সোনারগাঁয়ে মান্নানের পক্ষে মাঠে জামায়াতে ইসলামী

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির রাজনৈতিক সহায়ক শক্তি নারায়ণগঞ্জ ও সোনারগাঁ জামায়াতের আনুষ্ঠানিক সমর্থন পেলেন ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নœান। নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী বিএনপির নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম মান্নানের সঙ্গে জোট বেঁধে রাজনীতির মাঠে কাজ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উভয় জোটের কয়েকজন নেতা।

বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, ১২ ডিসেম্বর বুধবার সকালে ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নানের বসুন্ধরার বাসায় নারায়ণগঞ্জ জেলা ও সোনারগাঁও উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচনী মত বিনিময় ও নির্বাচন শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা হয় কিভাবে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীকে বিজয়ী করা যায়। এসময় জামায়াতে ইসলামীর নেতারা বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন।

এ সময় প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নান ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির মোঃ মোমিনুল হক, জাময়াত নেতা অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী খান, জেলা শূরা সদস্য মোঃ জাকির হোসাইন, জেলা জামায়াতের অর্থ সম্পাদক অ্যাডভোকেট দেওয়ান মোঃ খোরশেদ আলম, জেলা শূরা সদস্য ও সাদিপুর আলিম মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাঃ আবু জাফর, মোঃ আতাউল্লাহ, সোনারগাঁও জামায়াতের শূরা সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র মোঃ ইসহাক, জেলা ছাত্রদলের সেক্রেটারি খাইরুল ইসলাম সজিবসহ বিএনপি নেতা ও আজহারুল ইসলাম মান্নানের পিএস সেলিম হোসেন দিপু প্রমুখ।

নূর হোসেনের কালেক্টর ও তৈমূরের কর্মী গেল আওয়ামীলীগে

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী নূর হোসেনের নিয়ন্ত্রনে থাকা সিদ্ধিরগঞ্জে বেবী স্টান্ড থেকে চাঁদা কালেক্টর সেই টিএইচ তোফা আওয়ামীলীগে যোগদান করেছিলেন। এই তোফা ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের ঘনিষ্ট কর্মী।

এই টিএইচ তোফা একটি চুরি মামলায় এক সপ্তাহ জেল খেটে জামিনে বের হলে তৈমূর আলম খন্দকার তার বাসভবনে রাজকীয় সংবর্ধনাও দিয়েছিলেন। টিএইচ তোফা নূর হোসেনের কালেক্টর থাকাকালীন সময়ে তৈমূর আলমের ঘনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। তোফা জেলা তরুণ দলের সভাপতি ছিলেন। এর আগে জেলা তরুণ দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওসমান গনি বেলাল নামে একজন আওয়ামীলীগে যোগদান করেন।

এখানে আরও উল্লেখ্যযে, ২০১৪ সালে নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের মামলায় আসামী হয়েছিলেন নূর হোসেনের গানম্যান আনোয়ার হোসেন আশিক। তিনি ওই মামলার চার্জশিট থেকে অব্যাহতি পান। আসামী হয়ে পালিয়ে গেলেও অব্যাহতি পাওয়ার পর আশিক আওয়ামীলীগে যোগদান করেন। এই আনোয়ার হোসেন আশিক নূর হোসেনের গাণম্যান থাকাবস্থায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা শ্রমিকদলের সভাপতি পদে অধিষ্ট হন। এ পদে তাকে অধিষ্ট করেন কেন্দ্রীয় শ্রমিকদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের খাজা।

পরবর্তীতে তৈমূর আলম খন্দকারের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে আনোয়ার হোসেন আশিক। যার ফলশ্রুতিতে তৈমূর আলম খন্দকারের বাসায় মহানগর শ্রমিকদলের সম্মেলনে অনেকটা তৈমূর আলমের পরোক্ষ সমর্থনেই আনোয়ার হোসেন আশিককে মহানগর শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। এছাড়াও কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য মনোনয়ন বঞ্চিত শিল্পপতি মুহাম্মদ শাহআলমেরও ঘনিষ্ঠ কর্মী ছিল আনোয়ার হোসেন আশিক। এই আশিকের মাধ্যমেই সিদ্ধিরগঞ্জে শাহআলমের ব্যানার পোস্টার ফ্যাস্টুন লাগানো হতো। কারন ওই সময় আশিক দাপটশালী নূর হোসেনের গানম্যান ছিলেন।

জানাগেছে, ১১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে টিএইচ তোফার অনুসারী বেশকজন বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে ফুলের নৌকার মিছিল করে আওয়ামীলীগে যোগদান করেন। ওই সময় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি মজিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়ার হাতে ফুলের নৌকা দিয়ে যোগদান করেন।

ওই সময় কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন- থানা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক, প্রচার সম্পাদক তাজিম বাবু, সিদ্ধিরগঞ্জ আদমজী আঞ্চলিক শ্রমিক লীগের সভাপতি আব্দুস সামাদ বেপারী, থানা আওয়ামীলীগ সদস্য মো: বাদল হোসেন মেম্বার, মো: জাহাঙ্গীর আলম, থানা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল মজিদ ও মোতাহার হোসেন মনা প্রমুখ।

নারায়ণগঞ্জ জেলা তরুণ দলের সভাপতি ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি নেতা টিএইচ তোফার নেতৃত্বে বিএনপি কর্মী মোতালিব, আলী হোসেন, নাহিদ, মোমিন মিয়া, খোকা, কবির হোসেন, জাকির বেপারী, মহিদ, মনির হোসেন সহ বেশকজন বিএনপি নেতাকর্মী আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।

এ সময় টিএইচ তোফা তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, স্বাধীনতার স্থপতি জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও মুক্তিযোদ্ধের চেতনায় অনুপ্রানিত হয়ে আমার অনুগত বিএনপি নেতাকর্মীদের নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদান করেছি ।আওয়ামী লীগের আদর্শ বুকে ধারণ করে বাকী জীবন কাটানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বলে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন।

টিএইচ তোফার যোগদানের বিষয়ে আওয়ামীলীগ সভাপতি মজিবুর রহমান বলেন, আওয়ামীলীগ এমন একজন নেতার দল যার নেতৃত্বে এদেশ স্বাধীন হয়েছে। আজ তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়ন ও জনগণের জন্য নিরলসভাবে কাজ করছেন। তাই সবার উচিৎ দেশের উন্নয়নে এগিয়ে আসা। যারা আজকে আওয়ামীলীগে যোগদান করেছে তাদেরকে সকলকে স্বাগত জানাই।

এরশাদ নয় শেখ হাসিনাকেই প্রধানমন্ত্রী চাই: লাঙ্গলের প্রার্থী সেলিম ওসমান

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর-বন্দর) আসনের এমপি একেএম সেলিম ওসমান বলেছেন, এরশাদ নয় শেখ হাসিনাকেই প্রধাণমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই। এরশাদ যদি আমাকে দল থেকে বের করেও দেয় তাহলে আমার কিছু যায় আসে না। আমার হাত মুক্তিযোদ্ধার হাত তাই থাবাটাও মুক্তিযোদ্ধাদের মত কিন্তু আমি প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান হলেও আমি ভুলে যাইনি আমি মাছওয়ালা সেলিম ওসমান, আমি ফেরিওয়ালা সেলিম ওসমান। আওয়ামীলীগের সাথে ওসমান পরিবারের কখনো বিভেদ হতে পারেনা। আমার সঙ্গে আওয়ামীলীগের কোন শত্রুতা নাই। আমি কখনোই আওয়ামীলীগের কমেন্ট অমান্য করিনা।

১১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বন্দরের সোনাকান্দা সড়কে মহানগর আওয়ামীলীগ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেলিম ওসমান এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, কেউ আছে নৌকা করেন আবার আনারস করেন। পরে আবার ধানের শীষও করেন। এই রকম চিটা ধান নারায়ণগঞ্জবাসী চায় না। এই এলাকার মানুষ উন্নয়নে বিশ্বাসী। তাই তারা উন্নয়ন যে করে তাকেই ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে। আওয়ামীলীগ আমার প্রতি এত রাগ কেন? আমার তো কোন দোষ নাই। দোষ থাকলে আপনাদের সভাপতি রশিদ ও আনোয়ার সাহেবের। তারা তো একবারও আমার কাছে এসে কিছু বলেননি। তাহলে কেন আমার প্রতি এত বিষোধগার। আমি আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে ওয়াদা করেছিলাম নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের অত্যাধুনিক অফিস করব। আর সেই অফিসে বসেই আমি আওয়ামীলীগ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে নারায়ণগঞ্জে উন্নয়ণমুলক কাজ করব। জোহা পরিবার কখনো আওয়ামীলীগের শত্রু নয়। যেখানে আওয়ামীলীগ সেখানেই জোহা পরিবার। আমাকে যে যাই বলুক সাধারণ মানুষের জন্য আমি কাজ করবই। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমি কাজ করবই। সর্বোপরি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আসতে হবে।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়পার্টির আহ্বায়ক সভাপতি আবুল জাহের, মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক সানাউল্লাহ সানু, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু, মহানগর আওয়ামীলীগের সহসভাপতি নুরুল ইসলাম চৌধুরী, বীরমুক্তিযোদ্ধা ওসমান গনি, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদা মালা, যুগ্ম সম্পাদক জিএম আরমান, বন্দর থানা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবেদ হোসেন, বন্দর থানা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট হাবিব আল মুজাহিদ, বন্দর থানা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক রাফিয়ান আহমেদ, বন্দর থানা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম রাজা, এসআই জুয়েল, মহানগর যুব মহিলালীগের নেত্রী নুরুন নাহার সন্ধ্যা, ঢাকা বিভাগীয় শ্রমিকলীগের আহ্বায়ক আশাদুজ্জামান খোকন, ২৩নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা সামসুজ্জামান, মশিউর রহমান সুজু, মোকাদ্দেছ আলী আঙ্গুর, আজিজ মিয়া, ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফয়সাল মোহাম্মদ সাগর, বন্দর থানা যুবলীগ নেতা অহিদুজ্জামান, মোঃ ফারুক, আমজাদ, সেলিম, ২০নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা ডা.শফিউল্লাহ, এমএ কাইয়ুম, আমানউল্লাহ আমান, ২১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেত্রী রাশিদা বেগম, সালাউদ্দিন ও নাজমুল প্রমূখ।

ভোট চেয়ে খালেদা জিয়ার জন্য কাঁদলেন মান্নান

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

দীর্ঘ ১০ মাসের বেশি সময় ধরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে বন্দি রয়েছেন এমন কথা বলেই কেঁদে ফেলেন নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসন থেকে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে মনোনিত প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নান। মান্নানের কান্নায় তখন উপস্থিত নেতাকর্মীদের চোখেও জল এসে যায়।

জানাগেছে, নারয়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বিএনপির নির্বাচন কেন্দ্রীক কেন্দ্র ভিত্তিক ইউনিয়ন কমিটি পিরোজপুর এলাকায় কর্মীসভায় কাঁদলেন আজহারুল ইসলাম মান্নান। তিনি বলেন, দেশমাতা খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য যে কোন ত্যাগের বিনিময় হলেও ভোট কেন্দ্রে অটল থাকতে হবে। মনে রাখবেন যত গর্জে তত বর্ষে না। আপনারা জানেন এই সরকারের আমলেই উপজেলা নির্বাচনে আপনারা ভোট দিয়েছেন। সেই ভোট রক্ষা করেছি এবং রেজাল্ট নিয়ে বাড়ি ফিরেছি। এমপি নির্বাচনেও কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা। জনগণের ভোটাধিকার, গণতন্ত্র, বিচার ব্যবস্থা ও আমার মাকে মুক্তি করতেই আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা বিএনপি ঐক্যবদ্ধ আছি। আমাদের সামনে কারো বাউতাবাজি চলবে না। নারায়ণগঞ্জ-৩ সোনারগাঁ আসনে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের মনোনিত প্রার্থী বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম মান্নান এ সময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

১১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে সোনারগাঁও মেঘনা শিল্পাঞ্চল প্রতাপনগরে কর্মীসভায় পিরোজপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সিরাজুল হক ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আজহারুল ইসলাম মান্নান।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-পিরোজপুর ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি সিরাজুল হক ভূঁইয়া, সহ-সভাপতি বরকত মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন মেম্বার, সাবেক সভাপতি মনিরুজ্জামান, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম সজীব প্রমুখ।

ভোট কেন্দ্র পাহাড়া দিতে বললেন এসএম আকরাম

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়নগঞ্জ-৫ আসনের ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকে প্রার্থী এসএম আকরাম বলেছেন, আমরা ক্ষমতার জন্য নির্বাচন করছিনা। এ নির্বাচন জনগণের অধিকার আদায়ের নির্বাচন। আমাদেরকে বিজয়ী হতেই হবে। এটা আমাদের অস্তিত্বের লড়াই। সেই হিসেবে আমি নিজেকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে শক্তিশালী প্রার্থী মনে করি। আপনারা ভোট কেন্দ্র পাহাড়া দিবেন যেন কোন কুচক্র ভোটকেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার না করতে পারে। ইনশাহআল্লাহ বিজয়ের মালা আমাদেরই হবে।

১১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে বন্দর থানার আলীনগর এলাকায় কলাগাছিয়া ইউনিয়ন ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত নির্বাচিত মতবিনিময় সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসএম আকরাম আরো বলেন, আওয়ামীলীগের অনেক নেতা হাজার হাজার টাকা লুটপাট করেও বুক ফুলিয়া রাস্তায় হাটছে কিন্তু হয়ত সামান্য একটু গড়মিলের কারনে ম্যাডাম খালেদা জিয়াকে মাসের পর মাস জেলে পঁচতে হচ্ছে। এর মানেটা স্পট। তারা দেশনেত্রীকে ভয় পায়। তারা মামলা হামলা করে ভিতুর মত রাজনীতি করছে। এবার সময় এসেছে জনগণের রায়েই দেশনেত্রী কুৎসিত কারাগার ভেঙ্গে আবারো আমাদের মাঝে ফিরে আসবে।

এ মতবিনিময় সভায় এসএম আকরাম ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বন্দর পৌর বিএনপির সভাপতি নুর মোহাম্মদ পনেছ, থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক দুলাল হোসেন, থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মহিউদ্দিন শিশির, মহানগর যুবদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ছানোয়ার হোসেন, বন্দর থানা যুবদলের সভাপতি আমির হোসেন, থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি আমানউল্লাহ আমান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর মহিলা দলের আহ্বায়ক রাশিদা জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক সাজেদা খাতুন মিতা, মহিলা দলের নেত্রী সুলতানা বেগম, তাসলিমা বেগম, নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় সদস্য শিউলী সুলতানা রুবি, ছাত্রদল নেতা এমএএম সাগর ও রফিউদ্দিন আহমেদ রিয়াদ প্রমূখ।

চিটা ধান নারায়ণগঞ্জবাসী চায় না: সেলিম ওসমান

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর-বন্দর) আসনের এমপি একেএম সেলিম ওসমান বলেছেন, তিনি আরো বলেন, কেউ আছে নৌকা করেন আবার আনারস করেন। পরে আবার ধানের শীষও করেন। এই রকম চিটা ধান নারায়ণগঞ্জবাসী চায় না। এই এলাকার মানুষ উন্নয়নে বিশ্বাসী। তাই তারা উন্নয়ন যে করে তাকেই ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামীলীগ আমার প্রতি এত রাগ কেন? আমার তো কোন দোষ নাই। দোষ থাকলে আপনাদের সভাপতি রশিদ ও আনোয়ার সাহেবের। তারা তো একবারও আমার কাছে এসে কিছু বলেননি। তাহলে কেন আমার প্রতি এত বিষোধগার। আমি আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে ওয়াদা করেছিলাম নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের অত্যাধুনিক অফিস করব। আর সেই অফিসে বসেই আমি আওয়ামীলীগ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে নারায়ণগঞ্জে উন্নয়ণমুলক কাজ করব। জোহা পরিবার কখনো আওয়ামীলীগের শত্রু নয়। যেখানে আওয়ামীলীগ সেখানেই জোহা পরিবার। আমাকে যে যাই বলুক সাধারণ মানুষের জন্য আমি কাজ করবই। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমি কাজ করবই। সর্বোপরি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আসতে হবে।

১১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বন্দরের সোনাকান্দা সড়কে মহানগর আওয়ামীলীগ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেলিম ওসমান এসব কথা বলেন।

জাতীয়পার্টি তাকে বহিষ্কার করলেও কিছু যায় আসেনা দাবি করেন সেলিম ওসমান বলেন, এরশাদ নয় শেখ হাসিনাকেই প্রধাণমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই। এরশাদ যদি আমাকে দল থেকে বের করেও দেয় তাহলে আমার কিছু যায় আসে না। আমার হাত মুক্তিযোদ্ধার হাত তাই থাবাটাও মুক্তিযোদ্ধাদের মত কিন্তু আমি প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান হলেও আমি ভুলে যাইনি আমি মাছওয়ালা সেলিম ওসমান, আমি ফেরিওয়ালা সেলিম ওসমান। আওয়ামীলীগের সাথে ওসমান পরিবারের কখনো বিভেদ হতে পারেনা। আমার সঙ্গে আওয়ামীলীগের কোন শত্রুতা নাই। আমি কখনোই আওয়ামীলীগের কমেন্ট অমান্য করিনা।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়পার্টির আহ্বায়ক সভাপতি আবুল জাহের, মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক সানাউল্লাহ সানু, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু, মহানগর আওয়ামীলীগের সহসভাপতি নুরুল ইসলাম চৌধুরী, বীরমুক্তিযোদ্ধা ওসমান গনি, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদা মালা, যুগ্ম সম্পাদক জিএম আরমান, বন্দর থানা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবেদ হোসেন, বন্দর থানা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট হাবিব আল মুজাহিদ, বন্দর থানা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক রাফিয়ান আহমেদ, বন্দর থানা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম রাজা, এসআই জুয়েল, মহানগর যুব মহিলালীগের নেত্রী নুরুন নাহার সন্ধ্যা, ঢাকা বিভাগীয় শ্রমিকলীগের আহ্বায়ক আশাদুজ্জামান খোকন, ২৩নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা সামসুজ্জামান, মশিউর রহমান সুজু, মোকাদ্দেছ আলী আঙ্গুর, আজিজ মিয়া, ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফয়সাল মোহাম্মদ সাগর, বন্দর থানা যুবলীগ নেতা অহিদুজ্জামান, মোঃ ফারুক, আমজাদ, সেলিম, ২০নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা ডা.শফিউল্লাহ, এমএ কাইয়ুম, আমানউল্লাহ আমান, ২১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেত্রী রাশিদা বেগম, সালাউদ্দিন ও নাজমুল প্রমূখ।

সেলিম ওসমানের আসনে ‘বিএনপি নেতা বিকিকিনি’

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনে আবারো উপ-নির্বাচনের মতই বিকিয়ে যাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জের বিএনপি নেতারা। ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থী একেএম সেলিম ওসমানের নির্বাচনী সভায় গিয়ে সেলিম ওসমানকেই নির্বাচিত করার ঘোষণা দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি আতাউর রহমান মুকুল, সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত হাশেম শকু, দপ্তর সম্পাদক হান্নান সরকার ও বিএনপি নেতা সুলতান আহমেদ। এদের মধ্যে হান্নান সরকার নিজেই একটি অনুষ্ঠানে ঘোষণা দিয়েছেন সেলিম ওসমানকে এমপি নির্বাচিত করতে যত টাকা লাগবে তা হান্নান সরকার দিবেন। ফলে আবারো সামনে চলে আসছে বিএনপি নেতাদের কেনা বেচার বিষয়টি। এ আসনে বিএনপির কোন প্রার্থী না দিয়ে নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এসএম আকরামকে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনিত করে ঐক্যফ্রন্ট।

তবে বেশকটি সূত্রে জানাগেছে, এবারের নির্বাচনে বিগ এমাউন্ডের বাজেট রয়েছে বিএনপির কিছু নেতার জন্য। তারা হলেন- মহানগর বিএনপির সেক্রেটারি এটিএম কামাল, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীব ও মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের জন্য। এসবের মধ্যেস্থতা করবেন গত উপ-নির্বাচনের মতই নারায়ণগঞ্জের কিং মেকার খ্যাত বিএনপির সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী। মোহাম্মদ আলীও ইতিমধ্যে সেলিম ওসমানের নির্বাচনী সভায় গিয়ে তাকে নির্বাচিত করার ঘোষণা দিয়ে আসছেন। মোহাম্মদ আলীর মাধ্যমেই নারায়ণগঞ্জের বিএনপির যে সব নেতারা এতদিন সেলিম ওসমানের সঙ্গে ছিলেন না তাদেরকে মুল টার্গেট রয়েছে কেনার। তবে অনেকেই বলেছেন, ইতিমধ্যে দেনদরবারও চলছে। এদের কেউ কেউ আবার আশায় রয়েছেন এসএম আকরাম আর্থিক সুবিধা নিয়ে টেনে নেন কিনা।

এসব নেতাদের ছাড়াও সেলিম ওসমানের পক্ষে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন সিটি কর্পোরেশনের বিএনপির ১৬ জন কাউন্সিলর। যাদের মধ্যে শওকত হাসেন শকু, হান্নান সরকার, সুলতান আহমেদ, এনায়েত হোসেন, গোলাম নবী মুরাদ ইতিমধ্যে সেলিম ওসমানের পক্ষে মাঠে নেমেছেন। এছাড়াও রয়েছেন শহর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি জমসের আলী ঝন্টু কমিশনার যিনি আগে থেকেই সেলিম ওসমানের হয়ে কাজ করছেন।

যা ঘটেছিল ২০১৪ সালের ২৬ জুন উপ-নির্বাচনে: ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। ওই নির্বাচনে এ আসনে মহাজোটের শরীক দল জাতীয়পার্টি থেকে মনোনয়ন পান প্রয়াত নাসিম ওসমান। ওই নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পান কেন্দ্রীয় শ্রমিকলীগের সভাপতি শুক্কুর মাহামুদ। আওয়ামীলীগ এ আসনটি জাতীয়পার্টিকে ছেড়ে দিলে শুক্কুর মাহামুদ তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন এবং বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় এমপি নির্বাচিত হন নাসিম ওসমান। ওই বছরের ৩১ এপ্রিল নাসিম ওসমান মৃত্যুবরণ করেন।

নাসিম ওসমানের মৃত্যুর পর এ আসনে ওই বছরের ২৬ জুন উপ-নির্বাচনে মহাজোটের লাঙ্গল প্রতীকে প্রার্থী হন সেলিম ওসমান। ওই নির্বাচনেও সেলিম ওসমানের পক্ষে মাঠে নামেন বিএনপির সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন এসএম আকরাম। নির্বাচনের সময় সেলিম ওসমানের মতবিনিময় সভায় নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে গিয়েছিলেন তৎকালীন শহর বিএনপির সভাপতি প্রয়াত জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদ আহমেদ, সাবেক সহ-সভাপতি হাজী শাহিন, শহর মহিলা দলের সাবেক সেক্রেটারি দিলারা মাসুদ ময়নার মত নেতারাও।

বন্দরে সেলিম ওসমানের নির্বাচনী সভায় যান মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি আতাউর রহমান মুকুল ও হান্নান সরকার। সিটি কর্পোরেশনের ১৩নং ওয়ার্ডের প্রতিটি কেন্দ্রের দায়িত্বে ছিলেন শওকত হাসেম শকু। কাজ করেছিলেন শহর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি জমসের আলী ঝন্টুও। নির্বাচনে ভোট গ্রহণের দিন এ ওয়ার্ডের আশপাশেই দেখা গিয়েছিল জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীবকে। যদিও ওই সময় রাজীব দাবি করেছিলেন শুধুমাত্র তিনি নির্বাচনে ভোট গ্রহণের পরিবেশটি দেখতেই এক মুহুর্তের জন্য গিয়েছিলেন।

নির্বাচনের পূর্বে তৎকালীন শহর বিএনপির সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন দেওয়ানের উপর যায় খড়গ। এমন সব নেতারা সেলিম ওসমানের পক্ষে কাজ করলেও কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে না পারলেও আনোয়ার হোসেন দেওয়ানকে অব্যাহতি দেয় বিএনপি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে আনোয়ার হোসেন দেওয়ান সেলিম ওসমানের লাঙ্গল প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেছেন।

নির্বাচনে তৎকালীন শহর বিএনপির সেক্রেটারি এটিএম কামালের একটি বিবৃতি নিয়ে বিরোধীতা করেন শহর বিএনপির সহ-সভাপতি সুরুজ্জামান সহ অনেক নেতারা। কামালের বিবৃতিটি একজন প্রার্থীর পক্ষে চলে যাওয়ার কারনে রহস্যজনক ভুমিকায় এটিএম কামালকে বহিস্কার করার জন্য শহর বিএনপির নেতারা ডিআইটিতে বিএনপি কার্যালয়ে সভার আহ্বান করেন। ওই সভায় দলের কোরাম পূরন না হওয়ার কারনে এটিএম কামালকে বহিস্কার করা সম্ভব হয়নি।

ওই নির্বাচনের সময় আরো রহস্য দেখা যায়, যখন নির্বাচনের মাত্র ১৫ দিন আগেই তৎকালীন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার ও তার ভাই কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ দেশের বাহিরে চলে যান। দলের নেতাকর্মীদের কোন রকম নির্দেশনা না দিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করে অনেকটা সেলিম ওসমানকে সুযোগ করে দিয়ে তৈমূর আলম বিদেশে পাড়ি জমান। দেশের বাহিরে যান খোরশেদও।

নির্বাচনের আগের রাতে বিএনপি ও যুবদল ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের দেখা যায় নারায়ণগঞ্জের একটি অভিজাত ক্লাবে। মহানগর যুবদলের তৎকালীন যুগ্ম আহ্বায়ক সরকার আলম ওই ক্লাবে অনেক সময় পার করেও খালি হাতে ফিরে আসেন। যার ক্ষোভ তিনি পরের দিন স্থানীয় একটি পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘এটিএম কামাল ২ লাখ টাকা সেলিম ওসমানের কাছ থেকে নিয়েছেন। যা মোহাম্মদ আলীর মাধ্যমে দেয়া হয়।’ তবে নির্বাচনের দুইদিন আগে থেকেই ফতুল্লায় মোহাম্মদ আলীর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে সিরিয়াল ধরেছিলেন বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা। যাদের মধ্যে মহানগর বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম সজলও ছিলেন। ছিলেন শহর ও জেলা বিএনপির অনেক স্তরের নেতাকর্মীরা। অনেকে মোহাম্মদ আলীর সেই কার্যালয়ে খালি পকেটে ঢুকে ভরা পকেটে বের হন বলেও নেতাকর্মীরা মন্তব্য করেছিলেন। ওই নির্বাচনে সেলিম ওসমানের পক্ষে সরাসরি মাঠে ছিলেন মোহাম্মদ আলী।

এদিকে জানাগেছে, এবারের নির্বাচনেও তার ব্যতয় হবেনা। এবার বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন স্তরে ভাগ করে তাদের সেলিম ওসমানের পক্ষে নেয়ার কাজ চলছে। ইতিমধ্যে অনেকেই সেলিম ওসমানের পক্ষে নেমে পড়েছেন। বেশকজন রয়েছেন পর্যবেক্ষনে। কেউ কেউ যোগাযোগ শুরু করে দিয়েছেন মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে। যে কারনে বিএনপির নেতাকর্মীরা এখনও এসএম আকরামের ধীনের শীষের পক্ষে নামছেন না। আরও সুযোগ তৈরি হচ্ছে যখন মহানগর বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম চিকিৎসার জন্য যাবেন সিঙ্গাপুরে। এই সুযোগে পকেট ভারির জন্য বিএনপি নেতাকর্মীরা মুখিয়ে রয়েছেন। ফলে এবারের নির্বাচনে এসএম আকরামের পক্ষে বিএনপি নেতাকর্মীদের তেমন একটা দেখা নাও যেতে পারে। এসব নেতাদের লাঙ্গলের পক্ষে ভাগিয়ে নিতে পারলে তাদের অনুসারীদের প্রতি নির্দেশনা থাকবে এসএম আকরামের বিপক্ষে ভোট দেয়ার জন্য। ফলে ভোট পাবেন সেলিম ওসমান।

আজাদের পাশে বহিরাগত, নেই আড়াইহাজার বিএনপি

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ-২(আড়াইহাজার) আসনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী নজরুল ইসলাম আজাদের পাশে বহিরাগতদের বিচরণ। তার পাশে নেই আড়াইহাজার বিএনপি নেতাকর্মীরা। কারন গত কয়েক বছর ধরে আড়াইহাজারের রাজনীতিতে অবস্থান করে নেয়ার চেষ্টা করলেও তিনি আড়াইহাজারের বিএনপি নেতাকর্মীদের কাছে আসতে পারেননি। আড়াইহাজারের বাহিরে নারায়ণগঞ্জ জেলার অন্যান্য থানা ও মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে আড়াইহাজারে বিচরণ করেছিলেন। দলের মনোনিত প্রাথীর পক্ষে তাই নেই বিএনপি। তার সঙ্গে সার্বক্ষনিক রয়েছেন মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা। যে কারনে বর্তমান এমপি আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে মনোনিত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুর সঙ্গে লড়াইটারও সম্ভাবনা নেই।

এছাড়াও এ আসনের সাবেক এমপি আতাউর রহমান খান আঙ্গুুর ও উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমনের নিয়ন্ত্রনে যখন বিএনপি তখন কর্মী শূন্য নজরুল ইসলাম আজাদকে প্রার্থী করায় বিএনপি নেতাকর্মীরা এখনও মাঠে নামেননি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তখনকার বিএনপির মনোনিত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেননি আঙ্গুর। সেই দকল কুলিয়ে ওঠে পাস করতে পারেননি ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী এএম বদরুজ্জামান খান খসরু। এবার নজরুল ইসলাম আজাদের পক্ষে নেই খসরুর ছেলে মাহমুদুর রহমান সুমন ও আতাউর রহমান আঙ্গুর। ফলে নজরুল ইসলাম আজাদের জয়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ।

আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবু এক সময় আজাদের সঙ্গে থাকলেও কয়েক মাস আগে সেই সম্পর্কে ফাটল ধরে। আজাদের বিরুদ্ধে থানায় জিডিও করেছিলেন হাবিবুর রহমান হাবু। এখানে আড়াইহাজারে বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে অগ্রহণযোগ্য বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন অনু ও তার স্ত্রী মহিলা দলের সভাপতি পারভীন আক্তার ছাড়া আড়াইহাজারের কোন নেতা আজাদের পক্ষে নেই। আর পারভীন আক্তার আড়াইহাজার পৌরসভা নির্বাচনে দুইবার নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছেন। ফলে বুঝা যায় তাদের স্বামী স্ত্রীরও তেমন গ্রহণযোগ্যতা নেই এখানে।

নেতাকর্মীদের সূত্রে, আজাদের পাশে সার্বক্ষনিক দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সদস্য সাদেকুর রহমান সাদেককে। যিনি বসবাস করছেন ফতুল্লার কাশিপুর এলাকায়। তার পেত্রিক ভিটা আড়াইহাজারে হলেও আড়াইহাজারে তার কোন গ্রহণযোগ্যতা নেই। একইভাবে মহানগর বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম সজলও দৌড়াচ্ছেন আড়াইহাজারে। অথচ তার নামের উপর রয়েছে নানা বিতর্ক। তার সঙ্গে আবার মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রাফিউদ্দীন রিয়াদ, ছাত্রদল নেতা সাইফুল ইসলাম আপন, এরশাদ আলী সহ ছাত্রদলের বর্তমান সাবেক নেতাকর্মীদের অনেককেই নিয়ে পাড়ি জমিয়েছেন আড়াইহাজারে। সঙ্গে দৌড়াচ্ছেন মহানগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোয়াজ্জেম হোসেন মন্টিও। এসব নেতাদের দিয়ে আড়াইহাজারে আজাদ তার নির্বাচনী বৈতরনী পাড় হতে চাচ্ছেন। কিন্তু এদের কথায় আড়াইহাজারে দশটা ভোটও টানতে পারবেন না আজাদ।

এসব ছাড়াও রয়েছেন জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহামুদ উল্লাহ। যাকে ছাত্রদলের কমিটি গঠনের পূর্বে কেউ চিনতোইনা। মুলত আজাদের চাটুকার শ্রেণির একজন ওয়ার্ড পর্যায়ের কর্মী মাহামুদ উল্লাহকে জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে অধিষ্ট করিয়ে আনেন আজাদ। এদের ছাড়াও মহানগর ও জেলা ছাত্রদলের বেশকজন নেতাকর্মীও আড়াইহাজারে ধাবিয়ে বেড়াচ্ছেন যারা আড়াইহাজারের বাহিরে রাজনীতি করেন। আজাদের চাচা লুৎফর রহমান আবদু বিএনপির রাজনীতিতে তেমন সক্রিয় ছিলেন না। কিন্তু জেলা বিএনপির কমিটিতে তাকে সহ-সভাপতি পদে অধিষ্ট করিয়ে আনেন আজাদ। তিনি বিএনপির সমর্থক পর্যায়ের ভুমিকায়ও ছিলেন না এর আগে। আড়াইহাজারের বিএনপি ছাড়াই এখনও আড়াইহাজারে জনসমাগম দেখাতে পারেননি আজাদ। আঙ্গুুর ও সুমনের বাসায় গিয়ে আজাদ সাক্ষাত করলেও নেতাকর্মীদের প্রতি আঙ্গুর ও সুমনের কোন নির্দেশনা না থাকায় বিএনপি নেতাকর্মীরা চুপসে রয়েছেন।

সিংহ মার্কায় আলোচনায় দ্যা হিরো অব সোনারগাঁও

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

প্রায় এক যুগ পূর্বে বিটিভিতে একটি বিজ্ঞাপন ছিল সবচেয়ে আলোচিত। যে বিজ্ঞাপন চিত্রে মডেল হিসেবে ছিলেন আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত। সহজ সরল একজন সাংস্কৃতিকমনা মানুষ। দেখতে সুদর্শন। পিতা প্রয়াত আবুল হাসনাতের শক্তিশালী করে গড়ে তোলা সোনারগাঁও আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে পা দেন তিনি। বিএনপি জামাত জোট সরকার আমলে পুলিশের বেদম পিটুনির শিকার হন রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়ে। খেয়েছেন মামলা, করেছেন কারাভোগ। ওই সময় তরুণ কায়সার হাসনাতের রক্তমাখা ছবির পোস্টারে ছেয়ে যায় পুরো সোনারগাঁও। সোনারগাঁয়ে তার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগের আন্দোলন দৃষ্টি কেড়ে নেয় জাতীয় রাজনীতিতে। তৎকালীন সোনারগাঁও থানার ওসির নাম এখনও আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মনে হলে আতংকে ওঠেন তারা।

সাদা সিদে এই রাজনীতিক এমপি হওয়ার পর তার মাথায় কাঠাল ভেঙ্গে খেয়েছেন অনেকেই। কিন্তু বদনামের ঝুড়ি গিয়েছে কায়সার হাসনাতের নামে। সরলতার সুযোগ নিয়ে অনেকেই পকেট ভারি করেছেন। চাচা মোশারফ হোসেনের সঙ্গে বিরোধ বাধিয়ে সুবিধা আদায় করেছেন কেউ কেউ। কিন্তু এবার পাকাপোক্ত রাজনীতিক কায়সার হাসনাত মাঠ ছাড়ছেন না। সোনারগাঁও আওয়ামীলীগকে বাঁচাতে একাই মাঠে নড়ছেন তিনি। সঙ্গে যোগ দিয়েছেন তার চাচা মোশারফ হোসেন। রয়েছেন সোনারগাঁও আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণ। যে কারনে আবারো আলোচনায় সেই সাদা মনের মানুষ কায়সার হাসনাত। একজন ভদ্র ন¤্র রাজনীতিক মিথ্যা বলতে পারেননা, যে কারনে ইনিয়ে বিনিয়ে বানিয়ে মিথ্যার ফুলঝুড়ি নেই তার মুখে। তার বক্তব্যেও সেটা স্পষ্ট। মিথ্যা প্রতিশ্রুতি নেই তার মুখে। যে কারনে পারেননা তিনি অনড়গল বক্তব্য হৃদমে চালিয়ে যেতেও।

নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫টি সংসদীয় আসনের মধ্যে আলোচনায় এখন নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও)। এ আসনে তিনি আওয়ামীলীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন। এখানে এবারের নির্বাচনেও নৌকা প্রতীকের কোন প্রার্থী দেয়া হয়নি। মহাজোটের শরীক দল জাতীয়পার্টি থেকে এখানে গত নির্বাচনে বিনা ভোটে নির্বাচিত লিয়াকত হোসেন খোকাকে আবারো করা হয় মহাজোটের প্রার্থী। কিন্তু গত ৫টি বছরে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের যে দূর্দিন গিয়েছে সেই দিনের মুখোমুখী আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা আর হতে চাননা। সোনারগাঁয়ে জাতীয়পার্টির এমপি থাকার কারনে আওয়ামীলীগ সরকারের ক্ষমতায় থাকলেও সোনারগাঁও আওয়ামীলীগ ছিল বিরোধী দলের ভুমিকায়। এসব কারনে সোনারগাঁয়ের নেতাকর্মীরা বলছেন, আসলেই কায়সার হাসনাত হিরো। এখন সিংহ প্রতীক নিয়ে আলোচনায় দ্যা হিরো অব সোনারগাঁও।

জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত সিংহ প্রতীকে লড়াই করছেন। ১০ ডিসেম্বর সোমবার নারায়ণগঞ্জ জেলা রিটার্নিং অফিসার রাব্বী মিয়ার হাত থেকে সিংহ প্রতীক তুলে নেন কায়সার হাসনাত। ফলে এ আসনে মহাজোটের মনোনিত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার জয় এখন অনিশ্চিত। কেউ কেউ বলছেন এখানে লিয়াকত হোসেন খোকার জয়ের আশাই ছেড়ে দিয়েছেন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরাও। যে কারনে এখন সোনারগাঁও আওয়ামীলীগকে বাঁচাতে একটাই পথ সেটা হলো সিংহ মার্কায় ভোট দেয়া। যে কারনে খোকার পক্ষে এখনও নামেনি আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। তারাও বিষয়টি পর্যবেক্ষন করছেন। নিশ্চিত পরাজয় জানা প্রার্থীর পক্ষে লড়াই করার চেয়ে কায়সার হাসনাতের পাশে এসে দাড়ানোটাই হবে তাদের জন্য শ্রেয়।

সোমবার প্রতীক বরাদ্ধের পর সোনারগাঁয়ের নেতাকর্মীরা বলেছেন, সোনারগাঁয়ে বাঘের হাতেই সিংহ মার্কা। এ আসনে অন্তত ১০ জনের বেশি মনোনয়ন প্রত্যাশি মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু তারা সোনারগাঁও আওয়ামীলীগকে বাঁচাতে একাট্টা হননি। এখানে আনাড়ি ধাচের মনোনয়ন প্রত্যাশিদের ছড়াছড়ির কারনে আসনটিতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আনা সম্ভব হয়নি। কিন্তু এখন সোনারগাঁয়ে আওয়ামীলীগের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে সিংহ মার্কায় ভোট দেয়া ছাড়া আওয়ামীলীগের কোন পথ খোলা নেই। মহাজোটের প্রার্থীকে নিয়েও ধানের শীষ প্রতীকের সঙ্গে লড়াই করার মত অবস্থানও নেই। ফলে কায়সার হাসনাতকে নিয়েই চিন্তা ভাবনা করছেন নেতাকর্মীরা। এছাড়াও ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ব্যক্তি হিসেবেও দূর্বল। বৃহত দল বিএনপির কারনে মুলত কায়সার হাসনাতের সঙ্গে তার লড়াইটাই দেখছেন তারা।

তবে এ আসনে ভোটের হিসেবে রয়েছে নানান হিসেবে নিকেশ। যেখানে বিএনপির প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নানের বিপক্ষে রয়েছেন এ আসনের সাবেক এমপি রেজাউল করিম ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু জাফর। এই দুইজন নেতা পুরোদমে মান্নানের পক্ষে নির্বাচনী মাঠে না থাকলে মান্নানের জয়ের সম্ভাবনা কম। যদিও খন্দকার আবু জাফর এখানে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পেলেও তিনি মনোনয়ন পত্র দাখিলই করেননি। তিনি মান্নানের মনোনয়নের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এখানে রেজাউল করিমের বিশাল ভোট ব্যাংক রয়েছে। যার বেশির ভাগ ভোট চলে যাবে কায়সার হাসনাতের বাক্সে। কারন কায়সার যখন এমপি ছিলেন ওই সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর নির্যাতনের মাত্রা কমই ছিল।

এখানে আওয়ামীলীগের একটি অংশ কায়সার হাসনাতের সঙ্গে দূরত্ব রয়েছে এবং এমপি খোকা হলেন মহাজোটের প্রার্থী। সেই হিসেবে খোকার পক্ষেও থাকবে আওয়ামীলীগের একটি অংশ। তবে সেই ভোট জয়ের জন্য যথেষ্ট নয়। তিন প্রার্থীর মধ্যে কায়সার হাসনাতই সবচেয়ে বেশি এ আসনে জনপ্রিয়। নির্বাচনের হলফনামা থেকেও জানাগেল, শিক্ষাগত দিক থেকে কায়সার হাসনাত বিএসএস পাস আর বাকীরা কেউই প্রাইমেরী স্কুলের গন্ডি পেরুতে পারেননি। কায়সার হাসনাতের চাচা মোশারফ হোসেনও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করলেও তিনি আপীল করেও বৈধতা পাননি। তবে তিনি সোমবার কায়সার হাসনাতের পক্ষেই মাঠে নেমেছেন। তিনি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও গত নির্বাচনে তিনি আওয়ামীলীগের মনোনয়নও পেয়েছিলেন।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে এ আসনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পান উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন। ওই নির্বাচনে আওয়ামীলীগ তার মহাজোটের শরীক দল জাতীয়পার্টিকে এ আসনটি ছেড়ে দিলে মোশারফ হোসেন মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নেন। মোশারফ হোসেন কায়সার হাসনাতের আপন চাচা। ওই নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় এমপি নির্বাচিত হন লিয়াকত হোসেন খোকা। এর আগে সোনারগাঁয়ে কারো কাছেই এমপি খোকা পরিচিত ছিলেন না। সোনারগাঁয়ে জাতীয় পার্টির হাল ধরেছিলেন এরশাদের পালিত মেয়ে অনন্যা হুসেইন মৌসুমী।

সন্তুষ্ট করতে পেরেছি কিনা জানিনা : সেলিম ওসমান

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেছেন, আমি জানি না বিগত সাড়ে ৪ বছরে আমি গোগনগর ইউনিয়নবাসীকে উন্নয়ন কাজের মাধ্যমে সন্তুষ্ট করতে পেরেছি কিনা। বিগত দিনে আমি দেশের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য কাজ করেছি। আগামীতেও আপনাদের সবাইকে সাথে নিয়ে তাদের উজ্জল ভবিষ্যত গড়ে তুলতে কাজ করে যাবো। আর অতীতে যদি আমার কাজ করতে গিয়ে কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে সেই ভুলের জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থী। তবে ভবিষ্যতে আর এমন ভুল হবেনা। প্রতিটি এলাকার সাধারণ মানুষদের সাথে নিয়ে সকলের মতামতের ভিত্তিতে আমি ভবিষ্যত উন্নয়ন কাজগুলো পরিচালনা করবো।

১০ ডিসেম্বর সোমবার বিকেলে পুরান সৈয়দপুর বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গনে গোগনগর ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগনের উদ্যোগে ১৬ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সেলিম ওসমান আরও বলেন, আমার বাবা, দাদা ও আমার পরিবার সম্পর্কে আপনারা সবই জানেন। এই নারায়ণগঞ্জে বাইতুল আমানেই আওয়ামীলীগের জন্ম। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। কিন্তু আমার ভাইয়ের মৃত্যুর পর আমাকে জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচন করতে হয়েছে। আপনারা আমার পাশে থেকে আমাকে নির্বাচিত করেছেন। আমি জানি না আপনাদেরকে উন্নয়ন কাজ দিয়ে সন্তুষ্ট করতে পেরেছি কিনা। আমি আগামী প্রজন্মের জন্য কাজ করে, আগামী প্রজন্মের জন্য যেন একটি উজ্জল ভবিষ্যত রেখে যেতে পারি আপনাদের সকলকে সাথে নিয়ে সেই উজ্জল ভবিষ্যত দ্বার উম্মোচন করে যেতে চাই। আর এতে আপনাদের সহযোগীতা সব থেকে বেশি প্রয়োজন। বিগত দিনে আমি আপনাদের গোলামী করেছি। আগামীতেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে আবারো ক্ষমতায় আনতে এবং উনার হাতকে শক্তিশালী করতে আমি আবারো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজয়ী করতে এবং আবারো আপনাদের গোলামী করার জন্য আরেকবার সুযোগ চাই। এসেছি।

শিক্ষিত বেকার তরুণ-তরুণীদের প্রতি আহবান রেখে তিনি বলেন, এডিবি’র অর্থায়নে বিকেএমইএ তে প্রকল্প চলছে। এর আওতায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে তারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, নিজেদের কর্মসংস্থান তৈরি করছে। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের ছেলেমেয়েরা এখানে প্রশিক্ষন নিতে আগ্রহী হয় না। তোমাদের কাছে আমি আহবান রাখছি তোমরা এই প্রশিক্ষণটি নিয়ে নিজেদেরকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোল।

মত বিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ আলী, জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, মহানগর আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা পিপি অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন, গোগনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নওশেদ আলী, বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি জসিম উদ্দিন, জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার সালাউদ্দিন সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

সর্বশেষ সংবাদ