খোকা আপনি বাড়ি গিয়ে ঘুমান: বললেন মোশারফ হোসেন

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও মহাজোটের প্রার্থী লিয়াকত হোসেন খোকাকে তার বায়ান্নটা ভোট নিয়ে বাড়িতে গিয়ে ঘুমাতে বলেছেন সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন। একই সঙ্গে তিনি এও মন্তব্য করেছেন যদি এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা সোনারগাঁয়ে ১০ পারসেন্ট ভোট পান তাহলে ধরে নেয়া হবে খোকাই এমপি নির্বাচিত হয়েছেন।

১০ ডিসেম্বও সোমবার বিকেলে সোনারগাঁও মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় উপজেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ের সামনে সিংহ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি কায়সার হাসনাতের নির্বাচনী সমাবেশে মোশারফ হোসেন বলেন, সারা সোনারগাঁয়ে আমাদের যে ভোট আছে সেই ভোটের ১০ পারসেন্ট ভোট যদি আপনি (লিয়াকত হোসেন খোকা) এই নির্বাচনে পান তাহলে আমরা মনে করবো আপনি সোনারগাঁয়ের সংসদ সদস্য হইয়া গেছেন। আমার জানা মতে সোনারগাঁয়ে আপনার ১০ পারসেন্ট ভোটও নাই।

তিনি লিয়াকত হোসেন খোকাকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, তিনি প্রচারনা করেন সোনারগাঁয়ের সরকারী লোক ও পুলিশ প্রশাসন নাকি উনার পিছনে আছেন। কিন্তু উনার পিছনে তারা নাই যারা আছে জনগণের পিছনে। আর যদি তারা আপনার পিছনে থাকে তাহলে তারা সারা জীবনের জন্য ভুল করবেন আমি বলে দিলাম।

প্রশাসনকে তিনি বলেন, আমি আশা রাখি সরকারী প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে এ নির্বাচনে কাজ করবেন তাহলে আপনারা জনগণের প্রশংসা নিয়ে যাবেন। আপনি খোকা নারায়ণগঞ্জ থাইকা আইয়া বাতাস কইরা খাইয়া খাইয়া যাইবেন এটা চলবেনা।

তিনি আরো বলেন, বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নে আমান সিমেন্ট নামে একটি কারখানা হয়েছে সেই কারখানার ট্রাক চলতে চলতে বিভিন্ন রাস্তা গর্ত হয়ে গেছে। বাঁশ ফেলে সিমেন্ট কোম্পানী থেকে টাকা নিয়ে কাজ না করে সেই টাকা মেরে খেয়েছেন। তার জবাব দিতে হবে। আর আপনার যেই ইচ্ছা সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়া রাইতের বেলা সিল মাইরা বাক্স বইরা দিয়া পাশ করবেন সে চিন্তা বাদ দেন। এ সাপ নিয়া আমরা গত ৬০ বছর ধইরা খেলি। এই খেলা আমরা ৬০ বছর ধইরা খেলি। কোন সাপে কিভাবে ছোবল দেয় এইডা আমাদের জানা আছে। আপনাকে সহযোগিতা করবো যখন আপনে নিরপেক্ষভাবে ভোট নিবেন।

এমপি খোকাকে অনেকটা তিরস্কার করেই মোশারফ হোসেন বলেন, মান্নান সাব ভোটে দাড়িয়েছে। আপনে তো তার কাছে দিয়াও যাইতে পারবেন না। এই বায়ান্নটা ভোট লইয়া তিন লাখ ভোটের হিসাব কইরেনা। হেই চিন্তা বাদ দিয়া এখন বাড়ি গিয়া ঘুমান। আপনে যে সমস্ত কাজ করছেন তার হিসাব জনগণকে দিতে হইব।

এসময় তিনি সামবেশে আসা লোকদের অনুরোধ করে বলেন, আপনারা আজ থেকে বাড়িতে গিয়ে সিংহ মার্কাকে জয়ী করার জন্য কাজ করবেন। সিংহ মার্কা জয়যুক্ত হলে মনে করমু আপনারা জয়যুক্ত হয়েছেন। আমরা যখনই দায়িত্বে থাকি তার খেয়ানত করি না।

তিনি আরো বলেন, কায়সার হাসনাত এমপির দায়িত্বে থাকার সময় যদি তার কোন ভুলত্রুটি হয়ে থাকে তাহলে তা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আবার যদি দায়িত্বপায় সেক্ষেত্রে যদি কোন ভুল করে ভুল রাস্তায় চলে তাহলে আমাদের বলবেন আমরা সংশোধন করে দিবো।’ এসময় কায়সার হাসনাতও উপস্থিত ছিলেন।

ফতুল্লা কুতুবপুরে শামীম ওসমানের নৌকা প্রতীকের পক্ষে বিশাল মিছিল

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী একেএম শামীম ওসমানে নির্বাচনী প্রচারনার নৌকা মার্কা প্রতীক পাওয়ায় ফতুল্লার কুতুবপুর ইউনিয়নে একটি বিশাল মিছিল করেছে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী ও স্থানীয় জনগণ।
সোমবার (১০ডিসেম্বর) নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগ নেতা লুৎফর রহমান স্বপন এবং সানোয়ার হোসেন জুয়েলের নেতৃত্বে ফতুল্লার কুতুবপুর ইউনিয়ন ৮নং ওয়ার্ডে (শেয়াচর ভোট কেন্দ্রে) অনুষ্ঠিত হয় বিশাল এই নির্বাচনী মিছিল।
উক্ত মিছিলে এ সময় উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় এলাকার বিএম কামরুজ্জামান আবুল, রফিকুল ইসলাম রাহাত, মজিবর রহমান, সাইদুল হক, মোর্শেদ আলম, ছালাম, আবুল বেপারী, মাহতাব উদ্দিন, আনিসুজ্জামান অণু, সফিকুল ইসলাম চুন্নু, মায়া বেগম, সফিউদ্দিন, আবুল বাশার, আব্দুল খালেক মাদবর, সানোয়ার হোসেন শান্ত, সফিকুল হক শামীম, মিন্টু, মিজু, মানিক, আব্দুর রব, ওয়ালিউল্লা, মুক্তিযোদ্ধা মোল্লা আব্দুর রশিদসহ কয়েক হাজার নেতাকর্মী সমর্থক ও স্থানীয় লোকজন।

শামীম ওসমানের আসনে প্রার্থী নয় ধানের শীষ ফ্যাক্টর

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে আওয়ামীলীগের আলোচিত নেতা এমপি একেএম শামীম ওসমানের সঙ্গে ধানের শীষ প্রতীকে লড়াই করবেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও নারায়ণগঞ্জ জেলা জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী। এ আসনে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন তার মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। ফলে চ্যালেঞ্জের মুখে এমপি শামীম ওসমান। কারন এ আসনে বিএনপির প্রার্থী নয় ধানের শীষ প্রতীকটাই ফ্যাক্টর হয়ে দেখা দিয়েছে। গিয়াসউদ্দীন নির্বাচনী মাঠে থাকলে যে সুযোগটি শামীম ওসমানের ছিল সেটা আর রইলো না। যদিও এখানে বিএনপির হেভিওয়েট বেশ কজন মনোনয়ন প্রত্যাশিদের মধ্যে কাউকে শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন দিতে পারেনি বিএনপি।

আগের দিন ৮ ডিসেম্বর শনিবার ঐকফ্রন্টের পক্ষ থেকে ২০ দলীয় জোটের শরীক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতা মুফতি মনির হোসাইন কাসেমীকে মনোনয়নের চিঠি দেয়া হয়। ৯ ডিসেম্বর রবিবার দুপুরে মনির হোসাইন কাসেমী নারায়ণগঞ্জ জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে তার চূড়ান্ত মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। ১০ ডিসেম্বর তিনি প্রতীক ধানের শীষ বরাদ্ধ পেয়েছেন।

মনোনয়ন জমা দিয়ে মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী সাংবাদিকদের বলেন, এখানে বিএনপির অনেক ভাল ভাল প্রার্থী ছিল। কিন্তু জোটের স্বার্থে দেশের স্বার্থে সকলে গণতন্ত্র রক্ষায় কাজ করব। দেশে গণতন্ত্রের চর্চা হতে হবে। গণতন্ত্রের সুফল ঘরে ঘরে পৌছতে হবে। আমাদের সুযোগ দেয়া হলেই নির্বাচনের মাধ্যমে নির্ণয় করতে হবে, প্রমান করতে পারব জনগণ কাকে বেছে নেয়। অনেক দিন নির্বাচন হয়নি। মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগে বঞ্চিত ছিল।

তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বিএনপির উপর থেকে সব স্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আমি যোগাযোগ করেছি। নির্বাচনী মাঠে আপনারা সকলকে দেখতে পাবেন। কারন আমি রক্তে মাংসে সবকিছুতে বিএনপির। আমি ইসলামী একটি সংগঠন করি। কিন্তু আমি বিএনপির।

তিনি বলেন, যদি ৮০ ভাগ নির্বাচন সুষ্ঠ হয় তাহলে আমি এখানে জয়ী হবে আশা করি।’ এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা হেফাজত ইসলামের প্রধান সমন্বয়ক মাওলানা ফেরদৌসুর রহমান সহ কয়েকশ আলেম ওলামা। তিনিও মহানগর জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক। পিছনে জামায়াত ইসলামী ও হেফাজত ইসলামের সমর্থন এই নেতার পক্ষে রয়েছে বলেও অনেকে জানিয়েছেন।

এদিকে রবিবার বিকেলে এ আসনে বিএনপির বিদ্রোহী নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন তার মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। গিয়াসউদ্দীনের পক্ষে অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান মাসুম মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, দল ও দেশের স্বার্থে কেন্দ্রীয় নির্দেশে স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন তার মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

২০ দলীয় জোট এ আসনটি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে ছাড় দেয়। ফলে এ আসনটিতে বিএনপির দুইজনকে মনোনিত করা হলেও তাদের মধ্যে কাউকে চূড়ান্তভাবে মনোনিত করা হয়নি। এমনকি প্রাথমিকভাবেও চিঠি পাননি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন। তবে তিনি বলেছিলেন তিনি নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত থাকবেন। কিন্তু রবিবার তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকা নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-৪ সংসদীয় আসন। এখানে আওয়ামীলীগ মনোনয়ন পত্র দাখিল করে পরবর্তীতে শামীম ওসমানকে সমর্থন দিয়ে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন কেন্দ্রীয় শ্রমিকলীগের শ্রমিক উন্নয়ন কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাউসার আহমেদ পলাশ।

সূত্রমতে, এ আসনে বর্তমান এমপি আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী একেএম শামীম ওসমান এবং বিএনপির মনোনিত প্রার্থী কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য মুহাম্মদ শাহআলম ও জেলা বিএনপির সেক্রেটারি অধ্যাপক মামুন মাহামুদ ছিলেন। প্রাথমিকভাবে তাদের মনোনিত করা হলেও চূড়ান্তভাবে বিএনপির দুই নেতাকে বাদ দিয়ে জোটের নেতা মুফতি মনির হোসাইন কাসেমীকে মনোনিত করা হয়।

এ আসনে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী হিমাংসু সাহা, ন্যাপের প্রার্থী ওয়াজিবুল্লাহ অজু, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের প্রার্থী সেলিম মাহামুদ, কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী ইকবাল মাহামুদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্র্টির প্রার্থী মাহামুদ হোসেন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, কেন্দ্রীয় জাতীয়পার্টির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সালাউদ্দীন খোকা মোল্লার ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রার্থী জসিমউদ্দীনের মনোনয়ন গত ২ ডিসেম্বর বৈধ ঘোষণা করে জেলা রিটার্নিং অফিসার রাব্বী মিয়া। তবে এখানে জোটের শরীক দলের প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের খবর পাওয়া যায়নি।

নেতাকর্মীদের সূত্রে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে এখানে আওয়ামীলীগের মনোনয়নে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় এমপি নির্বাচিত হন একেএম শামীম ওসমান। এর আগের নির্বাচনে যখন শুধুমাত্র ফতুল্লা থানা এলাকা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন ছিল ওই নির্বাচনে শামীম ওসমানের চাচী চলচিত্র নায়িকা সারাহ বেগম কবরী এখানে এমপি নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে বিএনপির মনোনিত প্রার্থী ছিলেন মুহাম্মদ শাহআলম।

এ আসনে আওয়ামীলীগ থেকে এমপি শামীম ওসমান ছাড়াও নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পত্র ক্রয় করেছিলেন কেন্দ্রীয় শ্রমিকলীগের শ্রম কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাউসার আহমেদ পলাশ, কেন্দ্রীয় মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদা হাসনাত ও আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির সদস্য কামাল উদ্দীন মৃধা। কিন্তু এখানে শামীম ওসমানকে এককভাবে মনোনয়ন দেয় আওয়ামীলীগ।

অন্যদিকে এ আসনের সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন। তিনি সাংবাদিকদের কাছে অনেকটা জোর দিয়েই বলেছিলেন, আমি নির্বাচনে থাকছি এটাই সত্য।’ তিনি ২০০১ সালে কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সহ-সভাপতি পদ থেকে নির্বাচনের মাত্র ২১ দিন পূর্বে বিএনপিতে যোগদান করে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে এমপি নির্বাচিত হন। প্রথমে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির আহ্বায়ক শিল্পপতি সফর আলী ভুইয়াকে দেয়া হলেও তার মনোনয়ন বাতিল করে শামীম ওসমানকে পরাজিত করতে আওয়ামীলীগ থেকে আসা গিয়াসউদ্দীনকে মনোনয়ন দেয় বিএনপি। ওই সময় শামীম ওসমানের সঙ্গে রাজনীতি করে আসা গিয়াসউদ্দীন শামীম ওসমানকেই পরাজিত করেন। পরবর্তীতে শামীম ওসমান দেশ ছেড়ে চলে যান এই গিয়াসের ভয়েই। গিয়াসউদ্দীন ৯ম সংসদ নির্বাচনে কারাগারে থাকায় মনোনয়ন পাননি।

এখানে ৯ম সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য শিল্পপতি মুহাম্মদ শাহআলম। তিনিও কল্যাণ পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। বিএনপিতে এসে মনোনয়ন পেলেও তিনি আওয়ামীলীগের প্রার্থী সারাহ বেগম কবরীর কাছে পরাজিত হন। তবে এ আসনে গিয়াসউদ্দীন ও শাহআলম দুজনের কেউই গত দশ বছরে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন না। শাহআলমের নেতাকর্মীরা দাবি করেন শাহআলম কেন্দ্রীয় বিএনপির ডোনার এবং গিয়াসের নেতাকর্মীরা দাবি করেন গিয়াস যখন এমপি ছিলেন তখন যা কামিয়েছেন তার সিংহভাগ হাওয়া ভবনে পাঠিয়েছিলেন। যে কারনে এইদুজনের কেউই রাজপথে সক্রিয় ছিলেন না। একটি মানববন্ধনেও ছিলেন না এই দুই নেতা।

তবে মনোনয়ন পাওয়া জেলা বিএনপির সেক্রেটারি অধ্যাপক মামুন মাহামুদ একাধিকবার রাজপথে পুলিশের লাঠিপোটার শিকার হয়েছিলেন। বেশকবার তিনি মাসের পর মাস কারাভোগ করেছিলেন। সম্প্রতি তিনি তিন মাস কারাভোগ শেষে জামিনে বের হয়েই মনোনয়ন বোর্ডের কাছে সাক্ষাতকার দিতে যান। এ আসন থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুল হাই রাজু ও পারভেজ আহমেদ।

গত নির্বাচনের আগে এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশা নিয়ে বেশ প্রচারণায় ছিলেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক পৌর প্রশাসক আবদুল মতিন প্রধান। মতিন প্রধান ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগে যোগদান করেছেন। সেন্টু গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেননি। তিনি এখন শামীম ওসমানের পক্ষে ভোট চাচ্ছেন নিয়মিত। তিনি একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, শামীম ওসমান উন্নয়ন করে জনগণের পীর হয়ে গেছেন।’ এ নির্বাচনেও সেন্টু মনোনয়ন চেয়েছিলেন।

কারাভোগ-পুলিশের পেটানি, বিএনপিতে জরিমানা!

মাজহারুল ইসলাম রোকন:

দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে রাজপথে পুলিশের এলোপাতারি প্যাদানি। তারপর টেনে হেছড়ে কাউকেবা চেংদোলা করে পুলিশ পিকআপে তুলে গ্রেপ্তার। তারপর মাসের পর মাস কারাবাস। প্রতিদিন আদালতের কাঠগড়ায় হাজিরা। ডজন ডজন মামলা। কারোবা সেই মামলা ৩০ ছাড়িয়ে। কিন্তু কমিটি গঠন ও নির্বাচনের সময় এরাই সবার আগে বাদ ও বাতিলের তালিকায়। এখন হয়তো উপলুব্ধির সময় যারা রাজপথে আন্দোলন করেন, যারা আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের পেটানি খান, যারা ডজন ডজন মামলায় আসামী হন, জেল খাটেন এবং মামলায় আসামী হয়ে বছর বছর বাড়ি-ঘর সংসার ছাড়া বালিশ ছাড়া বনে জঙ্গলে পথে ঘাটে রাস্তায় শুয়ে থাকেন তাদেরকে বিএনপি এখন রীতিমত জরিমানা আদায় করছে। এসব ত্যাগের বিনিময়ে তাদের কাছে এটাই জরিমানা যাদেরকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। যাদের মধ্যে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও মশিউর রহমান রনি এখন কারাগারে বসেও হয়তো ভাবছেন এ কারাভোগটাই সামনে তাদের যেনো বিফলে গেল।

নেতাকর্মীরা বলছেন- নারায়ণগঞ্জে সবচেয়ে বেশি রাজপথে সক্রিয় ছিলেন এটিএম কামাল। যিনি মহানগর বিএনপির সেক্রেটারি। ২৪ ঘন্টা যিনি রাজনীতিতে মগ্ন। ৩৪টির মত মামলা তার ঘারে। রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়ে অমানসিক লাঠি পেটার শিকার হয়েছিলেন তিনি। একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছেন গত দশ বছরে। তার জীবন থেকে গত দশ বছরে বেশকবার জেলখানায় থেকে কয়েক বছর কেটে গেছে সেখানেই। কিন্তু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবচেয়ে অযোগ্য প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হলেন এটিএম কামালই। নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসন থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন তিনি। সোনারগাঁও বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু জাফর কিংবা চূড়ান্ত মনোনিত প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নানের ভুমিকা এটিএম কামালের দ্বারে কাছেও নাই। কিন্তু এটিএম কামালের টাকা নাই। তাই নমিনেশনের কাগজটিও তিনি দেখতে পারলেন না। সেখানে খন্দকার আবু জাফর আবার প্রতিবাদটা করেছেন কঠোর। তিনি প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পেলেও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে জমাই দেননি। কারন তিনি আগেই বুঝে গেছেন পকেট গরম থাকা মান্নানের ঝুলিতেই যাবে দলের মনোনয়ন। তবে খন্দকার আবু জাফরের চেয়ে মান্নানের ভুমিকাও অনেক। এটিএম কামালকে জরিমানা করা হলো দিগুণ।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব তৈমূর আলম খন্দকার সেই ২০০৯ সালের ২৫ নভেম্বর। এর আগে তিনি সেক্রেটারি ছিলেন। ছিলেন আহ্বায়ক কমিটির দায়িত্বে। দলের কঠিন সময়ে একাই দলকে চালিয়ে নিয়ে আসছিলেন। ২০১১ সালে সিটি নির্বাচনে তাকে প্রার্থী করা হলেও নির্বাচনের সাত ঘন্টা আগে তাকে বসিয়ে দেয়া হয়। ২০১১ সালের জুনে তিনি শহরের ২নং রেলগেট এলাকায় পুলিশের লাঠি পেটার শিকার হন। চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি কোর্টের সামনে থেকে টেনে হেছড়ে তৈমূর আলমকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় পুলিশ। জেলও খাটেন তিনি। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর হরতাল অবরোধ সভা সমাবেশে রাজপথে ছিলেন তিনি। গত বছরের ১৩ ফেব্রুযারি জেলা বিএনপির সভাপতির পদ থেকে তৈমূরকে সরিয়ে কাজী মনিরকে সভাপতি করা হয়। কিন্তু কাজী মনির সেক্রেটারি থাকলেও তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না। নারায়ণগঞ্জ-১ আসন থেকে তৈমূরকে বাদ দিয়ে মনোনয়ন তুলে দেয়া হয়েছে কাজী মনিরের হাতে। ফলে তৈমূরকে জরিমানা। এর আগেও জেল খেটেছিলেন ২৬ মাস।

এক সময় সংস্কারবাদীদের সঙ্গে গেলেও নারায়ণগঞ্জের ক্লিন ইমেজধারী রাজনীতিক অ্যাডভোকেট আবুল কালাম জেল খেটেছেন ২১ দিন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে বন্দরে আন্দোলন করে জাগানি দিয়েছিলেন আবুল কালাম। পরবর্তীতে বেশকটি মামলার আসামীও হন তিন বারের সাবেক এই এমপি। যিনি টেবিল রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত থাকলেও এবার তিনি মাঠে নেমেছিলেন। তার ছেলে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবুল কাউসার আশাও জেল খেটেছেন বেশকবার। পুলিশের বেদম মারধরের শিকারও হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এখানে জোটের তলালিতে আবুল কালামও পেলেন না দলের মনোনয়ন। এটাই তার জরিমানা কেন তিনি মামলা খেলেন, কেন তিনি জেল খাটলেন, কেন তার ছেলেকে রাজনীতিতে নামিয়ে তাকেও জেল খাটালেন।

জরিমানা গুণেছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। যদিও তিনি নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে প্রাথমিক মনোনয়ন প্রাপ্তীর তালিকায় ছিলেন। নারায়ণগঞ্জের রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে যার ভুমিকা ছিল সবচেয়ে বেশি। জেলার মধ্যে মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীরাই যেমন সক্রিয় ছিলেন রাজপথে তেমনি মামলার বোঝাও তাদের ঘারেই বেশি। যুবদলের কয়েক হাজার নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজপথে ধাবিয়ে বেড়িয়েছিলেন খোরশেদ। কিন্তু মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি থেকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনেও খোরশেদের মতামতকে গুরুত্ব দেয়া হয়নি। রাজপথে নির্যাতনের শিকার যুবদলের নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে নিষ্ক্রিয়দের নেতৃত্বে যুবদল। খোরশেদ জোড়াজুড়ি করলে হয়তো তার সভাপতি পদটিও হারাতেন। তিনিও জেল খেটেছেন বহুবার। রাজপথে একাধিকার পুলিশের লাঠি পেটার শিকার হয়েছেন। বছর বছর ঘর সংসার ছেড়ে পালিয়ে বেড়িয়েছেন ফেরারী জীবনে। ফলে বড় ভাই তৈমূর আলম খন্দকারের মতই তাকেও করা হলো জরিমানা।

অধ্যাপক মামুন মাহামুদ। তিনি জেলা বিএনপির সেক্রেটারি। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে তিনি দলের মনোনয়ন চাইলেও প্রাথমিক তালিকায় তিনি মনোনয়ন পান। তবে এখানে জমিয়তের প্রার্থী দেয়া হয়। পাননি তিনিও। তার মনোনয়ন কিনেছিলেন দলের নেতাকর্মীরা যখন তিনি ছিলেন কারাগারে। জেল থেকে বের হয়ে সাক্ষাতকার দিলেও তিনি মনোনয়ন পাননি। ২০১২ সালে তিনি জেলা যুবদলের সভাপতি থাকাকালীন জেল থেকে বের হলে তার সভাপতি পদে কেড়ে নিয়ে কমিটিই বাতিল করে নতুন কমিটি গঠন করে যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা নিরব। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পরে সিদ্ধিরগঞ্জে আন্দোলনে নামতে গেলে পুলিশের বেদম মারধরের শিকার হন মামুন মাহামুদ। বেগম খালেদা খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর তিনি সোনারগাঁও থেকে গ্রেপ্তার হন। কয়েক মাস কারাভোগের তিনি জামিনে মুক্তি পান। এর কদিন পরেই আবারো নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে গ্রেপ্তার হন তিনি। এর আগের মামলায় আদালতে মামুন মাহামুদকে কোমরে দড়ি বেধে আনা হয়।

অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। তিনি নারায়ণগঞ্জের একজন আলোচিত আইনজীবী। সাত খুনের ঘটনার সময় তিনি জোড়ালো আন্দোলন করে দেশব্যাপী আলোচিত হয়ে ওঠেন। যার বিনিময়ে তিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়নও পান। সেই নির্বাচনে পরাজিত হলেও তিনি রাজনীতিতে থেমে থাকেননি। নেমে যান নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশা নিয়ে। কাজ করতে থাকেন মাঠে। ৫ ফেব্রুয়ারি তিনি সাইনবোর্ড এলাকায় মিছিল করতে গিয়ে আরও দুই আইনজীবী নেতা সহ গ্রেপ্তার হন সাখাওয়াত। ১৮দিন কারাভোগের পর তিনি জামিনে মুক্তি পান। গত ৫ নভেম্বর তিনি নারায়ণগঞ্জ চাষাড়া থেকে গ্রেপ্তার হন। ১১ নভেম্বর উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেলেও কারাগারের সামনে আরেকটি মামলায় তিনি গ্রেপ্তার হন। এখনও তিনি রয়েছেন কারাগারে। তার পক্ষে নেতাকর্মীরা মনোনয়ন পত্র কিনেছিলেন। কিন্তু মনোনয়নের প্রাথমিক তালিকাতেও আসেনি তার নাম। ফলে তাকেও জেল খাটার দায়ে করা হয়েছে জরিমানা।

হ্যাট্রিকের পথে বাবু, আজাদে বাধা চাচা-ভাতিজা

আব্দুল্লাহ আল মামুন, বিশেষ প্রতিবেদক:

নারায়ণগঞ্জ-২(আড়াইহাজার) আসনে আবারো এমপি নির্বাচিত হয়ে হ্যাট্রিকের পথে বর্তমান এমপি নজরুল ইসলাম বাবু। এ আসনে বিএনপি থেকে ধানের শীষ প্রতীকে নজরুল ইসলাম আজাদকে মনোনিত করা হলেও তার জয়ের সবচেয়ে বড় বাধা এ আসনে বিএনপি থেকে বঞ্চিত দুই হেভিওয়েট প্রার্থী সাবেক এমপি আতাউর রহমান খান আঙ্গুর ও মাহমুদুর রহমান সুমন। আজাদের জয় ছিনিয়ে আনতে হলে এই নেতার পুরোদমে প্রত্যক্ষ সহযোগীতা ছাড়া সম্ভব নয়। যদিও ইতিমধ্যে দুজনের বাসায় গিয়ে দেখা করেছেন নজরুল ইসলাম আজাদ। আড়াইহাজারের মানুষের কাছে সবচেয়ে অযোগ্য নজরুল ইসলাম আজাদ একজন ধাম্ভিক অহংকারী হিসেবে পরিচিত।

নেতাকর্মীরা বলছেন- আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের এমপি নজরুল ইসলাম বাবু সরব হয়ে ওঠলেও অনেকটা নিরবতাই পালন করছেন বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক পাওয়া নজরুল ইসলাম আজাদ। আড়াইহাজারের বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে আজাদের সম্পর্ক নেই। মহানগরীর বিএনপি নেতাকর্মীরাই থাকছেন আজাদের চারপাশে। যে কারনে আড়াইহাজারের নেতাকর্মীরাও আজাদ থেকে দুরে রয়েছেন। নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে হ্যাট্রিক জয় করতে চান বাবু। আওয়ামীলীগের দূরত্ব কমিয়ে সকলে এখন বাবুর পক্ষে। কিন্তু নজরুল ইসলাম আজাদের জয় পথেই বাধা হয়ে দাড়িয়েছে চাচা সাবেক তিনবারের এমপি আতাউর রহমান খান আঙ্গুর ও ভাতিজা মাহমুদুর রহমান সুমন।

জানাগেছে, কেন্দ্রীয় লবিং কওে বিশেষ সুবিধার মাধ্যমে মনোনয়ন আনলেও আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপি নেই আজাদের পক্ষে। আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির দশটি ইউনিয়নের প্রায় সবগুলো সভাপতিরা ছিল মাহমুদুর রহমান সুমনের বলয়ে। তাছাড়া তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগ নজরুল ইসলাম আজাদ নাকি আড়াইহাজার উপজেলা দশটি ইউনিয়নের আজ অবধি পা ও রাখেননি। গত কয়েক বছরে অনেক ইউনিয়ন এলাকায় তিনি যাননি। কালাপাহাড়িয়া এলাকায় কখনই যাননি আজাদ। যেখানে বিপুল পরিমান ভোট। জেলা ও মহানগর পর্যায়ের কিছু নেতাকর্মী নিয়ে তিনি সবসময় বলয় তৈরি করে ঘুরাফেরা করতেন। ছাত্রদল, যুবদল, মূলদলের নেতাকর্মীরা আজাদের মাধ্যমে পদ ভাগিয়ে আনতে পদপদবী পাওয়ার আশায় রাত দিন ঘুরে বেড়াচ্ছেন তার পিছনে। কিন্তু নেই আড়াইহাজারের নেতাকর্মীরা। একমাত্র বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন অনু ও তার স্ত্রী মহিলা দলের সভাপতি পারভীন আক্তারই রয়েছেন আজাদের পক্ষে। পারভীন আক্তার দুইবার মেয়র পদে নির্বাচনে করেও তিনি পাস করতে পারেননি।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আড়াইহাজারের আইনজীবী বিএনপি নেতা বলেন, নজরুল ইসলাম আজাদকে বিএনপির দল মনোনয়ন প্রদান করলেও তিনি আমজনতার নেতা হয়ে ওঠতে পারেননি। যা নজরুল ইসলাম বাবু পেরেছেন। তিনি আরও বলেন, আজাদ সবসময় দূরের মানুষকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তিনি বলেন, আপনারা লক্ষ্য করে দেখেন তার পিছনে যারা ঘুরাফেরা করে তারা কিন্তু বেশিরভাগ আড়াইহাজার উপজেলার বাহিরের লোক। তাছাড়া তিনি আড়াইহাজারের আইনজীবীদেরও তেমন মূল্যায়ন করেন না।

অন্যদিকে, আড়াইহাজারে সাবেক তিনবারের এমপি আতাউর রহমান আঙ্গুর ও উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুর মনোনয়ন না পাওয়ায় আজাদের ভরাডুবির আশংকা রয়েছে বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তৃণমূল নেতাকর্মী বলেন, আমরা ভেবেছিলাম মাহমুদুর রহমান সুমনের হাতে তুলে দিবেন ধানের শীষ প্রতীক। কিন্তু তা না করে দল যখন আজাদের হাতে ধানের শীষ প্রতীক তুলে দিল তখন বিএনপি নেতাকর্মীরা হতাশ।

বিজয় দিবস উপলক্ষে বন্দরে রচনা, আবৃতি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতা

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

মহান বিজয় দিবস-২০১৮ উপলক্ষে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে রচনা, কবিতা আবৃতি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১০ই ডিসেম্বর) সকালে থানার মদনগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হলরুমে এ প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিযোগীতায় কবিতা আবৃতি বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন বুনিয়াদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সামিয়া ইসলাম। ২য় ও ৩য় স্থান অধিকার করে যথাক্রমে কারিমা ও নববী সাহা। এছাড়াও শেখ হাসিনা ও উন্নয়ন বিষয়ক রচনা প্রতিযোগীতায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে কামতাল হালুয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জিনিয়া আক্তার। ২য় ও ৩য় স্থান অধিকার করেছে যথাক্রমে কুড়িপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবিকুন নাহার জাফরিন ও ফরাজীকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আফরোজা কালাম মিতু।

অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন বন্দর উপজেলা ভূমি অফিসার রোমানা বেগম। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সমবায় কর্মকতা, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আবু সাঈদ তারেক, সহকারী শিক্ষা অফিসার তাসলিমা সুলতানা সপ্না, মদনগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিবুর রহমান, পশ্চিম বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মেহবুবা খাতুন, ঘারমোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আমেনা খাতুন, জাঙ্গাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা পারভিন সিকদারসহ আরো অনেকে।

‘ওসমান পরিবারের জন্ম না হলে বাংলাদেশ হত না’

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক সানাউল¬াহ সানু বলেছেন, নারায়ণগঞ্জেই বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জন্ম হয়েছে। তৎকালীন সময়ে এই ওসমান পরিবারের হাত ধরেই এই আওয়ামীলীগের জন্ম হয়েছে। তাই স্পটত বলা যায় যে, এই ওসমান পরিবারের জন্যই আজ বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে। নতুবা আজ আমরা বাংলাদেশ পেতাম না। আমাদের সৌভাগ্য যে আমরা এমন একটি প্রতিষ্ঠিত পরিবারের সন্তানকে এমপি হিসেবে পেয়েছি। তিনি শুধুই এমপি নন। তিনি ভবিষৎ প্রজন্মের কান্ডারী। যে কিনা নির্বাচিত হয়েও জনগণের কল্যাণে নিজের পকেট থেকে ১’শ কোটি টাকা ব্যয় করেছেন। সত্যি পৃথিবীতে এরকম ২য় এমপি পাওয়াটা দূর্লভ।

আগামী শুক্রবার বন্দরের ঘারমোড়া ঈদগাহ এলাকায় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমানের নির্বাচনী সভাকে ঘিরে ঘারমোড়া-চরঘারমোড়া এলাকাবাসী আয়োজিত প্রস্তুতিমূলক সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বন্দরের কলাগাছিয়া ইউনিয়নের বিশ্বনবী ইসলামীয়া আলিম মাদরাসার হলরুমে সোমবার আয়োজিত এসভায় তিনি আরো বলেন, বিগত সময়ে এমপিরা নিজেদের ১৫ বা ৫ বৎসরের এমপিত্ব করেছেন। কিন্তু কি দিয়েছে আপনাদের? আমি মনে করি সেলিম ওসমান তার মেয়াদে যে উন্নয়ন করেছেন তা কোন এমপি আগামী ৫০ বছরেও তা করতে পারবেনা। তাই আসুন আমরা কোন দলকে নয় নিজেদের বিবেককে বিজয়ী করি।

কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাইনুদ্দিন আহম্মেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলাগাছিয়া ইউনিয়ন জাতীয়পার্টির সভাপতি বাচ্চু মিয়া প্রধান। কলাগাছিয়া ইউনিয়ন ছাত্রসমাজের সভাপতি লিয়াকত আলীর সঞ্চলনায় এতে আরো উপস্থিত ছিলেন কলাগাছিয়া ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির নেতা নুর নবী ওসমানী, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য সচিব মোঃ আবু হানিফ, কলাগাছিয়া ইউপির সাবেক সদস্য ওলিউল¬াহ মেম্বার, বিশ্বনবী ইসলামীয়া আলিম মাদরাসার গভনিং বডির সভাপতি সরদার আবু তালেব মিয়া প্রমুখ।

সোনারগাঁয়ে বেগম রোকেয়া দিবসে ৫ নারীকে জয়িতা সম্মাননা

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বেগম রোকেয়া দিবস-২০১৮ উদযাপন উপলক্ষে ১০ ডিসেম্বর সোমবার সাড়ে ১১টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে র‌্যালী, জয়িতাদের সম্মাননা ও অনুদানের চেক বিতরণের এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

এ বছর সোনারগাঁ উপজেলায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য পাঁচ নারীকে জয়িতা নির্বাচন করা হয়। অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনের জন্য নারী হিসেবে বড় নগর গ্রামের মাহমুদা আক্তার, শিক্ষা ও চাকুরীর ক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য বারদি বাজারের সুমী বনিক, সফল জননী আলগীরচর এলাকার মাসুদা বেগম, নির্যাতনে বিভীষিকার জন্য পৌরসভার কৃষ্ণপুরা গ্রামের ইবতিদা রুপা ও সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য আলমদি গ্রামের নাছিমা আক্তারকে ক্রেস্ট ও চেক তুলে দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সোনারগাঁ উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোঃ শাহিনুর ইসলাম, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাছিমা আক্তার, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ আলম রুপম ও সোনারগাঁ লেডিস ক্লাবের সভাপতি নুসরাত ইসলাম প্রমুখ।

কারাগার থেকে বার্তা দিলেন সাখাওয়াত হোসেন খান

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

গত ৫ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ চাষাড়া থেকে ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। পরে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার একটি নাশকতার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হলে আদালত সাখাওয়াতকে কারাগারে পাঠান।

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত এই আইনজীবী গত ৫ নভেম্বর থেকে কারাগারে রয়েছেন। গত কয়েক বছর ধরে তিনি নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনে নির্বাচনের লক্ষ্যে কাজ করে আসছিলেন। কারাগারে থেকে তার পক্ষ থেকে মনোনয়ন পত্রও সংগ্রহ করেছিলেন তার নেতাকর্মীরা। কিন্তু এ আসনে ঐক্যফ্রন্ট থেকে মনোনিত করা হয় নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এসএম আকরামকে। গত সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে মেয়র পদে নির্বাচন করে মেয়র আইভীর কাছে পরাজিত হন সাখাওয়াত হোসেন খান।

ওই মামলায় ১১ নভেম্বর উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বের হলে নারায়ণগঞ্জ কারাগারের গেটের সামনে আবারো সাখাওয়াত হোসেন খানকে আটক করে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। তারপর ফতুল্লা থানার একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠান।

এর আগে তাকে সদর মডেল থানার মামলায় রিমান্ডের আবেদন করা হলে আদালত দুইদিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন। ফতুল্লা মডেল থানার মামলায় সাখাওয়াতকে কারাগারে পাঠানো হলে সপ্তাহখানিক পর তাকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।

১০ ডিসেম্বর সোমবার সাখাওয়াত হোসেন খানকে দেখতে চান বন্দর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহিন আহমেদ। শাহিন আহমেদ দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকমকে জানান, সাখাওয়াত হোসেন খান মহানগর বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সকল নেতাকর্মীদের ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনী মাঠে ঝাপিয়ে পড়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দিয়ে জয়ী করার জন্য নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সকল ভেদাভেদ ভুলে দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন তার নেতাকর্মীদের। সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হলে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দিন। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হলে মুক্ত হবে গণতন্ত্র।’

প্রতীক বরাদ্ধের পরেই সোনারগাঁয়ে প্রচারণায় মান্নান

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

১০ ডিসেম্বর সোমবার প্রতীক বরাদ্ধের পরেই ধানের শীষের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছেন আজহারুল ইসলাম মান্নান। সোমবার তিনি প্রথম দিন সোনারগাঁয়ের কাচপুর এলাকায় কয়েক হাজার বিএনপি নেতাকর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালান।

এর আগে সোমবার সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং অফিসার রাব্বী মিয়ার হাত থেকে ধানের শীষ প্রতীক তুলে নেন আজহারুল ইসলাম মান্নান। প্রতীক বরাদ্ধের পর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে ধানের শীষ হাতে নিয়ে নেতাকর্মীরা শ্লোগান দিতে থাকেন।

এ আসনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে লাঙ্গল প্রতীকে রয়েছেন বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। তবে মহাজোটের প্রার্থী নিয়ে সোনারগাঁবাসীর মাঝে আগ্রহ কম। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতের সঙ্গেই লড়াই করতে হবে মান্নানকে। আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা ইতিমধ্যে কায়সার হাসনাতকে নিয়ে মাঠে নেমেছেন।

তবে মহাজোটের প্রার্থী হলেও লিয়াকত হোসেন খোকা এখনও আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে নামতে পারেননি। যে কারনে মহাজোটের প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনের শুরুতেই শঙ্কা তৈরি হয়েছে। আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা মহাজোটের এই প্রার্থী নিয়ে সামনে এগুতেও চাচ্ছেনা। যে কারনে মুল লড়াইটা দেখছেন কায়সার হাসনাতের সিংহ ও আজহারুল ইসলাম মান্নানের সঙ্গে ধানের শীষ প্রতীকের।

সর্বশেষ সংবাদ