাসনাত। কিন্তু নির্বাচনের ৭২ ঘন্টা পূর্বে কায়সার হাসনাতের বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। তারপর নির্বাচন থেকে সরে দাড়ান তিনি। ওই নির্বাচনে খোকার পক্ষে কাজ করেছিলেন কালাম এবং মোশারফ হোসেন কাজ করেছিলেন কায়সার হাসনাতের পক্ষে।

ভারতে হাসপাতালে ভর্তি স্বেচ্ছাসেবক দল সেক্রেটারি রানা, দোয়া প্রার্থনা

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত ইসলাম রানা চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছেন। তিনি তার সুস্থ্যতা কামনায় সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছেন। দীর্ঘদিন যাবত তিনি নানান জটিল রোগে ভুগছিলেন।

জানাগেছে, ১ এপ্রিল সোমবার তিনি ভারতের চেন্নাইয়ের উদ্দেশ্যে বিমানযোগে রওনা দেন। বর্তমানে তিনি চেন্নাইয়ের এ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। সাখাওয়াত ইসলাম রানা নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর দলের সকল আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভুমিকা রেখে আসছিলেন। আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে তিনি ইতিমধ্যে অসংখ্য রাজনৈতিক মামলায় আসামী হয়েছেন। কারাগারে থাকা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজপথের আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভুমিকা রেখে আসছিলেন।

নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে কাজী মনির ও মামুন মাহামুদেই আস্থা

আবদুল্লাহ আল মামুন, বিশেষ প্রতিবেদক:

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতৃত্ব কাজী মনিরুজ্জামান মনির ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহামুদের উপর আস্থা রাখছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। একই সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের কাছেও গ্রহণযোগ্য কাজী মনির ও মামুন মাহামুদের জেলা বিএনপির কমিটি। যে কারনে আংশিক কমিটি থেকে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতেও তাদের দুজনকে নেতৃত্বে রেখেই সাজিয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি। ইতিমধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন হলেও তা প্রকাশ করা হয়নি কৌশলগত কারনে।

নারায়ণগঞ্জের নেতাকর্মীরা বলছেন- প্রায় দেড় যুগ পর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হলো। এটা কাজী মনির ও মামুন মাহামুদের বিরাট সফলতা হিসেবেই দেখছেন নেতাকর্মীরা। এর আগে দেড় যুগেও বিএনপিকে কুক্ষিগত করে রাখায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি নারায়ণগঞ্জে। আংশিক কমিটির এক বছরের মাথায় এই পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে সক্ষম হয়েছেন কাজী মনির ও মামুন মাহামুদ।

নেতাকর্মীরা বলছেন- সারাদেশে বিএনপির এখন ক্রান্তিকাল চলছে। একইভাবে রাজনৈতিক সংকটে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপিও। এমন সময় যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে নারায়ণগঞ্জ বিএনপিকে সুসংগঠিত করে রাখছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুজ্জামান মনির ও সেক্রেটারি অধ্যাপক মামুন মাহামুুদ। ক্লিন ইমেজের দুই রাজনীতিকের উপর আস্থা রেখেছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। তাদের নেতৃত্বেই এগিয়ে যাচ্ছে জেলা বিএনপি। কাজী মনির নিজেই একজন শিল্পপতি। যে কারনে তিনি কোন ব্যবসায়ী কিংবা হাউজিং প্রতিষ্ঠান থেকে তহরী আদায় করে নিজের পকেটে ভরছেন না। নিজের পকেটের টাকা দিয়েই নেতাকর্মীদের জামিনের ব্যবস্থা করছেন তিনি। দলের চেয়ার ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা তিনি আয়ও করছেন না। একই ভাবে মামুন মাহামুদ একজন শিক্ষক। দুজনই রাজনীতিতে ভদ্র হিসেবে পরিচিত।

নেতাকর্মীরা আরও জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে কাজী মনির ও মামুন মাহামুদের যোগ্য নেতৃত্বে স্বাধীনতা দিবসে নেতাকর্মীরা শোডাউন দিয়েছেন। এসব কারনে তৃণমূল নেতাকর্মীরা কাজী মনির ও মামুন মাহামুদের উপরই আস্থা রাখতে চান। তাদের নেতৃত্বেই আগামীতে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার আন্দোলন সংগ্রাম জোড়ালো হবে বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা।

নেতাকর্মীদের দাবি- নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনির নারায়ণগঞ্জ জেলার সকল নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে এক সাথে রাজনীতি করতে চান। তিনি চান না নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির মধ্যে কোন বিভেদ থাকুক। যদিও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কিছু কিছু নেতাকর্মী দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কাজী মনির মনে করেন সকলের একত্রে মিলেমিশে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের মাধ্যমেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব। আর সে লক্ষেই এগিয়ে যাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক।

সোনারগাঁয়ে ভোট শেষে ফেরার পথে ট্রলার ডুবি: দুই দিনেও নদীতে নিখোঁজ ২

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষে ফেরার পথে শম্ভুপুরা ইউনিয়নের চরহোগলা এলাকায় মেঘনা নদীতে ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ তিন জনের মধ্যে একজন নারী আনসার সদস্যের লাশ খুঁজে পেলেও এখনো নিখোঁজ রয়েছেন নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসার, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মেঘনা শাখার ব্যবস্থাপক বোরহান উদ্দিন ও পুলিশের টিএসআই সেলিম মিয়া।

৩১ মার্চ রবিবার সন্ধায় ট্রলার ডুবির পর গত ২ দিন ধরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের ২টি ইউনিট ও সোনারগাঁ থানা পুলিশ একটি দল ঘটনাস্থল ও তার আশপাশের বিভিন্ন স্থানে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে এখনো নিখোঁজ দুইজনের সন্ধান মেলাতে পারেনি।

এদিকে, তাদের নিখোঁজ ২ জনের সন্ধান না পেয়ে সন্ধ্যায় আজকের মত উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত করেছে ডুবুরি দল। তবে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার জানিয়েছেন তাদের উদ্ধার করার জন্য আরো ২/১দিন অভিযান চলবে।

এদিকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন শেষে ট্রলার যোগে ফেরার পথে ঝড়ের কবলে ট্রলার ডুবির ঘটনায় উদ্ধার হওয়া আহতদের দেখতে হাসপাতালে আসেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলাল উদ্দিন। ১ এপ্রিল সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়া আহত ১২ জনকে দেখতে আসেন তিনি। এসময় ইসি সচিব আহতদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন এবং তাদের সহানুভূতি জানান।

এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, এ দূর্ঘটনা অত্যন্ত দু:খজনক। এটি প্রাকৃতিক দূর্যোগ যে কোন সময়, যে কেউ এমন দূর্যোগের শিকার হতে পারেন। তবে আরো সতর্ক হলে দূর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা এড়ানো যেতো।

বিগত নির্বাচনে এখানে স্পিডবোটের ব্যবস্থা থাকলেও এ নির্বাচনে ট্রলারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। কোন অনিয়ম হলে এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

তিনি আরো বলেন, দূর্ঘটনার শিকার আহত প্রত্যেককে ইসির পক্ষ থেকে ২০ হাজার ও নিহতদের পরিবারকে সাড়ে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।

এসময় ইসি সচিবের সাথে উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো: রাব্বী মিয়া, সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার, সোনারগাঁও নির্বাচন কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন, সোনারগাঁও থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান, উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: হালিমা খাতুনসহ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা।

১ এপ্রিল সোমবার সকালে রিতা আক্তার নামের এক নারী আনসার সদস্যের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত রবিবার নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা ২২জন নির্বাচন পরিচালনা সদস্য নিয়ে মেঘনা নদীতে ঝড়ের কবলে পড়ে তাদের বহনকারী ট্টলারটি। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন প্রিজাইডিং অফিসার ও পুলিশ কর্মকর্তাসহ দুইজন।

মাদক বিক্রির সহযোগীতায় শামীম ওসমানের শ্যালক, ৬৮ জন গ্রেপ্তার

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় মেরী এন্ডারসন নামের একটি জাহাজের বারে অভিযান চালিয়ে ৬৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এ সময় বিপুল পরিমান বিয়ার ও মদ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় ওই ৬৮ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়।

এ মামলায় নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী এমপি একেএম শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর মাহামুদ টিটুর বিরুদ্ধে মাদক বিক্রির সহযোগীতার অভিযোগ আনা হয় মামলার এজাহারে। তানভীর মাহামুদ টিটু নারায়ণগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জের এলিট শ্রেণির ক্লাব খ্যাত নারায়ণগঞ্জ ক্লাব লিমিডেটের সভাপতি।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছে, ১ এপ্রিল সোমবার রাত সাড়ে ১১ টায় ফতুল্লায় মেরী এহুারসন জাহাজের বারে অভিযান চালায় নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। সেখান থেকে ৬৮জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় ৪২ বোতল বিদেশী মদ, ৭৫ বোতল দেশী কেরো মদ, বিভিন্ন প্রকারের এক হাজার ৯’শ ২০ ক্যান বিয়ার এবং মাদক বিক্রির ৪৮ হাজার ৯’শ ৩০ টাকা উদ্ধার করা হয়। ্এসব বিক্রির বৈধ কোন কাগজ মেরী এন্ডারসন বারের কর্র্তৃপক্ষ দেখাতে পারেনি।

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্র নিয়ন্ত্রন আইনের ৩৬(১) এর টেবিল ২৪(গ)/২৫ ধারায় মামলা দায়ের করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

মামলায় এজাহারে পুলিশ দাবি করেছে- মামলায় ২৬ নং আসামী থেকে ৬৮ নং আসামীরা মাদকদ্রব্য সেবনের কোন প্রকার পারমিট দেখাতে পারেনি। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মামলার ১নং আসামী থেকে ১৫ নং আসামী জানায় বারের মালিক সঞ্চয় রায় তানভীর আহমেদ টিটুর সহযোগীতায় নারায়ণগঞ্জ ক্লাব সহ দেশের বিভিন্ন স্থান হতে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন যাবত মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে জাহাজে রেখে অবৈধভাবে মাদক ব্যবসা করে আসছিল এবং উঠতি বয়সের যুব সমাজকে ধ্বংসের মুখে ধাবিত করেছে।

এখানে উল্লেখ্যযে, গত শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের এমপি শামীম ওসমানের প্রধান ঘনিষ্ঠ কর্মী মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহনিজামের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে নিয়ে বিরুপ মন্তব্যের অভিযোগে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি জিডি দায়ের করেন থানার ওসি শাহ মোহাম্মদ মঞ্জুর কাদের। তারপর দিন শনিবারই দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান শাহনিজাম। সোমবার ওই ওসি মঞ্জুর কাদেরকে ঢাকায় এসবিতে বদলী করা হয়েছে।

এর আগে নারায়ণগঞ্জ শহরের নিতাইগঞ্জ এলাকায় শামীম ওসমানের অনুগামী সিটি কর্পোরেশনের ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কবির হোসেন ও সাবেক কাউন্সিলর মহানগর শ্রমিকলীগের সেক্রেটারী কামরুল হাসান মুন্না সহ ২২জনকে গ্রেপ্তার করে প্রত্যেককে ৭ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠায় পুলিশ।

ইতিমধ্যে মামলা হয়েছে শামীম ওসমানের একমাত্র পুত্র অয়ন ওসমানের শ্যালক বিকির বিরুদ্ধেও। ফতুল্লার কুতুবপুরের সন্ত্রাসী মীর হোসেন মিরুর বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জে বর্তমান পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ যোগদানের পর জেলায় প্রায় ৭ শতাধিক মাদক বিক্রেতাকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অনেক সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ ভূমিদস্যূদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলেই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ সুপার। যে কারনে নারায়ণগঞ্জের মানুষ বর্তমান পুলিশ সুপারের প্রসংশায় পঞ্চমুখ।

ভোট শেষে ফেরার পথে ট্রলার ডুবি, নারী আনসার সদস্যের লাশ উদ্ধার

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ও গণনা শেষে উপজেলার চরাঞ্চল চরহোগলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র থেকে নদী পথে ট্রলারযোগে নির্বাচনী সরঞ্জামসহ ফেরার পথে ঝড়ের কবলে ট্রলার ডুবির ঘটনায় ৩জন নিখোঁজ হন। ১ এপ্রিল সোমবার সকালে রিতা আক্তার নামের এক নারী আনসার সদস্যের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

গত রবিবার নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা ২২জন নির্বাচন পরিচালনা সদস্য নিয়ে মেঘনা নদীতে ঝড়ের কবলে পড়ে তাদের বহনকারী ট্টলারটি। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন প্রিজাইডিং অফিসার ও পুলিশ কর্মকর্তাসহ দুইজন।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার শম্ভূপুরা ইউনিয়নের চরাঞ্চল মেঘনা নদী বেষ্টিত চরকিশোরগঞ্জ-চরহোগলা এলাকার চরহোগলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ ও ভোট গণনা শেষে নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের বহনকারী একটি ট্রলার সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদে ফিরছিলেন। ট্রলারটি মেঘনা নদীর মধ্যবর্তী স্থানে আসলে হঠাৎ শুরু হওয়া ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়।

এসময় পুলিশ সদস্য নুরুল ইসলাম (নায়েক), কনস্টেবল আরিফ, ওয়াকিল ইসলাম (পিসি), মাদ্রাসা শিক্ষক রুহুল আমিন, আনসার সদস্য ফরিদ, তাহের, হিমেল, রসিদ, মানিক মিয়া, আবু, দেলোয়ার হোসেন, খাদিজা বেগম, আকলিমা, রাজিয়া, ট্রলারের মাঝি শাহ পরানসহ প্রায় ১৭ জন সাঁতরিয়ে নদীর তীরে উঠে। কিন্তু ওই ট্রলারে থাকা প্রিজাইডিং অফিসার বোরহান উদ্দীন, নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের পিএসআই সেলিম মিয়া ও নারী আনসার সদস্য রিতা নিখোঁজ হন। রাতেই পুলিশ ও স্থানীয়রা উদ্ধার তৎপরতা চালালেও তাদের পাওয়া যায়নি।

পরে সোমবার সকালে চরহোগলা এলাকায় মেঘনা নদীর পূর্বপাড়ে আনসার সদস্য রিতার মরদেহ ভেসে উঠলে পুলিশ তা উদ্ধার করে। তবে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন প্রিজাইডিং অফিসার বোরহান উদ্দীন ও নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের পিএসআই সেলিম মিয়া। তাদের উদ্ধারে কাজ করছে পুলিশ, ডুবুরিদল ও স্থানীয়রা।

সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার জানান, ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলার ডুবির ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। নিখোঁজদের উদ্ধারের ব্যাপারে তিনিসহ স্থানীয় প্রশাসনের সবাই কাজ করছেন।

সর্বশেষ সংবাদ