মনোনয়ন পায়নি বিএনপির হেভিওয়েট ও তিন সংস্কারবাদী

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫টি সংসদীয় আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট। বিএনপি থেকে মনোনয়ন পায়নি বিএনপির দল ভাঙ্গার ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে অভিযুক্ত সাবেক তিন এমপি সহ বিএনপির অন্তত ৮ জন হেভিওয়েট প্রার্থী। এখানে দুটি আসনে রয়েছে জাতীয়পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের দুজন প্রার্থী যারা বর্তমানে এমপি। অন্যদিকে বিএনপিতে তিনটি আসনে প্রার্থী দিলেও একটি আসনে ছেড়ে দিয়েছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে ও আরেকটি আসনে নাগরিক ঐক্যকে। দলের দুটি বড় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। সেই সঙ্গে দুটি দলের নেতাকর্মীদের মাঝেও হতাশা ফুঠে ওঠেছে। অনেক হেভিওয়েট প্রার্থীরা মনোনিত হতে পারেননি। এর মধ্যে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির মধ্যে রয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থীও।

জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫টি সংসদীয় আসনে ৬১ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছিলেন। যার মধ্যে ৪৭ জনের মনোনয়ন বৈধ ও ১৪ জনের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেছে নারায়ণগঞ্জ রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া। বাতিলের মধ্যে রয়েছে বিএনপির মনোনিত প্রার্থী জেলা বিএনপির সেক্রেটারি অধ্যাপক মামুন মাহামুদ ও বিএনপির প্রার্থী মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ এবং গত নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনিত প্রার্থী বর্তমানে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোশারফ হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন রয়েছেন। তবে ৫টি আসনের বর্তমান ৫ এমপির কারোরই মনোনয়ন বাতিল হয়নি। তারা ৫জনই আবারো মনোনিত হয়েছেন। তবে মনোনয়ন আপীল করে ফেরত পেয়েছেন মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন,মামুন মাহামুদ সহ ৭ জন।

নারায়ণগঞ্জ-১(রূপগঞ্জ) আসনের বর্তমান এমপি নৌকা প্রতীকে মনোনিত প্রার্থী গাজী গোলাম দস্তগীর। এখানে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির। প্রাথমিকভাবে চিঠি পেলেও চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন পাননি বিএনপির মনোনিত প্রার্থী চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভুইয়া। এখানে নির্বাচনে রয়েছেন কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী মঞ্জুরুল ইসলাম চন্দন, স্বতন্ত্র হাবিবুর রহমান, ইমদাদ উল্লাহ, আজম খান। এখানে মোট ১০ জন মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন। যাদের মধ্যে ৮ জনের মনোনয়ন বৈধ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী রেহেন আফজাল ও জাকের পার্টির প্রার্থী মাহফুজুর রহমানের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেন। তারা আপিলেও প্রার্থীতা ফিরে পাননি।

নারায়ণগঞ্জ-২(আড়াইহাজার) আসন থেকে আওয়ামীলীগের মনোনিত প্রার্থী বর্তমান এমপি নজরুল ইসলাম বাবু। এখানে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ। বিএনপির মনোনয়ন প্রাথমিকভাবে পেলেও বঞ্চিত হয়েছেন চাচা ভাতিজা বিএনপির মনোনিত প্রার্থী সাবেক এমপি আতাউর রহমান খান আঙ্গুর ও আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমন। নির্বাচনে রয়েছেন কমিউনিস্ট পাটির প্রার্থী হাফিজুল ইসলাম, জাকের পার্টির মুরাদ হোসেন জামাল, ইসলাম আন্দোলনের নাসির উদ্দীন।

নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসন থেকে জাতীয়পার্টির বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। তাকে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এখানে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান। তবে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পেলেও সোনারগাঁও বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু জাফর মনোনয়ন পত্রই দাখিল করেননি। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার, তরিকত ফেডারেশনের প্রার্থী মজিবুর রহমান মানিক, কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী আব্দুস সালাম বাবুল, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী সানাউল্লাহ নূরী, জেএসডির প্রার্থী ফখরুদ্দীন ইব্রাহীম, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ হোসেন জামাল, জাকের পার্টির প্রার্থী মোস্তফা আমির ফয়সাল ও কল্যান পার্টির প্রার্থী রাশেদ ফেরদৌস। তবে বাতিল হওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী গত নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে মনোনিত হওয়া মোশারফ হোসেন ও এরশাদের পালিত মেয়ে অনন্যা হুসেইন মৌসুমীর মনোনয়ন আপীলেও বাতিল করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী একেএম শামীম ওসমান। এখানে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের জেলার সভাপতি মুফতি মনির হোসেন কাসেমী। প্রাথমিকভাবে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য মুহাম্মদ শাহআলম ও জেলা বিএনপির সেক্রেটারি অধ্যাপক মামুন মাহামুদ। এখানে নির্বাচনে রয়েছেন বিএনপির বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন, জাতীয়পার্টির সালাউদ্দীন খোকা মোল্লা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী হিমাংসু সাহা, ন্যাপের প্রার্থী ওয়াজিবুল্লাহ অজু, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের প্রার্থী সেলিম মাহামুদ, কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী ইকবাল মাহামুদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্র্টির প্রার্থী মাহামুদ হোসেন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রার্থী জসিমউদ্দীন।

নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনে জাতীয়পার্টির প্রার্থী বর্তমান এমপি একেএম সেলিম ওসমান। তাকেও মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি লাঙ্গল প্রতীকে লড়বেন। এখানে ধানের শীষ প্রতীকে লড়বেন নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা সাবেক এমপি এসএম আকরাম। এখানে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন বিএনপির সাবেক এমপি আবুল কালাম ও মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। তবে খোরশেদের মনোনয়ন বাতিল হলে তিনি আপিল করেননি। এখানে নির্বাচনে রয়েছেন খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হাফেজ কবির হোসেন, সাম্যবাদী দলের প্রার্থী সাঈদ আহমেদ, বাসদের প্রার্থী আবু নাঈম খান বিপ্লব, কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী অ্যাডভোকেট মন্টু চন্দ্র ঘোষ, ইসলামিক ফ্রন্টের প্রার্থী বাহাদুর শাহ, জাকের পার্টির প্রার্থী হাসান জামাল, কল্যাণ পার্টির প্রার্থী আফতাব ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আবুল কালাম।

কথা কম কাজ বেশি করতে চাই : সেলিম ওসমান

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান বলেছেন, সবাই আমার মেয়াদকাল সাড়ে ৪ বছর বলেও আসলে আমি মাত্র ৪ বছর কাজ করতে পেরেছি। বাকি ৬ মাস একটি দলের আন্দোলনের কারনে রাজনৈতিক অস্থিরতা, নিজের অসুস্থ্যতা এবং নভেম্বর, ডিসেম্বর ২ মাস কাজ করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকায় সময় নষ্ট হচ্ছে। তাই এখন থেকে কথা কম বলে আর কাজ বেশি করতে চাই। আর অতীতে আমার যে ভুল হয়েছে ভবিষ্যতে আমি আর সেই ভুল করতে চাই না। অতীতের মত ভবিষ্যতেও আমি গোলামী করে যেতে চাই। তবে আর শুধুমাত্র নেতাদের সাথে কথা বলবো না এখন থেকে যাদের জন্য গোলামী করবো সেই আপনাদের প্রত্যেকের সাথে কথা বলবো। আপনাদের মাধ্যমে এলাকার উন্নয়ন কাজ করবো।

৮ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে বন্দর ইউনিয়নবাসীর উদ্যোগে কুশিয়ারী এলাকায় হাজী আব্দুল মালেক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত ১৬ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পাশাপাশি অতীতে কাজ করতে গিয়ে অজান্তে কোন ভুলে কারো মনে কষ্ট পেয়ে থাকলে তিনি এ জন্য সকলের উদ্দেশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন আহম্মেদ এর সভাপতিত্বে উক্ত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এমপি সেলিম ওসমানের সহধর্মিনী মিসেস নাসরিন ওসমান। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ার পর এমপি সেলিম ওসমানের কোন সভা মঞ্চে প্রথমবারের মত যোগ দিয়েছেন বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আতাউর রহমান মুকুল।

বিএনপি নেতা আতাউর রহমান মুকুল আলোচনা সভায় যোগ দেওয়ায় এমপি সেলিম ওসমান তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তাদের মধ্যে এমন সুসম্পর্ক যেন অটুট থাকে সকলের কাছে সেই দোয়া কামনা করেন। সভায় আতাউর রহমান মুকুল এসেছেন এতেই সেলিম ওসমান খুশি হয়েছেন বলে ঘোষণা দেন এবং উনাকে আজকে কোন বক্তব্য দিতে হবেনা বলে মন্তব্য করেন। কারন ২ নভেম্বর ময়মনসিংহপট্টি মাঠে বন্দরের সর্বস্তরের জনগনের উদ্যোগে ‘দল যার যার সেলিম ওসমান সবার’ স্লোগানে আয়োজিত সমাবেশে আতাউর রহমান মুকুলই নির্বাচনে প্রার্থী হতে সেলিম ওসমানকে সব থেকে বেশি চাপ দিয়ে ছিলেন তাই নতুন করে আর কিছু বলার প্রয়োজন নেই। কারন যারা আমার সাথে কাজ করেছেন রশিদ ভাই, জাহের ভাই, আতাউর রহমান মুকুল কেউ আমাকে ছেড়ে যাবেন না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মিসেস নাসরিন ওসমান বলেন, আমি এমপি সেলিম ওসমানের পক্ষে ভোট চাইতে আসি নাই। আপনার উনার জন্য শুধু দোয়া করবেন। উনি যেন সুস্থ্য থাকেন আল্লাহ যেন উনাকে দীর্ঘ হায়াত দান করেন। উনাদের প্রতি আপনাদের বন্দরের মানুষের ভালবাসা আমি দেখেছি। আপনারা যদি মনে করেন অতীতের মত ভবিষ্যতেও সেলিম ওসমানকে আপনারা পাশে পাবেন, উনাকে দিয়ে এলাকার উন্নয়ন হবে, সাধারণ মানুষ উপকৃত হতে পারবেন তাহলে আপনারা একটু বিবেচনা করে দেখবেন, আমি বলবো না উনাকে ভোট দেন। আসলে মার্কাটাই বড় ব্যাপার না। মার্কাটা হাতে নিয়ে কে দাড়িয়ে আছেন সেটাই বিবেচনা করে দেখতে হবে। আপনার ভোট আপনি দিবেন যাকে খুশি তাকে দিবেন। আপনারা শুধু উনার জন্য দোয়া করবেন। পাশাপাশি আপনারা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করবেন উনি যেন আগামীতেও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেলিম ওসমান আরো বলেন, আমাদের সকলের উচিত নারীদের সম্মান করা। প্রতিটি স্বামী যদি তার স্ত্রীর সাথে বন্ধুর মত সুসম্পর্ক রাখেন তাহলে দেখবেন সব কিছুতেই আপনারা সফল হবেন। আমি কখনো এলাকার মানুষের জন্য ভাল কোন কাজের জন্য অনুদান দিয়ে বাসায় ফিরলে আমার জন্য আমার স্ত্রী সহ আমার তিন মেয়ে আমার পছন্দের ভাল ভাল খাবার রান্না করে উপহার দেন। এতো ভাল ভাল খাবার উপহার পাওয়ার লোভে আমি আরো বেশি ভাল কাজ করতে চাই।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের আর ঘরে বসে থাকলে চলবে না। আপনারা নিজেরাই একেক জন সেলিম ওসমান হয়ে প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করবেন এবং সবাইকে বুঝাবেন আগামী আবারো কেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং উনার মনোনীত প্রার্থীদের বিজয়ী করা প্রয়োজন।

মত বিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম.এ রশিদ, মহানগর আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন, জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহবায়ক আফজাল হোসেন, মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক সানাউল্লাহ সানু, ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিউদ্দিন প্রধান, জেলা আওয়ামী মহিলালীগের সভানেত্রী ড. শিরীন বেগম, মহানগর আওয়ামী মহিলালীগের সভানেত্রী ইসরাত জাহান খান স্মৃতি, জেলা মহিলা পার্টির সভানেত্রী আঞ্জুমান আরা ভূইয়া, মহানগর সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহম্মেদ দুলাল প্রধান, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সাধারণ সম্পাদক শিপন সরকার সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা।

হবে নতুনের জয়গান : সেলিম ওসমান

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

২০১৯ সালের জানুয়ারীর প্রথম দিনের সূর্যটা যেন নতুন হয়। পুরনো দিনের গ্লানি ভুলে হবে নতুনের জয়গান। নতুনদের নিয়েই আমি কাজ করবো। আগামীতে নতুনদেরই হবে জয়গান। ভবিষ্যত বাংলাদেশ গড়তে এই নতুনরাই হবে অগ্র সৈনিক।

৮ ডিসেম্বর শনিবার সকাল ১১টায় বন্দর খেয়াঘাট সংলগ্ন সুরুজ্জামান টাওয়ারে এমপি সেলিম ওসমানের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও সেচ্ছাসেবকলীগের নেতাকর্মীদের সাথে মত বিনিময় সভায় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের এমপি সেলিম ওসমান এ আহবান করেন।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমরা তরুণ এখন তোমাদের রক্ত গরম। এই রক্ত যেন ঠান্ডা না হয়। ১৭১টি ভোট কেন্দ্র তোমাদেরকেই পাহাড়া দিয়ে নিরাপধ রাখতে হবে। আমি এমপি না হলে কিছু হবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। জনগন কেন সেলিম ওসমানকে ভোট দিবে সেটা তাদের বুঝাতে হবে। নির্বাচন নিয়ে যেন কোন বাড়াবাড়ি না হয়। শুধুমাত্র যার যার বাড়ির ভোটটা নিশ্চিত করবে। আবার এমন যেন না হয় তোমাদের অপরিকল্পিত লাগাতার মিছিল মিটিংয়ের কারনে তোমাদের বাবা-মা বিরক্ত হয়ে আমাকে অভিশপ না দেন। যেটাই করবে প্লানিংয়ের মাধ্যমে করতে হবে। নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লাঙ্গল। যেখানে নৌকা নাই সেখানে লাঙ্গলই শেখ হাসিনার মার্কা।

অতীতের ভুলের জন্য সকলের উদ্দেশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করে তিনি বলেন, অতীতে যদি আমার কাছে কোন ভূল থেকে থাকে তাহলে আমি সবার কাছে ক্ষমা চাই। অতীত ভুলে আমরা ভবিষ্যত নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে যাই। ভবিষ্যতে বন্দরের উন্নয়নে আমরা প্রতিটি এলাকায় তোমাদের নিয়ে ৫০ সদস্যের একটি উন্নয়ন কমিটি করবো এবং সেই কমিটির মাধ্যমেই তোমাদের মাধ্যমেই আমি ভবিষ্যত উন্নয়ন কাজ পরিচালাতি করবো।

মত বিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এ রশিদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহম্মেদ দুলাল প্রধান, সাংগঠনিক সম্পাদক রানা প্রধান, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, সাধারণ সম্পাদক হাসনাত রহমান বিন্দু, বন্দর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হাসান আরিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক খান মাসুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান কমল সহ সহ¯্রাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

মফিজুল ইসলাম ছিলেন রাজনীতির প্রবাদ পুরুষ: আবদুল হাই

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুহাম্মদ আবদুল হাই প্রয়াত আওয়ামীলীগ নেতা মফিজুুল ইসলাম সম্পর্কে বলেছেন, মফিজুল ইসলাম ছিলেন বাংলাদেশের আওয়ামী রাজনীতির প্রবাদ পুরুষ। তার মহানুভবতা আর ভালবাসায় আওয়ামীলীগ আজকে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। তাদের ঋণ শোধ করা সম্ভব নয়।

৮ ডিসেম্বর শনিবার সকাল ১১টায় আমরা মুজিব সেনা বন্দর থানা শাখার উদ্যোগে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জাতীয় কমিটির অন্যতম সদস্য জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক আহবায়ক মহান ভাষা সৈনিক মফিজুল ইসলামের রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও হতদরিদ্রদের মাাঝে শীতবস্ত্র বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রবীণ এ আওয়ামীলীগ নেতা আরো বলেন, ৩০ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের ভোটের লড়াই হবে। সেই লড়াইয়ে দেশের স্বার্থে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ম্যান্ডেট দিয়ে পূণরায় প্রধাণমন্ত্রী করতে হবে। শেখ হাসিনা প্রধাণমন্ত্রী হলে এদেশ উন্নয়নে পরিপূর্ণ হবে। শীতলক্ষ্যা সেতু, নীটপল্লীসহ সকল প্রকল্প দ্রুত বাস্তবাায়ন হবে।
সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম রবির সভাপতিত্বে ইসলামপুর জামে মসজিদ সংলগ্ন ময়দানে আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্বোধণ করেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু।

বন্দর থানা আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ শাহজাহান মিয়া ও আবদুল মতিন মাতবরের সঞ্চালনায় এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রয়াত মফিজুল ইসলামের মেয়ে আলেয়া মফিজ, সোনিয়া মফিজ, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য হাজী আমজাদ হোসেন, গোগনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জসিমউদ্দিন, প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা হাজী হাবিব আহাম্মদ সরদার, আবদুল বাতেন সরদার, হারুন অর রশীদ, হাজী আইয়ুব আলী, রতন খান, দীল মোহাম্মদ, শওকত আলী, মোবারক হোসেন, নুরুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, মোঃ মহিউদ্দিন প্রমুখ।

এতে দোয়া পরিচালনা করেন ইসলামপুর জামে মসজিদের খতিব ও পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা হাজী মোঃ মহিউদ্দিন রুমি। অনুষ্ঠানে প্রায় ৩শতাধিক দরিদ্রের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়।

সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমানের বিকল্প নেই: রবিউল হোসেন

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে এমপি সেলিম ওসমান ও এমপি শামীম ওসমানের বিকল্প নেই বলে দাবি করেছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি রবিউল হোসেন। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের পক্ষে ১৩নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ ও এর সকল সহযোগি সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত উঠান বৈঠকে এমন দাবি করেন রবিউল হোসেন।

৭ডিসেম্বর শুক্রবার গলাচিপা রুপারবাড়ী এলাকায় ১৩নং আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি রবিউল হোসেন উঠান বৈঠকে বলেছেন, দেশরতœ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আমাদের নেতা সেলিম ওসমানকে মনোনীত করেছেন। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য কাজ করব। কারন উন্নয়নে এ সরকারের বিকল্প নাই। তাই আমরা আওয়ামীলীগের প্রতিটি নেতাকর্মী ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট চাইবো। আমরা প্রতিটি ভোটারকে দেশের উন্নয়নের চিত্রগুলো তুলে ধরবো।

তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য একে এম শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জে রেকর্ড ৭ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছেন। এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে তাদের পুণরায় নির্বাচিত করতে হবে। আওয়ামীলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীর দায়িত্ব হয়ে দাড়িয়েছে এ দুটি আসন সহ নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসন আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দেওয়া। সে লক্ষ্যে আমার সবাই এক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে কাজ করবো। যাতে কোন অপশক্তি আমাদের কোন ক্ষতি করতে না পারে। নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নের জন্য সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমানের বিকল্প নেই। জয় আমাদের হবেই ইনশাল্লাহ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন, ১৩নং আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি রশিদ, ১৩নং আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, যুবলীগ নেতা পলাশ, আরিফ, রাকিব, আনিস, প্লাবন ও বাপ্পি প্রমূখ।

ফতুল্লায় স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতার উপর হামলা

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় রাজনীতিতে এককভাবে প্রভাব বিস্তার করতে ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল মান্নান বাহিনীর ছিচকে সন্ত্রাসীরা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নোমান আহম্মেদ অর্কোসহ তার বড় ভাইয়ের উপর হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। এসময় নামধারী ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা নোমান আহম্মেদ অর্কোসহ তার বড় ভাইকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করেছেন বলেও অভিযোগ ওঠেছে। তবে ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নানের ইন্ধনে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন হামলার শিকার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা।

৭ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকেলে ফতুল্লার মুসলিমনগর নয়াবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটলে ৮ ডিসেম্বর শনিবার সকালে আহত নোমান আহম্মেদ অর্কো বাদী হয়ে মান্নান বাহিনীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

আরও অভিযোগ এমএ মান্নান নিজেকে এমপি শামীম ওসমান আস্থাভাজন নেতা হিসাবে এলাকায় জাহির করে ভাতিজা বিল্লালকে দিয়ে একটি বিশাল বাহিনী গড়ে তোলে। এ বাহিনী মুসলিমনগর নয়াবাজার সহ আশে পাশের এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। এ বাহিনীর বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তাকে নাজেহাল করে দেয়। আর মান্নানের ইন্ধনেই সন্ত্রাসী বাহিনীরা এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ডসহ নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। এতে মান্নান ঐ এলাকার আওয়ামীলীগ ও এমপি শামীম ওসমানের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে বলে এলাকার সচেতন মহল মনে করছে। আর শুক্রবার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নোমান আহম্মেদ অর্কোসহ তার বড় ভাইয়ের উপর হামলার ঘটনায় এলাকায় নিন্দার ঝড় উঠেছে। এছাড়া আহতদের ছবি দিয়ে ফেইসবুকে বিভিন্ন মহলে সন্ত্রাসীদের ধিক্কার জানাচ্ছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ফতুল্লার মুসলিমনগর নয়াবাজার এলাকার মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলামের ছেলে নোমান আহম্মেদ অর্কো স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতির সাথে সাথে সম্পৃক্ত। তার সমর্থিত লোকজন নিয়ে স্বেচ্ছাসেবকলীগের ব্যানার নিয়ে আওয়ামীলীগ ও শামীম ওসমানের মিছিল মিটিংয়ে যোগদান করেন। বিশেষ করে অর্কো মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন ও ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের অধীনে রাজনীতি করেন। আর স্বেচ্ছাসেবকলীগের রাজনীতি করার অপরাধে ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মান্নান অসন্তোষ প্রকাশ করে। যার কারনে নোমান আহম্মেদ অর্কোকে দমাতে তার পিছনে মান্নান বাহিনীর লোককে লেলিয়ে দেয়। তার কারন মান্নান চায় মুসলিমনগর নয়াবাজার এলাকায় তার অধীনে ছাড়া কেউ অন্য কারোর রাজনীতি করতে পারবে না। সেই সুবাধে মান্নানের প্রধান হাতিয়ার ভাতিজা বিল্লালের লোকদের দিয়ে অর্কোকে এলাকায় কোনঠাসা করতে চাইছে।

আরও অভিযোগ, সম্প্রতি অর্কোর সাথে এলাকার লোকজন স্বেচ্ছাসেবকলীগের মিছিলে যাওয়ার অপরাধে রকি নামে এক ব্যক্তিকে মান্নান বাহিনীর সদস্য জজ মিয়া, আলম, নিজাম, হেলাল সহ আরো বেশ কয়েকজন মিলে মারধর করে। এতে রকি কোন প্রতিবাদ করেনি। শুক্রবার বিকেলে রকিকে ফের মারধর করার সময় অর্কো প্রতিবাদ করায় মান্নান বাহিনী ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বেদম মারধর করতে থাকে। এসময় অর্কোর বড় ভাই আব্দুল্লাহ আল ইমরান তার ছোট ভাইকে বাচাতে গেলে তাকেও মারধর করে। পরে মান্নান বাহিনীর ছিচকে সন্ত্রাসীরা অর্কোর বাড়িতে হামলা চালায় এবং তাদের বাড়ির গেইট ভাঙচুরের চেষ্টা করে। পরে নোমান আহম্মেদ অর্কোসহ তার বড় ভাইকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ ৩’শ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। তারা চিকিৎসা শেষে নোমান আহম্মেদ অর্কো বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।

ফতুল্লা মডেল থানার এসআই কাজী এনামুল নোমান আহম্মেদ অর্কোর দায়েরকৃত অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, যারা এ হামলার সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নাসিম ওসমান স্মৃতি ফুটবল লীগে চ্যাম্পিয়ন বন্দর সিরাজউদ্দৌলা ক্লাব

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের নাসিম ওসমান স্মৃতি ১ম বিভাগ ফুটবল লীগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বন্দরের সিরাজউদ্দৌল্লা ক্লাব। ৮ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের ইসদাইর ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে এই খেলায় খানপুর মহসীন ক্লাবকে ৪-০গোলে পরাজিত করে সিরাজদ্দৌলা ক্লাব। নারায়ণগঞ্জ জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন এই লীগের আয়োজন করে। খেলা শেষে পুরষ্কার বিতরণ করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া।

নারায়ণগঞ্জ জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি তানভীর আহমেদ টিটুর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-বিশিষ্ট ক্রীড়ানুরাগী কুতুব উদ্দিন আকসির, আবুল জাহের, নারায়ণগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি এ জেড ইসমাইল বাবুল, জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ সাবেক কৃতি ফুটবলার রবিউল হোসেন, বন্দর সিরাজদ্দৌলা ক্লাবের সভাপতি নাসিক ২২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুলতান আহমেদ ও নারায়ণগঞ্জ ফুটবল কোচ মোঃ জসিম উদ্দিন প্রমুখ ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া বলেন, আমি নারায়ণগঞ্জবাসীকে ধন্যবাদ জানাই যে এতো সুন্দর একটি ফুটবল লীগে কোন পুলিশ প্রশাসন ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করায়। আগামীতে হয়তো আমি থাকবো না কিন্তু আমি বিশ্বাস করি তানভীর আহমেদ টিটু তার দক্ষ ও যোগ্যতার ভিত্তিতে এই ফুটবল লীগকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেনো শান্তিপূর্ণভাবে সম্পূর্ণ করতে পারি তার জন্য আমি সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। আমরা সবাই একটি সুন্দর আগামীর বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাবো ।

লীগের সেবা খেলোয়ার হিসেবে নির্বাচিত হন সিরাজদ্দৌলা ক্লাবের খেলোয়ার জুয়েল এবং ফাইনাল খেলায় সেরা খেলোয়ার নির্বাচিত হন সিরাজউদ্দৌলা ক্লাবের খেলোয়ার বিশাল। সেই সঙ্গে লীগের সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার পান ইসদাইর এনএন ক্লাবের খেলোয়ার রুমান। তিনি দুটি হেট্টিক সহ মোট ৮টি গোল করেন।

ধানের শীষের প্রার্থী মুফতি মনির হোসেন কাসেমী

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে ধানের শীষ প্রতীকে লড়াই করবেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের জেলার সভাপতি মুফতি মনির হোসেন কাসেমী। এ আসনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে রয়েছেন আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা বর্তমান একেএম শামীম ওসমান।

৮ ডিসেম্বর শনিবার ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে মুফতি মনির হোসেন কাসেমীকে মনোনয়নের চিঠি দেয়া হয়। নারায়ণগঞ্জ মহানগর জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহানগর সেক্রেটারি মাওলানা ফেরদৌসুর রহমান চিঠি হাতে পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, মুফতি মনির হোসেন কাসেমী ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন। ২০ দলীয় জোট এ আসনটি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে ছাড় দেয়। ফলে এ আসনটিতে বিএনপির দুইজনকে মনোনিত করা হলেও তাদের মধ্যে কাউকে চূড়ান্তভাবে মনোনিত করা হয়নি।

প্রাথমিকভাবে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য মুহাম্মদ শাহআলম ও জেলা বিএনপির সেক্রেটারি অধ্যাপক মামুন মাহামুদ। এখানে নির্বাচনে রয়েছেন বিএনপির বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন, জাতীয়পার্টির সালাউদ্দীন খোকা মোল্লা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী হিমাংসু সাহা, ন্যাপের প্রার্থী ওয়াজিবুল্লাহ অজু, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের প্রার্থী সেলিম মাহামুদ, কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী ইকবাল মাহামুদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্র্টির প্রার্থী মাহামুদ হোসেন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রার্থী জসিমউদ্দীন।

৫টি আসনে চূড়ান্ত মহাজোট ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫টি সংসদীয় আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট। এখানে দুটি আসনে রয়েছে জাতীয়পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের দুজন প্রার্থী। অন্যদিকে বিএনপিতে তিনটি আসনে প্রার্থী দিলেও একটি আসনে ছেড়ে দিয়েছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও আরেকটি আসনে নাগরিক ঐক্যকে। দলের দুটি বড় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। সেই সঙ্গে দুটি দলের নেতাকর্মীদের মাঝেও হতাশা ফুঠে ওঠেছে। অনেক হেভিওয়েট প্রার্থীরা মনোনিত হতে পারেননি। এর মধ্যে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির মধ্যে রয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থী।

জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫টি সংসদীয় আসনে ৬১ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছিলেন। যার মধ্যে ৪৭ জনের মনোনয়ন বৈধ ও ১৪ জনের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেছে নারায়ণগঞ্জ রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া। বাতিলের মধ্যে রয়েছে বিএনপির মনোনিত প্রার্থী জেলা বিএনপির সেক্রেটারি অধ্যাপক মামুন মাহামুদ ও বিএনপির প্রার্থী মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ এবং গত নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনিত প্রার্থী বর্তমানে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোশারফ হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন রয়েছেন। তবে ৫টি আসনের বর্তমান ৫ এমপির কারোরই মনোনয়ন বাতিল হয়নি। তারা ৫জনই আবারো মনোনিত হয়েছেন। তবে মনোনয়ন আপীল করে ফেরত পেয়েছেন মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন,মামুন মাহামুদ সহ ৭ জন।

নারায়ণগঞ্জ-১(রূপগঞ্জ) আসনের বর্তমান এমপি নৌকা প্রতীকে মনোনিত প্রার্থী গাজী গোলাম দস্তগীর। এখানে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির। প্রাথমিকভাবে চিঠি পেলেও চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন পাননি বিএনপির মনোনিত প্রার্থী চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভুইয়া। এখানে নির্বাচনে রয়েছেন কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী মঞ্জুরুল ইসলাম চন্দন, স্বতন্ত্র হাবিবুর রহমান, ইমদাদ উল্লাহ, আজম খান। এখানে মোট ১০ জন মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন। যাদের মধ্যে ৮ জনের মনোনয়ন বৈধ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী রেহেন আফজাল ও জাকের পার্টির প্রার্থী মাহফুজুর রহমানের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেন। তারা আপিলেও প্রার্থীতা ফিরে পাননি।

নারায়ণগঞ্জ-২(আড়াইহাজার) আসন থেকে আওয়ামীলীগের মনোনিত প্রার্থী বর্তমান এমপি নজরুল ইসলাম বাবু। এখানে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ। বিএনপির মনোনয়ন প্রাথমিকভাবে পেলেও বঞ্চিত হয়েছেন চাচা ভাতিজা বিএনপির মনোনিত প্রার্থী সাবেক এমপি আতাউর রহমান খান আঙ্গুর ও আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমন। নির্বাচনে রয়েছেন কমিউনিস্ট পাটির প্রার্থী হাফিজুল ইসলাম, জাকের পার্টির মুরাদ হোসেন জামাল, ইসলাম আন্দোলনের নাসির উদ্দীন।

নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসন থেকে জাতীয়পার্টির বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। তাকে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এখানে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান। তবে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পেলেও সোনারগাঁও বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু জাফর মনোনয়ন পত্রই দাখিল করেননি। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার, তরিকত ফেডারেশনের প্রার্থী মজিবুর রহমান মানিক, কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী আব্দুস সালাম বাবুল, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী সানাউল্লাহ নূরী, জেএসডির প্রার্থী ফখরুদ্দীন ইব্রাহীম, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ হোসেন জামাল, জাকের পার্টির প্রার্থী মোস্তফা আমির ফয়সাল ও কল্যান পার্টির প্রার্থী রাশেদ ফেরদৌস। তবে বাতিল হওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী গত নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে মনোনিত হওয়া মোশারফ হোসেন ও এরশাদের পালিত মেয়ে অনন্যা হুসেইন মৌসুমীর মনোনয়ন আপীলেও বাতিল করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী একেএম শামীম ওসমান। এখানে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের জেলার সভাপতি মুফতি মনির হোসেন কাসেমী। প্রাথমিকভাবে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য মুহাম্মদ শাহআলম ও জেলা বিএনপির সেক্রেটারি অধ্যাপক মামুন মাহামুদ। এখানে নির্বাচনে রয়েছেন বিএনপির বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন, জাতীয়পার্টির সালাউদ্দীন খোকা মোল্লা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী হিমাংসু সাহা, ন্যাপের প্রার্থী ওয়াজিবুল্লাহ অজু, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের প্রার্থী সেলিম মাহামুদ, কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী ইকবাল মাহামুদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্র্টির প্রার্থী মাহামুদ হোসেন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রার্থী জসিমউদ্দীন।

নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনে জাতীয়পার্টির প্রার্থী বর্তমান এমপি একেএম সেলিম ওসমান। তাকেও মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি লাঙ্গল প্রতীকে লড়বেন। এখানে ধানের শীষ প্রতীকে লড়বেন নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা সাবেক এমপি এসএম আকরাম। এখানে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন বিএনপির সাবেক এমপি আবুল কালাম ও মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। তবে খোরশেদের মনোনয়ন বাতিল হলে তিনি আপিল করেননি। এখানে নির্বাচনে রয়েছেন খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হাফেজ কবির হোসেন, সাম্যবাদী দলের প্রার্থী সাঈদ আহমেদ, বাসদের প্রার্থী আবু নাঈম খান বিপ্লব, কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী অ্যাডভোকেট মন্টু চন্দ্র ঘোষ, ইসলামিক ফ্রন্টের প্রার্থী বাহাদুর শাহ, জাকের পার্টির প্রার্থী হাসান জামাল, কল্যাণ পার্টির প্রার্থী আফতাব ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আবুল কালাম।

শামীম ওসমানের সঙ্গে ধানের শীষে লড়বেন মনির হোসেন কাসেমী

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নানা হিসেব নিকেষের পর নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের আওয়ামীলীগের আলোচিত নেতা এমপি একেএম শামীম ওসমানের সঙ্গে ধানের শীষ প্রতীকে লড়াই করবেন নারায়ণগঞ্জ জেলা জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি মুফতি মনির হোসেন কাসেমী। ৮ ডিসেম্বর শনিবার ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে মুফতি মনির হোসেন কাসেমীকে মনোনয়নের চিঠি দেয়া হয়।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহানগর সেক্রেটারি মাওলানা ফেরদৌসুর রহমান চিঠি হাতে পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, মুফতি মনির হোসেন কাসেমী ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন।

২০ দলীয় জোট এ আসনটি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে ছাড় দেয়। ফলে এ আসনটিতে বিএনপির দুইজনকে মনোনিত করা হলেও তাদের মধ্যে কাউকে চূড়ান্তভাবে মনোনিত করা হয়নি।

নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকা নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-৪ সংসদীয় আসন। এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন বিদ্রোহী হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। ৭ ডিসেম্বর শুক্রবার নির্বাচন কমিশন গিয়াসউদ্দীনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হলে নির্বাচনে লড়াই করার কথা জানান। এখানে আওয়ামীলীগ মনোনয়ন পত্র দাখিল করে পরবর্তীতে শামীম ওসমানকে সমর্থন দিয়ে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন কেন্দ্রীয় শ্রমিকলীগের শ্রমিক উন্নয়ন কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাউসার আহমেদ পলাশ।

সূত্রমতে, এ আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী একেএম শামীম ওসমান, বিএনপির মনোনিত প্রার্থী কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য মুহাম্মদ শাহআলম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী হিমাংসু সাহা, ন্যাপের প্রার্থী ওয়াজিবুল্লাহ অজু, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের প্রার্থী সেলিম মাহামুদ, কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী ইকবাল মাহামুদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রার্থী মুফতি মনির হোসেন কাসেমী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্র্টির প্রার্থী মাহামুদ হোসেন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রার্থী জসিমউদ্দীনের মনোনয়ন গত ২ ডিসেম্বর বৈধ ঘোষণা করে জেলা রিটার্নিং অফিসার রাব্বী মিয়া।

একই দিন রিটার্নিং অফিসার এখানে ১৬ জন মনোনয়ন দাখিলকারীর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিএনপির সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন ও তার ছেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মুহাম্মদ কাউসার, জেলা বিএনপির সেক্রেটারি বিএনপির মনোনিত প্রার্থী মামুন মাহামুদ, কেন্দ্রীয় শ্রমিকলীগের শ্রমিক উন্নয়ন কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক স্বতন্ত্র প্রার্থী কাউসার আহমেদ পলাশ ও কেন্দ্রীয় জাতীয়পার্টির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সালাউদ্দীন খোকা মোল্লার মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয়।

শুক্রবার মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন ও মামুন মাহামুদের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। বৈধ ঘোষণার পর মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন নির্বাচনে তিনি শেষ পর্যন্ত থাকবেন। এ আসনে বিএনপির দুই মনোনিত প্রার্থী মুহাম্মদ শাহআলম ও মামুন মাহামুদের মধ্যে কাউকে মনোনিত না করে জোটের শরীক দলের নেতা মুফতি মনির হোসেন কাসেমীকে মনোনিত করেছে ২০ দলীয় জোট তথা ঐক্যফ্রন্ট।

নেতাকর্মীদের সূত্রে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে এখানে আওয়ামীলীগের মনোনয়নে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় এমপি নির্বাচিত হন একেএম শামীম ওসমান। এর আগের নির্বাচনে যখন শুধুমাত্র ফতুল্লা থানা এলাকা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন ছিল ওই নির্বাচনে শামীম ওসমানের চাচী চলচিত্র নায়িকা সারাহ বেগম কবরী এখানে এমপি নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে বিএনপির মনোনিত প্রার্থী ছিলেন মুহাম্মদ শাহআলম।

এ আসনে আওয়ামীলীগ থেকে এমপি শামীম ওসমান ছাড়াও নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পত্র ক্রয় করেছিলেন কেন্দ্রীয় শ্রমিকলীগের শ্রম কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাউসার আহমেদ পলাশ, কেন্দ্রীয় মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদা হাসনাত ও আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির সদস্য কামাল উদ্দীন মৃধা। কিন্তু এখানে শামীম ওসমানকে এককভাবে মনোনয়ন দেয় আওয়ামীলীগ।

অন্যদিকে এ আসনের সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। তিনি সাংবাদিকদের কাছে অনেকটা জোর দিয়েই বলেছেন, আমি নির্বাচনে থাকছি এটাই সত্য।’ তিনি ২০০১ সালে কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সহ-সভাপতি পদ থেকে নির্বাচনের মাত্র ২১ দিন পূর্বে বিএনপিতে যোগদান করে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে এমপি নির্বাচিত হন। প্রথমে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির আহ্বায়ক শিল্পপতি সফর আলী ভুইয়াকে দেয়া হলেও তার মনোনয়ন বাতিল করে শামীম ওসমানকে পরাজিত করতে আওয়ামীলীগ থেকে আসা গিয়াসউদ্দীনকে মনোনয়ন দেয় বিএনপি। ওই সময় শামীম ওসমানের সঙ্গে রাজনীতি করে আসা গিয়াসউদ্দীন শামীম ওসমানকেই পরাজিত করেন। পরবর্তীতে শামীম ওসমান দেশ ছেড়ে চলে যান এই গিয়াসের ভয়েই। গিয়াসউদ্দীন ৯ম সংসদ নির্বাচনে কারাগারে থাকায় মনোনয়ন পাননি।

এখানে ৯ম সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য শিল্পপতি মুহাম্মদ শাহআলম। তিনিও কল্যান পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। বিএনপিতে এসে মনোনয়ন পেলেও তিনি আওয়ামীলীগের প্রার্থী সারাহ বেগম কবরীর কাছে পরাজিত হন। তবে এ আসনে গিয়াসউদ্দীন ও শাহআলম দুজনের কেউই গত দশ বছরে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন না। শাহআলমের নেতাকর্মীরা দাবি করেন শাহআলম কেন্দ্রীয় বিএনপির ডোনার এবং গিয়াসের নেতাকর্মীরা দাবি করেন গিয়াস যখন এমপি ছিলেন তখন যা কামিয়েছেন তার সিংহভাগ হাওয়া ভবনে পাঠিয়েছিলেন। যে কারনে এইদুজনের কেউই রাজপথে সক্রিয় ছিলেন না। একটি মানববন্ধনেও ছিলেন না এই দুই নেতা।

তবে মনোনয়ন পাওয়া জেলা বিএনপির সেক্রেটারি অধ্যাপক মামুন মাহামুদ একাধিকবার রাজপথে পুলিশের লাঠিপোটার শিকার হয়েছিলেন। বেশকবার তিনি মাসের পর মাস কারাভোগ করেছিলেন। সম্প্রতি তিনি তিন মাস কারাভোগ শেষে জামিনে বের হয়েই মনোনয়ন বোর্ডের কাছে সাক্ষাতকার দিতে যান। এ আসন থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুল হাই রাজু ও পারভেজ আহমেদ।

গত নির্বাচনের আগে এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশা নিয়ে বেশ প্রচারণায় ছিলেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক পৌর প্রশাসক আবদুল মতিন প্রধান। মতিন প্রধান ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগে যোগদান করেছেন। সেন্টু গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেননি। তিনি এখন শামীম ওসমানের পক্ষে ভোট চাচ্ছেন নিয়মিত। তিনি একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, শামীম ওসমান উন্নয়ন করে জনগণের পীর হয়ে গেছেন।’ এ নির্বাচনেও সেন্টু মনোনয়ন চেয়েছিলেন।

এ আসনে জাতীয়পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশি ছিলেন কেন্দ্রীয় জাতীয়পার্টির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সালাউদ্দীন খোকা মোল্লা। তিনি মনোনয়ন দাখিল করলেও তার মনোনয়ন বাতিল করেছে রিটার্নিং অফিসার। তবে তিনি আপিল করে বৈধতা পেয়েছেন।

সর্বশেষ সংবাদ